ইসলামের মূল স্প্রিট ধরে রাখতে জামায়াতকে বা এমন একটা সংগঠনকে কিয়ামত পর্যন্ত কাজ করতে হবে।
লিখেছেন লিখেছেন আবু জারীর ০৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৩, ০৫:৪৯:৫৭ বিকাল
কারাগার থেকে মৌলানা নিজামির খোলা চিঠি ও ছাত্র লীগের কয়েকটি ছবি। পোস্টে আমার মন্তব্যঃ
ইসলামের মূল স্প্রিট ধরে রাখতে এবং সমাজ সংস্কার ও মানুষের দোড় গোড়ায় ইসলামের সুমহান আদর্শ ও শিক্ষা পৌছে দিতে জামায়াতকে বা এমন একটা ইসলামী সংগঠনকে কিয়ামত পর্যন্ত কাজ করতে হবে। তারা শুধু সমাজ সংস্কার, ইসলামী শিক্ষার বিস্তারই করবেনা সাথে সাথে রাজনীতির কুট কৌশল এবং রাষ্ট্র শক্তিকে সঠিক পথে রাখার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। তাই রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব নেয়া জামায়াত বা এরকম সংগঠনের কাজ কিনা তা ভেবে দেখা জরুরী।
উত্তর যদি 'হ্যা' হয় তাহলে আমি থেমে গেলাম (ফুল স্টপ), আর উত্তর যদি 'না' হয় তাহলে বলব, জামায়াত শিবির যে যোগ্য আল্লাহ ওয়ালা চরিত্রবান লোক তৈরীর কাজ করছে, তৈরী হওয়া সেই লোকদের নেতৃত্বে এমন একটা রাজনৈতিক প্লাট ফর্ম তৈরী করতে হবে যারা ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সকলকে নিয়ে একটা কল্যান রাষ্ট্র কায়েম করবে। সে রাষ্ট্র পরিচালনার মূল ভিত্তি হবে অবশ্যই কুর'আন সুন্নাহ এবং রাষ্ট্রের সকল নাগরিকই ভোগ করবে তাদের ন্যায্য অধিকার। কুর'আন সুন্নায় অমুসলিম বা ধর্মীয় সংখ্যা লঘুদের যে অধিকার দেয়া আছে তা পৃথিবীর আর কোন মতবাদে নেই।
ওমর ইবনে আব্দুল আযীযের খেলাফত তিন বছরও স্থায়ী হয়নি, বাদশাহ আলোমগীরের পরে আর তেমন বাদশাহর আবির্ভাব হয়নি, সায়্যেদ ইসমাইল শহীদ ভ্রাতৃদয়ের খেলাফত, বালাকোটের মর্মান্তিক ঘটনার পরে আর এগোয়নি সর্ব শেষ তালেবান শাসিত আফগান এখনও জ্বলছে। ওমর ইবনে আব্দুল আযীয এবং পরবর্তী কর্ণধরেরা অযোগ্য ছিলেন এমনটা নয় বরং যে রাষ্ট্রের দায়িত্ব তারা নিয়েছিলেন সে রাষ্ট্র সমূহই তাদেরমত উপযুক্ত রাষ্ট্রনায়কদের ধারণ করার উপযুক্ত ছিল না।
ইমাম আবু হানিফা (রঃ) ইসলামী আইনের সূতিকাগার ছিলেন কিন্তু তিনি আইন প্রয়োগকারী ছিলেন না। কারণ রাষ্ট্রকে যে লৌহ হস্তে পরিচালনা করতে হয় সেরকম লৌহ মানব তিনি ছিলেন না এমন কি কাজীর পদ গ্রহণ করাও নিজের জন্য সমিচিন মনে করেন নি।
ইমাম আবু হানিফা (রঃ) সহ সকল ফুকাহাগণ রাষ্ট্রকে সঠিক স্ট্রিমে রাখার জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করেছেন। রাষ্ট্রের অমানবিক যুলম নিষ্পেশনের বিরুদ্ধে তাদের ইস্পাত কঠিণ দৃঢ়তা রাষ্ট্রকে ১০০% না হোক ৯০% সোজা রাখতে সক্ষম হয়েছিল। তিনি নিজেই যদি রাষ্ট্র ক্ষমতা হাতে তুলে নিতেন তাহলে আদর্শচ্চুত হওয়ার সম্ভাবনা ছিল। শাসন দন্ড এমন একটা জিনিস যেটা কারো হাতে গেলে যুলমের পথে পরিচালিত হওয়ার ৯৯% সম্ভাবনা থাকে। সে জন্যই আবুবকর (রাঃ) খেলাফত লাভের পরে প্রথম বক্তব্যেই বলেছিলেন, 'যতক্ষণ আমি আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলের (সঃ) আনুগত্য করি ততক্ষণ পর্যন্ত তোমরা আমার আনুগত্য করো কিন্তু আমি আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলের (সঃ) নাফরমানী করলে তোমাদের উপর আমার আনুগত্য করা জরুরী নয়। হযরত আবুবকর যেখানে নাফরমানীর ভয় করেছেন সেখানে বর্তমান যুগের শাসকদের কথা বলার অপেক্ষা রাখেনা।
বর্তমান সমাজের রাষ্ট্র ব্যবস্থা যেহেতু আরো জটিল এবং চরিত্রহীন লোকে লোকারণ্য সেহেতু আধুনিক রাষ্ট্র ব্যবস্থাকে সোজা পথে রাখার জন্য একটা শক্তিশালী দল অবশ্যই থাকতে হবে, কুর'আনের ভাষায় ﴿وَلْتَكُن مِّنكُمْ أُمَّةٌ يَدْعُونَ إِلَى الْخَيْرِ وَيَأْمُرُونَ بِالْمَعْرُوفِ وَيَنْهَوْنَ عَنِ الْمُنكَرِ ۚ وَأُولَٰئِكَ هُمُ الْمُفْلِحُونَ﴾
আলে ইমরাণঃ১০৪) তোমাদের মধ্যে এমন কিছু লোক অবশ্যি থাকতে হবে, যারা নেকী ও সৎকর্মশীলতার দিকে আহবান জানাবে, ভালো কাজের নির্দেশ দেবে ও খারাপ কাজ থেকে বিরত রাখবে৷ যারা এ দায়িত্ব পালন করবে তারাই সফলকাম হবে ৷
রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য থাকতে হবে সত্যাশ্রয়ি একটা রাজনৈতিক প্লাটফর্ম। দাওয়াত ও তরবিয়ত এবং রাষ্ট্র পরিচালনার কাজ এক জায়গা থেকে নিয়ন্ত্রীত হলে ইসলামের সৌন্দর্য ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা আছে, কারণ নবী (সঃ) এর পর খোলাফায়ে রাশেদিন বাদে সেরকম দৃঢ়তা আজ পর্যন্ত কেউ দেখাতে পারেনি। অতএব বিষয় গুলো নিয়ে গভির ভাবে চিন্তা ভাবনা করে দেখা এবং সেই অনুযায়ি আগামি কালের কর্মপন্থা ঠিক কারা খুবই জরুরী।
জামায়াত শিবিরের লোকেরা আজ যে চারিত্রীক দৃঢ়তা দেখাচ্ছে যদি কাল তারা ক্ষমতার পাদ পিঠে আরহন করে তাহলে অনেকেরই পদস্খলনের সমূহ সম্ভাবনা আছে। তাই একদল ক্ষমতা চর্চা করবে আর একদল তাদের সোজা পথে রাখার জন্য রাহবারের ভুমিকায় থাকবে। কে ক্ষমতা চর্চা করবে আর কে নিঃশ্বার্থ রাহবারের ভূমিকা পালন করবে তা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি নিজেই নিজেরটা নির্ধারণ করবে। যে রাজনীতিকে কেরিয়ার হিসেবে নিতে চায় সে রাজনীতি চর্চা করবে আর যে দাওয়াত ও তাবলীগের মাধ্যমে তরবিয়ত এবং সমাজ সংস্কারকে জীবনের লক্ষ্য বানাতে চায় সে সেভাবেই আপণ কর্মপন্থা নির্ধারণ করবে। তবে এক সংগঠকে অপর সংগঠনের সহযোগী হয়ে বৃহত্তর স্বার্থে কাজ করে যেতে হবে।
ধন্যবাদ।
বিষয়: বিবিধ
২৭৩৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন