নিষ্পাপ(?) এই ছেলে গুলি কেন আইনের মুখোমুখি?

লিখেছেন লিখেছেন আবু জারীর ২৪ ডিসেম্বর, ২০১২, ১১:৩৯:২১ রাত



নিষ্পাপ এই ছেলেগুলি কেন আইনের মুখোমুখি? সরকারী হুকুম পালন করতে গিয়েই যখন তাদের এই অগ্রগতি(?) তখন তাদের শান্তিতে নোবেল না দিয়ে হাজতে রাখার কোন এই ভেলকি বাজি?।



বিশ্বজিৎ তুমিই অপরাধী । ওদের সরকারী দায়িত্ব পালনে তোমার বাঁধা দেয়া মোটেও ঠিক হয়নি(?)। তোমার তো উচিৎ ছিল নিরীহ প্রাণীর মত সোনার ছেলেদের সরকারী দায়িত্ব পালনে দাড়িয়ে থেকে সহযোগিতা করা। কিন্তু তুমি তা করতে পারলেনা(?) বরং নড়াচড়া করে, প্রাণ বাঁচানোর জন্য আপ্রাণ ছুটাছুটি করে আমার মত হাজারো শান্তি প্রিয় মানুঝের চোখের জল ঝরালে। কিন্তু যাদের চোখে জল নেই সেই সুশীলদের অট্টহাসি কেড়ে নিয়ে মুচকি হাসতে বাধ্য করলে !

বল, বিশ্বজিৎ বল ! ওরকম দৌড়ঝাঁপ করা কি তোমার ঠিক হয়েছে? তুমি দেখোনি, ডাক্তার সাহেব সরকারী বিবেক খাটিয়ে কেমন নিরবতা পালন করেছে(?)। তুমি কেন পারলেনা সমাজের এলিট শ্রেণীর সদস্য ডাক্তারের(?) মত নিরবতা পালন করতে। নড়াচড়া নাহয় একটু করলে কিন্তু তুমি যে বিশ্বজিৎ সেটা বলে সোনার ছেলেদের হুকুম দাতাদের মুখে কেন চুনকালী দিতে গেলে?

তাদের সম্মানার্থে হলেও তোমার উচিৎ ছিল নিজেকে বিশ্বাসী বলা। বাপকে হারাম খাইয়ে হলেও শান্তির শ্বেতভল্লুকদের বাঁচানো তোমার জন্য ফরজ ছিল। যদি তা করতে পারতে তাহলেই দেখতে পেতে, তোমার সামান্য ত্যাগের বিনিময়ে সোনার ছেলে এবং সোনার আন্ডা দেয়া হাইব্রীড সুশীলেরা কেমন খুশির ঢেকুর তুলছে।

তুমি দেখছনা, সিরাজ শিকদার আর ৩০ হাজার যুবকের রক্তের উপর দাঁড়িয়ে ইনু-মেননেরা কেমন শান্তির কপোত-কপোতি হয়ে জাতিকে জ্ঞান দিয়ে যাচ্ছে ?

তেমনি দেখতে পেতে পত্রিকাগুলো কাটতি বাড়ানোর জন্য শুধু শরীরের অতিরিক্ত চামড়াটুকু বাদে বাকী সব এ্যাঙ্গেল থেকে তোমার ছবি গুলো পত্রিকায় ছাপিয়ে জনরোষের ধোঁয়া তুলে কেমন করে টুপাইস কামাচ্ছে?

তুমি মরে গিয়ে তো বেঁচে গেলে । কিন্তু তোমার পরিবারকে রেখে গেলে হায়েনার মুখে। তোমার নিহত হওয়ার অবাধ্যতার ঘটনার যখন বিচার নামের অবিচার হবে, তখন দ্বিতীয়বার যে তোমার মা-বাবার কষ্ট হবে সে কথা কি একবারও ভেবে দেখেছ?

তোমার আসল খুনীদের আড়াল করার জন্য যদি কাউকে নকল খুনী সাজানো হয়, এবং সেই নকল খুনীদের বিরুদ্ধে তোমার বাবা-মাকে সাক্ষী দিতে বাধ্য করা হয় তখন তারা কি বিবেকের দংশন থেকে বাঁচতে পারবে ?

তারা যদি আসল খুনীদের চাপে সাজানো খুনীদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিতে রাজি না হয়, তাহলে সুখরঞ্জন বালীর মত যে গুম হবেনা-- সে নিশ্চয়তা কি তুমি দিতে পারবে?

পারবে না, বিশ্বজিৎ তুমি পারবে না । আর আমরা কয়েকজন--যারা মৃত্যুকালে তোমার অবাধ্য নড়াচড়া দেখে চোখের জল ধরে রাখতে পারিনি--তারা বড়ই কাপুরুষ। তোমার মা-বাবার প্রয়োজনে হয়ত আমরা আবারও একবার চোখের জল ফেলব, যেমনটা ফেলছি সুখরঞ্জন বালীর স্ত্রীর বিলাপ দেখে । কিন্তু এই অনাচার প্রতিরোধে এগিয়ে আসব না। কারণ সে হিম্মৎ আমাদের নাই।

যারা এগিয়ে আসার সাহস রাখে, তাদের তো জঙ্গি আর দেশবিরোধী আখ্যা দিয়ে সমাজের মানুষের কাছ থেকে দূরে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। আর তোমরা যারা অন্য ধর্মের তাদের জুজু বুড়ির ভয় দেখিয়ে শত মাইল দূরে থাকতে বাধ্য করা হচ্ছে।

তবে বিশ্বজিৎ, তুমি হয়ত এখন স্বীকার করবে যে দূর্জন বন্ধু হলেও পরিত্যাজ্য আর সজ্জন শত্রু হলেও গ্রহনীয়। আর সজ্জন কখনোই শত্রু হতে পারেনা। সে বুঝ যদি আমাদের হয় তাহলে তোমার আত্মা যেমন শান্তি পাবে, তেমনি আমরা যারা বেঁচে আছি তারাও মিলেমিশে শান্তিতে বসবাস করতে পারব।

সরকারী হুকুম পালন করতে গিয়ে বাপ-মায়ের টাকা খরচ করে পড়তে আসা ছেলে গুলোর জন্য করুণা হয়। তাদের জন্যও মনে কষ্ট লাগে। কারণ তারা খুনী হয়ে জন্মায়নি, বরং ক্ষমালোভী অসভ্যের দলই তাদের খুনী বানিয়েছে এবং তাদের বিপথে পরিচালিত করেছে ।

খুনীদের সংগীরা, একটু ভেবে দেখবে কি? তোমরা কাদের হুকুম পালন করছ? কেন করছ? এমন অসভ্য হুকুম পালন করতে গিয়ে নিহতের পরিবার, শান্তি প্রিয় মানুষ এবং আপন পিতা-মাতা ও আত্মীয় স্বজনদের তোমরা কোথায় দাঁড় করিয়েছ ?

বিষয়: বিবিধ

১৩১৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File