সরকারী খরচে বিয়ে!! (প্রথম পর্ব)
লিখেছেন লিখেছেন আবু জারীর ০২ মার্চ, ২০১৫, ১০:২৮:১৯ সকাল
সরকারী খরচে বিয়ে!! (প্রথম পর্ব)
অবিবাহীত / অবিবাহীতা ব্লগারদের প্রতি উৎসর্গীত
বাড়িতে আনন্দের বন্যা বইছে, অথছ যাকে কেন্দ্র করে এত আনন্দ, মিষ্টি খাওয়া খাওয়ি তার মনে কোন আনন্দ নাই! সাদীর রেজাল্ট হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্সে প্রথম শ্রনীতে প্রথম হয়েছে, তাও আবার ল’এর মত একটা প্রেস্টেজিয়াস সাব্জেক্টে। নিন্ম মধ্যবিত্ত পরিবারের জন্য এটা যে কত বড় আনন্দের খবর তা বলে বুঝান যাবেনা। রেজাল্ট পাওয়ার পর থেকে গত দুইদিন ধরে সাদির মনটা বেশ গম্ভীর! কেউ তাকে কিছু জিজ্ঞেস করতেও সাহস পাচ্ছেনা!
মনে আনন্দ থাকবেই বা কি করে? যে বাবার অক্লান্ত পরিশ্রম আর কষ্টে সাদির এ সাফল্য সে বাবা মুক্তি যোদ্ধা হয়েও রাজাকারীর তকমা নিয়ে অকালেই দুনিয়া থেকে বিদায় নিয়েছে! অন্য দিকে যে সকল বন্ধু-বান্ধব, বিভিন্ন ভাবে সহায়তা করেছে, উৎসাহ দিয়েছে, দোয়া করেছে সেই বন্ধুরাও আছে দৌড়ের উপরে, কে কোথায় আছে তাও জানা নাই, এমনকি মোবাইলেও কাউকে খবরটা পর্যন্ত দেয়া যাচ্ছেনা, তাহলে সাদী আনন্দ করে কিভাবে?
পরীক্ষা শেষ করেই সাদি গ্রামের বাড়িতে চলে এসেছিল। না, ঠিক চলে আসেনি, আসতে বাধ্য হয়েছিল। ছাত্র সমিতির নাম গন্ধ যাদের গায়ে আছে, তাদেরকে যেখানে পাচ্ছে সেখান থেকেই ধরে নিয়ে গিয়ে সরকারের পেটয়া বাহিনী পাইকারি দরে হত্যা করছে! সাদীর গায়ে শুধু ছাত্র সমিতির নাম গন্ধই না বরং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নেতৃত্ব দেয়ার আলখেল্লাটাই জরিয়ে আছে। এমতাবস্থায় দীর্ঘ্যদিনের আন্দলনের সাথীদের ছেড়ে, মায়ের আচলের নিচে বন্ধি হয়ে থাকা সাদী, খাচায় বন্ধি পাখির মতই পরাধীন হয়ে গেছে। তাছাড়া এত ভালো রেজাল্ট সাদীর কোন কাজেই বা লাগবে? সাদীতো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকও হতে পারবেনা বা বিসিএস ক্যাডার বা জাজের চাকুরীও পাবেনা। পাবে কিভাবে? পুলিশ ভেরিফিকেশানেই তো সব ভেস্তে যাবে। এখনও সাহাবাগ থানা সহ ঢাকা সিটির বিভিন্ন থানায় কমপক্ষে ১০টা মামলা তার মাথার উপর ঝুলছে। যে কারণে শায়লার বড়লোক বাবাও সাদীকে এক প্রকার অপমান করেই বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছিল।
সব বিবেচনায় সাদী আগে থেকেই সিদ্ধান্ত নিয়ে রেখেছে জীবনে কোন দিনও চাকুরী করা থাক দূরের কথা, চাকুরীর জন্য দরখস্তও করবেনা। আর শায়লা, না তাদের বাড়ির দিকেও কোনদিন ফিরেও তাকাবেনা। তাছাড়া শায়লাইবা তার কে? সেতো সাদীর ছাত্রী মাত্র, যাকে নবম শ্রেণী থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত পড়িয়েছে, আর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ব্যাপারে সাহায্য করেছে। এইতো, তাছাড়া আরতো কোন সম্পর্ক নাই, তাইনা? অবশ্য তার জন্য মনের কোনায় যে একটু জায়গা তৈরী হয়নি তা নয়, কিন্তু শায়লার আদিখ্যেতা আর অহমিকার কারণে সে যায়গাটুকুও সেই কবেই শেষ হয়ে গেছে।
পরিবেশটা একটু সান্ত হলেই সাদী ঢাকয় গিয়ে বারের পরীক্ষাটা দিয়ে প্রাক্টিস শুরু করবে বলে আগে থেকেই ঠিক করে রেখেছে। দেখতে দেখতে একটা মাস কেটে গেল কিন্তু পরিবেশ শান্ত হওয়া তো দূরের কথা, দেশের রাজনৈতিক প্রিস্থিতি দিন দিন খারাপ থেকে খারপতর হচ্ছে। এর যে শেষ কোথায় তা কেউ জানেনা, অন্য দিকে সাদীরও এভাবে এক ঘরে হয়ে বাড়িতে থাকতেও মন বসছেনা।
পিয়ন এসে লাল খামে একটা চিঠি দিয়ে গেল। চিঠিটা যে শায়লার তা সাদীর বুঝতে অসুভিধা হয়নি। জীবনে অনেকবার সাদী এমন খামে শায়লার চিঠি পেয়েছে।
---------- চলবে
বিষয়: সাহিত্য
১৭০৩ বার পঠিত, ৩০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
শুরুতেই শ্রদ্ধেয় বদ্দাদের পেয়ে আশাবাদি হলাম।
সাথে থাকার পাশাপশি সংশোধনী দেয়ার আবদার রইল।
ধন্যবাদ।
শুরুতেই শ্রদ্ধেয় বদ্দাদের পেয়ে আশাবাদি হলাম।
সাথে থাকার পাশাপশি সংশোধনী দেয়ার আবদার রইল।
ধন্যবাদ।
সাথে থাকার পাশাপশি সংশোধনী দেয়ার আবদার রইল।
ধন্যবাদ।
ধন্যবাদ ভাই, ভালো থাকুন।
ধন্যবাদ।
পরীক্ষায় ভাল রেজাল্টেও মন খারাপ , আবার নিজের ও বন্ধুদের দৌড়ানীর ফলেও মন খারাপ !
এসব চিঠি আদান প্রদান করা হয় নীল খামে । আর এখন এল লাল খাম ! এই লাল খামে তো সাধারণত বিয়ের দাওয়াতে কার্ড আসে ! তাহলে কি সাদীর শায়লার অন্য কারও সাথে শাদী হয়ে যাচ্ছে ?
তার মন খারাপ কি তাহলে এই কারণেই ?
এমন লাল নীল খাম....উক্ত ছাত্র সমিতির লোকেরা খোলার সুযোগ কমই পায়....
দোয়া রইল যাতে মনমত কেউ শীঘ্রই ভাগ্যে জুটে যায়।
আল্লাহকে ও বলছি....নিশ্চয়ই আল্লাহ আমাদের ভুল ক্রুটি ক্ষমা করে তাঁর ছায়ায় আশ্রয় দিবেন...
আমাদেরকে সিরাতুল মুস্তাকিমের পথে আমৃত্যু রাখবেন।
ভালো থাকুন।
ধন্যবাদ।
বিসমিল্লাহ বলিয়া গল্প করিলাম শুরু
দেখি চাইয়া বাদবাকিতে কি লিখেন গুরো।
ধন্যবাদ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন