ধারাবাহিক গল্পঃ সরকারী খরচে বিয়ে!! (সপ্ত দশ পর্ব)
লিখেছেন লিখেছেন আবু জারীর ০৯ মে, ২০১৫, ০৯:৩৬:৩৪ রাত
ধারাবাহিক গল্পঃ সরকারী খরচে বিয়ে!! (সপ্ত দশ পর্ব)
পূর্ব সূত্রঃ - তিনটা পরিবারের দায়িত্বই যখন আমার উপর তখন সিদ্ধান্তও আমাকেই নিতে হবে। আশা করি তোমরাও আমার সাথে একমত হবে। আমি ভাবছি সাদীর সাথে শায়লাকে বিয়ে দিব আর সাদিয়াকে ওয়াকিলের সাথে বিয়ে দিয়ে আমার পুত্রবধূ করব।
- হ্যারে আমজাদ, চাকুরীতে তুমি আমার জুনিয়র ছিলে কিন্তু সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে তুমিই ছিলে সেরা। সেদিন তোমার দৃঢ়তার কারনেই সাদীকে এঙ্কাউন্টারে দিয়েও পরে সিদ্ধান্ত বাতিল করেছিলাম। আবার আজ তোমার সিদ্ধান্তেই সাদীর হাতে আমার কলিজার টুকরা সন্তানকে তুলে দিতে হচ্ছে। হে আল্লাহ তুমি আমাকে মাফ কর। শায়েলা আর তার মা রাজি থাকলে আমার কোন আপত্তি নাই, তবে সবার আগে সাদী এবং তার মায়ের মতামত নেয়াটা জরুরী।
- আমার সাদী, আপনাদের মত উপেক্ষা করতে পারবেনা। শায়েলা মামণি যদি অমত না করে তাহলে আমি ওকে আমার মেয়ের মর্যাদা দিয়ে, পুত্রবধূ করে সারা জীবন আগলে রাখব ইনশা’আল্লাহ। আর সাদিয়ার ব্যাপের আপনাদের মতামতের উপর আমি দ্বিমত করব না।
কথায় আছে না? ‘যার বিয়ে তার খবর নাই, পাড়া পড়শির ঘুম নাই’ এক্ষেত্রেও হয়েছে অনেকটা তাই! সাদী আর ওয়াকিলের কাছে কোন খবর নাই, অথছ তাদের বিয়ের কথা পাকাপকি হয়ে গেছে! ওয়াকিল আর সাদিয়ার যেহেতু কোন ঝামেলা নাই তাই তাদের বিয়ে, যেকোন শুভ লগ্নে সম্পন্ন করে ফেলার সিদ্ধান্ত হল। দেশে যেহেতু হরতাল অবরোধ চলছে তাই সাদিয়া এবং তার মাকে গোপালগঞ্জে আমজাদ শেখ সাহেবের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হবে এবং সেখানেই বিয়ের কাজ সম্পন্ন করার ব্যাপারে সবাই মতামত দিল।
সাদী আর শায়লার বিয়ের জন্য আরও কিছু সময় নিতে হবে। সাদী যেহেতু অনেকগুলো মামলার আসামি তাই আমজাদ শেখ সাহেব ওগুলো থেকে সাদীর নাম কাটিয়েই বিয়ের কাজ সম্পন্ন করার প্রতিশ্রুতি দিলেন।
ড্রইং রুমে যখন শায়লা আর সাদিয়ার বিয়ের কথা উঠেছে তখন তারা দুজন আস্তের উপর কেটে পরেছে। শায়লার রুমে গিয়েই সাদিয়া সরাসরি সাদির মোবাইলে ফোন করলঃ
- হ্যালো, আসসালামু’আলাইকুম, সাদিয়া কেমন আছিস, মা কেমন আছে?
- ওয়ালাইকুউম আসসালাম, ভাইয়া আমি ভালো আছি, মাও ভালো আছেন, শায়লা আপু, আঙ্কেল এবং আন্টিও ভালো আছে। তুমি কেমন আছ?
- আলহামদুলিল্লাহ্ ভালো।
- জান ভাইয়া, আমজাদ শেখ চাচা তার আরেক ছেলের জন্য শায়লা আপুর বিয়ের কথা পাকা পাকি করে ফেলেছে। আচ্ছা ছেলেটা দেখতে কেমন, তার সাথে মানাবে তো?
- কি বলছিস, এসব?
- হ্যা, ঠিকই বলছি। বিশ্বাস না হলে শায়লা আপুকে জিজ্ঞেস করতে পার, সে আমার পাশেই আছে।
- না, থাক।
- আর হ্যা তোমার কোন ইচ্ছে থাকলে আমাকে বলতে পারো। দরকার হলে আমি তোমার পক্ষে ওকালতি করতে পারি। তবে সে জন্য উপযুক্ত ফিস দিতে হবে কিন্তু।
- না মানে, ওয়াকিলতো শায়লার ক্লাসমেট এবং সমবয়সী। বয়সে ওরা একই এবং পড়া লেখায়ও সমসাময়িক, দুজনের সাব্জেক্ট ভিন্ন তবে অন্যান্য দিক ঠিক আছে। ওয়াকিল বেশ হ্যান্ডসাম এবং চটপটে, ছাত্রও ভালো, নাহলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কি ইংরেজীতে পড়তে পারত?
- ইংরেজীতে তো আমিও পড়ি। আমাকে তো তুমি গুরুত্ব দাওনা।
- হয়েছে, হয়েছে, তুইও ভালো ছাত্রী তবে ওয়াকিলের সমকক্ষ নস।
- হ্যা তাতো বলবেই। দেখে নিও একদিন তোমার ঐ ওয়াকিলের চেয়ে ভালো রেজাল্ট করে দেখিয়ে দিব ইনশা’আল্লাহ।
- তুই বক বকানি থামাবি?
- বুজেছি, এখনতো আমার কথা তোমার কাছে বকবকানীই মনে হবে। শায়লা আপুকে আমজাদ চাচা তার ছেলের জন্য পছন্দ করেছে সে কারণে কিছুটা হলেও যে তোমার কলিজার পানি শুঁকিয়ে যাচ্ছে তা কি মনে করছ আমি বুঝিনি না?
- এতই যখন বুঝেছিস তাহলে মুখ খুলে মুরুব্বিদেরকে গিয়ে কেন বলছিস না যে শায়লা আর ওয়াকিলের বয়স সমান। বিয়ের ক্ষেত্রে পাত্র পাত্রীর বয়সের মধ্যে কম পক্ষে ৪/৫ বছরের ব্যাধান হওয়া ভালো।
- ওরে বাবা, এত দেখছি ডুব দিয়ে পানি খাচ্ছ, তার চেয়ে বরং আংকেলদের গিয়ে সোজা সুজি বলি যে আপনারা আমার ভাই সাদী সাইয়্যেদকেই শায়লা আপুর পাত্র হিসেবে পছন্দ করুন, সেই পাত্র হিসেবে শায়লা আপুর বেশী যোগ্য, তাদের দুজনের সাবজেক্টও একই।
- হয়েছে, হয়েছে তোর অত নেকামো করতে হবেনা। যার বিয়ে সেই যদি আমজাদ চাচার ছেলেকে পছন্দ করে তাহলে শুধু শুধু আমি নাক গলাতে যাব কেন?
- থাক তোমার নাক গলাতে হবেনা, নাও শায়লা আপুর নিজের মুখ থেকেই শোন কি সিদ্ধান্ত হয়েছে।
(চলবে)........
বিষয়: সাহিত্য
১৩৪৬ বার পঠিত, ১৭ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আপনি পড়েছেন এবং মন্তব্য করে অনুভূতি ব্যক্ত করেছেন সেজন্য ধন্যবাদ।
এই পর্বে টেনশন কম ছিলো! ভালো লাগলো! শুকরিয়া!
সবসময় মানুষকে টেনশানে রাখা মনে হয় ঠিক না।
ধন্যবাদ আপু।
ভালো থাকুন।
ধন্যবাদ ভাই শুরু থেকে সাথে থেকে উৎসাহ দেয়ার জন্য।
আল্লাহ আমাদের সকলের জীবনের উদ্দেশ্য এক করে দিন যে উদ্দেশ্যে তিনি আমাদের সৃষ্টি করেছেন।
আমারও তাই মনে হচ্ছে। শুভ কাজ যত তারাতারি করা যায় ততই ভালো।
ধন্যবাদ আপু।
ধন্যবাদ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন