সৌভাগ্যের হারানো চাবি ফিরে পাওয়ার প্রধান নিয়ামক হতে পারে জামায়াত শিবিরের পক্ষে বিপক্ষে হাচা মিছা কলাম লেখা।
লিখেছেন লিখেছেন আবু জারীর ০৩ জানুয়ারি, ২০১৫, ০২:০২:১০ রাত
সৌভাগ্যের হারানো চাবি ফিরে পাওয়ার প্রধান নিয়ামক হতে পারে জামায়াত শিবিরের পক্ষে বিপক্ষে হাচা মিছা কলাম লেখা।
গোলাম মাওলা রনি সাহেবের লেখা বরাবরই পড়ার চেষ্টা করি এবং সত্য মিথ্যার জারিজুরি বুঝার চেষ্টা করি। কয়েকদিন পূর্বে একজন অনলাইন বন্ধু বলেছিলেন তিনি (রনি সাহেব) একটা ছুপা! আমি গায়ে মাখিনি।
‘হায়রে জামাত! হায়রে শিবির কবে হবে হুশ?
কলামটাও আগ্রহ নিয়ে পড়তে শুরু করেছিলাম। আগ্রহ ছিল এজন্য যে বরিশালে ৩১শে ডিসেম্বরের হরতালের দিন শীতের সকালে শিবিরের ছেলেদের সাথে একজন গোয়েন্দা পুলিশের যে ওয়ার্ম-আপ হয়েছে সেটা কতটুকু সাহসী আর কতটুকু বেওকুফি হয়েছে তা জানার জন্য। কিন্তু কিছুদূর এগতে না এগতেই হতাস হলাম। জামায়াতের বিরুদ্ধে বা যেকোন দল বা ব্যক্তির বিরুদ্ধেই হোকনা কেন যদি সমালোচনা যৌক্তিক হয় তাহলে আমি লেখককে ধন্যবাদ দিতে কার্পণ্য করিনা। জামায়াত শিবির সম্পর্কে চলমান লেখাটা আমার কাছে একপেশে এবং সত্যের অপলাপ মনে হয়েছে বলে কিছু কথা না লিখে পারছিনা।
স্কুল পালানো প্রার্থমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র থাকা অবস্থায় একদিন শুনেছিলাম নামের কোন ভুল নাই তাই, ‘কাজী নজরুল ইসলাম’ লিখতে গিয়ে লিখেছিলাম ‘কাজি নজরুল ইসলাম’। আমার ছোট্ট মামার বাতিখ ছিল খালি পড়া ধরার। আমাদের বাড়িতে এসে তার বোনের (আমার মা) হাতে একটু ভালো মন্দ খাওয়ার আশায় আমাকে একটা কবিতা লিখতে দিলেন। লিখলাম। কিন্তু কবির নাম লিখতে গিয়ে ‘কাজি নজরুল ইসলাম লেখায়” মামার হাতে কান জোড়া এক চপেটাঘাত খেয়ে বুঝেছিলাম নামেরও ভুল আছে।
প্রথমেই রনি সাহেব সেই ভুলটা করেছেন। হায়রে জামাত! হায়রে শিবির! কবে হবে হুশ? রনি সাহেবের লেখা জামাত নামটা মনে হয় ‘জামায়াত। তার মত কলাম লেখকের কাছথেকে নামের বানান ভুল করা জাতি আশা করেনা, তিনি সেটা করেছেন বলেও মনে হয়না তবে, জামায়াত শিবির মেনিয়ায় তার অন্তর যে বিষিয়ে আছে, নামের বানানে তার প্রভাব পরেছে কিনা কে জানে?
জামায়াত শিবিরের ব্যপারে তাকে সহ পুর জাতিকে বিষিয়ে তোলা, আবার স্বার্থের খাতিরে তাদের দলে টানার চেষ্টা করাকে যদি রনি সাহেবের কাছে বেহায়াপনা মনে হয় তাহলে, ‘ইসলামী ব্যাংকের অনুষ্ঠানে গিয়ে জাফর স্যারের হর্ষে হাত তালি দেয়া, তুষারের অনুষ্ঠান পরিচালনা করা আর খোদ রনি সাহেবের কলাম নয়াদিগন্তে প্রকাশিত হওয়া দেখে কেউ যদি বুদ্ধি বেশ্যা সুশীলদের মত এদেরও বেহায়া ঠাওরায় তাহলে কাকে দোষ দিবেন?
অনান্য রাজনৈতিক দলের নীতি আদর্শ এক ও অভিন্ন। তাদের মধ্যে ভিন্নতা শুধু সার্থের তাই তারা ক্ষমতার পালাবদলের অপেক্ষায় থাকে, আবার সাকারী আর বিরোধী দলীয় নেতা কর্মীরা জেন্টেলম্যান এগ্রীমেন্টের মাধ্যমে সরকারী সম্পদ লোপাট করে, ফলে রাজনৈতিক মাঠ গড়ম করার জন্য বাধ্য হয়ে যে যত বিরধিতাই করুক না কেন মূলে তারা একই গোয়ালের বলদ। কিন্তু জামায়াতের মূলনীতি, সেকুলার, রাম বাম ও কথিত জাতীয়তাবাদীদের ঠিক উল্টো, ফলে জামায়াতকে নীতিহীনরা, তথা চোরে চোরে মাস্তুত ভাইরা ঘৃণা করবে এটাই স্বাভাবিক। যারা জামায়াত শিবিরকে ঘৃর্ণা করে তারাই যখন স্বার্থের জন্য দলে টানতে চেষ্টা করে তখন মূলত ধর্মহীন সেকুলার, নষ্টবাম আর শ্লোগান সর্বশ্ব জাতীয়তাবাদের দৈন্যতাই প্রকাশ পায়। জামায় হীনমন্ব নয় বরং উদার, দেশের স্বার্থে তারা আদর্শহীনদের সাথে বসতেও কার্পণ্য করেনা, তারা আশায় বুক বাধে, দেখেনি নীতিহীনদের নীতি বোধ জাগ্রত হয়।
৭১এ যারা মুক্তিযুদ্ধ করেছে, পাকিস্তান থেকে আলাদা হতে চেয়েছে তারা একান্তুই দেশপ্রেমের কারণে তা করেছে। যারা স্বধীনতা যুদ্ধে অংশ নেয়নি, বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠ দান চালু রেখেছে, পুলিশবিভাগে দায়িত্ব পালন করেছে, হাসপাতালে রুগীর সেবা করেছে, ব্যাংক বীমা খোলা রেখেছে, কল কারখানার চাকা সচল রেখেছে, সচীবালয়ে অফিস করেছে, পাকিস্তান নিয়ন্ত্রীত রেডিও টিভিতে দায়িত্ব পালন করেছে, টিভি অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেছে, পত্রিকা সম্পাদনা করেছে, রাজনৈতিক ময়দানে পাকিস্তানের পক্ষে কাজ করেছে তারাও দেশের ভালবাসার খাতিরে এবং নিকটতম প্রতিবেশীর থেকে যে কারণে ৪৭ সালে বিচ্ছিন্ন হয়েছিল যেই একই কারণে বিরোধী ভূমিকা পালন করেছে। যার বাস্তবতা বর্তমানে প্রতিবেশীদের আগ্রাসী নীতি। ২০১৫তে এসে দেখা যাচ্ছে যারা নিজেদের স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি হিসেবে দাবী করে, জনগণ তাদেরই স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি মনে করে আর ৭১এ যারা যুদ্ধে অংশ নেয়নি কিন্তু ৭১এর পর থেকে দেশের স্বাধীনতার জন্য বুক পেতে দিতে কার্পন্য করেনি সেই জামায়াত শিবিরকেই দেশের মানুষ স্বাধীনতার অন্যতম রক্ষাকব্জ মনে করে। সেজন্যই হয়ত প্রধানন্ত্রীকে বলতে হয়, ‘আমরা দেশ স্বাধীন করেছি তাই আমরাই স্বাধীনতা রক্ষা করব’। অনেকটা ঠাকুর ঘরে কে রে? আমি কলা কাইনার মত।
জামায়ত শিবিরের গন্তব্য অনিশ্চিৎ নয়। আপনি জামায়াত শিবিরের যে সকল নেতা কর্মীর মতামতের বাহ্যিক দিকটা দেখে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সে সকল নেতা কর্মীদের রুহানীয়াতের খবর যদি রাখতেন তাহলে বেঠিক হতনা কিন্তু আপনি তা করতে পারেন নি। আপনি যা বুঝেছেন তা মুদ্রার এক পিঠ। ‘এখানে প্রস্রাব করবেন না, করলে একশত টাকা জরিমানা। কিন্তু আপনার অবস্থা যেহেতু মিশ্র অর্থাৎ জগাখিচুড়ি তাই বাক্যাটাকে পড়ছেনঃ ‘এখানে প্রস্রাব করবেন, না করলে একশত টাকা জরিমানা! মান্যবর, জামায়াত শিবিরের রুহানী দিকটা সম্পর্কে আপনার ধারনা না থাকায় যথা স্থানে কমাটা ব্যবহার করতে পারেননি বলেই অনেকে ধারনা করছে।
আদর্শহীনরা সৌভাগ্যের চাবি সহজেই হাতের নাগালে পেয়েযায় এবং কাজেও লাগায়। আর আদর্শবাদীরা হেলায় হারায়। সে কারণেই স্বৈরাচারী এরশাদ এখন প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত, রওশন বিরোধীদলের নেত্রী, অনেক অখ্যাত কুখ্যাতরা সংসদ সদস্য মন্ত্রী আর রনি সাহেবেরা আম পাব্লিক বা ম্যাংগ পিপোল! ২০০৮এ সৌভাগ্যের চাবি ধরতে পারলেও ২০১৩তে এসে রনি সাহেবের ঘরের চাবি পরের হাতে গেল কিভাবে? সৌভাগ্যের চাবি তো সেফ হোমে জিগ্যাসাবাদের সময় জামায়াত নেতাদের হাতের নাগালেও এসেছিল। বেঈমানীর সে চাবি হাতে না নিয়ে তাহলে জামায়াত নেতারা কি ভুল করেছেন? জাতি কি তাই মনে করে? নাকি রনি সাহেবের ইথিক্স সেটাই? যদি তাই হয় তাহলে জামায়াত শিবিরের গোবেচারা নাতারা না হয় হাতের কাছে সৌভাগ্যের বেঈমানীর চাবি পেয়েও ধরেনই কিন্তু কোনসে বিবেকের ধ্বংসন যা আপনাকে সৌভাগ্যের চাবি ধরতে দেয়নি? আপনার তো আজ জয় পলকদের চেয়েও সিনিয়র মন্ত্রী থাকার কথা ছিল। অবস্থা দৃষ্টে অনেকেই ধারনা করছে, বেঈমানীর সেই চাবি ধরার এই কলামটা আপনার প্রথম মন্ত্র।
জনতার বৃহৎ অংশ জামায়াতকে ঘৃণা করেনা এমনকি অনেক ঝানু রাজনীতিক, সেনানায়ক, কুটনীতিক, ব্যবসায়ী জামায়াতকে ব্যক্তিগতভাবে ভালোবাসে। অনেকেই প্রকাশ করেনা। মক্কার কাফেরদের অনেকেই মুহাম্মদ (সঃ)কে ভালবাসত, আল আমীন, আস সাদিক বলে জানত কিন্তু প্রকাশ্যে ঘৃণার অভিনয় করতে, নিজেদের হীন স্বার্থের কারণে। সেটাকে তারা জিয়িয়ে রেখেছিল মক্কায় তাদের লাঞ্চিত হওয়ার আগ পর্যন্ত। জামায়াত যেহেতু সেই আদর্শেরই পতাকাবাহী তাই চুড়ান্ত বিজয়ের আগপর্যন্ত তাদেরও সবধরনের অপবাদ সহ্য করতে হবে। আর ইসলামী আন্দোলনের সঠিকতা পরিমাপের এটাই একমাত্র ব্যারোমিটার। ইমাম তাইমিয়া (রঃ) বলেছেন, ‘তোমরা সঠিক ইসলামী আন্দোলনকে চিনতে না পারলে বাতিলের তীরের দিকে তাকিয়ে থাক। বাতিল যাদের নিশানা বানাবে তারাই সঠিক ইসলামী দল”।
শিবির, জামায়াতের ৭১এর ভূমিকার দায়ভার কেন নিচ্ছে সেটা আপনার মাথায় না ঢোকারই কথা। জামায়াতের উপর জোড় করে যেহেতু দায়ভার চাপান হচ্ছে সেহেতু শিবিরের উপরেও সে দায়ভার এসেযায়। যেমনটা পিতার উপর অন্যায্য জেল জুলম হলে সন্তানকেও সাফার করতে হয়। তা নাহলে সেনাবাহিনীর মেধাবী কর্মকর্তা সাবেক ব্রিগেডিয়ার আব্দুল্লাহীল আযমীকে চাকুরীচ্চুত করা হল কোন দায় দায়িত্বের কারণে? এত সহজ অংক রনি সাহেবের মত ঝানু রাজনীতিকের মাথায় কেন যে ঢোকেনা সেটা সাধারণ জনতার বোধগম্য নয়।
আর একটা কথা না বললেই নয় আর সেটা হল আপনি যে টক শো করে আজ হিরো সেই টক শোতে যদি শিবিরের একজন উপশাখার কর্মীকে কোন চ্যানেল দাওয়াত দিয়ে আপনার সাথে বসার সুযোগ দিত তাহলে শিবিরের সেই সামান্য কর্মীটিই আপনাকে বুঝিয়ে দিতে পারত যে তারা কি জামায়াতের উপরে চাপান দায়ভার নিজেরা স্বেচ্ছায় বহন করছে নাকি তাদের উপরও অন্যায় ভাবে চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে।
আব্দুল কাদের মোল্লা নিজের জীবনের সফলতা খুজে পেয়েছেন, জান্নাতে যাওয়ার হাতছানী তাকে ভি চিহ্ন দেখাতে বাধ্য করেছে। নিরপরাধ একজন রাজনীতিক, সাংবাদিক ও সুনাগরিককে যেভাবে জাতির সামনে বলির পাঠা বানান হয়েছে, আর জাতির সুধীজনেরা তা উপভোগ করছে সেই জাতির মুখে ভি চিহ্নের চপেটাঘাত করা ছাড়া আব্দুল কাদের মোল্লার আর কিইবা করার ছিল। চপেটাঘাতটা যে তাদের নাকে-মুখে লেগে অন্তর ভেদ করে পাগলা কুকুরের মত আচরণ করতে বাধ্য করেছে তার প্রমাণ পরবর্তী প্রটেক্টিভ বিরিয়ানি জাগরণ, আইন সংশোধন এবং শেষ পর্যন্ত বিচারিক হত্যাকান্ড।
অধ্যাপক গোলাম আযম জাতির সুমতি ফিরে পাবার আশায় এতটা বছর মাটি কামড়ে পরেছিল। পদ্মা শুকাল, বানিজ্য হাতছাড়া হল, সংস্কৃতি গেল, পাট, চামড়া, চা, চিংড়ি গার্মেণ্টস গেল কিন্তু জাতির একটা বড় অংশের সুমতি হলনা! নতুন ক্ষতের দিকে কারো ভ্রুক্ষেপ নাই, নতুন লাশের দাফনের ব্যবস্থা নাই অথচ ৪৩ বছরের পুরাণ কবর জেয়ারতেই জাতির একটা বড় অংশ যখন ব্যাস্ত তখন মৃত্যু দুয়ারে দাড়িয়েও সত্য প্রকাশ না করে যাওয়ার মত বোকামী করার সময় আর অবশিষ্ঠ্য ছিলনা। যদি তিনি এতকিছুর পরেও মুখবুজে দুনিয়া থেকে বিদায় নিতেন তাহলে ইতিহাসও তাকে ক্ষমা করত না। যে কারণে ভারতের রক্ষনাগার থেকে মুক্তিযুদ্ধের দলিল গায়েব হয়ে গেছে ঠিক তার বিপরীত কারণে কবরে এক পা রেখে মরহুম গোলাম আযম সত্য প্রাকাশ করে সাহসের পরিচয় দিয়ে গেছেন। একে খন্দকার সত্য প্রকাশ করেছেন, ভবিষ্যতে আরও অনেকেই এমন হাজারো অজানা কথাই হয়ত বলবেন। আর নিজেদের নামের শেষে রাজাকারের তকমা লাগাবেন।
নির্বাচনী এজেন্ডা থাকার পরেও যুদ্ধাপরাধের বিচারের কর্মসূচী সরকার হাতে নিতে চায়নি দুইটি কারণে। প্রথমত তাতে সরকারের রাজনৈতিক পূঁজি শেষ হয়ে যাবে আর দ্বিতীয়টা হল তারা এর কোন কুলকিনারা করতে পারবেনা। কিন্তু জামায়াত এক্ষেত্রে অবশ্যই ভুল করেছে। সেটা তাদের রাজনীতিক ভুল বা অদূরদর্শীতা, তবে রনি সাহেব যা বলতে চেয়েছেন সেরকম ভুল জামায়াত করেনি।
২০০৮ এর নির্বাচনের পরে বিএনপি পাইকারী দরে মার খেয়েছে, জামায়াতের গায়েও ছিটাফোটা আচড় লেগেছে। কঠিন মার খেয়েও বিএনপি সাংগঠনিক বছর ঘোষনা করে শীত নীদ্রায় চলে গেছে, কিন্তু জামায়ত অতিউৎসাহে টিপাইমুখে নৌমার্চ, পদ্মাতীরে ফারাক্কা মার্চ, সীমান্ত মার্চ তথা বিভাগীয় সম্মেলন করে ভারতের কাটা ঘায়ে নুনের ছিটা দিয়েছে আর সেটাই জামায়াতের জন্য কাল হয়েছে। ভারত নিজেদের অন্যায় ঢাকতে আওয়ামিলীগকে যুদ্ধাপরাধের বিচার প্রকৃয়া শুরু করতে এবং জাতিঘাতি পরিণতীর দিকে ঠেলে দিতে বাধ্য করছে। পরের চালানে চল্লে যা হয় সরকার তাই করেছে এবং এখনও করছে।
ইন্টারন্যাশনাল বার এসোসিয়েশনও আইনটি সম্পর্কে লিখিতভাবে ভূয়সী প্রশংসা করে, তা যা বলেছেন? এক সময় তারা প্রশংসা করেছে কিন্তু বিচারতো আইন দ্বারা হচ্ছে না। ৬ কিলোমিটার দূর থেকে দেখা আর লোক মারফত শোনা কথার উপর ভিত্তি করে যখন আইনের প্রয়ো শুরু হয়েছে তখন ইন্টারন্যাশনাল বার এসোসিয়েশন যে সংশোধনী দিয়েছে তা বেমালুম এরিয়ে যাওয়া কি সত্যের অপলাপ নয়?
জামায়াত শিবির দেশের আইন প্রশাসনের প্রতি শ্রোদ্ধা রাখে বলেই বিচারিক আদালতে হাজির হয়ে জাতির সামনে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে যে বিচারের নামে যা হচ্ছে তা অবিচার ছাড়া কিছুই নয়। উচ্চ আদালত রিভিউ খারিজ করে প্রমাণ করেছে তারা বিষয়টা রাজনীতির উপর ছেড়ে দিয়েছে। বিচার যখন বিচারিক আদালত থেকে রাজনৈতিক আদালতে স্থানান্তরিত হয়, রায়ের আগে যখন দেশের প্রধান নির্বাহী সহ মন্ত্রী এম্পিরা ডিক্টেট করে তখন বাধ্য হয়েই তার প্রতিবাদ জানাতে হয়। আর রাজনৈতিক প্রতিবাদের প্রধান ভাষাই হল হরতাল। রাজনৈতিক হরতাল আদালতের বিরুদ্ধে নয় বরং ফরমায়েশি রায়ের বিরুদ্ধে, আশাকরি দেশবাসীর পাশাপাশি রনি সাহেবও বিষয়টি বুঝেন কিন্তু বলেন না, ঐ যে সৌভাগ্যের চাবির জন্য, যা তিনি আগেই বলে গেছেন।
নিজের যোগ্যতায় যিনি ন্যায় বিচার করতে অক্ষম, বিচারপতির আসন অলঙ্কৃত করা কি তার সাজে? বিচারিক বিষয়ে আলোচনা করার অধিকার কোন বিচারকের নিজের স্ত্রীর সাথেও নাই। রনি সাহেবর ছেলেভুলানো কথা জাতীয় পত্রিকার সম্পাদকীয় পাতায় প্রকাশ করা কি বালখিল্য নয়?
লবিষ্ট বলছেন কেন? আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুন্যাল করা হল আর সেখানে আন্তর্জাতিক আইনজিবী নীয়োগ দেয়া হবেনা এটা বিচারের নামে যে কত বড় ধোকা তা আর বলার অপেক্ষা রাখেনা। সরকার তো বিচারের নামে অবিচার করছেই আর আপনাদের মত কলম সৈনিকেরা বিদেশী আইনজীবীদের, পরামর্শ্বকদের, লবিস্ট ফার্ম বলে কলমের খোচায় মজলুমদের আরও রক্তাক্ত করছেন। আশা করি একদিন আপনাদের সুমতি হবে কিন্তু ততদিনে আব্দুল কাদের মোল্লাদের জাতি হারিয়ে ফেলবে।
বাচ্চু রাজাকার বলে মাওলানা আবুল কালাম আযাদের সাথে যে তামাসা হয়েছে তার প্রতিবাদ জামায়াত শিবির করতে ব্যার্থতার পরিচয় দিয়ে অপরাধ করলে দেশের সুশীলদের সাথে আপনার অপরাধ কতটুকু তাও ভেবে দেখবেন। মাওলানা আবুল কালাম আযাদ একজন প্রতিথজসা আলেম। তিনি অপরাধী হলে গণমানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য আলোচক ও টিভি ব্যক্তিত্ব হতে পারতেন না। গোয়েন্দা নজরদারির মধ্য থেকে তিনি কোথায় হারিয়ে গেলেন এবং কি ভাবে গেলেন? নাকি নাটক মঞ্চস্থ্য করার জন্য তাকে গুম করে দুনিয়া থেকে না হয় নিদেন পক্ষে দেশ থেকে সরিয়ে দেয়া হল, সে সম্পর্কে আপনার বক্তব্য জানতে বড় ইচ্ছে করে।
কিউবা এবং ফিদেল ক্যাষ্ট্রোকে নিয়ে গবেষনা করার দরকার তাদের যাদের কাছে মক্কা মিদিনা আর রাসূলে আরাবিয়ার মত আদর্শ আর কুর’আন হাদীসের মত জীবন বিধান নাই। জামায়াত যেহেতু কুর’আনের রাজ কায়েম করতে চায় তাই তাদের জন্য তাদের আল্লাহর কুর’আন আর রাসুলের (সঃ) হাদিস বিদ্যমান থাকতে ফিদেল ক্যাষ্ট্রো, মাওজেদং, লেনীন বা চেগুদের নিয়ে গবেষনা করার কোন দরকার নাই।
যে কথা বলে শেষ করতে চাই তা হলঃ
‘আপনি কি ভালবাসার মানুষকে পেতে চান? ব্যবসায় সফল হতে চান? চাকুরী পেতে চান? বিদেশে যেতে চান? মামলায় জিততে চান? স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক সুদৃঢ় করতে চান? তাহলে আর দেরী নয়, এখনই চলে আসুন সর্পরাণী তাজে তাজ নূরে মোহতাজ, আদরের দুলালী, চাঁদে হেলালী, স্বনামধন্যা পীরে মাতা, মমতাজ বেগমের দরবারে’!
৯০ দশকে যখন ঢাকায় এসে কলেজে ভর্তি হই তখন পত্র পত্রিকায় হর হামেসা এধরণের বিজ্ঞাপন চোখে পরত। আজকাল অবশ্য টিভিতেও এধরণের বিজ্ঞাপন প্রচারিত হচ্ছে।
রিনি সাহেবের জামায়ত শিবির থিসিস দেখে মনে হচ্ছে এখন সময়ের দাবী হল নিন্মের বিজ্ঞাপন তৈরী এবং প্রচার করাঃ
আপনি কি রাজনীতিতে তরক্কি করতে চান? বছরের আলোচিত ব্যক্তি হতে চান? পত্রিকার কাটতি বাড়াতে চান? প্রসিকিউটর হতে চান? দ্রুত প্রোমশন পেতে চান? নেত্রীদের নজরে আসতে চান, হারনো সৌভাগ্যের চাবি ফিরে পেতে চান, তাহলে আর দেরী নয় আজ থেকেই গোলাম মাওলা রনির মত করে জামায়ত শিবিরের পক্ষে বিপক্ষে বলুন, পত্রিকায় কলাম লিখুন, টকশোতে গলাবাজি করুণ, সত্যের অপলাপ করুণ, দেখবেন সনই সনই উন্নতি হচ্ছে! নেত্রীর বদনজর কেটে যাচ্ছে। গলাবাজির পুরাণ স্টাইল ফিরে পাচ্ছেন। অন্যকে তুলাধুনা করতে পারছেন। এমনকি সৌভাগ্যের হারনো চাবীও আপনার মুঠোয় ফেরৎ পাচ্ছেন!
বিষয়: রাজনীতি
১৭৪২ বার পঠিত, ১৯ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
খুব ভাল লেখা অনেক ভাল বিশ্লেষন করেছেন ।
ধন্যবাদ ভাইয়া ।
সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
বরাবরই 'ব্যাটা রনি' একটা মিচকে শয়তান!
কোরান-হাদিসের দু'এক শব্দ লেখায় ব্যব হার করে সাধারণ মানুষ কে চরম বোকা বানাতে উস্তাদ!
স্বীয় স্বার্থে দু'মুখী আচরণ তার স্বভাবজাত বিষয়!
ইবলীস শয়তান আল্লাহ ও তাঁর সীমাহীন ক্ষমতা সম্পর্কে অবগত ছিল! কিন্তু স্বীয় স্বার্থময় একঘুয়েমী ছাড়ে নাই! তেমনি এই 'রনি'
আপনার যুক্তোভিত্ত্বিক সাবলীল সুন্দর উপস্হাপনায় ধন্যবাদ ও জাযাকাল্লাহু খাইরান!!!
ধন্যবাদ।
আওয়ামিলীগের রাজনৈতিক এই পরিপক্কতাই নেত্রীকে শক্তিশালী করেছে। বিএনপিও যদি এমনটা পারত তাহলে দেশ থেকে রাজনীতিক জঞ্জাল দূর হত। ধন্যবাদ।
মহান রবের দুয়ারে ফরিয়াদ করি তিনি যেন আপনাকে উত্তম প্রতিদান দান করেন।
মন্তব্য করতে লগইন করুন