যারা কুরআনের জন্য জীবন দিতে রাজি তারা কুরআনের আলেকে জীবন গড়তে মোটেই অরাজী নয়।
লিখেছেন লিখেছেন আবু জারীর ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩, ১০:০৬:৫৮ রাত
যরা কুরআনের সম্মানে, রাসূল (সঃ) এর বালোবাসায় এবং আল্লাহর প্রেমে নিজেদের জীবন উৎসর্গ করতে রাজি তারা কুরআনের বিধান আর রাসূল (সঃ) এর সুন্নতের আলোকে জীবণ গড়তে মোটেই অরাজি নয়।
যদি তাই হয় তাহলে কেন তারা তা পারছেনা? সমস্যাটা কোথায়?
রাষ্ট্র ক্ষমতায় যেসকল মুসলমান আছে তাদের অন্তরে কুরআন, রাসূল (সঃ) এবং আল্লাহ প্রিতি যথা যথ শ্রদ্ধা ভালোবাসা ও মহব্বত না থাকার কারনেই মূলত কুরআনের রাজ কায়েম হচ্ছেনা। মুসলিম নামধারী ক্ষমতাসিনদের উদাসিনতা এবং ইসলামী হুকুমত কায়েমের স্বকৃয় বিরোধীতার কারনেই মূলত শতভাগ ইসলামী জীবন পদ্ধতি অনুশরণ করা যাচ্ছে না।
মুসলমানরা কোরআনের জন্য জীবন দিতে রাজি, কিন্তু কোরআনের আলোয় জীবন গড়তে রাজিনা - সেলিম জাহাঙ্গির ভাই এর সাথে সব বিষয়ে আমি একমত হতে পারলাম না। তিনি মুদ্রার এক পিঠ বয়ান করেছেন। আমি আমি তার লেখার আলোকে অপর পিঠ বয়ান করার চেষ্টা করব ইনশা'আল্লাহ। সিদ্ধান্ত নেয়ার দায়িত্ব প্রিয় পাঠক বন্ধুদের।
মুসলমানরা কোরআনের জন্য জীবন দিতে রাজি অথচ সেই কোরআনের আলোয় জীবন গড়তে তারা নারাজ।
যারা কুরআনের জন্য জীবন দিতে প্রস্তুত তারা কুরআনের আলোকে জীবন গড়ার জন্য মুখিয়ে আছে। ব্যক্তিগতভাবে চেস্টাও করছে কিন্তু রাষ্ট্রিয় আনুকুল্য না থাকায় পুরপুরি সফল হচ্ছে না।
মুহাম্মাদ (সাঃ) যাকে চেনাতে যে বিষয় নিয়ে লড়েছে আমরা আসলে তাঁকে চিনেছি কি?
আল্লাহ প্রেমিরা অবশ্যই তাঁকে চিনেছে তাইতো শেষ রাতে তাঁর সাথে অভিসারে মত্ত থাকে প্রতিটি মুমিন প্রেমিক।
তারাই হয়ত চিনতে পারেনি যারা নিজেদের পাক্কা মুসলমান দাবী করে অথচ সামর্থ থাকা সত্তেও আল্লাহর দীন কায়েমের আন্দোলনে শরিক হয়না প্রকারন্তরে ইচ্ছায় হোক বা অনিচ্ছায় হোক বিরোধীতা করে। ভাবে চৌদ্দ শত বছরের পুরানা বিধানে এখন আর আধুনিক রাষ্ট্র চলেনা। দেশের সব জনগণ যেহেতু মুসলমান না তাই এটা সম্ভব না। অথচ আল্লাহর বিধান অমুসলিমদের জন্য অন্য যেকোন বিধানের চেয়ে উত্তম, ইনসাফ পূর্ণ, গণতান্ত্রীক ও নিরাপদ।
এই পৃথিবীতে যখনি কোন পাগোল, বুদ্ধিহীন মানুষ, মুহাম্মাদ (সাঃ) কে নিয়ে ব্যঙ্গ কার্টুণ, ব্যঙ্গ চিত্র ও কুরুচি পূর্ণ মন্তব্য করেছে সাথে সাথে পৃথিবী জুড়ে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে ।
লোক গুলি যদি সত্যিই বুদ্ধিহীন হত তাহলে আল্লাহ প্রেমিকেরা পাগলের প্রলাপ বলে এড়িয়ে যেত কিন্তু তারা মোটেই বুদ্ধিহীন নয় বরং বুদ্ধির ঢেকিরা জেনে বুঝেই এগুলো করছে। যদি তাদের বাঁধা দেয়া নাহয় তাহলে হাজারো মতলবি আঁতেল এ কাজে উদ্ভুদ্ধ হবে। মতলবি এসকল পাগলদের পাগলা গারদে পাঠানর দায়িত্ব ছিল সরকারের কিন্তু সরকার সেটা করছেনা বলেই আপনার ভাষায় যারা ধর্মান্ধ তাদের মাঠে নেমে প্রতিবাদ করতে হচ্ছে।
বাংলাদেশে যখন ইসলামী আন্দোলন দানা বাঁধেনি তখন কমিউনিজমের রম রমা অবস্থা ছিল। যদিনা তাদের মোকাবেলায় ইসলামী আন্দোলন এগিয়ে আসত এবং বুদ্ধিবৃত্তিক মোকাবেলা করত তাহলে আজ যে ছেলেটি মসজিদে গিয়ে আল্লাহকে সেজদা দেয় সে'ই চেতনার নামে কোন মুর্তির পাদদেশে গিয়ে নিজের আশ্রয় খুজত। অনেক আলেমের ছেলেকেও ৬০/৭০ এর দশকে তাই করতে দেখা গেছে। আজকের নামকরা বামেরা আকরাম খাঁ, ডঃ শহীদুল্লাহ এর মত গুণীজনদের উত্তরসূরী!
কেউ যদি জাতির পিতা, জাতীয় পতাকা, জাতীয় সংগীতকে অবমাননা করার ব্যার্থ চেষ্টা করে তাতে কি ওগুলোর অপমান হয়? হয়না। কিন্তু যে দেশে আমরা বসবাস করি সেদেশের জাতীয় সংগীত, জাতীয় পতাকা, মানচিত্র তথা কাতীয় নেতাদের সম্মান করা প্রতিটি নাগরিকের দায়িত্ব কিন্তু কেউ যদি ওগুলো সম্পর্কে উল্টা পাল্টা অপমানজনক কিছু বলে তাহলে তার ঘাড়ের উপর মাথা থাকে কি?
ধর্মহীন সেকুলারেরা তখন কিন্তু পাগল বলে অপমানকারীদের ছেড়ে দেয় না রাষ্ট্র যন্ত্রও সাথে সাথেই ঝাপিয়ে পরে। তাহলে ঈমানদারদের কলিজায় আঘাত দিয়ে কেউ পার পেয়ে যাবে সেটা কিভাবে সম্ভব?
মুমিনরা কিন্তু ধর্মহীন সেকুলারদের মত অতটা বিবেকান্ধ না। তারা আইনকে নিজের হাতে তুলে নিতে চায়না। তারা যার তার ফাঁসি চায়না। তারা কারো পিঠের চামড়া তুলে নিতে চায়না, কাউকে ধরে ধরে নাস্তা করার শ্লোগান দেয়না, তারা চায় উচিৎ বিচার এবং তা রাষ্ট্রের কাছে।
কেন আপনার কি ধারনা তাদের এই সব কারণে ইসলাম বিনিষ্ট হবে? কখনো নয়।সহমত।
যখন কেউ কোরআনকে হেও করেছে কিংবা পুড়িয়েছে সঙ্গে সঙ্গে রাজপথে নেমেছে এই পাগোলপারা ধর্মান্ধ মানুষগুলো।
মানুষ গুলো মোটেই ধর্মন্ধ নয় বরং আল্লাহর প্রেমে এক একজন দেওয়ানা। অন্যায়ের প্রতিবাদ করা মুমিনের দায়িত্ব সেই দায়িত্ব পালনের জন্যই তারা প্রতিবাদে মুখর হচ্ছেন।
কেন ধর্মান্ধ মানুষ বললাম? এই কারনে বললাম যে কোরআন রক্ষার জন্য তুমি জীবন বাজি রেখে মরতে রাজি আছো, অথচ সেই কোরআন কে তুমি কতটা মানছো?
যাদেরকে আপনি ধর্মান্ধ বলছেন তারা কিন্তু ধর্মান্ধনা বরং ধার্মিক আর তারা কুরআন মানছেনা এ কথা আপনাকে কে বল্ল? ব্যক্তিগত ভাবে যতটুকু মানা সম্ভব তারা ততটুকু মানছে আর রাষ্ট্রের কারণে যতটুকু মানতে পারছেনা সেটুকুও যেন মানতে পারে সেজন্যইতো ইসলামী হুকুমত কায়েমের আন্দোলন। যারা মুসলিম নামধারী প্রকারন্তরে ইসলাম বিরোধী মোনাফেক দয়া করে তাদেরকে ইসলামপন্থীদের পাল্লায় উঠিয়ে পরিমাপ করবেন না।
কেন কোরআন কে মানছো না, জানছো না। কোরআন যদি তোমার রক্ষা কবজ হয়; ভালো লাগা ও ভালো বাসার কিতাব হয়, তাহলে তাকে আঁকড়ে ধরছো না কেন?
তারা কুরআনকে জানছে এবং মানার চেষ্টা করছে অথচ সরকার কুরআনের তাফসিরকে জিহাদী বই বলে জব্দ করছে এবং যাদের কাছে পাওয়া যাচ্ছে তাদের গ্রেফতার করছে! সে বিষয়ে বিবেকবানদের বক্তব্য আসা দরকার ছিল। কিন্তু দঃখজনক হলেও সত্য যারা ধর্মীকদের অতি ধার্মীক বানাতে নসিহত করে তার সে ব্যাপার গুলো বিবেকান্ধের মত দেখেও না দেখার বান করে!
তুমি কোরআনের জন্য মরবে অথচ কোরআন মানবে না এটা কেমন মুসলমান তুমি ভাবতে হবে।
যারা জীবন দিতে প্রস্তুত তারা অবশ্যই কুর'আনের রঙে নিজেদের জীবন রাঙাতেও প্রস্তুত। প্রচলিত সমাজ ব্যবস্থার কারণে যেভাবে মানা দরকার হয়ত সেভাবে তারা মানতে পারছেনা। পুরপুরি যাতে মানতে পারে সেজন্যই তারা ইনসাফ পূর্ণ গণতান্ত্রীক একটা ইসলামী সমাজ বিনির্মানে কাজ করে যাচ্ছে। আমাদেরও দায়িত্ব সাধ্য মত তাদের সহযোগিতা করা এবং তাদের কোন ভুল থাকলে অবশ্যই তা শুধরে দেয়া।
কোন পাগোল আমার এবং তোমার ধর্ম নিয়ে পাগলামী করলো আর তুমি সেই পাগোলের সাথে ঝাপিয়ে পড়লে, নিজের ধর্ম রক্ষা করতে। তোমাদের কি ধারনা কোন পাগোল কারো ধর্ম বিনাশ করতে পারে?
পাগল অবশ্যই কারো ধর্মের বিনাস করতে পারেনা তবে পাগলকে পাগলা গারদে না পাঠালে তার পাগলামী আরো বেড়ে যেতে পারে সেজন্যই পাগলদের পাগলা গারদে পাঠানোর দাবী করাহয় মাত্র।
পাগোলের প্রতি তোমার ক্ষোভ প্রাকাশ করতে নিজের দেশের সম্পদকে ভাংচুর করলে,জ্বালাউ পুড়াউ করলে এটা কি তোমার ধর্মের আকিদা? এটা কোন ধর্মের শিক্ষা হতে পারে না।
পাগলের পাগলামী বন্ধের জন্য আইন নিজের হাতে তুলে নেয়া অনুচিৎ। মুমিনরা সেটা করেও না। পাগলের পাগলামী বন্ধের দাবীতে যখন তারা সোচ্চার হয় তখন কেন তাদের বাঁধা দেয়া হয়? তারা বাঁধা প্রাপ্ত হয় বলেই বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়। যদি তাদের দাবী জানানোর জন্য শাহাবাগের মত রাজ পথ বন্ধ করে নয় বরং পল্টন ময়দানে অবস্থান করে প্রতিবাদ জানানোর অধিকার দেয়া হত তাহলে মনেহয় দেশের সম্পদ বিনষ্ট হত না। ন্যায্য দাবী আদায় করতে গিয়ে যখন বাঁধা প্রাপ্ত হয় তখনই বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। এজন্য যতটা না এন্দোলন কারীরা দায়ী বরং তার চেয়ে বেশী দায়ী বাধা দান কারীরা।
কোন দেশে যদি কেউ পাগলামী করে, কোন ধর্মকে কটাক্ষ্য করে সেটা সেই দেশের ভক্তদের দায়ীত্ব প্রতিবাদ করা গণতান্ত্রিক উপায়ে।
ধার্মীকরা গণতান্ত্রীক উপায়েই প্রতিবাদ করতে চায় কিন্তু তাদের যখন মাঠেই নামতে দেয়া হয়না, তাদের উপর যখন নির্বিচারের গুলি, টিয়ার সেল, জলকামান চালানো হয় তখন তাদেরও ধৈর্যের বাঁধ ভেঙ্গে যায় বলেই বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়। আর বিবেকান্ধ সেকুলারেরা তখন ধার্মীকদের ধর্মান্ধ বলে গালি দেয়!
কোন পাগোলের পলাপে ধর্ম বিনাশ হয় না। ধর্মের শিকড় ভূগর্ভের হার্টপয়েন্টে থেকে উঠে আসে বলেই তাকে ছিড়ে ফেলা যায় না। জ্বালাউ পোড়াও হত্যা ও লুটতরাজ করে স্ব ধর্মের প্রতি ভালো বাসা জাহির করা যায় না, এটা নিতান্ত্যই অনুধাবনের বিষয়। ভালো বাসতে হলে আগে নিজকে চেনো, ধর্মকে জানা তারপর সেই ধর্মকে দেহে লালন করো,তারপর তাকে পালন করো। কোরআন ও নবী-রাসুল রক্ষার জন্য মরবে অথচ কোরআন মানবে না? এটা একটা মূর্খের মত কাজ বইতোনয়। কোরআন ও রাসুল (সাঃ) যদি তোমার মূল আকিদা হয় তাহলে তাকে দেহে ধারন কর।সুন্দর কথা কোন দ্বিমত নাই।
কে কি বললো তা নিয়ে তুমি তোমার নিজের ক্ষতি ডেকে আনবা না। একটি অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে আর দশটি অন্যায় তোমরা করোনা। নিজ দেহে হৃদয়ের সাথে মহব্বত স্থাপন করো, জাগ্রত করো বিবেক; আমরা যেন প্রতিবাদ করি ধর্যের সাথে।
মহব্বত সব সময় ধর্য ধরে, দয়া করে, হিংসা করে না, গর্ব করে না,অহংকার করে না, খারাপ ব্যবহার করে না, নিজের সুবিধার চেষ্টা করে না, রাগ করে না, কারও খারাপ ব্যবহারের কথা মনে রাখে না,খারপ কিছু নিয়ে আনন্দ করে না বরং যা সত্য তাতে আনন্দ করে। মহব্বত সব কিছইু সহ্য করে, সকলকেই বিশ্বাস করতে আগ্রহী, সব কিছুতে আশা রাখে আর সব অবস্থায় স্থির থাকে। এই মহব্বত কখনও শেষ হয় না।
ইসলাম পন্থীরা লুটতরাজ জ্বালাও পোড়াওয়ে বিশ্বাসী না কিন্তু অনেকসময় ইসলামের বদনামের জন্য অণুপ্রবেশ কারীরা ওগুলো করে থাকে। তবে কখনও কখনও একান্ত বাধ্য হয়েও কমজোড় ঈমানদারেরা আইন নিজের হাতে তুলে নেয়। তারা যদি চুড়ান্ত উচকানীর মুখেও ধৈর্যের কঠিণ পরীক্ষায় পাশ করতে পারত সেটাই কল্যানকর হত। কিন্তু ঈমানদারেরাও তো মানুষ তাই অনিচ্ছা সত্যেও তারা অনেক সময় ধৈর্যহারা হয়ে যায়।
অপারগতা নিয়েও কিছু কথা লিখলাম। পাঠক বন্ধুগণ এবং যার পোস্টের আলোকে লিখলাম তিনি সহ সকলে নিজ নিজ যুক্তি দিয়ে পর্যালোচনাটাকে সমৃদ্ধ করবেন বলে আশা করছি।
ধন্যবাদ।
বিষয়: বিবিধ
১৮৮৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন