মুসলিম মিল্লাতের যখন জলে কুমির আর ডাঙ্গায় বাঘ তখন পণ্য বর্যনে আছে কতটুকু সমাধান?
লিখেছেন লিখেছেন আবু জারীর ২৩ আগস্ট, ২০১৪, ০৩:৪৬:২৩ দুপুর
মুসলিম মিল্লাতের যখন জলে কুমির আর ডাঙ্গায় বাঘ তখন পণ্য বর্যনে আছে কতটুকু সমাধান?
আমার পঞ্চম শ্রেণী পড়ুয়া মেয়ের প্রশ্ন, “বাবা তুমি বাঘকে বেশী ভয় পাও নাকি কুমিরকে?” বাচ্চারা যখন প্রশ্ন করে তখন জবাব না দিয়ে কোন উপায় থাকেনা আবার জবাব দিতে কালক্ষেপণ করাও দায়। প্রশ্ন যেহেতু নিজ সন্তানের তাই সাহস করে বল্লাম কুমিরকে। জবাব শুনে বাচ্চা বলল হয় নাই! হয় নাই! আমার কন্যা কুমিরকে নয় বরং বাঘকে বেশী ভয় পায়। পিতা কন্যার বিরধের হেতু প্রবন্ধের শেষে খুজে দখব।
মুসলিম জাহানের অবস্থা আজ পুরটাই জলে কুমির আর ডাঙ্গায় বাঘের মত। দুনিয়ায় মানব বসতির শুরুর আগে থেকেই মুমিনদের পিছনে লেগেছে মরদূত শয়তান, আর পরবর্তিতে শয়তানের চ্যালা কাফের মুশরিক ইহুদী নাসারার দল। মুসলমানদের পায়ে পারা দিয়ে একটা ঝগড়া না লাগাতে পারলে যেন তাদের পেটের ভাতই হজম হয়না। ডেনমার্কের পত্রিকায় রাসূল (সঃ) কে নিয়ে ভূয়া কার্টুনই বলুন আর গাজায় নিরহ ফিলিস্তিনীদের উপর বিশ্ব বেহায়া ইহুদী এবং তাদের শেল্টারদাতাদের নগ্ন হামলাই বলুন, সবই মূলত একই সূত্রে গাঁথা।
যে কোন অন্যায়ের প্রতিবাদ করা মুসলমানদের ঈমানী দায়িত্ব, তাই তারা যখনই কোন অন্যায় জুলমের মুখমুখি হয় তখনি প্রতিবাদে ফেটে পরে। অবশ্য অজ্ঞতার কারনে কখনো কখনো প্রতিবাদ বাড়াবাড়ির পর্যায়েও চলে যায়। লানৎপ্রাপ্ত কুফফারীনদের প্রত্যাশাও মূলত তাই, ফলে এক দিকে যেমন তাদের লক্ষ্য অর্যিত হয় তেমনি অন্য দিকে তাদের নিয়ন্ত্রিত মিডিয়ার মাধ্যমে মুসলমানদের উশৃঙ্খল প্রমাণ করা সহজ হয়।
বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতিতে মুসলমানদের প্রতিবাদের ভাষায় ব্যপক পরিবর্তন এসেছে এবং ইতিমধ্যে তা অনেকটা কার্যকরিও মনেহচ্ছে। প্রতিবাদের শান্তিপূর্ণ নতুন ভাষাটা হল পণ্য বর্জন। সম্প্রতি ইহুদীদের সাথে সম্পর্ক আছে এমন পণ্যের তালিকা প্রকাশ হওয়ায় এবং পারত পক্ষে মুসলমানরা তা বর্জন করায় বহুজাতিক কর্পরেট গোষ্ঠির টনক নড়েছে। অনেকেই ঠ্যালায় পরে ইহুদী সম্পৃক্ততার কথা অস্বীকার করতে বাধ্য হয়েছে।
মুসলমানদের এই প্রতিবাদে একেবারেই যে কাজ হচ্ছেনা তা নয়, কিন্তু আমরা কি একটু চিন্তা করে দেখেছি যে ডাঙ্গার বাঘের হাত থেকে বাঁচতে গিয়ে আবার জলের কুমিরের মুখে ঝাপ দিচ্ছি না তো?
ইহুদীদের পণ্যের উৎপাদক বিপণ্নকারী মূলত ইউরোপ আমেরিকা। ইঙ্গ মার্কিনীদের হাতে মার খেয়ে যদি আমরা তাদের পণ্য বর্জন করি তাহলে আমাদেরকে ঝুঁকতে হবে ইন্ডিয়া এবং চায়নার দিকে, কারণ মুসলমানদের নিজস্ব পণ্য বলতে ইফতারের খেজুর ছাড়া তেমন কিছুই নাই। তেলকে সবাই মুসলমানদের সম্পদ জানলেও তা তেমন একটা তলায় পড়েনা। যারা তেল উত্তলন করে সেই সাম্রাজ্যবাদীদের করায়ত্বেই মূলত তেলের তলানী গিয়ে ঠেকে।
এবার আসুন ইন্ডিয়ার দিকে দৃষ্টি দিয়ে দেখি। তারা আমাদের প্রতিবেশী তাই তাদের সম্পর্কে আমাদের যথেষ্ট ধারণা আছে। সীমান্ত হত্যা, বানিজ্য বৈষম্য, আন্ত নদীতে বাঁধ, অবাদে মাদকের চোরাচালান, করিডোর, সর্বপরি দেশীয় সরকারকে দিয়ে দেশের জনগণের উপর দমন পীড়ন আর তাদের দেশের মুসলমানদের পশ্চাদপদ করে রাখা। এমতাবস্থায় তাদের পণ্য বর্জন করাও জরুরী, অবশ্য অনেকে নিজ দায়িত্বে করছেও। বাকী থাকল চীন জাপান। জাপানী পণ্য সীমিত তাই সে বিষয়ে আলোচনা না করে বরং চায়নার দিকে দৃষ্টি দিলে কি দেখি? মুসলমানদের সাথে তাদের আচরণ কি মোটেও ইহুদীদের চেয়ে উত্তম? না মোটেই না। তারা গত রমজানেও মুসলমানদের জোর করে রোজা ভাঙ্গিয়েছে। জুমার নামাযে বাধা দিয়েছে। চায়নারা শুধু মুসলমানদেরই না বরং মানবতারও দুশমন। ওরা মানুষ খেকো ধর্মহীন মাওজেদং এর উত্তরসূরি।
মেয়ের প্রশ্নের জবাবে বলেছিলাম কুমিরকে বেশী ভয় করি কারণ বাঘে মরা মানুষ খায়না, জীবন্ত মানুষের রক্ত পান করে তাই অন্তত দেহটা হলেও পাওয়া যায় কিন্তু কুমীরের মুখে পরলে আস্ত মানুষটাকেই গিলে খায়, ফেলে হাড়গোড়ও পাওয়া যায়না। বর্তমান বিশ্বে ইন্দো মার্কিন ইহুদী চক্র ডাঙ্গার বাঘ হলে চায়না জলের কুমির।
মেয়ের যুক্তিটাও কিন্তু ফেলবার নয়। কুমীর যতই হিংস্র হোকনা কেন সে কিন্তু মানুষের আবাস স্থল ডাঙ্গায় এসে আক্রমণ করেনা যেমনটা বাঘ অনেক সময় লোকালয়ে এসে করে থাকে। সেক্ষেত্রে চায়না ভয়ঙ্কর হলেও তাদের হিংস্রতা তাদের দেশের মধ্যেই সীমাবদ্ধ কিন্তু ইঙ্গ মার্কিন ইহুদী চক্র সীমানা পেরিয়ে আন্ত মাহাদেশীয় দানবে পরিণত হয়েছে।
মোদ্দা কথা বাঘ এবং কুমীর দোনটাই হিংস্র ও বিপদজনক প্রণী। মুসলমানরা যদি এই ডাঙ্গার বাঘ আর জলের কুমীরের হাত থেকে বাঁচতে চায় তাহলে তাদেরকে আত্মনির্ভরসীল হতে হবে। বিশ্বের দেড়শকোটি মুসলমানদের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য তাদের নিজেদেরই তৈরী করতে হবে। সকাল বেলা যেন ইন্দ মার্কিন ইহুদীদের তৈরী ব্রাশ পেস্ট সাবান নিয়ে বাথরুমে যেতে না হয়। বাথরুম থেকে এসে যেন তাদের তৈরী ক্রীম লোশন পাউডার বডি স্প্রে লাগাতে না হয়। নাস্তার টেবিলে যেন তাদের তৈরী নুডুলস খেতে না হয়। দুপুরে যেন তাদের তৈরী ফার্স্টফুড দিয়ে লান্স করতে না হয়, তৃষ্ণা মেটানোর জন্য যেন তাদের তৈরী কোল্ড ড্রিংস ও টাং পান করতে না হয়। তাদের তৈরী রুমাল মাথায় দিয়ে যেন মসজিদে যেতে না হয়, তাদের তৈরী বিমানে করে যেন হজ্জে যেতে না হয়, তাদের তৈরী ফেজবুকের সাহায্য নিয়ে যেন তাদের বিরোধিতা করতে না হয়।
ইন্দ মার্কিন ইহুদীদের পণ্য বর্জনের আগে আমাদের নিজস্ব পণ্য অর্জন করতে হবে। এ ব্যাপারে কোন মুসলিম দেশ কি করল আর কি করলনা তা দেখার সময় এখন আর নাই। ইসলাম প্রিয় প্রত্যেকটা নাগরীককে চিন্তা করতে হবে, নিজেদের সামর্থের মাধ্যমে কিভাবে আমরা পণ্য বিপ্লব করতে পারি। শ্লোগান ধরতে হবে, ‘যদি থাকে একটা পয়সা খাদ্য কিনিও ক্ষুধারও লাগি, আর যদি থাকে দুইটি পয়সা তাহলে বিনিয়োগ করিও উৎপাদনের লাগি হে মুসলিম বিপ্লবী।“
বিষয়: বিবিধ
১৯৯০ বার পঠিত, ৩৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
এরা লেখা পড়া শিখে ক্ষেতে যেতে পারে না, ইহিদী-খ্রীষ্টানদের মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানীতে চাকর-চাকরানী হয়ে গর্ব করতে জানে! FAO এর ওয়েবসাইটে ১৯৬১ সাল থেকে অনেক উপাত্ত দেয়া আছে, তাতে বোঝা যায়, চায়না, ইন্ডিয়া থেকে না আনলে এখানে আকাল পড়বে ৭৪ এর চাইতেও ভয়াবহ! এই অবস্থা নিয়া বলে যুদ্ধ করে ইহুদী-খ্রীষ্ট্রানদের সাথে, অথচ চাকরীটাও গিয়া খুজবো ওদের কোম্পানীতেই ষ্ট্যাটাস এর জন্য!
আমার মনে হয় এ দেশে মুসলিমদের নিয়ে চিন্তা করে অন্তত আগামী ৫০ বছরে কোন লাভ নাই, যেভাবে চলছে – এর চাইতেও নিকৃষ্ট অবস্থানে যাবে এরা!
আর আল্লাহ যদি নিজে থেকে করে দেন সেটা আলাদা ব্যাপার
ধন্যবাদ।
ধন্যবাদ।
বরং বিনামূল্যেই বিলিয়ে দিয়েছিলেন-
উদ্দেশ্য ছিল আল্লাহতায়ালার সন্তুষ্টি
মুসলিম পরিচয়ধারী বিত্তশালীরা যতদিন নিজেদের সম্পদ কেবলমাত্র আল্লাহতায়ালার সন্তুষ্টির জন্য- হ্যাঁ, কেবলমাত্র আল্লাহতায়ালার সন্তুষ্টির জন্য কুরবানী করতে না পারবে-
ব্যবসায়িক লাভ-ক্ষতির হিসাব না কষে কেবলমাত্র আল্লাহতায়ালার সন্তুষ্টির জন্যই ইজরায়েলী পণ্যবর্জন বা স্বনির্ভরতা অর্জন করতে আত্মনিয়োগ করবে-
ততদিন সাধারণ জনগণের জন্য ইজরায়েলী পণ্যবর্জন বা স্বনির্ভরতা অর্জন কোনটাই সহজসাধ্য হবেনা!
সমাজ বা রাষ্ট্রের অবস্থা পরিবর্তনের অন্যতম মূল শক্তি বিত্তশালীরা [সুরা ইসরা আয়াত ১৬]
ধন্যবাদ।
প্রতিকুল পরিবেশে নিজেদের খাপখাইয়ে আসল উদ্দেশ্যের দিকে নিরবে এগতে হবে কিন্তু সেটা না করে ডাক ঢল পিটিয়ে সক্ষমতার চেয়ে অতিরিক্ত ক্ষমতা দেখাতে গিয়ে আমরা মার খেয়ে যাচ্ছি।
ধন্যবাদ।
দুনিয়ার সকল মুসলিম ভোক্তা। বেশীরভাগ মুসলমান ইসলাম বলতে বৈরাগীর মত জীবন যাপন করাকেই মনে করে। সত্যকে সত্য বলা যাবেনা, মিথ্যাকে মিথ্যা না বলে বোবার মত থাকা আর সামনে যা পাওয়া যায় তার থেকে কবুতরের মত বাছাই করে খাওয়াকে হালাল খাবার মনে করে।
আজ বলা হচ্ছে ইস্রাইলী পণ্য বর্জনের। কিন্তু অল্প সংখ্যক ইয়াহুদীদের তৈরী পণ্য বর্জন করে প্রায় দেড়শ কোটি মুসলিমরা নিজেদের অভাব পূরণের জন্য কি নিজস্ব কোন পন্থা কার্যকর করতে পেরেছে আম ভাবে?
ইসলামপন্থীদের বিষয়টা নিয়ে ভাবতে হবে।
ধন্যবাদ।
ধন্যবাদ।
কোরআনে বিজ্ঞানের কথা আছে । কই কোন আলেম কি কোরআন পড়ে বিজ্ঞানী হয়েছে ? বিজ্ঞানী তো হয়েছে যারা কোরআনই পড়েনি তারা, তারা গবেষণা করতে করতে একসময় দেখা যাচ্ছে ১৪বছর আগের কোরআনে তা বলা আছে । মুসলমানেরা কোন কালেই সৃষ্টি ধর্মী কিছু করেনি । কিছু কিছু করলেও তা ধরে রাখতে পারেনি । এখানেই মুসলমানের দূর্বলতা ।
কিছু কিছু করলেও তা ধরে রাখতে পারেনি একথা আংশিক সত্য বলা যায়
আরো কিছু কথা [সেলিম জাহাঙ্গীর] এর পোস্টে বলা হয়েছে
শত শত উদাহরণের মধ্যে একটি উদাহরণ দিচ্ছি। ইবনে সিনা মাত্র ১০ বছর বয়সে কুরআনে হিফয হন। তিনি ছিলেন একাধারে চিকিৎসক, গণিতজ্ঞ, জ্যোতির্বিজ্ঞানী, ইতিহাস ও ভূগোলবিশারদ। তাঁর রচিত ‘কানুন...’ গ্রন্থটি চিকিৎসাবিজ্ঞানের বাইবেল হিসেবে আজো স্বীকৃত।
শতশত উ
এরোমেটিকের হালাল সাবানের কারণে ভারতীয় নীর্মা সাবান মার খেয়েছিল, ইউনি লিভারেরও ত্রাহী মধুসদন অবস্থা হয়েছিল।
বিষয় গুলো নিয়ে ভাবে কার্যকরী সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
ধন্যবাদ।
http://bondhublog.com/?p=33450
দুঃখিত লিঙ্কটি আবার দিলাম।
http://www.bondhublog.com/?p=33450
১। দেশী মুরগি
২। দেশী ডিম ছাড়া
এইতো দেশ প্রেম। তবে হ্যা আমরা ওদের পণ্য বর্জন করার পর ইহুদী, খ্রীষ্টিয়ানরা যদি আমাদের গার্মেন্টস পণ্য বর্জন করে তাহলে আমাদের অনেকের পেতে ভাত জুটবে না। ভেবে দুখুন কি সিদ্ধান্ত নিবেন?
আমাদের গার্মেন্টেস যদি আমরা ব্যবহার করি তাহলেও আমাদের না খেয়ে মরতে হবেনা।
গার্মেণ্টসে আমরা যতটুকু ভ্যালু এয়াড করি তার চেয়ে বরং দুই ঈদ আর পূযয় বিদেশী গার্মেণ্টস ও প্রসাধনী বেশী আমদানী করি।
মুসলমানদের মার্কেট এত ব্যাপক এবং জনশক্তি এক্ত বেশী যে ইচ্ছা করলে তারা একাই চলতে পারে।
মুসলমানদের বর্জন নীতি এবং একলা চল নীতিতে বিশ্বাসী হওয়া উচিৎ নয় তবে প্রার্থমিকভাবে প্রটেকশান এবং পরবর্তিতে উদারীকরণের মনবৃত্তিতে এগতে হবে।
ধন্যবাদ।
ধন্যবাদ।
ইসলামী ব্যাংক হওয়ায় যারা নামায পড়েনা তারাও এখন ইসলামী ব্যাংকে হিসাব খুলে।
এরই নাম বিকল্প।
ধন্যবাদ।
ইমরান ৩:৫৫ আয়াতে কি বলছে দেখি
إِذْ قَالَ اللّهُ يَا عِيسَى إِنِّي مُتَوَفِّيكَ وَرَافِعُكَ إِلَيَّ وَمُطَهِّرُكَ مِنَ الَّذِينَ كَفَرُواْ وَجَاعِلُ الَّذِينَ اتَّبَعُوكَ فَوْقَ الَّذِينَ كَفَرُواْ إِلَى يَوْمِ الْقِيَامَةِ ثُمَّ إِلَيَّ مَرْجِعُكُمْ فَأَحْكُمُ بَيْنَكُمْ فِيمَا كُنتُمْ فِيهِ تَخْتَلِفُونَ
অর্থ:আর স্মরণ কর, যখন আল্লাহ বলবেন, হে ঈসা! আমি তোমাকে নিয়ে নেবো এবং তোমাকে নিজের দিকে তুলে নিবো-কাফেরদের থেকে তোমাকে পবিত্র করে দেবো। আর যারা তোমার অনুগত রয়েছে তাদেরকে কিয়ামতের দিন পর্যন্ত যারা অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করে তাদের উপর জয়ী করে রাখবো।
আল্লাহ্ যাদের কেয়ামত দিবস পর্যন্ত জয়ী করে রাখার ঘোষনা দিয়েছেন এই আয়অতে সেখানে আমরা উঁচুতে উঠতে চাইলেকি পারবো?
সূরা বাকারা ২:৬২ আয়াত
إِنَّ الَّذِينَ آمَنُواْ وَالَّذِينَ هَادُواْ وَالنَّصَارَى وَالصَّابِئِينَ مَنْ آمَنَ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الآخِرِ وَعَمِلَ صَالِحاً فَلَهُمْ أَجْرُهُمْ عِندَ رَبِّهِمْ وَلاَ خَوْفٌ عَلَيْهِمْ وَلاَ هُمْ يَحْزَنُونَ
অর্থ:নিঃসন্দেহে যারা মুসলমান এবং যারা ইহুদী, নাসারা ও সাবেঈন, যারা ঈমান এনেছে আল্লাহর প্রতি ও কিয়ামত দিবসের প্রতি এবং সৎকাজ করেছে, তাদের জন্য রয়েছে তার সওয়াব তাদের পালনকর্তার কাছে। আর তাদের কোনই ভয়-ভীতি নেই, তারা দুঃখিতও হবে না।
সূরা বাকারা ২:১৩৬ আয়াত
قُولُواْ آمَنَّا بِاللّهِ وَمَآ أُنزِلَ إِلَيْنَا وَمَا أُنزِلَ إِلَى إِبْرَاهِيمَ وَإِسْمَاعِيلَ وَإِسْحَقَ وَيَعْقُوبَ وَالأسْبَاطِ وَمَا أُوتِيَ مُوسَى وَعِيسَى وَمَا أُوتِيَ النَّبِيُّونَ مِن رَّبِّهِمْ لاَ نُفَرِّقُ بَيْنَ أَحَدٍ مِّنْهُمْ وَنَحْنُ لَهُ مُسْلِمُونَ
অর্থ: তোমরা বল, আমরা ঈমান এনেছি আল্লাহর উপর এবং যা অবতীর্ণ হয়েছে আমাদের প্রতি এবং যা অবতীর্ণ হয়েছে ইব্রাহীম, ইসমাঈল, ইসহাক, ইয়াকুব এবং তদীয় বংশধরের প্রতি এবং মূসা, ঈসা, অন্যান্য নবীকে পালনকর্তার পক্ষ থেকে যা দান করা হয়েছে, তৎসমুদয়ের উপর। আমরা তাদের মধ্যে পার্থক্য করি না। আমরা তাঁরই আনুগত্যকারী।
সূলা ইমরান ৩:৮৪ আয়াত
قُلْ آمَنَّا بِاللّهِ وَمَا أُنزِلَ عَلَيْنَا وَمَا أُنزِلَ عَلَى إِبْرَاهِيمَ وَإِسْمَاعِيلَ وَإِسْحَقَ وَيَعْقُوبَ وَالأَسْبَاطِ وَمَا أُوتِيَ مُوسَى وَعِيسَى وَالنَّبِيُّونَ مِن رَّبِّهِمْ لاَ نُفَرِّقُ بَيْنَ أَحَدٍ مِّنْهُمْ وَنَحْنُ لَهُ مُسْلِمُونَ
অর্থ:বলুন, আমরা ঈমান এনেছি আল্লাহর উপর এবং যা কিছু অবতীর্ণ হয়েছে আমাদের উপর, ইব্রাহীম, ইসমাঈল, ইসহাক, ইয়াকুব এবং তাঁদের সন্তানবর্গের উপর আর যা কিছু পেয়েছেন মূসা ও ঈসা এবং অন্যান্য নবী রসূলগণ তাঁদের পালনকর্তার পক্ষ থেকে। আমরা তাঁদের কারো মধ্যে পার্থক্য করি না। আর আমরা তাঁরই অনুগত।
আসলেকি আমরা ইনাদের উপর ঈমান এনেছি? এইসব বিষয় গুলোও ধর্মের ভাববার কারন। সকল নবী রাসুলের মিশন ছিলো এক। কিনতু আজ এতো ধর্ম এতো মত বা পথ কেন? এইগুলো নিয়েও আমাদের ভাবা উচিত।
কুর'আন মানবজাতির জন্য হেদায়েতের গ্রন্থ তবে অনেকে কুর'আন পড়ে বিভ্রান্তও হয়।
আপনার কোট করা আয়াতগুলোর সংক্ষিপ্ত তাফসির সহ লিংক দিলাম। আল্লাহ আমাদের সঠিক পথে চলার তাওফিক দিন। আমীন।
﴿وَمَنْ أَحْسَنُ قَوْلًا مِّمَّن دَعَا إِلَى اللَّهِ وَعَمِلَ صَالِحًا وَقَالَ إِنَّنِي مِنَ
হামিম সাজদাহ ৩৩) সেই ব্যক্তির কথার চেয়ে আর কার কথা উত্তম হবে যে আল্লাহর দিকে ডাকলো, সৎ কাজ করলো এবং ঘোষণা করলো ৷৩৬
৩৬. মু'মিনদের সান্ত্বনা দেয়া এবং মনোবল সৃষ্টির পর এখন তাদেরকে তাদের আসল কাজের প্রতি উৎসাহিত করা হচ্ছে৷ আগের আয়াতে তাদের বলা হয়েছিলো, আল্লাহর বন্দেগীর ওপর দৃঢ়পদ হওয়া এবং এই পথ গ্রহণ করার পর পুনরায় তা থেকে বিচ্যুত না হওয়াটাই এমন একটা মৌলিক নেকী যা মানুষকে ফেরেশতার বন্ধু এবং জান্নাতের উপযুক্ত বানায়৷ এখন তাদের বলা হচ্ছে, এর পরবর্তী স্তর হচ্ছে, তোমরা নিজে নেক কাজ করো, অন্যদেরকে আল্লাহর বন্দেগীর দিকে ডাকো এবং ইসলামের ঘোষণা দেয়াই যেখানে নিজের জন্য বিপদাপদ ও দুঃখ-মুসিবতকে আহবান জানানোর শমিল এমন কঠিন পরিবেশেও দৃঢ়ভাবে ঘেষণা করো, আমি মুসলমান৷ মানুষের জন্য এর চেয়ে উচ্চস্তর আর নেই৷ এ কথার গুরুত্ব পুরোপুরি উপলব্ধি করার জন্য যে পরিস্থিতিতে তা বলা হয়েছে তার প্রতি লক্ষ্য রাখা প্রয়োজন৷ সে সময় অবস্থা ছিল এই যে, যে ব্যক্তিই মুসলমান হওয়ার কথা প্রকাশ করতো সে হঠাৎ করেই অনুভব করতো যেন হিংস্র শ্বপদ ভরা জংগলে পা দিয়েছে যেখানে সবাই তাকে ছিঁড়ে ফেড়ে খাওয়ার জন্য ছুটে আসছে৷ যে ব্যক্তি আরো একটু অগ্রসর হয়ে ইসলাম প্রচারের জন্য মুখ খুলেছে সে যেন তাকে ছিঁড়ে ফেড়ে খাওয়ার জন্য হিংস্র পশুকুলকে আহবান জানিয়েছে৷ এই পরিস্থিতিতে বলা হয়েছে, কোন ব্যক্তির আল্লাহকে রব হিসেবে স্বীকার করে সোজা পথ গ্রহণ করা এবং তা থেকে বিচ্যুত না হওয়া নিসন্দেহে বড় ও মৌলিক কাজ৷
কিন্তু বলে কোন ব্যক্তির ঘোষণা করা পরিণামের পরোয়া না করে সৃষ্টিকে আল্লাহর বন্দেগীর দিকে আহবান জানানো এবং কেউ যাতে ইসলাম ও তার ঝান্ডাবাহীদের দোষারোপ ও নিন্দাবাদ করার সুযোগ না পায় এ কাজ করতে গিয়ে নিজের তৎপরতাকে সেভাবে পবিত্র রাখা হচ্ছে পূর্ণ মাত্রার নেকী৷
﴿إِذْ قَالَ اللَّهُ يَا عِيسَىٰ إِنِّي مُتَوَفِّيكَ وَرَافِعُكَ إِلَيَّ وَمُطَهِّرُكَ مِنَ الَّذِينَ كَفَرُوا وَجَاعِلُ الَّذِينَ اتَّبَعُوكَ فَوْقَ الَّذِينَ كَفَرُوا إِلَىٰ يَوْمِ الْقِيَامَةِ ۖ ثُمَّ إِلَيَّ مَرْجِعُكُمْ فَأَحْكُمُ بَيْنَكُمْ فِيمَا كُنتُمْ فِيهِ تَخْتَلِفُونَ﴾
আলে ইমরান ৫৫) (এটি আল্লাহরই একটি গোপন কৌশল ছিল) যখন তিনি বললেনঃ ‘‘হে ঈসা ! এখন আমি তোমাকে ফিরিয়ে নেবো৫১ এবং তোমাকে আমার নিজের দিকে উঠিয়ে নেবো৷ আর যারা তোমাকে অস্বীকার করেছে তাদের থেকে ( অর্থাৎ তাদের সংগ এবং তাদের পূতিগন্ধময় পরিবেশে তাদের সংগে থাকা থেকে ) তোমাকে পবিত্র করে দেবো এবং তোমাকে যারা অস্বীকার করেছে৫২ তাদের ওপর তোমার অনুসারীদের কিয়ামত পর্যন্ত প্রাধান্য দান করবো৷ তারপর তোমাদের মধ্যে যেসব বিষয়ে মতবিরোধ সৃষ্টি হয়েছে সেগুলোর মীমাংসা করে দেবো৷
৫২. হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম তাদেরকে ঈমান আনার দাওয়াত দিয়েছিলেন এবং তারা তা প্রত্যাখ্যান করেছিল৷ বিপরীত পক্ষে তাঁর অনুসারী বলতে যদি সঠিক, আর যদি এর অর্থ হয় মোটামুটি যারা তাঁকে মেনে নিয়েছিল, তাহলে এর মধ্যে খৃষ্টান ও মুসলমান উভয়ই শামিল হবে৷
﴿قُلْ آمَنَّا بِاللَّهِ وَمَا أُنزِلَ عَلَيْنَا وَمَا أُنزِلَ عَلَىٰ إِبْرَاهِيمَ وَإِسْمَاعِيلَ وَإِسْحَاقَ وَيَعْقُوبَ وَالْأَسْبَاطِ وَمَا أُوتِيَ مُوسَىٰ وَعِيسَىٰ وَالنَّبِيُّونَ مِن رَّبِّهِمْ لَا نُفَرِّقُ بَيْنَ أَحَدٍ مِّنْهُمْ وَنَحْنُ لَهُ
আলে ইমরান ৮৪) হে নবী ! বলোঃ আমরা আল্লাহকে মানি, আমাদের ওপর অবতীর্ণ শিক্ষাকে মানি, ইবরাহীম, ইসমাঈল, ইসহাক , ইয়াকূব ও ইয়াকূব সন্তানদের ওপর অবতীর্ণ শিক্ষাকেও মানি এবং মূসা, ঈসা ও অন্যান্য নবীদেকে তাদের রবের পক্ষ থেকে যে হিদায়াত দান করা হয় তার ওপরও ঈমান রাখি৷ আমরা তাদের মধ্যে পার্থক্য করি না৭২ এবং আল্লাহর হুকুমের অনুগত ( ) ৷
﴾
﴿أَمْ كُنتُمْ شُهَدَاءَ إِذْ حَضَرَ يَعْقُوبَ الْمَوْتُ إِذْ قَالَ لِبَنِيهِ مَا تَعْبُدُونَ مِن بَعْدِي قَالُوا نَعْبُدُ إِلَٰهَكَ وَإِلَٰهَ آبَائِكَ إِبْرَاهِيمَ وَإِسْمَاعِيلَ وَإِسْحَاقَ إِلَٰهًا وَاحِدًا وَنَحْنُ لَهُ مُسْلِمُونَ﴾
বাকারা ১৩৩) তোমরা কি তখন সেখানে উপস্থিত ছিলে,যখন ইয়াকুব এই পৃথিবী থেকে বিদায় নিচ্ছিল?মৃত্যুকালে সে তার সন্তানদের জিজ্ঞেস করলোঃ“আমার পর তোমরা কার বন্দেগী করবে ? ” তারা সবাই জবাব দিলঃ“ আমরা সেই এক আল্লাহর বন্দেগী করবো , যাকে আপনি এবং আপনার পূর্বপুরুষ ইবরাহীম, ইসমাঈল ও ইসহাক ইলাহ হিসেবে মেনে এসেছেন আর আমরা তাঁরই অনুগত- মুসলিম ৷ ”১৩৩
১৩৩. বাইবেলে হযরত ইয়াকূবের (আ)মৃত্যুকালীন অবস্থার বিস্তারিত বিবরণ দেয়া হয়েছে৷ কিন্তু আশ্চর্যের বিষয়, সেখানে এই উপদেশের কথা কোথাও উল্লেখ করা হয়নি ৷ তবে তালমূদে যে বিস্তারিত উপদেশ লিপিবদ্ধ হয়েছে তার বিষয়বস্তু কুরআনের এ বর্ণনার সাথে অনেকটা সামঞ্জস্যশীল ৷ সেখানে আমরা হযরত ইয়াকূবের (আ)একথাগুলো পাই:
"সদাপ্রভু আল্লাহর বন্দেগী করতে থাকো ৷ তিনি তোমাদেরকে ঠিক তেমনিভাবে বিপদ থেকে বাঁচাবেন যেমন বাঁচিয়েছেন তোমাদের পূর্ব পুরুষদেরকে৷…………………তোমাদের সন্তানদের আল্লাহকে ভালোবাসতে এবং তাঁর হুকুম পালন করতে শেখাও ৷ এতে তাদের জীবনের অবকাশ দীর্ঘ হবে৷ কারণ আল্লাহ তাদেরকে হেফাযত করেন যারা সত্যনিষ্ঠ হয়ে কাজ করে এবং তাঁর পথে ঠিকমতো চলে ৷" জবাবে তাঁর ছেলেরা বলেন: "আপনার উপদেশ মতো আমরা কাজ করবো ৷ আল্লাহ আমাদের সাথে থাকুন ৷" একথা শুনে হযরত ইয়াকূব(আ)বলেন: "যদি তোমরা আল্লাহর পথ থেকে ডাইনে বাঁয়ে না ঘুরে যাও , তাহলে আল্লাহ অবশ্যি তোমাদের সাথে থাকবেন৷"
﴿قُولُوا آمَنَّا بِاللَّهِ وَمَا أُنزِلَ إِلَيْنَا وَمَا أُنزِلَ إِلَىٰ إِبْرَاهِيمَ وَإِسْمَاعِيلَ وَإِسْحَاقَ وَيَعْقُوبَ وَالْأَسْبَاطِ وَمَا أُوتِيَ مُوسَىٰ وَعِيسَىٰ وَمَا أُوتِيَ النَّبِيُّونَ مِن رَّبِّهِمْ لَا نُفَرِّقُ بَيْنَ أَحَدٍ مِّنْهُمْ وَنَحْنُ لَهُ
বাকারা ১৩৬) হে মুসলমানরা!তোমরা বলো, “আমরা ঈমান এনেছি আল্লাহর প্রতি, যে হিদায়াত আমাদের জন্য নাযিল হয়েছে তার প্রতি এবং যা ইবরাহীম, ইসমাঈল , ইসহাক , ইয়াকুব ও ইয়াকুবের সন্তানদের তাদের রবের পক্ষ থেকে দেয়া হয়েছিল তার প্রতি ৷ তাদের করোর মধ্যে আমরা কোন পার্থক্য করি না৷ ১৩৬ আমরা সবাই আল্লাহর অনুগত ৷”
১৩৬ . নবীদের মধ্যে পার্থক্য না করার অর্থ হচ্ছে, কেউ সত্যের ওপর প্রতিষ্ঠিত ছিলেন এবং কেউ সত্যের ওপর প্রতিষ্ঠিত ছিলেন না অথবা কাউকে মানি এবং কাউকে না ---আমরা তাদের মধ্যে এভাবে পার্থক্য করি না ৷ আল্লাহর পক্ষ থেকে আগত সকল নবীই একই চিরন্তন সত্য ও একই সরল-সোজা পথের দিকে আহবান জানিয়েছেন ৷কাজেই যথার্থ সত্যপ্রিয় ব্যক্তির পক্ষে সকল নবীকে সত্যপন্থী ও সত্যের প্রতিষ্ঠিত বলে মেনে নেয়া ছাড়া গত্যন্তর নেই ৷ যে ব্যক্তি এক নবীকে মানে এবং অন্য নবীকে অস্বীকার করে , সে আসলে যে নবীকে মানে তারও অনুগামী নয় ৷ কারণ হযরত মূসা (আ), হযরত ঈসা (আ) ও অন্যান্য নবীগণ যে বিশ্বব্যাপী চিরন্তন সহজ-সত্য পথ দেখিয়েছিলেন সে আসলে তার সন্ধান পায়নি বরং সে নিছক বাপ-দাদার অনুসরণ করে একজন নবীকে মানছে ৷ তার আসল ধর্ম হচ্ছে ,র্ঠিণবাদ, বংশবাদ ও বাপ-দাদার অন্ধ অনুসরণ !কোন নবীর অনুসরণ তার ধর্ম নয় ৷ نَ﴾
আমরা মুসলমানরা আল্লাহর প্রেরিত সকল নবী (আঃ)কেই মানি এবং সম্মান করি তাই দুনিয়ার কোন মুসলিমই কোন নবীকে অসম্মান করেনা, এরকম কোন উদাহরণ কেউ দিতে পারবেনা।
ধান্যবাদ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন