ঈদ মুবারক! ঈদ মুবারক! ঈদ মুবারক!
লিখেছেন লিখেছেন আবু জারীর ১৭ জুলাই, ২০১৫, ০১:৫৪:০৫ রাত
পবিত্র রমজান মাস শেষ হয়ে গেছে। ইতি মধ্যেই ইন্দনেশিয়া ও সৌদি’আরব সহ বিশ্বের অনেক স্থান থেকেই শাওয়ালের চাঁদ দেখা গেছে। তাই আগামি কাল জুমাবার ১৭ই জুলাই’২০১৫ শাওয়াল মাসের এক তারিখ।
অতএব ‘ঈদ’।
ঈদ মুবারক! ঈদ মুবারক! ঈদ মুবারক!
আমরা জানি ঈদের দিন রোযা রাখা হারাম। দেশ ও দেশের সীমার রেখার দোহাই দিয়ে আমরা হারাম দিনে রোজা রাখব কিনা এবং রোজার দিনে রোজা ছেড়ে দিব কিনা সেই সিদ্ধান্ত নেয়া এখন সময়ের দাবী।
এক সময় ইংরেজী শিক্ষা করা হারাম ছিল আর এখন ইসলামের স্কলারগণ পাল্লা দিয়ে ইংরেজী শিখছেন, কারণ ইংরেজীই এখন বিশ্বব্যাপি দাওয়াতি কাজের প্রধান মাধ্যম।
যদি এই সত্যটা আমরা ১৭৫৭ সালের ২৩শে জুনে সিরাজুদ্দৌলার পতনের সাথে সাথেই বুঝতাম তাহলে ২০০ বছর ইংরেজদের ২৩ বছর পাকিস্তানীদের এবং ৪৫ বছর গোপালীদের গোলামী করতে হতনা বরং উপমহাদেশে অনেক আগেই ইসলামী হুকুমত কায়েম হয়ে যেত।
ইন্দনেশিয়া ও সৌদি’আরবের মাঝে অবস্থান করেও বাংলাদেশ সহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে কাল ঈদ নয় কেন?
অথচ পূর্ব এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য এবং পাশ্চাত্যের মুসলমানরা কিন্তু কাল অর্থাৎ জুমাবার ১৭ই জুলাই’২০১৫ তারিখে ঈদ করবে।
তাই ভাবছি দেশে ফোন করে পরীবারের সকলকে বিশ্বের সব মুসলমানদের সাথে মিল রেখে কালই ঈদ করতে বলব কি না?
চাঁদ দেখার পর বা চাঁদ দেখা গেছে বলে খবর পাওয়ার পর ঈদ না করে রোযা রাখা কি বৈধ? শাওয়ালের চাঁদ দেখার পর বা চাঁদ দেখা গেছে বলে খবর পাওয়ার পরেও রোজা রাখা কি হারাম নয়?
ইবাদতের ক্ষেত্রে মুসলমানদের কাছে রাষ্ট্রিয় সীমা রেখার কি কোন মূল্য থাকতে পারে? পরিবর্তনশীল রাজনৈতিক সীমারেখার দোহাই দিয়ে আল্লাহর হুকুম লঙ্ঘন করা কি শরিয়ত সম্মত?
রজনৈতিক বা রাষ্ট্রিয় সীমা রেখা মুলমানদের জন্য কোন অন্তরায় হতে পারেনা। কারণ পুরা দুনিয়ার মালিক একমাত্র আল্লাহ এবং আমরা তাঁরই ইবাদত করি। অতএব আসুন আমরা সবাই মিলে একই দিনে সারা বিশ্বের মুসলমানেরা রোযা শুরু করি এবং একই দিনে ঈদ করি।
তবে অবশ্যই স্থানীয় সময় অর্থাৎ সুবেহ সাদিকের পূর্বে সাহরী ও সূর্যাস্তের সাথে সাথেই ইফতার করতে হবে।
নামাযও কিন্তু আমরা সে ভাবেই পড়ি যেমন স্থানীয় সময়ে সূর্যদয়ের পূর্বে ফযর, দ্বিপ্রহরের পরে যোহর, তৃতীয় প্রহরের পরে আসর, সূর্যাস্তের পরে মাগরীব এবং মধ্য রাতের পূর্বে এশা।
অতএব, একই দিনে রোযা শুরু এবং ঈদ করার বিপরীতে কেউ আবার এমন যুক্তি দিবেন না যে একই দিনে রোযা রাখতে হলে একই সময়ে ইফতারিও করতে হবে।
চাঁদ দেখে তারিখ গণনা করা হয়। আর তারিখের ডিউরেশান ২৪ ঘণ্টা তাই সে বিষয়টা খেয়াল রাখবেন।
সূর্যের অবস্থানের হিসেবেই কিন্তু আমরা একই সময়েই ইফতার, সাহরী ও নামায পড়ি আর ঘড়ির সময়টা কিন্তু আপিক্ষিক। ঘড়ি সূর্যের হিসাবে ঘোড়েনা ঘোড়ে ব্যক্তির করা সেটিং এর উপরে।
একই ভৌগলীক সীমার মধ্যেও কিন্তু ঘড়ির কাটায় নামায, ইফতারি ও সাহরীর সময়ের মধ্যে তারতম্ম আছে। যেহেতু একই রাষ্ট্রসীমার মধ্যে একই দিনে রোযা রাখার পরেও ঘড়ির টাইমের উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন সময় ইফতারী, সাহরী এবং নামায পড়া হয় সেহেতু একই দিনে বিশ্বব্যাপী কেন নয়?
ইবাদতের ব্যাপারে ঘড়ির সময়টা কিন্তু আপেক্ষিক মূল ব্যাপারটা কিন্তু সূর্যের অবস্থানের উপর নির্ভরশীল।
ইমাম আবু হানিফা (রহঃ) এর অভিমতঃ-
১. যে কোন একটি দেশে নতুন চাঁদের উদয় প্রমানিত হলে বিশ্বের সকল মানুষের উপর তার অনুসরন জরুরী হয়ে পড়ে [উৎস: আল মুখতার ১ম খন্ড ১২৯ পৃঃ / ফতহুল কাদীর (শেরহে ফাতহুল কাদীয়সহ) ১ম খন্ডঃ পৃ ২৪৩/মারাকীন ফালাহ পৃঃ ৫৪০-৫৪১/ আল-বাহরুর রায়েক ২য় খন্ড পৃঃ ২৯০]
২. আর উদয়ের স্থান ও সময়ের বিভিন্নতার কোন গুরুত্ব নেই । (উৎসঃ কাদী খান ১ম খন্ডঃ পৃঃ ১৯৮/ মাজমাউল আনহুর ১ম খন্ড পৃঃ২৩৯ / আল মুখতার ১ম খন্ড পৃঃ ১২৯ আল-ফাতওয়া আল হিন্দিয়াহ ১ম খন্ড, পৃঃ১৯৮/ আল বাহরুর রায়েক ২য় খন্ড পৃঃ ২৯০/ ফাতহুল কাদীর ২য় খন্ড পৃঃ ২৪৩/রদ্দুল মুহতার (শামী) ২য় খন্ড পৃঃ ৩৯৩)
৩. যদি পৃথিবীর পশ্চিমাংশের বাসিন্দারা রমজান মাসের নতুন চাঁদ দেখেন তাহলে তাদের এ দেখাতেই পূর্বাংশের লোকদের উপর (রোজা ও ঈদ) ওয়াজিব হয়ে যাবে (উৎসঃ আল-বাহুরুর রায়েক ২য় খন্ড পৃঃ ২৯০ / মাজমাউল আনহুর ১ম খন্ড ২৩৯ পৃঃ আল হিন্দিয়াহ (ফাতোয়ায়ে আলমগীরী) ২য় খন্ড ১৯৮-১৯৯ পৃঃ। ফাতহুল কাদীর ২য় খন্ড ২৪৩ পৃঃ। বাজাজিয়াহ ৪/৯৫)
[url href="http://www.monitor-bd.net/blog/blogdetail/detail/9430/Hamza/67187#.VagLALVsRzk" target="_blank"]রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি অসাল্লাম ইরশাদ করেন-
“চাঁদ দেখার ভিত্তিতে তোমরা রোযা রাখ এবং চাঁদ দেখার ভিত্তিতে তোমরা রোযা ছাড়, (ঈদ কর)” । [(সহীহ মুসলিম অধ্যায় ৬ - কিতাবুস সাওম, হাদীস নং ২৩৬৪, ২৩৬৮, ২৩৬৯, ২৩৭৮, ২৩৭৯, ২৩৮০, ২৩৮১) অথবা (মুসলিম শরীফ, অনুবাদ – আ.স.ম. নুরুজ্জামান, বাংলাদেশ ইসলামিক সেন্টার, খন্ড ৪, অধ্যায় ১৪ - কিতাবুস সাওম, হাদীস নং ২৩৬৭, ২৩৭১, ২৩৭২, ২৩৮২, ২৩৮৩, ২৩৮৪, ২৩৮৫) (সহীহ বুখারী, অধ্যায় ৩০- কিতাবুস সাওম, হাদীস নং ১৯০৯)]
[/url]
জাকার্তা পোষ্টঃ Idul Fitri falls on Friday,
says govt
বিষয়: আন্তর্জাতিক
১৯৭৮ বার পঠিত, ১৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ঈদ মুবারক।
আমাদের জন্য শনিবার ঈদ মুবারক আশা করা যায়, দেখা যাক আমাদের আল-হিলাল কমিটি কি করে।
ধান্যবাদ
বাংলাদেশে ঈদ মুবারক কবে? মুমিনদের ঈদেও বিভক্তি?? বরাবরের মত ঈদ জামাতে জেহাদী বোমা না ফুটলে মুমিনের ঈদ কিন্তু সহিহ হবে না।
মুমিনদের ঈদ জামায়াত দেখে যাদের অন্তরে আগুণ লাগে তারা যদি কোন অপকর্ম না করে তাহলে কোন সমস্যা হবেনা ইনশা'আল্লাহ।
ইনশা'আল্লাহ অচিরেই বিভক্তি দূর হয়ে যাবে।
ধন্যবাদ।
আমিন।
সৌদি আরব ও ইন্দোনেশিয়ার মাঝে বাংলাদেশ অবস্থান করলেও বাংলাদেশে ঈদ হয় তাদের পরের দিন । ইন্দোনেশিয়ানরা কি সৌদিদের সাথে মিলিয়ে ঈদ করে যেমনটা আমাদের বাংলাদেশের কিছু কিছু গ্রামে আজ হচ্ছে ? নাকি তারা চাঁদ দেখে তারপর করে ?
দ্বিতীয়ত নেপালের ভূমিকম্পের খবর নাকি এক মাস পূর্বেই আমেরিকা দিয়েছিল।
আধুনিক যন্ত্র ব্যবহার করে চাদের অবস্থান নির্ণয় করা কঠিন কিছু বলে মনে হয়না।
দরকার সমন্বিত উদ্বগ আর নেত্রীবৃন্দের সিদ্ধান্ত।
শুনলাম ওমানেও নাকি সৌদির সাথে একই দিনে ঈদ হয় নি!
চিন্তু করে দেখুন তো বিষয়টা কতটা বোকামি। দেশের সীমা নির্ধারিত হয় একটা বাউন্ডারি লাইনের মাধ্যমে। এক পার্শ্বে সৌদি'আরব আর অন্য পার্শ্বে ওমান। বাউন্ডারি লাইনের এপারের মানুষ ঈদ করছে আর ওপারের মানুষ রোজা রাখছে। এক বিংশ শতাবধিতে এসেও মুসলমানরা যদি পিছিয়ে থাকে তাহলে ক্যামনে হবে?
ধন্যবাদ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন