৮১ পদের খানা!
লিখেছেন লিখেছেন আবু জারীর ২৪ অক্টোবর, ২০১৬, ১০:০১:৫৯ রাত
আমাদের ঘরে সাধারণত এক পদের খানা পাক হত। পাঁচ ভাইবোনের সংসার, তার উপর আবার দাদা-দাদী। সব মিলে সদস্য সংখ্যা ৯ জন। স্বাভাবিক কারণেই এক পদের খানার নয় ভাগের একভাগ খেয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হত।
ভাবুনতো সেই এক পদের খানার নয় ভাগের এক ভাগ খাওয়া আমি যখন শশুড় বাড়িতে গিয়ে ৮১ পদের খানা খেলাম তখন আমার কি অবস্থা?
নাহ, সে কথা আর বলার অপেক্ষা রাখেনা, পেটের ভিতর বুট-বুটানি আর সদর দরজা খুলি খুলি অবস্থা! কি করি, কোথায় যাই? যখন পালাই পালাই পালাই অবস্থা, তখন আমার নববধূ বিষয়টা বুঝতে পের টয়লেটের দরজা দিল খুলে!
ওমা! এ দেখি একেবারে ঘরের ভিতরেরই অন্য একটা দরজা! ভিতরে ঢুকে বুঝলাম, বৌ আমার সাথে মশকরা করছে। তা না হলে বেড রুমের চেয়ে বাথরুম এত ঝক ঝকে তক তকে হয় কি করে? আমার ইতস্তত ভাব দেখে সে হয়ত আচঁ করতে পেরেছে, তাই নিয়ম কানুন দেখিয়ে দিয়ে বেড়িয়ে গিয়ে নিজেই দরজা বন্ধ করে দিল। আমিও প্রচন্ড বেগ নিয়ে সপাৎ করে বসে পরলাম, কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হলনা! হবে কি করে, তারাহুরর চোটে ট্রাউজারের যে গিট্টুই খোলা হয়নি।
তাছারা সারা জীবন মাটির ঘরে থাকা আমার কি আর সেনেটারী লেট্রিনে বসে শৌচ কর্ম করার অভ্যাস আছে? তার পরে ন্যাপথলিন আর পারফিউমের ঘ্রান! পেটের ভিতরে থাকা উপাদেয় খাদ্যের বর্জ্র নিন্মমুখি না হয়ে এবার উর্ধমূখি হতে শুরু করল! নাহ, শত চেষ্টা করেও কিছুতেই কিছু হলনা। ওদিকে পেট বার্স্ট হয়ে যাওয়ার পালা। এমতাবস্থায় বাধ্য হয়েই টয়লেট থেকে বেড়িয়ে আসায়, মুর্ছা যাওয়ার পালা।
আমার অবস্থা যখন ত্রাহী মধুসূদন তখন শশুর মহদয় বিষয়টা আচঁ করতে পেরে তৎক্ষণাৎ নৌকার মাঝীকে ডেকে আমাকে বিলের মধ্যের টিলার দিকে পাঠিয়ে দিলেন। শেষ পর্যন্ত আল্লাহর কৃপায় খোলা আসমানের নিচে বসে একাদশির চাঁদ দেখতে দেখতে কর্ম শেষ করলুম, সেকি মজারে দাদা কি আর বলব? অনেক সাধনার পর যেন এ দেহে প্রাণ এল।
জানিনা প্রতিবেসী দেশ থেকে আশা দাদা বাবুর কি অবস্থা? আমার মত ১ পদ খানার আধাটা খাওয়া এবং খোলা আসমানের নিচে যাদের কর্ম সমাধা করার অভ্যাস তারা হঠাৎ করে ৮১ পদের খানা খেয়ে এখন আরামে আছে না ব্যারামে আছে আল্লাই ভালো জানেন। তাই কর্তা ব্যক্তিদের অনুরোধ করব, যাতে একটা চার্টার্ড ফ্লাইট রেডি রাখা হয়। অবস্থা বেগতিক দেখলে যেন সাথে সাথে তার দেশে চালান করে দেয়া যায়।
আমাদের দেশে এখন আর খোলা আসমানের নিচে একাদশির চাঁদ দেখতে দেখতে প্রাত কর্ম সারার সুযোগ নাই। আল হামদুলিল্লাহ, দেশের বেশ উন্নতি হয়েছে। কোন কোন দিক থেকে পিছিয়ে থাকলেও নারী শিক্ষা এবং সেনিটেশানে আমরা দাদাদের চেয়ে শত ভাগ এগিয়ে।
বিষয়: সাহিত্য
১৩৩৩ বার পঠিত, ১০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
দাদারা ৮১ পদ দেখলেই হার্ট এটাক করবে। টয়লেট খুজার সময় কই!!
ধন্যবাদ মুহতারাম।
মন্তব্য করতে লগইন করুন