ধারাবাহিক গল্পঃ সরকারী খরচে বিয়ে!! (অষ্টম পর্ব)
লিখেছেন লিখেছেন আবু জারীর ২৪ মার্চ, ২০১৫, ০৭:৫৪:৫৪ সন্ধ্যা
ধারাবাহিক গল্পঃ সরকারী খরচে বিয়ে!! (অষ্টম পর্ব)
পূর্ব সূত্রঃ কোন ছেলের মুখে মিসেস জামান এই প্রথম মা ডাক শুনল। তার অন্তরটা ভরে গেল। আহা কি মধুর ডাক! শহরের ছেলে মেয়েরা কিযে কালচার শিখেছে? মাম্মি, ড্যাডি হাবি জাবি। মা ডাকে যেমন মনটা ভরে যায় অন্য ডাকে তেমনটা হয়না।
ফ্রেশ হয়ে, আসরের নামায পড়ে, শায়লা, জামান সাহেব, মিসেস জামান আর সাদী পারিবারিক বৈঠকে বসল। কত জন মেহমানের আয়োজন, কমিউনিটি সেন্টার বুকিং, মেহমানদের অভ্যর্থনা ও আপ্যায়ন সহ সাদী মোটামুটি একটা ছক করে ফেল্ল। সব মিলিয়ে যা কাজ তাতে সাদীর পক্ষে একা কুলিয়ে ওঠা প্রায় অসম্ভব। ২/১জন সহযোগী হলে ভালো হত।
- খালুজান? আমাকে সাহায্য করার মত আর কি কেউ আছে?
- না বাবা, তেমন কেউ নাই তবে তোমার ২/১ জন বন্ধুকে বলে যদি রাজি করাতে পার তাহলে বেশ উপকার হত।
- খালুজান, আমার বন্ধুরা রাজি হবে মানে? একশ বার হবে। সেই রাতে যে দুজন পালিয়ে বেচেছিল আমি সেই দুটোকেই ডান্ডাবেরী লাগিয়ে আপনার সামনে হাজির করব।
- লজ্জা দিচ্ছ কেন বাবা।
- পুলিশি পোষাকে থাকলে তেমন ভুল করতামনা, কিন্তু আপনি যে এখন বাবার জায়গা দখল করে নিয়েছেন। বাবার সামনে সন্তানেরা যে কোন অবস্থায়ই হাজির হতে পারে।
বাবা ডাক শুনে জামান সাহেবের চোখ দুটোতে একটা আনন্দের দ্যুতি খেলে গেল। শায়লার জামাইও হয়ত তাকে এভাবে আব্বা বলে সম্ভোদন করবে সেই সুখ চিন্তায়।
বিয়ের আয়োজন ধুমধামে চলছে। ইতিমধ্যে সাদীর মা-বোনও এসে সেই আনন্দের হিস্যা হয়ে গেছে। সাদিয়া, শায়লার সব কাজেই সহযোগিতা করছে আর বার বার ভাবছে কেন যে ভাইকে বলে শায়লার সাথে আগে দেখা রকল না। শায়লা ঠিকই সব কাজ করছে কিন্তু তার মনেও যে একটা চাপা বেদনা প্রতিনিয়ত কুড়ে কুড়ে খাছে তা সাদিয়া ঠিকই বুঝতে পারছে। শায়লা যে সাদীর চলার পথপানে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে, তাও সাদিয়ার চোখ এড়ায় না। সাদীর মাও যে বিষয়টা লক্ষ করেনি তা নয়, কিন্তু যাকে নিয়ে ঘটনা সেই সাদীরই কেবল এবিষয়ে কোন ভাবন্তর নাই!
জুমার পর পরই বিয়ের শানাই বাজবে, সে মতে সব কিছুই ঠিক ঠাক। বরযাত্রীদের অগ্রবর্তি দলটা, ২টা বাসে করে ইতিমধ্যে শ’খানেক মেহমান, কমিউনিটি সেন্টারে এসে পৌছে গেছে। সাদী ও তার বন্ধুরা তাদের অভ্যর্থ্যনা জানাচ্ছে। যারা জুমার নামাযে যাবে তাদের ওযুর ব্যবস্থা করে দিয়ে মসজিদের পথ দেখিয়ে দিচ্ছে। বর আসবে প্রাইভেট কারে করে, আর তার সাথে থাকবে আরও গোটা চারেক মাইক্র। বরের কলীগ ও বন্ধুদের অনেকেই ঢাকা থেকে অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করবে।
জুমার নামাযের পরপরই সবাই কমিউনিটি সেন্টারে চলে এসেছে। শায়লাও কনের সাজে নির্ধারিত স্থানে আসন গ্রহণ করেছে। সাদিয়া ও শায়লার বান্ধবীরা তাকে ঘিরে রেখেছে। অবশ্য বরের ঢাকার আত্মীয় স্বজনের মধ্য থেকে যেসকল মেয়েরা এসেছে তারাও শায়লার বান্ধবীদের সাথে একই আসরে বসে খোশ গল্পে মত্ত আছে।
কাজী সাহেবও এসে পৌছেছে। এখন শুধু বরের অপেক্ষা। জুমার আগেই বর ও তার গাড়ির বহর কাওরা কান্দি ফেরিঘাটে চলে এসেছে। হয়ত কিছুক্ষণের মধ্যেই তারাও পৌছে যাবে। বরের বাবা ও তার বন্ধুরা ফোনের মাধ্যমে তাদের অস্থান সম্পর্কে ৫/১০ মিনিট পর পরই খবর নিচ্ছে এবং উপস্থিত মেহমানদের আপডেট দিচ্ছে। পদ্মা পাড়ি দিয়ে বরের গাড়ি বহর ইতি মধ্যেই মাওয়াঘাটে অবতরণ করেছে।
সবার ভিতরে একটা টান টান উত্তেজনা বিরাজ করছে। এই বুঝি বর এল, এই বুঝি বর এল। কিন্তু না আসরের সময় হয়ে গেল কিন্তু বর এলনা। আসবে কিভাবে? একদল উত্তেজিত জনতা, ‘দৈনিক জনতার কণ্ঠ’ সম্পাদক আতিক খান মাসুমের বাড়ি ঘেড়াও করে রেখেছে সেই সাথে ঢাকা-মাওয়া মাহা সড়কও! জনতার অবরোধ ঠেলে বরের গাড়ি যে কখন ঢাকায় পৌছুবে তা কেউ জানে না। শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্ত হল উপস্থিত মেহমানদের আপ্যায়ন করে ববে)য় দেয়া হবে। যারা থাকার থাকবে আর যারা যেতে চায় তারা চলে যাবে।
(চলবে)
বিষয়: সাহিত্য
১৪৫১ বার পঠিত, ১৮ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
তাছাড়া এটাও তো দেখতে হবে বিয়েটা শেষ পর্যন্ত কার সাথে হয় ।
ধন্যবাদ ভাইয়া ।
সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।
দারুন লাগছে, সাথেই আছি, লিখতে থাকুন। ধন্যবাদ।
সাথে থাকার জন্য আপনার প্লেটে একটা অতিরিক্ত রোস্ট।
আর আমি কিন্তু দাঁড়িয়েছি বর দেখার জন্য,,,,,
চলতে থাকুক ইনশাআল্লাহ এখন থেকে পাবেন,,,
সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।
আমার খেয়ে দেয়ে কাজ নেই! নাম আমার, কাম অন্যো জনার! সোনাবান মন ভাগা দিয়েছে রাখছে অন্য জায়গায়, আমার জন্য শূন্য মরুভূমি, হবে না হবে না। চির আকাংক্ষিত পুরুষটির নামই ঘোষণা করা হোক।
কষ্ট করে সাথে থাকার জন্য।
গন্ডগোলটা বাজিয়ে দিলেন ভাই
নিশ্চয় এবার ঘুরে যাবে বিয়ের সানাই।
ধন্যবাদ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন