জামায়াত কি অন্যায়ের প্রতিরোধ করছে নাকি প্রতিবাদ?
লিখেছেন লিখেছেন আবু জারীর ০৩ ডিসেম্বর, ২০১৫, ০৩:০৯:৩৫ রাত
জামায়াত কি অন্যায়ের প্রতিরোধ করছে নাকি প্রতিবাদ?
জামায়াত এখনো হাত দিয়ে বাধা দেয়ার কাজ শুরু করেনি এমনটা করবে বলেও মনে হচ্ছেনা। হাত দিয়ে বা শক্তি প্রয়োগ করে অন্যায় প্রিতিরোধের দায়িত্ব সরকারের, জনগণের না। জনগণ ব্যক্তিগতভাবে এ কাজ করতে গেলে সমাজে ফাসাদ সৃষ্টি হাওয়ার সম্ভাবনা থাকে শতভাগ আর সে কারণেই জামায়াত শক্তি প্রয়োগের পথে পা না বাড়িয়ে মৌখিক এবং লিখত প্রতিবাদের মধ্যেই নিজেদের কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রেখেছে।
যারা জামায়াতের বাহিরে থেকেও তাদের কল্যাণ কামণা করছে এবং সঠিক পথে চলার জন্য নসিহত করছে তাদের আবেগকে জামায়াত সম্মান করে। নিরহ লোকদের জামায়াত মৃত্যু এবং পঙ্গুত্বের দিকে ঠেলে দিচ্ছে বলে যারা অভিযোগ করছে তাদের অবগতির জন্য জামায়াত জানাতে চায় যে তারা কারো সন্তানকে জোড় করে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয়না বরং নিরহ ছাত্র জনতার জীবন রক্ষার জন্য সাধ্যমত সব চেষ্টাই করে থাকে। কারো উপর জুলুম করা বা নিজেদেরকে ইচ্ছাকৃত ভাবে মজলুম বানানর মত কোন আত্মঘাতি সিদ্ধান্ত জামায়াত নেয়নি এবং ভবিষ্যতেও নিবে না।
বাতিল শক্তি নির্দোষ লোকদের উপর হামলা চালালে বা মেরে ফেললে সে দোষ তাদের যারা জুলুম করছে। হযরত বেলাল (রাঃ) খাব্বাব (রাঃ) গণ নির্দোষ ছিলেন, শুধুমাত্র ইসলাম কবুল করার জন্যই তাদেরকে অত্যাচার নিপিরন জুলুম নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছিল। তাঁরা কারো বাড়া ভাতে ছাই দিতে যায়নি। তেমনি আজকেও যারা দীনকে নিজেদের জীবন উদ্দেশ্য বানিয়ে নিয়েছে তারাই বাতিলের টার্গেটে পরিণত হতে হচ্ছে। আশ্চর্যের বিষয় হল একদল দিনী ভাই জালিমের সমালোচনা যতটুকু না করছে তারচেয়ে বরং মজলুমের সমালোচনা করছে!
প্রিয় সুহৃদ ভাইগণ জামায়াত আপনাদের উদাত্ত আহবান জানাচ্ছে, অন্তত নিজে কাছে থেকে জামায়াতকে জানুন, তাদের সাথে দুইএকটা বৈঠকে বসুন এবং সিলেবাসভুক্ত তাফহীমূল কুর'আন সহ অন্তত হাকীকত সিরিজের ৪/৫টা বই পড়ে তাদেরকে জানান যে আপনার নিজের দৃষ্টিতে কোথায় কি ভুল ধরা পরেছে?
আপনারা যেমন জামায়াতের লোকদের নিয়ে চিন্তিত তেমনি তারাও ঐ সব দিনী ভাইদের নিয়ে ফিকির করে যারা মুখে উচ্চারণ করে পর্যন্ত জালিমের জুলুমের বিরুদ্ধে টুশব্দটিও করেনা বরং মুমিনদেরকেই ইসলামী আন্দলনের প্রতি নিরুৎসাহী করে!
সাইয়েদ মোদূদীর লেখা তাফসির এবং ইসলামী সাহিত্য নিজেরাও পড়ে দেখেনা আর অন্যদেরও পড়তে দেয়না। তার লেখা পড়ে যারা হেদায়েত পেত তাদের পথে যারা অন্তরায় সৃষ্টি করে তারা আল্লাহর কাছে কি জবাব দিবে তা তারাই ভালো জানেন।
যারা সহি আক্বীদার দাওয়াত দেয় বলে দাবী করে, সব জায়গায় সমাজের মানুষ তাদের তেমন একটা চেনেওনা বরং যারা মওদূদীর কিতাব পড়ে দীনের রাস্তা খুজে পেয়েছে তারাই সমাজে বেশী পরিচিত এবং নিজেদের গরজেই সহী আকীদা খুজে নিচ্ছে।
যখনই কুর'আনের শিক্ষা এবং সহী হাদীসের সন্ধান পাচ্ছে তখনই তারা তা কবুল করছে। এর এক মাত্র কৃতেত্বের দাবিদার সাইয়েদ মওদূদী। তিনি পথহারা অনেক মানুষকেই গন্তব্যে পৌছার জন্য সাধ্যমত অন্তত লোকাল ট্রেনে উঠিয়ে দিয়েছেন এখন নিজের গরজেই তারা গন্তব্যে পৌঁছার জন্য মেল ট্রেন খুজে নিতে পারছে। আল্লাহ তাঁর এই খেদমতের উছিলায় তাকে জান্নাতে উঁচু মাকাম দান করুণ। আমিন।
বিষয়: বিবিধ
১৪৯৪ বার পঠিত, ৯ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
শক্তি প্রয়োগ করে সত্য প্রতিষ্ঠা সরকারের কাজ!
এখনো জামায়াত সে পর্যায়ে যায় নি! তাই অহেতুক বিতর্ক করার কোনই সুযোগ নেই!
আল্লাহ মাজলুমদের স হায় হোন,আমিন!
ধন্যবাদ।
আশা করি কিছু মনে করবেন না। আমি চাইলেই লিখতে পারতাম 'সুন্দর লিখেছেন'। কিন্তু তা না করে আপনার লিখাটি পড়ে আমার সত্যিকার অনুভূতিটি জানাতে চাইলাম। হয়তো আপনি ভাববেন, রিফ্লেক্ট করবেন - এই প্রত্যাশায়।
ইসলামকে ভালবাসেন, ইসলামের জন্য কাজ করেন - কিন্তু কোন ইসলামী সংগঠন এর সাথে সরাসরি জড়িত নন কিংবা জড়িত হতে চান না (যথাযথ ইসলামিক বিধান / কারনের আলোকেই) - অমন মুসলিম ভাইবোনদের কাছে আপনার এই 'প্রিসাইজলী এ্যাগ্রেসিভ' লিখাটি - 'বড় ধরনের শ্ক' হিসাবে কাজ করবে। বড় বেশী 'জামায়াতে ইসলামী ই ঠিক' এমন দাম্ভিকতার একটা রূপ ফুটিয়ে তুলবে।
ব্যাক্তিগতভাবে আমার মনে হয়, জামায়াতে ইসলামীর কোন কর্মকান্ডে, সিদ্ধান্তে ইসলাম মনস্ক ভাইরা তখনই কিছু বলে - যখন ওনারা ভালবাসা প্রসুত কারনে কোন মতামত দেবার প্রয়োজন অনুভব করে এবং সেই মতামত দেবার সময় পর্যাপ্ত চিন্তাভাবনা করেই দেয়। উদ্দেশ্য আল্লাহ ও আল্লাহর রাসুলের শিক্ষা অনুযায়ী 'মুসলিম' ভাইবোন সমৃদ্ধ জামায়াতে ইসলামের কল্যান কিংবা জামায়াতের ইসলামীর ভাইবোন দের আখেরাতের মংগল প্রত্যাশা। অন্য কিছু নয়। এতে ভুল হতেই পারে - কিন্তু অসৎ উদ্দেশ্য প্রসুত নয় বলেই আমার মনে হয়েছে।
কিন্তু তাফহীমুল কোরান কিংবা ঐ পার্টিকুলার এরিয়ার লিটারেচার (যা ঐহী নয় - এবং মওদুদি রঃ মানুষ ছিলেন) এর বাহিরে আরো অসংখ্য লিটারেচার (যা ও ঐহী নয়)আছে ইসলামে। আমার মনে হয় একজন মুসলমান হিসাবে আমরা যত বেশী (ঐহী নয়) অমন বিষয়কে রেফার না করে - সরাসরি কোরান ও হাদীস এর দিকে রেফার করবো এবং যৌক্তিক ও রেফারেন্স সহ ব্যাখ্যা দেব - তত বেশী কন্ট্রোভার্সি এড়িয়ে একে অপরকে শেখাতে পারবো, জানাতে পারবো, ভালবাসতে পারবো, একে অপরের নাজাত এর উসিলা হতে পারবো।
পৃথিবীতে জামায়াত কিংবা কোন মানুষ্য সৃষ্ট ইসলামী সংগঠন সাফল্য পেল, কি পেল না কিছুই আসে যায় না, আখেরাতে জামায়াত ও এর সাথে জড়িত ভাই বোনরা সাফল্য পেল কিনা সেটা বড় কথা।
আমাদের সিনসিয়ারলী দেখা উচিত পৃথিবীতে আল্লাহ ও তার রাসুল সঃ সৃষ্ট ইসলাম সাফল্য পেল - কি পেল না। ইসলামের সাফল্য আমাদের সুখ দেবে। কিন্তু মানুষ্য সৃষ্ট বিভিন্ন ইসলামী মতবাদ, সেক্ট কিংবা সংগঠনের সাফল্য আমাদের সুখ কিংবা শান্তি দেবে কেমন করে?
ফাইনালী - মক্কী জীবনের যে উদাহরন আপনি দিলেন - তা কি লজিক্যালী দূর্বল হবে না - ঐ উদাহরনের কাছে যেখানে কোরায়শরা ওসমান রাঃ কে হত্যা করেছে এমন মেসেজ আসায় হুদায়বিয়ায় প্রায় ১২০০/১৪০০ মুসলিম এই মর্মে বাইয়াহ করে যে তারা নিশ্চিহ্ন হবে তথা যুদ্ধে জড়াবে তবুও ওসমান রাঃ এর অন্যায় হত্যা এক্সেপ্ট করবে না।
এ্যানী ওয়ে আমার এ লিখা আপনাকে হার্ট করার উদ্দেশ্যে নয়, কিংবা জামায়াতে ইসলামের প্রতি কোন বিরাগের কারনে ও নয়। সিম্পলী অর্ডিনারী মুসলিম সেন্স হতে লিখা।
আপনার সুন্দর মন্তব্য পড়ে রিএয়াক্ট করার সুযোগ নেই। আপনার যেটা ভিউ আমিও সেদিকটা খেয়াল করে লেখার চেষ্টা করেছি কিন্তু লেখার সেরকম যোগ্যতা না থাকায় বিষয়টি ফুটিয়ে তুলতে পারিনি।
লেখার মধ্যে দাম্ভিক্তা ফুটে উঠলে সে দুর্বলতা আমার।
আমি বলতে চাইনি যে জামায়াতই সঠিক তাই জামায়াতের সিলেবাসভুক্ত বই পুস্তক এবং কর্মসূচীতে যেসকল ত্রুটি আছে যা জামায়াতের লোকদের চোখে পরছেনা তা ধরিয়ে দেয়ার আবেদন জানিয়েছি।
আল্লাহ আমাদের খোলামনে শুধুমাত্র দীনের খাতিরে সবার মধ্যে ভালোবাসা সৃষ্টি করে দিন। আমিন।
আমীন।
وَمَنْ جَاهَدَهُمْ بِلِسَانِهِ فَهُوَ مُؤْمِنٌ، وَمَنْ جَاهَدَهُمْ بِقَلْبِهِ فَهُوَ مُؤْمِنٌ،
وَلَيْسَ وَرَاءَ ذَلِكَ مِنَ الْإِيمَانِ حَبَّةُ خَرْدَلٍ»
যে তার হাত দ্বারা জিহাদ করল সে ঈমানদার, এবং তার জিহ্বা দ্বারা জিহাদ করল সে ঈমানদার, ঈমানদার, যে তার হৃদয় দ্বারা জিহাদ করল সে ঈমানদার, এর বাইরে একটি সরিষা পরিমান ও ইমান নাই
মন্তব্য করতে লগইন করুন