আমি কারো পাকা ধানে মই দেইনি বরং কাঁচা ধানে সার, নিরনী এবং পানি দিয়েছি অথছ সবাই আমার ভাড়াভাতে ছাই দিয়েই যাচ্ছে! (প্রথম পর্ব)

লিখেছেন লিখেছেন আবু জারীর ১৭ জুলাই, ২০১৭, ০১:৩০:৩৭ দুপুর

আমি কারো পাকা ধানে মই দেইনি বরং কাঁচা ধানে সার, নিরনী এবং পানি দিয়েছি অথছ সবাই আমার ভাড়াভাতে ছাই দিয়েই যাচ্ছে! (প্রথম পর্ব)

১৯৯১ সালে ঢাকা সিটি কলেজে ভর্তি হওয়ার পর নোয়াখালীর মাসুদ ভাই যিনি কিনা তখন কলেজ শাখার সভাপতি ছিলেন তার দাওয়াতের মাধ্যমে সংগঠনের সাথে সম্পৃক্ত হই। সিটি কলেজের কোন হোস্টেল নাই তাই শুক্রাবাদের এক মেসে থাকতাম।

সবে মাত্র সংগঠনভুক্ত হয়েছি এবং আলেমের ছেলে ও নাতি হিসেবে নামায পড়ার প্রতি তাগাদা থাকলেও গুরুত্ব না বুঝার কারণে তখনও নিয়মিত নামাজি হইনি উপরন্ত তাস খেলার প্রতি ছিল চরম আগ্রহ!

গ্রামে থাকতেই তাস খেলা শিখে ফেলেছিলাম এবং রাত দশটার পরে যখন মা ঘুমিয়ে পরতেন তখন পাশের বাড়ির দোতলায় গিয়ে বন্ধুরা মিলে তাস খেলতাম। সংগঠন ভুক্ত হওয়ার পরে সাপ্তাহিক বৈঠক বসা শুরু করলে নামাযের গুরুত্ব বুঝা শুরু করি এবং ধিরে ধিরে নিয়মিত নামায পড়া শুরু করি কিন্তু তাস খেলা অব্যাহত থাকে কারণ মেস মেটরা কেউ ছাত্রদল কেউ ছাত্রলীগের সাথে জড়িত এবং একজন বাদে সবাই আমার সিনিয়র।

এক দিকে তাস খেলা অন্য দিকে নামায। প্রায়ই দেখাযেত তাস খেলতে খেলতে রাত তিনটা বেজে গেছে এবং ফজরের নামাযের বাকী এক দেড় ঘণ্টা, এমন সময় ঘুমালে ফজরের নামাজ পড়তে পারবনা তাই আমার অনুরোধ ফজরের আজান পর্যন্ত তাস খেলা চলত। আজান হলে আমি অজু করে নামাযে যেতাম আর সবাই ঘুমিয়ে পরত। জুনিয়র ছেলেটা পড়ত বিডিয়ার রাইফেলস কলেজে, সে একটু বিচ্ছু প্রকৃতির ছিল, তবে আমাকে যথেষ্ট সম্মান করত। তার বাবার নাম আর আমার বাবার নাম এক হওয়ায় তার বড়ভাই একই মেসের বাসিন্দা এবং সিনিয়র নিজের ভাইর মতই আমাকেও স্নেহ করত।

বিচ্ছুটাও আমাদের সাথে খেলত, একদিন খেলায় সে কার্চুপি করলে আমি ধরে ফেলি আর প্রতিশোধ হিসেবে সে সংগঠনের দায়িত্বশীল জবির মাস্টার্সের ছাত্র ইসলাম ভাইর কাছে তাস খেলার রাজ ফাস করে দেয়। সংগঠনের সিনিয়র ভাইয়েরা নামাজ রোজার গুরুত্বের কথা বলায় আমি নামায রোজা শুরু করি কিন্তু তারা আমাকে কোনদিন তাস খেলার জন্য নিষেধ করেনি তাই আমার কি দোষ? ইসলাম ভাই সেদিন সন্ধ্যায়ই আমাকে নাস্তাপানি খাইয়ে স্বস্নেহে কিছু নসিহত করে আর আমি তাস খেলা ছেড়ে দেই।

তখন বেশীর ভাগ সময়ই নামায পড়তাম পশ্চিম রাজাবাজার মসজিদে কারণ ওখানকার সংগঠনের সাথে আমি পশ্চিম রাজাবাজার ইউনিটের বৈঠকেই বসতাম এবং সেই ইউনিটেরই কর্মী এবং এক পর্যায়ে ইউনিটের দায়িত্বের নিচে চাপা পরে যাই। আমার আগে ইউনিটের দায়িত্ব পালন করতেন স্থানীয় ছেলে টিপু ভাই, তার আগে দায়িত্বশীল ছিলেন Md Aminul Islam ভাই, মৌলভি বাজার থেকে যার এমপি ইলেকশানের সমুহ সম্ভাবনা। টিপু ভাই ছিলেন ঢাবির স্টুডেন্ট। তাদের মত সিনিয়র এবং যোগ্য দায়িত্বশীল চলে যাওয়ায় যেন কাজে ভাটা না পরে সেজন্য আমি জোড়েসোরে কাজ করতে থাকি। ওখানকার ছাত্রদের প্রায় সবাই তেজগাঁও কলেজের ছাত্র ছিল যাদের মধ্যে দাওয়াতী কাজ করে বেশ সারা পাই এবং তাদের প্রায় সবাইকেই সমর্থক করে ফেলি এবং অনেকেই কর্মী হয় হয় অবস্থা, আর তখনই সমস্যার সূত্রপাত!

(চলবে............)

বিষয়: বিবিধ

৬৯৯ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

383572
১৭ জুলাই ২০১৭ সন্ধ্যা ০৬:৫৫
আকবার১ লিখেছেন : চমৎকার
১৮ জুলাই ২০১৭ দুপুর ০২:০৬
316623
আবু জারীর লিখেছেন : ধন্যবাদ।
383603
২১ জুলাই ২০১৭ রাত ১২:৩৪
আকবার১ লিখেছেন :

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File