আমরা কি চাই? কেন চাই? কিভাবে চাই?
লিখেছেন লিখেছেন আবু জারীর ০৭ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১১:০৬:০৩ রাত
আসসালামু'আলাইকুম
আমরা কি চাই? কেন চাই? কিভাবে চাই?
আমরা কি চাই?
صِبْغَةَ اللَّهِ ۖ وَمَنْ أَحْسَنُ مِنَ اللَّهِ صِبْغَةً ۖ وَنَحْنُ لَهُ عَابِدُونَ
আল বাকারাহ১৩৮) বলোঃ “আল্লাহর রঙ ধারণ করো! আর কার রঙ তার চেয়ে ভলো? আমরা তো তাঁরই ইবাদাতকারী৷”
﴿وَلَقَدْ بَعَثْنَا فِي كُلِّ أُمَّةٍ رَّسُولًا أَنِ اعْبُدُوا اللَّهَ وَاجْتَنِبُوا الطَّاغُوتَ ۖ فَمِنْهُم مَّنْ هَدَى اللَّهُ وَمِنْهُم مَّنْ حَقَّتْ عَلَيْهِ الضَّلَالَةُ ۚ فَسِيرُوا فِي الْأَرْضِ فَانظُرُوا كَيْفَ كَانَ عَاقِبَةُ الْمُكَذِّبِينَ﴾
আন নাহল৩৬) প্রত্যেক জাতির মধ্যে আমি একজন রসূল পাঠিয়েছি এবং তার মাধ্যমে সবাইকে জানিয়ে দিয়েছি যে, “আল্লাহর বন্দেগী করো এবং তাগূতের বন্দেগী পরিহার করো৷” এরপর তাদের মধ্য থেকে কাউকে আল্লাহ সঠিক পথের সন্ধান দিয়েছেন এবং কারোর ওপর পথভ্রষ্টতা চেপে বসেছে৷ তারপর পৃথিবীর বুকে একটু ঘোরাফেরা করে দেখে নাও যারা সত্যকে মিথ্যা বলেছে তাদের পরিণাম কি হয়েছে৷
﴿لَقَدْ أَرْسَلْنَا نُوحًا إِلَىٰ قَوْمِهِ فَقَالَ يَا قَوْمِ اعْبُدُوا اللَّهَ مَا لَكُم مِّنْ إِلَٰهٍ غَيْرُهُ إِنِّي أَخَافُ عَلَيْكُمْ عَذَابَ يَوْمٍ عَظِيمٍ﴾
(সূরা আরাফ ৫৯) নুহকে আমি তার সম্প্রদায়ের কাছে পাঠাই৷ সে বলেঃ হে আমার স্বগোত্রীয় ভাইয়েরা! আল্লাহর ইবাদত করো, তিনি ছাড়া তোমাদের আর কোন ইলাহ নেই৷ আমি তোমাদের জন্য একটি ভয়াবহ দিনের আযাবের আশংকা করছি৷
শেষ নবীর দাওয়াত যারা কবুল করেছেন তারাই বলেছেনঃ
'লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রসূলুল্লাহ'
আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই, মুহাম্মদ (সঃ) আল্লাহর রাসূল।
কালেমা তাইয়েবার বিপ্লবী দাওয়াতকে নিন্মরূপ তিনটি দফায় পেশ করছেঃ
১) আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই, মুহাম্মদ (সঃ) আল্লাহর রাসূল।
২) আমরা যদি সত্যি তা মেনে নিয়ে থাকি তাহলে আমাদের বাস্তব জীবন থেকে ইসলামের বিপরীত চিন্তা, কাজ ও অভ্যাস দূর করে আল্লাহ ও রাসূল (সঃ) এর বিরুদ্ধে কারো আনুগত্য না করার সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
৩) এ দুটো নীতি অনুযায়ী খাঁটি মুসলিম হিসেবে জীবন যাপন করতে চাইলে সংঘবদ্ধ হয়ে অসৎ ও আল্লাহবিমুখ লোকদেরকে নেতৃত্ব থেকে সরিয়ে দিয়ে সমাজ ও রাষ্ট্রের সকল স্তরে ঈমানদার, আল্লাহভীরু ও যোগ্য লোকদের হাতে নেতৃত্ব তুলে দিতে হবে।
কিন্তু কেন?
﴿وَمِنَ النَّاسِ مَن يَتَّخِذُ مِن دُونِ اللَّهِ أَندَادًا يُحِبُّونَهُمْ كَحُبِّ اللَّهِ ۖ وَالَّذِينَ آمَنُوا أَشَدُّ حُبًّا لِّلَّهِ ۗ وَلَوْ يَرَى الَّذِينَ ظَلَمُوا إِذْ يَرَوْنَ الْعَذَابَ أَنَّ الْقُوَّةَ لِلَّهِ جَمِيعًا وَأَنَّ اللَّهَ شَدِيدُ الْعَذَابِ﴾
আল বাকারাহ১৬৫) কিন্তু, কিছু লোক আল্লাহ ছাড়া অন্যদেরকে তাঁর সমকক্ষ ও প্রতিপক্ষ দাঁড় করায় এবং তাদেরকে এমন ভালোবাসে যেমন আল্লাহকে ভালোবাসা উচিত – অথচ ঈমানদাররা সবচেয়ে বেশী আল্লাহকে ভালোবাসে৷ হায়! আযাব সামনে দেখে এই যালেমরা যা কিছু অনুধাবন করার তা যদি আজই অনুধাবন করতো যে, সমস্ত শক্তি ও ক্ষমতা একমাত্র আল্লাহর অধীন এবং শাস্তি ব্যাপারে আল্লাহ অত্যন্ত কঠোর৷
﴿إِذْ تَبَرَّأَ الَّذِينَ اتُّبِعُوا مِنَ الَّذِينَ اتَّبَعُوا وَرَأَوُا الْعَذَابَ وَتَقَطَّعَتْ بِهِمُ الْأَسْبَابُ﴾
আল বাকারাহ১৬৬) যখন তিনি শাস্তি দেবেন তখন এই সমস্ত নেতা ও প্রধান ব্যক্তিরা, দুনিয়ায় যাদের অনুসরণ করা হতো, তাদের অনুগামীদের সাথে সম্পর্কহীনতা প্রকাশ করতে থাকবে৷ কিন্তু শাস্তি তারা পাবেই এবং তাদের সমস্ত উপায়- উপকরণের ধারা ছিন্ন হয়ে যাবে৷
﴿وَقَالَ الَّذِينَ اتَّبَعُوا لَوْ أَنَّ لَنَا كَرَّةً فَنَتَبَرَّأَ مِنْهُمْ كَمَا تَبَرَّءُوا مِنَّا ۗ كَذَٰلِكَ يُرِيهِمُ اللَّهُ أَعْمَالَهُمْ حَسَرَاتٍ عَلَيْهِمْ ۖ وَمَا هُم بِخَارِجِينَ مِنَ النَّارِ﴾
আল বাকারাহ১৬৭) আর যেসব লোক দুনিয়ায় তাদের অনুসারি ছিল তারা বলতে থাকবে, হায়! যদি আমাদের আর একবার সুযোগ দেয়া হতো, তাহলে আজ এরা যেমন আমাদের সাথে সম্পর্কহীনতা প্রকাশ করছে তেমনি আমরাও এদের সাথে সম্পর্কহীন হয়ে দেখিয়ে দিতাম৷ এভাবেই দুনিয়ায় এরা যে সমস্ত কাজ করছে সেগুলো আল্লাহ তাদের সামনে এমনভাবে উপস্থিত করবেন যাতে তারা কেবল দুঃখ ও আক্ষেপই করতে থাকবে কিন্তু জাহান্নামের আগুন থেকে বের হবার কোন পথই খুঁজে পাবে না৷
আমাদের করনীয়ঃ
আল্লাহ তায়ালা তাঁর রাসুল (সঃ)কে আসল যে কাজটি করার জন্য দুনিয়ায় পাঠিয়েছেন তা কুরআনের তিনটি সুরায় স্পষ্ট ভাষায় ঘোষণা করেছেনঃ
﴿هُوَ الَّذِي أَرْسَلَ رَسُولَهُ بِالْهُدَىٰ وَدِينِ الْحَقِّ لِيُظْهِرَهُ عَلَى الدِّينِ كُلِّهِ وَلَوْ كَرِهَ الْمُشْرِكُونَ﴾
আল্লাহই তার রসূলকে পথনির্দেশ ও সত্য দীন সহকারে পাঠিয়েছেন যাতে তিনি একে সকল প্রকার দীনের ওপর বিজয়ী করেন, মুশরিকরা একে যতই অপছন্দ করুক না কেন৷(সূরা আত তাওবাঃ৩৩, সূরা সফ-৯)।
﴿هُوَ الَّذِي أَرْسَلَ رَسُولَهُ بِالْهُدَىٰ وَدِينِ الْحَقِّ لِيُظْهِرَهُ عَلَى الدِّينِ كُلِّهِ ۚ وَكَفَىٰ بِاللَّهِ شَهِيدًا﴾
আল্লাহই তো সে মহান সত্তা যিনি তাঁর রসূলকে হিদায়াত ও সত্য দীন দিয়ে পাঠিয়েছেন যেন তাকে সমস্ত দীনের ওপর বিজয়ী করে দেন৷ আর এ বাস্তবতা সম্পর্কে আল্লাহর সাক্ষই যথেষ্ট৷(সূরা ফাতাহ-২৮)
রাসূল (সঃ) আল্লাহর দ্বীনকে কায়েম করেই এ দায়িত্ব পালন করেছেন। ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র, আইন, শাসন, বিচার, ব্যবসা-বানিজ্য ইত্যাদি সব ক্ষেত্রেই তিনি আল্লাহর বিধানকে চালু করে প্রমাণ করেছেন যে ইসলামই দুনিয়ার জীবনে শান্তির একমাত্র উপায়। এতে বুঝা গেল যে, ইকামাতে দ্বীনের দায়িত্ব পালন করাই সব ফরযের বড় ফরয। সাহাবায়ে কেরাম (রাঃ) ও রাসূল (সঃ) এর সাথে এ দায়িত্বই পালন করেছেন। মুসলিম হিসেবে আমাদের সবারই এ ফরযটি আদায় করা সবচেয়ে বড় কর্তব্য। এ ফরযকে অবহেলা করে আল্লাহর সন্তুষ্টি হাসিল করা কিছুতেই সম্ভব নয়।
কিভাবে চাই?
ইকামতে দ্বীনের এ মহান দায়িত্ব একা একা পালন করা নবীর পক্ষেও সম্ভব ছিলনা। তাই যারাই নবীর প্রতি ঈমান এনেছেন তাদেরকেই সংঘবদ্ধ করে নবীগণ ইসলামী আন্দোলন করেছেন। যেসমাজে ইসলাম কায়েম নেই সেখানে ব্যক্তি জীবনেও পুরাপুরি মুসলিম হিসেবে জীবন যাপন করা অসম্ভব। আর আল্লাহর দ্বীনকে সমাজ জীবনে কায়েম করার কাজ তো সংঘবদ্ধভাবে ছাড়া কিছুই করা সম্ভব নয়। নবী করীম (সঃ) বলেছেন, 'মেষের পাল থেকে আলাদা একটি মেষকে যেমন নেকড়ে বাঘ ধরে খায় তেমনি সংগঠন থেকে বিছ্ছিন্ন একজন মুসলিম সহজেই শয়াতনের খপ্পরে পড়ে যায়", তাই সংঘবদ্ধ জীবনই ঈমানের প্রার্থমিক দাবী।
﴿وَاعْتَصِمُوا بِحَبْلِ اللَّهِ جَمِيعًا وَلَا تَفَرَّقُوا ۚ وَاذْكُرُوا نِعْمَتَ اللَّهِ عَلَيْكُمْ إِذْ كُنتُمْ أَعْدَاءً فَأَلَّفَ بَيْنَ قُلُوبِكُمْ فَأَصْبَحْتُم بِنِعْمَتِهِ إِخْوَانًا وَكُنتُمْ عَلَىٰ شَفَا حُفْرَةٍ مِّنَ النَّارِ فَأَنقَذَكُم مِّنْهَا ۗ كَذَٰلِكَ يُبَيِّنُ اللَّهُ لَكُمْ آيَاتِهِ لَعَلَّكُمْ تَهْتَدُونَ﴾
১০৩) তোমরা সবাই মিলে আল্লাহর রুজ্জু মজবুতভাবে আকঁড়ে ধরো এবং দলাদলি করো না৷ আল্লাহ তোমাদের প্রতি যে অনুগ্রহ করেছেন সে কথা স্মরণ রেখো৷ তোমরা ছিলে পরস্পরের শক্র৷ তিনি তোমাদের হৃদয়গুলো জুড়ে দিয়েছেন৷ ফলে তাঁর অনুগ্রহ ও মেহেরবানীতে তোমরা ভাই ভাই হয়ে গেছো৷ তোমরা একটি অগ্নিকুণ্ডের কিনারে দাঁড়িয়ে ছিলে৷ আল্লাহ সেখান থেকে তোমাদের বাঁচিয়ে নিয়েছেন৷ এভাবেই আল্লাহ তাঁর নির্দশনসমূহ তোমাদের সামনে সুস্পষ্ট করে তুলেন ৷ হয়তো এই নিদর্শনগুলোর মাধ্যমে তোমরা নিজেদের কল্যাণের সোজা সরল পথ দেখতে পাবে৷
কোন ধরনের দলের সাথে সম্পৃক্ত হবঃ
প্রচলিত অর্থে কোন ধর্মীয় বা রাজনৈতিক বা সামাজিক বা সংস্কৃতিক দলে নয় বরং ধর্মীয়, রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মসূচীর সমন্বয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ ইসলামী আন্দোলন ও ইসলামী বিপ্লবের পতাকাবাহী সংগঠনের সাথে সম্পৃক্ত হতে হবে।
আদর্শঃ
কুরআন ও হাদীসে ইসলামের যে পূর্ণরূপ রয়েছে এর সবটুকুই হবে উক্ত সংগঠনের আদর্শ। বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলইহি ওয়াসাল্লাম, ইসলামের যে বাস্তব রূপ দিয়ে গেছেন তার সবটুকুর নামই হলো দ্বীন ইসলাম। নবুয়তের ২৩ বছরের জীবনে তাঁর কথা, কাজ ও অনুমোদন ইসলামের যে পূর্ণাঙ্গ রূপ দিয়েছে তার কোন দিক, বিভাগ ও অংশই ইসলামের বাইরে নয়। আল্লাহ পাকের প্রেরিত সেই শেষ নবীই হবেন উক্ত সংগঠনের নিকট সুন্দরতম আদর্শ। আর সেই নবীর আনুগত্য ও অনুসরণের ব্যাপারে সাহাবায়য়ে কেরামই (রঃ) সংগঠনের নিকট উৎকৃষ্টতম আদর্শ।
বুনিয়াদী আকিদা - বিশ্বাসঃ
১) আল্লাহ পাকই মানব জাতির একমাত্র রব, বিধানদাতা ও হুকুম কর্তা।
২) বিশ্বনবী(সঃ)'ই মানব জীবনের সর্বক্ষেত্রে একমাত্র "অনুসরণ যোগ্য আদর্শ নেতা।
৩) কুরআন ও সুন্নাহই মানুষের জন্য একমাত্র পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান।
৪) সাহাবায়ে কেরাম(রাঃ)'ই নবীর আনুত্যের একমাত্র আদর্শ নমুনা।
৫) ইকামতে দ্বীনই মুসলিম জীবনের একমাত্র লক্ষ্য।
৬) জিহাদ (সংগ্রাম) আল্লাহর সন্তুষ্টি হাসিলের একমাত্র পথ।
৭) আল্লাহর সন্তুষ্টি ও আখেরাতের মুক্তিই মুমিন জীবনের একমাত্র কাম্য।
যোগ্য লোক তৈরীঃ
দ্বীন ইসলাম কায়েম করার উদ্দেশ্যে সংগঠনের মাধ্যমে যোগ্য লোক তৈরী করা জরুরী। ইসলামী সমাজ, রাষ্ট্র ও সরকার কায়েম করতে হলে এ বিরাট কাজের উপযোগী লোক জোগাড় করতেই হবে। এ লোক আসমান থেকে নাজিল হবেনা বা বিদেশ থেকেও আমদানী করা যাবেনা। আরবের জাহেলী সমাজ থেকে দাওয়াত ও সংগঠনের মাধ্যমে বিশ্বনবী যেমন লোক যোগাড় করেছিলেন তেমনি আমাদের দেশের মানুষ থেকেই উপযোগী লোক তৈরী করতে হবে।
কর্মসূচীঃ
১) দাওয়াত ও তাবলীগের মাধ্যমে চিন্তার বিশুদ্ধি ও পুনর্গঠনের কাজঃ
জামায়াত কুরআন ও হাদীসের সঠিক শিক্ষাকে বলিষ্ঠ যুক্তির সাহায্যে তুলে ধদরে জনগণের চিন্তার বিকাশ সাধন করছে। তাদের মধ্যে ইসলামকে অনুসরণ ও কায়েম করার উৎসাহ ও মনোভাব জাগ্রত করছে।
২) তানজীম ও তারবিয়াত / সংগঠন ও প্রশিক্ষনের কাজঃ
ইসলাম কায়েমের সংগ্রামে আগ্রহী ব্যক্তিদেরকে সুসংগঠিত করে উপযুক্ত শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ দিয়ে ইসলামী বিপ্লব সাধনের যোগ্য করে গড়ে তুলছে।
৩) ইসলাহে মোয়াশারা / সমাজ সংস্কার ও সেবার কাজঃ
ইসলামী মূল্যবোধের ভিত্তিতে সমাজের সংশোধন, নৈতিক পূণর্গঠন ও সমাজ সেবামূলক কাজের মাধ্যমে জামায়াত কর্মী ও জনগণকে ইসলামী সমাজ কায়েমে উদ্বুদ্ধ করছে।
৪) ইসলাহে হুকুমাত / সরকার সংশোধনের কাজঃ
গ্রাম ও ইউনিয়ন থেকে শুরু করে শাসন ব্যবস্থার সকল স্তরে আল্লাহদ্রহী, ধর্মনিরপেক্ষ, জালেম ও অসৎ নেতৃত্বের বদলে আল্লাভীরু, সৎ ও যোগ্য নেতৃত্ব কায়েমের জন্য
গণতান্ত্রিক পন্থায় চেষ্টা চালাচ্ছে।
কর্মনীতিঃ লোক তৈরীর কর্মনীতিঃ
১) ইসলামী বিপ্লবের উপযোগী বলিষ্ঠ ঈমান ও চরিত্র সৃষ্টির জন্য ইসলামী আন্দোলন একমাত্র উপায়। রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সমাজিক ও ধর্মীয় কায়েমী স্বার্থের সাথে ইসলামী আন্দোলনের আদর্শিক সংঘার্ষের মাধ্যমেই উপযুক্ত লোক তৈরী হয়, তাই জামায়াত এ পন্থায়ই লোক তৈরী করছে। ত্যাগী ও নিঃস্বার্থ কর্মী এভাবেই তৈরী হয়ে থাক।
সরকার গঠনের কর্মনীতিঃ
হুজুগ, সন্ত্রাস ও বিশ্রঙ্খলার মাধ্যমে জাতি গঠনমূলক কাজ হতে পারেনা। তাই জামায়াত একমাত্র গণতান্ত্রীক পথেই সরকার পরিচালনায় দায়িত্ব নিতে চায়। ইসলামী আদর্শ জোর করে জনগণের উপর চাপাবার জিনিষ নয়। জনসর্মন নিয়েই ইসলামের সত্যিকার বিজয় সম্ভব।
ইসলামের বিজয়ের জন্য শর্তঃ
আল্লাহ পাক সরাসরি শক্তি প্রয়োগ করে ইসলাম কায়েম করেন না। আল্লাহর খিলাফতের দায়িত্ব পালনের জন্য যারা চেষ্টা করে আল্লাহ এ কাজে তাদেরকেই সাহায্য করেন। আল্লাহর জমিনে আল্লাহর দ্বী কায়েম করার যোগ্য লোক তৈরী হলে তিনি তাদের হাতে ক্ষমাত তুলে দেন।
(সূরা নূর-৫৫)
﴿وَعَدَ اللَّهُ الَّذِينَ آمَنُوا مِنكُمْ وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ لَيَسْتَخْلِفَنَّهُمْ فِي الْأَرْضِ كَمَا اسْتَخْلَفَ الَّذِينَ مِن قَبْلِهِمْ وَلَيُمَكِّنَنَّ لَهُمْ دِينَهُمُ الَّذِي ارْتَضَىٰ لَهُمْ وَلَيُبَدِّلَنَّهُم مِّن بَعْدِ خَوْفِهِمْ أَمْنًا ۚ يَعْبُدُونَنِي لَا يُشْرِكُونَ بِي شَيْئًا ۚ وَمَن كَفَرَ بَعْدَ ذَٰلِكَ فَأُولَٰئِكَ هُمُ الْفَاسِقُونَ﴾
আল্লাহ প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তোমাদের মধ্য থেকে যারা ঈমান আনবে ও সৎ কাজ করবে তাদেরকে তিনি পৃথিবীতে ঠিক তেমনিভাবে খিলাফত দান করবেন যেমন তাদের পূর্বে অতিক্রান্ত লোকদেরকে দান করেছিলেন, তাদের জন্য তাদের দীনকে মজবুত ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত করে দেবেন, যাকে আল্লাহ তাদের জন্য পছন্দ করেছেন এবং তাদের (বর্তমান) ভয়-ভীতির অবস্থাকে নিরাপত্তায় পরিবর্তিত করে দেবেন৷ তারা শুধু আমার বন্দেগী করুক এবং আমার সাথে কাউকে যেন শরীক না করে৷ আর যারা এরপর কুফরী করবে তারাই ফাসেক ৷
উপসংহারঃ
الْيَوْمَ أَكْمَلْتُ لَكُمْ دِينَكُمْ وَأَتْمَمْتُ عَلَيْكُمْ نِعْمَتِي وَرَضِيتُ لَكُمُ الْإِسْلَامَ دِينًا
মায়েদাঃ০৩) আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দীনকে পরিপূর্ণ করে দিয়েছি, আমার নিয়ামত তোমাদের প্রতি সম্পূর্ণ করেছি এবং তোমাদের জন্য ইসলামকে তোমাদের দীন হিসেবে গ্রহণ করে নিয়েছি(কাজেই তোমাদের ওপর হালাল ও হারামের যে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে তা মেনে চলো৷)
দ্বীনকে আল্লাহ পূর্ণতা দান করেছেন তাই আসুন আল্লাহর সেই দ্বীনকে সম্মিলিত ভাবে বিজয়ী করার জন্য একটি মজবুত সংগঠনের পতাকা তলে সংঘবদ্ধ হই। নিজেকে ঈমান, ইসলাম, আখলাক ও আমলে সজ্জিত করি এবং সর্ব সাধারণের কাছে এ সংগঠনের দাওয়াত পৌছে দেই যেন সমাজের সব মানুষের অংশগ্রহণে একটা সুখি সমৃদ্ধ ইনসাফপূর্ণ সমাজ কায়েম করতে পারি।
বিষয়: বিবিধ
১৯১৬ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আপনার অত্যন্ত মূল্যবান ও হৃদয়গ্রাহী লিখাটির জন্য জাজাকাল্লাহু খাইর।
ধন্যবাদ আপু।
মন্তব্য করতে লগইন করুন