শামচুলের চুল (গল্প-পঞ্চম পর্ব)
লিখেছেন লিখেছেন আবু জারীর ১৪ জানুয়ারি, ২০১৩, ১২:৫১:১৮ দুপুর
(চতুর্থ পর্ব) ভাগ্নীদের একটাই দাবী তাদেরকে কথাবলা ময়না পাখি ধরে দিতে হবে। শামচুলও রাজি কিন্তু বটগাছের মগডাল থেকে ময়না পাখির বাচ্চা নিয়ে আশা কি এতই সহজ?
ব্যাপরটা এত সহজ না কিন্তু ভাগ্নীদের সাথে উর্মিলাকেও তো নিজের পারঙ্গমতা দেখাতে হবে। তাই সবচেয়ে বড় বটগাছের মগডাল থেকে কথা বলা ময়না পাখির বাচ্চা পেড়ে দেয়ার এই দুসসাহসী ওয়াদা।
এতদিন বাবার ভয়ে এত বড় গাছের মগডালে উঠতে সাহস করেনি কিন্তু ভাগ্নীরা যখন জালাতন করছিল তখন শামচুল বল্ল, যদি তোমাদের নানা অনুমতি দেয় তাহলেই কেবল অতবড় গাছের মগডালে উঠব অন্যথায় নয়।
ছোট জেরি আর চেরী তাদের নানা ভাইকে নিজেদের আবদারের কথা জানালে বাধ্য হয়েই সে এত বড় গাছে চড়ার অনুমতি দেন।
মনের আনোন্দে জেরি-চেরীকে ময়না পাখির বাচ্চা এনে দেয়া এবং উর্মীলাকে বাহাদুরী দেখানর জন্য লাফাতে লাফাতে গাছে উঠল গেল, কিন্তু বিধী বাম!
গাছে উঠে দেখেল, ময়না পাখির বাচ্চাগুলো ইতিমধ্যে বড় হয়ে গেছে এবং উড়তেও শিখেছে, তাই ধরার আগেই সব গুলো বাচ্চা ফুঁরুৎ করে উড়ে গেল। ফলে ময়না পাখির বাচ্চা আর ধরা হল না।
ময়না পাখির বাচ্চাগুলোর উড়ে যেতে দেখে উর্মিলার মুচকি হাসি আর জেরী-চেরীর অনড় অবস্থান শামচুলকে বিপাকে ফেলে দিল।
যে করেই হোক একটা বাচ্চা ধরতেই হবে। পাখির বাচ্চা না ধরতে পারলে নিজের ইজ্জত তো যাবেই সাথে ভাগ্নীদের কান্না কাটি থামানর কথা ভেবে যখন অস্থির ঠিক তখনই গাছের অন্য ডালে বড়সর আর একটা পাখির বাসার সন্ধান পাওয়া গেল।
এক দিকে জেরী-চেরীকে খুশি করা আর অন্য দিকে উর্মীলার কাছেও নিজের বাহাদূরী ফলানোর খায়েশ এবার বুঝি স্বার্থক হতে যাচ্ছে।
চুপিসারে ধিরে ধিরে শামচুল যেই বাসার ভিতরে হাত দিয়েছে অমনি একটা চিল তার ধারাল নখড়যুক্ত চঞ্চু দিয়ে ন্যাড়া মাথাটাকে খামচে দিল।
ওরে মাগো বলে গাছ থেকে পড়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল বটে কিন্তু অতি কষ্টে সে নিজেকে সামলে নিল। বাসাটা আসলে ময়না পাখির ছিলনা ছিল চিলের।
চিলের বাসায় কেউ হাত দিবে আর চিল তাকে আক্রমন করবেনা এমনটা ভাবাই যায়না। দুইটা চিল একটা ন্যাড়া মাথায় সমানে তাদের সূঁচালো নখড়ের চঞ্চু দ্বারা আঁচড়িয়ে দিচ্ছিল।
উপায়ন্ত না দেখে গাছের একটা ডাল ভেঙ্গে মাথার উপর রেখে, ধিরে ধিরে গাছের মগডাল থেকে নেমে আসছিল। চিল দুটিও তাদের আক্রমন অব্যহত রেখেছিল কিন্তু এক হাতে মাথার উপর পাতা সহ একটা ডালের ছায়া ধরে রাখায় চিলের আক্রমন তেমন কার্যকরী হচ্ছিলনা।
শামচুল যখন নিচে নেমে আসল তখন তার ন্যাড়া মাথা থেকে রীতিমত রক্ত ঝড়ছিল। ন্যাড়া মথায় কমপক্ষে চিলের চঞ্চুর বিশটা আঁচড় লেগেছিল। প্রায় সবগুলো থেকেই রক্ত ঝড়ছিল।
শামচুল, এতদিন পড়ে উপলব্ধি করল যে তার মাথায় চুল না থাকায়া সে কতবড় বিপদের সম্মুখিন হয়েছে।
(চলবে.....)
বিষয়: সাহিত্য
১২৩০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন