ভর্তি পরীক্ষাঃ (শিশু শ্রেণী)
লিখেছেন লিখেছেন আবু জারীর ০৬ জানুয়ারি, ২০১৩, ০৪:২২:২৯ বিকাল
সাহারা ইন্টার ন্যাশনাল স্কুল এন্ড কলেজ
দাম্মাম।
ভর্তী পরীক্ষাঃ (শিশু শ্রেণী)
স্কুল গার্ডঃ সালাম দিয়ে হেড স্যারের রুমে প্রবেশ করে স্যারকে স্যালুট করবে।
(স্যার ছাত্র ছাত্রীরা বাহিরে লাইনে দাড়িয়ে আছে তাদের কি ডাকব? প্রিন্সিপাল সাহেব অনুমতি দিলে এক একজন করে আসবে এবং পরীক্ষা দিয়ে চলে যাবে।)
ছাত্রঃ গুডমনিং স্যার।
স্যারঃ বস
ছাত্রঃ বসতে গিয়ে পরে যাবে।
স্যারঃ আহারে লেগেছে?
ছাত্রঃ হ্যা স্যার খুব লেগেছে।
স্যারঃ মনিংটা কি এখনও তোমার কাছে গুড মনে হচ্ছে?
ছাত্রঃ না স্যার ভেরি ব্যাড। তাছাড়া আমার একমাত্র ছোট বনটাও অসুস্থ্য আব্বু ওকে নিয়ে হাসপাতালে গিয়েছে। আজকের সকালটা আসলেই ভেরি ব্যাড।
স্যারঃ তাহলে তুমি যে বল্লে গুড মর্নিং? তোমার মর্নিংটাতো আজ মোটেই গুড গেল না তাই না? প্রত্যেটা মনিংই কারও কাছে গুড আবার কারও কাছে ব্যাড। তাই গুড মনিং এর মধ্যে কোন মাহাত্ত নাই।
ছাত্রঃ তাহলে স্যার আমরা একজন আরেক জনকে কি বলব? হ্যায় হ্যালো নাকি অন্য কিছু?
স্যারঃ আমরা মুসলমান তাই আমরা যখন পরষ্পর মিলিত হব তখন একে অন্যের জন্য দুয়া করব। যার মর্নিং গুড তার যেমন দুয়া প্রয়োজন আবার যার মর্ণিং ব্যাড তারও দুয়া প্রয়োজন। আসসালামু'আলইকুম এর অর্থ হল তোমার উপর শান্তি বর্ষিত হোক মানে তুমি শান্তিতে থাক। তার মানে, যে ইতিমধ্যেই শান্তিতে আছে সে সারা জীবন শান্তিতে থাকুক আর যে সাময়িক অসুবিধায় আছে তার অসুবিধা দূর হোক এবং তিনি অচিরেই শান্তির জগতে প্রবেশ করুক।
ছাত্রঃ ঠিক আছে স্যার, আমি এখন থেকে আর হায় হ্যাল বা গুড মর্ণিং বলবনা বরং সবাইকেই সালাম দিব। বলব, 'আসসালামু'আলাইকুম'
স্যারঃ গুড, ভেরি গুড। তা তোমার নাম কি? what is your name?
ছাত্রঃ My name is জনাবে আলা মুঘলে আযম সম্রাট আলমগীর মোহাম্মদ আওরঙজেব ইবনে শাহজাহান বিন জাহাঙ্গির ইবনে হুমায়ুন বিন বাবর গজনবীয়ে আব্দুল্লাহ ইবনে জয়নাল আবেদীন বিন মেসের আলী মৃধা।
Sir, it is my nickname! If you want then I can say my full Name.
স্যারঃ No need, No need. Though your nickname is three line then your full name will be three page! It is enough, I mean more than enough.
আচ্ছা বলত পৃথিবীতে কয়টি মহাদেশ এবং কয়টি মহাসাগর আছে?
ছাত্রঃ ৭টি মহাদেশ এবং ৫টি মহাসাগর।
স্যারঃ সঠিক উত্তর, একদম কারেক্ট।
স্যারঃ আচ্ছা বলোত 'না' ইংরেজী কি?
ছাত্রঃ না?
স্যারঃ হ্যা, না?
ছাত্রঃ Yes sir, No sir, নানা, Grand Father sir!!
স্যারঃ Yes sir, No sir, নানা, Grand Father sir!! তোমার মাথা। বোকা কোথাকার?
ছাত্রঃ কেন স্যার? আমার উত্তরটা কি হয়নি?
স্যারঃ না হয়নি।
ছাত্রঃ স্যার আমার উত্তরটা ঠিকই হয়েছে।
স্যারঃ তা কিভাবে শুনি?
ছাত্রঃ স্যার আপনিই বলেছেন 'হ্যা' তার মানে Yes, আবার নাও বলেছেন মানে 'No' আর ভয়ে আমার মুখ থেকে 'নানা' বেড়িয়ে গেছে তাই ভাবলাম নানা ইংরেজীও যেহেতু জানি তাই আপনাকে শুনিয়ে দেই। তাছাড়া বাসায় যতবার নানা বলি আম্মু ততবার আমাকে আদর করে। বুঝলেন স্যার যার যার তার তার।
স্যারঃ ব্রিলিয়ান্ট।
স্যারঃ বলত কুরআন শরীফে মোট সূরার সংখ্যা কত?
ছাত্রঃ ১১৪টি স্যার।
স্যারঃ এবার বলত, ১১৪ সূরার মধ্যে কোন সুরায় নাই মিম আর কোন সূরায় নয় মিম?
ছাত্রঃ সূরা কাওছার এ কোন মিম নাই মানে 'নাই মিম' আর সূরা কাফিরুনে নয়টা মিম আছে মানে 'নয় মিম'।
স্যারঃ গুড ভেরি গুড।
দুনিয়াব বসে যারা বেহেস্তের সু-সংবাদ পেয়েছেন তাদের সংখ্যা ১০ জন। এই দশজন সাহাবী (রাঃ)কে একত্রে আশারায়ে মোবাশষারা বলে। এদের মধ্য থেকে কমপক্ষে ৫ জনের নাম বল।
ছাত্রঃ (১) হযরত আবু বকর সিদ্দীক (রাঃ) (২) হযরত, ওমর ফারূক (রাঃ) (৩) হযরত, ওসমান উবনে আফ্ফান (রাঃ) (৪) হযরত, আলী ইবনে আবী তালেব (রাঃ) (৫) হযরত, যুবায়ের ইবনে আওয়াম (রাঃ) (৬) হযরত, ত্বালহা ইবনে ওবায়দুল্লাহ (রাঃ) (৭) হযরত, আব্দুর রহমান ইবনে আওফ (রাঃ) (৮) হযরত, সা'দ ইবনে আবী ওয়াক্কাস (রাঃ) (৯) হযরত, সা'ঈদ ইবনে যায়েদ (রাঃ) (১০) হযরত, আবু ওবায়দা ইবনে জাররাহ (রাঃ)
স্যারঃ গুড ভেরি গুড।
স্যারঃ এমন একটা প্রাণীর নাম বল যা উড়তে পারে কিন্তু পাখি নয়।
ছাত্রঃ বাদুর।
স্যারঃ এবার গণীত বিষয়ক প্রশ্নঃ তোমার আব্বু তোমার হাতে ১০ টকার একটা নোট দিয়ে তোমাকে এবং তোমার বোনকে টাকা গুলো ভাগ করে নিতে বল্লেন তবে তুমি যত টাকা নিবে তোমার বোনকে তার চেয়ে এক টকা বেশী দিবে। এখন তুমি কত টাকা নিবে আর তোমার বেনকেই বা কত টাকা দিবে?
ছাত্রঃ (মনে মনে হিসাবের ভঙ্গিতেঃ আমি রাখব চার টাকা আর বোনকে দিব ছয় টাকা। না না তাহলে তো দুই টাকা পার্থক্য হয়ে যায়। তাহলে আমি রাখব পাঁচ টাকা আর বোন কে দিব ছয় টাকা। না না তাতে তো মোট ১১ টাকা হয়ে যায়।)
পেয়েছি ইউরেকাঃ আমি নিব ৪.৫০ (সারে চার) টকা এবং বোনকে দিব ৫.৫০ (সারে পাঁচ) টকা।
স্যারঃ গুড, ভেরি গুড।
স্যারঃ কুড়ি গ্রাম, পঁচিশ গ্রাম আর চৌদ্দ গ্রাম কে ছোট থেকে বড়, সাজিয়ে বল।
ছাত্রঃ ২৫ গ্রাম, চৌদ্দ গ্রাম, কুড়ি গ্রাম।
স্যারঃ কিভাবে?
ছাত্রঃ স্যার ২৫ গ্রাম মানে একশত গ্রামের চার ভাগের একভাগ, চৌদ্দ গ্রাম একটা থানা, আর কুড়ি গ্রাম একটা জেলা। এখন আপনিই বলুন ২৫ গ্রাম বড় না একটা থানা বড়? একটা থানা বড় না একটা জেলা বড়?
স্যারঃ Good very good. Excellent!
স্যারঃ হ্যা, তোমার পরীক্ষা ভালো হয়েছে তবে কথা হল বর্তমান সময়ে পরীক্ষা যত ভালই হোকনা কেন যদি মামার জোড় না থাকে তাহলে কোন কাজ হয়না। তা তোমার কোন মামা আছে নাকি?
ছাত্রঃ আছে স্যার।
স্যারঃ তা তোমার মামা করিন কি?
ছাত্রঃ মামি যা বলেন তাই করেন।
স্যারঃ তা তিনি থাকেন কোথায়?
ছাত্রঃ মামির সাথে।
স্যারঃ তা তোমার মামি কোথায় থাকে?
ছাত্রঃ মামার সাথে।
স্যারঃ বহুৎ মুশকিল দেখছি। তা তোমার মামা-মামি দুজনই কোথায় থাকেন?
ছাত্রঃ মামা-মামি এবং মামাতো ভাই-বোন সবাই মিলে একই সাথে একই বাসায় থাকেন।
স্যারঃ আরে বেউকুফ আমি জানতে চাচ্ছি তোমার মামার বাসা কোথায়?
ছাত্রঃ স্যার আমাদের বাসার পার্শে
স্যারঃ তোমাদের বাসা কোথায়?
ছাত্রঃ মামার বাসার পার্শে।
স্যারঃ আহা তোমাদের এবং তোমার চাচার বাসা কোথায়?
ছাত্রঃ পাশাপাশি, স্যার পাশাপাশি।
স্যারঃ বুঝেছি এটা বড় বিচ্ছু ওর সাথে ইংরেজীতে কথা বলতে হবে। আচ্ছা বাবু তুমি কি ইংরেজী জান?
ছাত্রঃ একটু একটু জানি স্যার।
স্যারঃ আমার স্কুলে ভর্তি হতে হলে তোমাকে বাকি কথার জবাব ইংরেজীতেই দিতে হবে বুঝেলে বাচা ধন?
ছাত্রঃ ইয়েস স্যার।
স্যারঃ I want to ask you few question like word meaning.
ছাত্রঃ I am ready sir.
স্যারঃ Small
ছাত্রঃ লম্বা
স্যারঃ Tall
ছাত্রঃ খাট
স্যারঃ Good
ছাত্রঃ মন্দ!
স্যারঃ Bad
ছাত্রঃ ভাল ছেলে, একেবারে আমার মত!
স্যারঃ Oh! my god please help me. I make a great mistake to call this boy for admission test.
ছাত্রঃ স্যার আমরা যদি সব কিছুই জানব তাহলে আর স্কুলে ভর্তি হতে আসি কেন? জানিনা বলেইত শেখার জন্য স্কুলে ভর্তি হওয়া।
আমাদের মত ছোট্ট শিশুদের উপর ভর্তি পরীক্ষার মত কষ্টকর একটা কাজ চাপিয়ে দিয়ে আমাদের বিকাশমান মেধাগুলোকে অঙ্কুরেই বিনষ্ট করবেন না।
আমাদেরও আছে হেসে খেলে শিশুকালটা উপভোগ করার অধিকার।
কোন বিবেকে আপনারা আমাদের সেই অধিকারকে ক্ষুন্ন করে ইঁদুর দৌড়ে লাগিয়ে দিচ্ছেন? স্যার ভর্তি পরীক্ষা ছাড়া কি আমাদের ভর্তি করা যায়না?
শিশু বয়সেই আমাদের অসম প্রতিযোগীতার ইঁদুর দৌড়ে না নামালেই কি নয়?
স্যার আপনি আজ এত বড় একটা প্রতিষ্ঠান চালাচ্ছেন। এত বড় ডিগ্রী অর্জন করেছেন। ডক্টরেট করেছেন। সত্যি করে বলুনতো স্যার আপনিও কি আমাদের মত ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে স্কুলে ভর্তি হয়েছিলেন? না আপনাদের সময় কোন ভর্তিপরীক্ষা ছিলনা। স্যার, বিনা ভর্তি পরীক্ষায় যদি আপনি এত বড় শিক্ষিত হতে পারেন তাহলে আমরা পারব না কেন?
স্যারঃ কাম মাই ডিয়ার। আসলেই আমরা তোমাদের উপর জুলম করছি। তুমি সত্যিই আমার অন্তর চক্ষু খুলে দিয়েছ। ভর্তি পরীক্ষার নামে আমরা কিছু অতিরিক্ত পয়সা আয় করছি কিন্তু সাথে সাথে কোমলমতি শিশু গুলোকেও ইঁদুর দৌড়ে লাগিয়ে দিচ্ছি। আমি ওয়াদা করলাম আর ভর্তি পরীক্ষা নিব না। তোমাকে সহ সকল ছাত্র ছাত্রীকেই আমি বিনা ভর্তি পরীক্ষায় ভর্তি করব।
তবে ভর্তির পরে অবশ্যই ভালো রেজাল্ট করে উপরের ক্লাসে উত্তীর্ণ হতে হবে। যদি কেউ অকৃতকার্য হয় তাহলে সে উপরের ক্লাসে উত্তীর্ণ হওয়ার সুযোগ পাবেনা।
প্রার্থমিক শিক্ষা হবে অবশ্যই ঘরোয়া পরিবেশে। পিতা মাতার চেয়েও গুরুজনদের কাছে বেশী আদর স্নেহ পাবে। পিতা মাতা হল জন্ম দাতা আর নবাগত আদম সন্তানকে মানুষ করার দায়িত্ব গুরুজনদের। কাম মাই বয় কাম আই উইল স্যালুট ইউ।
ভিডিও লিঙ্ক
বিষয়: সাহিত্য
১৮৩৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন