আল্লাহ আবিষ্কারে বিশ্বাসী নন। সেলিম জাহাঙ্গির ভাই এর পোস্টে মন্তব্য অবলম্বনে।

লিখেছেন লিখেছেন আবু জারীর ০৪ জানুয়ারি, ২০১৩, ০২:০৫:১১ রাত

আমি তখন ছোট্ট, থাকি গ্রামে মাটির ঘরে। কোনদিন দালান দেখিনি। আমাদের প্রতিবেশী এক মেয়ে ঢাকায় কোন এক বাসায় কাজ করত। ঈদের ছুটিতে সে বাড়িতে আসলে তাকে আমি তার কাজের কথা জিজ্ঞেস করি। তার জবাব থেকে বুঝেছিলাম, সে অনেক গুলো কাজের মধ্যে ঘর মোছার কাজও করে। কিন্তু ঘর মোছা বলতে আমি বুঝেছিলাম দরজা জানালা মোছার কথা। কিন্তু দৈনিক তিনবার ঘর মুছে বিষয়টা আমার মাথায় ঢুকছিল না।

আপনি বিশ্বাস করবেন কিনা জানিনা যখন আমি ঢাকা সিটি কলেজে ভর্তি হলাম তখন মেসের বুয়াকে ঘর মুছতে দেখে বুঝেছিলাম আমাদের প্রতিবেশী মেয়েটি ঘরের ফ্লর মুছত। নট দরজা জানালা।

আমার না বুঝার একটা অন্যতম কারণ ছিল অজ্ঞতা। গ্রামের মা খালাদের ঘর ঝাড়ু দিতে দেখেছি কিন্তু মুছতে দেখিনি। তাই মোছার বিষয়টা আমার মাথায় ঢুকতে কমপক্ষে ১০/১১ বছর সময় লেগেছিল।

গত দুইবছর আগে আমার শ্যালক ঢাবির ল এর ছাত্র আমার কাছে জানতে চেয়েছিল কেন আমরা জ্বীনদের দেখতে পাইনা?

তাৎক্ষনিক উত্তর দিতে পারিনি। কিন্তু ছুটি থেকে যখন জেদ্দায় আসলাম তখন উত্তরটা খুজে পেয়েছিলাম একটা বাস্তব অভিজ্ঞতার মাধ্যমে।

আমি যে রুমে বসি সেরুমে বসেই কমপক্ষে ৮টা পার্টিশান ভেদ করে ফ্যাক্টরীতে কি হচ্ছে তা দেখতে পাচ্ছিলাম। অর্থৎ আমার অফিস, বসের অফিস দুইটা করিডোর, চুতুর্দিকের বাউন্ডারী সবই ট্রান্সপারেন্ট গ্লাসের তৈরী। অথচ গ্লাস একটা কঠিন পদার্থ।

এই গ্লাস আবিষ্কারের পূর্বে বা বাস্তব অভিজ্ঞতা অর্জনের পূর্বে এটাকি কাউকে বুঝান সম্ভব যে এমন একটা কঠিন পদার্থ আছে যা ভেদ করা মানুষর পক্ষে অসম্ভব কিন্তু দৃষ্টি শক্তি তা ভেদ করতে পারে।

গ্লাসের অন্যতম কাঁচামাল হল বালু। বালুর তৈরী গ্লাস ট্রান্সপারেন্ট কিন্তু সেই বালু দিয়ে তৈরী দেয়াল কিন্তু ট্রান্সপারেন্ট না।

মূল কথা হল কুরআনের সঠিক ব্যাখ্যা করার জন্য যে মানের আলেম দরকার তা মনেহয় এখনও আমরা পাইনি।

তবে কিছু প্রমাণ এবং কিছু অনুমানের ভিত্তিতে আমরা ভাসাভাসা জ্ঞানের ভিত্তিতেই ইসলামের উপর টিকে আছি।

কুরআনের ক্ষুৎ তালাস করে আমাদের জ্ঞাণের সীমাবদ্ধতার কারনে হয়ত আমরা পথভ্রষ্ট হব কিন্তু প্রমাণীত সত্য বিষয়গুলোর উপর ভিত্তি করে বাকী বিষয়গুলোকে সঠিক বলে মেনে নেয়া ছাড়া আপাতত কোন বিকল্প দেখছিনা।

কুরআনের গভির অধ্যয়নে মনের সকল খটকা দূর হতে পারে। আমাদের মত অজ্ঞদের খুঁচিয়ে কুরআন বুঝা যাবে বলে মনে হয়না।

কুরআন প্রথমেই যে চ্যালেঞ্জটা দিয়েছে সে চ্যালেঞ্জের মোকাবেলা আজপর্যন্ত কেউ করতে পারেনি। আর এ না পারা থেকেই প্রমানীত যে কুরআন আল্লাহর বানী।

আল্লাহ আবিষ্কারে বিশ্বাসী না। আল্লাহ সৃষ্টিতে বিশ্বাসী। আমেরিকা সৃষ্টি করেছেন আল্লাহ আর সৃষ্ট একটা মহাদেশকে খুজে পেয়েছেন কলম্বাস বা রেড ইন্ডিয়ানরা। তাও আবার কত শত কোটি বছর পরে তা কেউ জানে না!

উড়জাহাজ আবিষ্কার নিয়ে আমরা বড়াই করতে পারি কিন্তু পাখিদের কে সৃষ্টি করল আর আকাশে বাঁধাহীন ভাবে উড়াল সে কথা কি ভেবে দেখেছি?

পানিকে ফুটালে স্টীম হয় কিন্তু তেলকে ফুটালে স্টীম হয়না। আবার তেল দাহ্য কিন্তু পানি দাহ্য নয়। অথচ দুটই তরল! তেল ও জলের যে আলাদা বৈশিষ্ট এটা কে দান করল। অবশ্যই শ্রষ্ঠা। আর সেই শ্রষ্ঠাই হলেন আমার আল্লাহ।

মানুষ কম্পিউটর আবিষ্কার করেছে কিন্তু মানুষের ব্রেণ কে তৈরী করেছে তাকি আমাদের ভেবে দেখা দরকার না? আপনার বিশ্বাস কি তা আমার বিবেচ্য নয় তবে আমি মনে করি যিনি সকল সৃষ্টির শ্রষ্ঠা তিনিই আমার আমার আল্লাহ।

ধন্যবাদ।

বিষয়: বিবিধ

১১৫৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File