এখওয়ান ছাড়ার কারণ
লিখেছেন লিখেছেন আবু জারীর ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫, ০১:৩০:৪৮ রাত
যে কারণে এখওয়ান ছেড়েছেন আমার সহকর্মী ইঞ্জিনীয়ার আব্দুল হামীদ খায়রী এবং তার বন্ধু ও নিকট আত্মীয় ডাঃ আহম্মেদ খায়রী।
আব্দুল হামীদ ও আহম্মেদ উভয়েই তখন সবে কলেজের ছাত্র। স্কুল জীবন থেকেই স্বধর্মের প্রতি তাদের যথেষ্ট অনুরাগ ছিল। কলেজে ভর্তি হওয়ার পরে অন্যান্য বন্ধুদের মত তারা দুজনও এখওয়ানের সাথে সম্পর্কিত হয়ে পরে। উৎসাহের সাথেই তারা দুজন এখওয়ানের বিভিন্ন প্রগামে অংশগ্রহণ করতে লাগল। আব্দুল হামিদ বেশ স্ট্রেইট ফরওয়ার্ড ছেলে। তার মনের গহীনে যখনই কোন প্রশ্নের উদ্রেক হয় তখনই সে তা অকপটে জিজ্ঞেস করে ফেলে। কখনও সন্তসজনক উত্তর পায় আবার খনও পায়না। কিন্তু তার পরেও সে প্রগামের দাওয়াত পেলেই তাতে অংশ গ্রহণ করে। এভাবে কিছুদিন যাওয়ার পরে কোন এক প্রগামে একটা বিষয়ে সে একাধিক প্রশ্ন করে এবং উত্তর দাতার সাথে মত পার্থক্যের সৃষ্টি হয়। তার পর থেকে তাকে আর খনও কোন প্রগাম দাওয়াত দেয়া হয়নি আর সেও যোগাযোগ রাখেনি। তার ধারণা ঐ দিনের বক্তা তথা নেতাই হয়ত তাকে আর প্রগ্রামের দাওয়াত দিতে নিষেধ করেছে। সে এখন সিসির সমর্থক এবং তার ধারণা এখওয়ানের কর্মীরা ত্যাগী এবং নির্লোভ কিন্তু নেতারা অনেকটা স্বার্থপর। (আল্লাহু আলম)
ডাঃ আহম্মেদ নম্র ভদ্র গোছের ছেলে। সে নিয়মিত প্রগামে যাতায়াত অব্যাহত রেখেছিল। পড়ালেখার প্রতি প্রয়োজনীয় বা বেশী গুরুত্ব দেয়ায় সে নেতৃত্বের পর্যায় পৌছতে পারেনি কিন্তু সেজন্য তার কোন ক্ষোবও ছিলনা। ডাক্তারী পাশ করার পরে তার মনে কুর’আন মুখস্ত করার খেয়াল আসল কিন্তু এখওয়ানের প্রগামের চাপে সে কুলিয়ে উঠতে পারছিলনা। নেতৃবৃন্দকে বিষয়টা অবহিত করলেও তারা তাকে কোন ছাড় দেয়নি। এভাবে বছর খানেক কেটে গেলেও সে প্রথম পাড়া হেফজ করাই শেষ করতে পারেনি। শেষ পর্যন্ত এখওয়ানের সকল প্রকার প্রগ্রামে অংশ গ্রহণ থেকেই সে বিরত থাকতে লাগল। পরবর্তি দুই বছরেই সে পুরা কুর’আন হিফয করে ফেলল। সংগঠনের সাথে সেই যে দূরত্ব তৈরী হয়েছে যা এখনও ঘুঁচেনি।
মানুষের আবেগ বেশ টনটনে। কখন যে কার মন কি চায় তা কেউ জানেনা। যখনই কেউ সংগঠনের চেয়ে তার ব্যক্তিগত কেরিয়ার বা ব্যবসা বানিজ্য অথবা অন্য কোন বিষয়কে গুরুত্ব দিতে শুরু করে তখন তার আবেগকে সম্মান দেখাতে পারলে সংগঠনের হয়ত সাময়িক ক্ষতি হয় বাট কর্মীটি আজীবনের জন্য হারিয়ে যায়না।
কেউ একজন যখন সংগঠন করাকে নিজের দায়িত্ব মনে করেছে তখন সে নিজের গরজেই মান উন্নয়নের চেষ্টা করেছে, কিন্তু যেকোন কারনেই হোক সে যখন পিছিয়ে পরছে বা অন্য কোন বিষয়কে বেশী গুরুত্ব দিচ্ছে তখন বেশী চাপাচাপি না করে তাকে আল্লাহর জিম্মায় ছেড়ে দেয়াই উত্তম বলে মনে হয়।
অনেকে ৫/৭ বছর সংগঠন করে সাথী, সদস্য হয়ে সাংগঠনিক ভাবে ছাত্রজীন শেষকরতে চাচ্ছে কিন্তু সংগঠনেরও তাকে প্রয়োজন, এমতাবস্থায় তাকে ম্যানেজ করতে পারলে ভালো কিন্তু সে যদি একান্তই অপারগতা প্রকাশ করে তাহলে তাকে আটকে রাখাও বুদ্ধিমানের কাজ বলে আমি মনে করিনা। সেরকমটা করলে হীতে বিপরীত হতে পারে।
যে গরু হালে ভালো হাটে সে গরু মইতে ভালো নাও হাটতে পারে, তাই হালের বলদ দিয়ে হাল বাওয়া আর মইয়ের বলদ দিয়ে মই দেয়াই একজন বুদ্ধিমান কৃষকের সঠিক সিদ্ধান্ত। কিন্তু ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার আলোকে বলব, সংগঠন সবাইকে দিয়েই মিসিল মিটিং আর ইউনিটের বৈঠক করাতে চায় কিন্তু একজন কর্মীর ওগুলো পছন্দনা, তার পছন্দ লেখালেখি, সংগীত চর্চা, অভিনয়, খেলাধুলা কিন্তু সংগঠন তাদের ছাড়দিতে রাজিনা। তারা ভাল শিল্পী সাহিত্যিক চায় বাট তা করতে হবে সাংগঠনিক সব দায় দায়িত্ব পালন করার পরে! যা ১/২জনের পক্ষে সম্ভব হলেও সবার পক্ষে সম্ভব হয়না। এজন্যই অনেক প্রতিভা অঙ্কুরেই বিনষ্ট হয়ে যায়।
ডঃ মাসুদ এবং ডঃ রেজাউল করীমকে রাজনীতিতে সম্পৃক্ত না করে যদি তাদের সাহিত্যের জগতে ছেড়ে দেয়া হত তাহলে ঐ ময়দান দখলে নেয়া বেশী কষ্টকর হত বলে অন্তত আমার মনে হয়না। অবশ্য তাদের মতামত আমি জানিনা। তবে এরকম অনেক উদাহরণ দেয়া যায়। আশা করি গতিশীল সংগঠন হিসেবে শিবির বিষয়টা গুরুত্বের সাথে নিবে।
বিষয়: রাজনীতি
১৪৭৩ বার পঠিত, ১১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ধন্যবাদ
মিসর এর মুহাম্মদ মুরসির সরকার গঠন এর কিছু পরে যখন তিনি কেন ইসলাম কায়েম করছেন না এমন অনেক মন্তব্যের জবাবে তখন সোনারবাংলা ব্লগে একটি পোষ্ট দিয়েছিলাম যে জোড় করে ইসলাম চাপান যায়না।
সংগঠনের সব সিন্ধান্ত সব সময় সঠিক নাও হতে পারে কারন সংগঠন যারা পরিচালনা করে তারাও মানুষ আর মানুষের ভুল হতেই পারে । তবে সংগঠন থেকে দুরে চলে যাওয়া কোন বুদ্ধিমানের কাজ না ,তারা নিজেরাই ক্ষতিগ্রস্থ হয় । কারো জন্য দ্বীনের কাজ কখনো থেমে থাকেনি ,আল্লাহর দ্বীনের কাজ আল্লাহ চালিয়ে নিবেন ।
অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া ।
হ্যা আপু তুমি ঠিক বলেছে কিন্ত আমার ভুলের জন্য যেন কেউ চলে গিয়ে নিজে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় আর আমাকে গোনাহগার না করে, সেটাই আমার মূল আবেদন। আর তোমার কাছে আমার আবেদন যত তারাতারি সম্ভব নিজের ফিলিংসকে বাস্তবে পরিণত করবে।
ধন্যবাদ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন