প্রচলিত গণতন্ত্র একটা কুফুরী মতবাদ
লিখেছেন লিখেছেন আবু জারীর ২৭ জুলাই, ২০১৩, ০২:৩৩:১৭ দুপুর
বর্তমানে প্রচলিত গণতন্ত্র যে একটা কুফুরী মতবাদ তাতে কোন সন্দেহ নাই। প্রচলিত এই গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য ইসলামী আন্দোলন গুলো কাজ করেনা। বরং প্রচলিত এই বাহনের উপর পা রেখে ইসলাম প্রতিষ্ঠার জন্য ইসলামী সংগঠন গুলো কাজ করছে।
জুমার নামায পড়তে যাওয়ার পথে ড্রেনের উঁচতে পরা নোংড়া পানি মাড়িয়ে অনেক সময় মসজিদে যেতে হয়। রাস্তায় নোংড়া পানি মাড়িয়ে যেতে হবে বলে জুমার নামায না পড়ে ঘরে বসে জোহরের নামায পড়াকি বুদ্ধিমানের কাজ হবে?
গণতন্ত্র হালাল না হারাম তা নিয়ে বিতর্ক করে সময় নষ্ট করা যাবে কিন্তু কুফুরী মতবাদ হটানো যাবেনা। রাসূল (সঃ) মক্কায় ছিলেন, ক্বাবা ঘরে এবং ক্বাবার চত্তরে মূর্তী ছিল এবং তিনি সেখানে নামায পড়তেন। রাসূল (সঃ) কিন্তু নব্যুয়ত প্রাপ্তির সাথে সাথেই মুর্তী উৎখাত করেণনি। কেন তিনি মুর্তি ভাঙ্গার জন্য যিহাদী (কিতাল) পদক্ষেপ নেননি? কারণ তখন রাসূল (সঃ) এর পক্ষে জনমত ছিলনা এবং বহ্যিক দৃষ্টিতে তাঁর পক্ষে জনসমর্থনও ছিলনা কিন্তু মক্কা বিজয়ের পরে কি ঘটল?
আমারা যে অনলাইনে ঝড় তুলছি এই অনলাইন তথা নেট যগতকি হালাল? একান্ত অনিচ্ছা সত্যেও আমাদের অনেক ইমেজ এবং ভিডিওর ক্লিপের মুখমুখি হতে হয় যা সম্পূর্ণ রূপে হারাম। এখানে দেখার বিষয় হল ব্যবহার কারীর উদ্দেশ্য কি? তার উদ্দেশ্য যদি হয় পর্ণ সাইট ভিজিট করা তাহলে এক কথা আর যদি উদ্দেশ্য হয় পর্ণ সাইটের প্রতি নিরুৎসাহীত করা এবং সাধ্য মত পরিচ্ছন্নতা বজায় রেখে প্রয়োজনীয় বৈধ কাজ করা তাহলে ভিন্ন কথা।
ভারতের মুসলমানরা যখন হজ্জে আসেন তখন তারা স্বদেশী পাসপোর্ট গলায় ঝুলিয়ে রাখা ব্যাগের মধ্যে রাখেন। তাদের পাসপোর্ট তৃমূর্তী খচিত। এখন বলুন, যে ক্বাবাশরীফকে আল্লাহর রসূল (সঃ) মূর্তী মূক্ত করলেন সেই ক্বাবাশরীফেই মুসলমানরা মূর্তীর ছবি নিয়ে তাওয়াফ করছে! যারা হজ্জে আসছেন তাদের উদ্দেশ্য কিন্তু ক্বাবার চত্বরে মূর্তীর ছবি প্রবেশ করানো না বরং হজ্জের সার্থে বাধ্য হয়েই পাসপোর্ট সাথে রাখা। অবশ্য সৌদি সরকার ইচ্ছা করলে এরকম পাসপোর্ট ধারীদের পাসপোর্ট এয়াপোর্টে রেখে তাদের জন্য বিকল্প পাশের ব্যবস্থা করতে পারে।
ইসলাম প্রিয় মুমিন ভাইদের সবিনয়ে বলতে চাই প্রচলিত গণতন্ত্র হারাম কিন্তু আমরা যে সমাজে বসবাস করছি সে সমাজ থেকে এটা মুখের কথায় বিদায় হয়ে যাবেনা। এটাকে বিদায় করে খেলাফত কায়েম করতে হলে এপথ মাড়ানো ছাড়া ইসলাম সম্মত বিকল্প ব্যবস্থাটা কি বলুন তো? যেহাদের (কিতাল) যে কথাটা বলাহচ্ছে সেটা কিন্তু রাষ্ট্রিয় ভাবে ইসলাম কায়েম হওয়ার পরের কথা। রোগের টিকা কিন্তু সেই রোগের জীবানু থেকেই তৈরী করা হয়। তাই কফুরী গণতন্ত্রকে খেলাফতে রূপান্তর করতে, কুফুরী গণন্ত্রের যে অংশের সাথে ইসলামের বিরোধ নাই সে অংশ দিয়ে যদি ভ্যক্সিন তৈরী করা যায় তাতে সমস্যা কোথায়?
আবারও বলছি, যিহাদ বলতে যা বুঝানো হচ্ছে সে যিহাদ (কিতাল ফি সাবিলিল্লাহ) শুরু হয়েছিল মদিনায় ইসলামী রাষ্ট্র কায়েম হওয়ার পরে রাষ্ট্রের নেতৃত্বে। আর কিতালের পূর্বে যিহাদের অংশ হিসেবে দাওয়াত ও শাহদতের কাজ কিন্তু রাসূল (সঃ) এর নব্যুয়ত প্রাপ্তির সাথে সাথেই শুরু হয়ে গিয়েছিল। সে হিসেবে যারাই দাওয়াতি কাজ করছে এবং সত্যের সাক্ষ দিচ্ছে তারা মূলত যিহাদের কাজই করছে। তবে কিতাল ফিসাবিলিল্লাহর প্রকৃত কাজ শুরু হবে রাষ্ট্রিয় ভাবে যখন কোথাও ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হবে তখন সেই ইসলামী রাষ্ট্রের নেতৃত্বে, অবশ্যই তার আগে ব্যক্তিগত ভাবে নয়। অতএব রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা নাহওয়া পর্যন্ত প্রচলিত সমাজ ব্যবস্থার মধ্যে থেকেই দাওয়াত ইলল্লাহ ও শাহাদতে আলান্নাসের কাজ করে যেতে হবে, যেমনটা রাসূল (সঃ) তাঁর তের বছরের মক্কী জিন্দেগিতে করেছিলেন। শিয়াবে আবুতালেব উপত্যকায় রাসূল (সঃ)কে প্রায় তিন বছরের বন্ধী জীবন জাপন করতে হয়েছিল কিন্তু তিনি অস্ত্র হাতে তুলে নেননি। তাঁকে হত্যার জন্য ঘিরে রাখা হয়েছিল কিন্তু তিনি শসস্ত্র প্রতিরোধ করেণ নি। বরং আল্লাহর সাহায্যে তিনি ঝুঁকি নিয়ে মদিনায় হিজরত করেছিলেন।
ইসলামে মতামত নেয়া রাসূল (সঃ) এর সুন্নত এবং আল্লাহরও হুকুম। গণতন্ত্রেও নেতা নির্বাচনের ক্ষেত্রে সেব্যবস্থাটা আছে যদিও প্রশ্নবোধক তার পরেও মন্দের ভালো হিসেবে আমরা প্রচলিত এই পদ্ধতিটাকে কাজে লাগাতে পারি। আল্লাহর হুকুম অমান্য করার নিয়ত না থাকলে জীবন রক্ষার জন্য হারম ভক্ষনেরও অনুমতি আছে বিষয় গুলো অবশ্যই ভেবে দেখার দাবী রাখে।
গণতন্ত্রের সেটুকু গ্রহণ করতে সমস্যা কোথায় যেটুকুর সাথে ইসলামের বিরোধ নাই?
গণতান্ত্রীক পদ্ধতিতে যদি অধিকাংশ জনগণের মতামতের ভিত্তিতে সমকামীতা চালু করার চেষ্টা করাহয় তাহলে সেটা গ্রহণ করা যাবেনা যেমন পিতামাতার হুকুম মানা ফরয আবার একই পিতামাতা যদি আল্লাহর সাথে নাফরমানীর হুকুম দেয় তাহলে তা অমান্ন করা ফরয।
প্রত্যেক বছর ঈদের প্রধান জামায়াত হয় জাতীয় ঈদগাহে কিন্তু এবছর যদি অধিকাংশ মুসুল্লি দাবী করে যেহেতু বর্ষাকাল সেহেতু ঈদের প্রধান জামায়াত বায়তুল মোকাররমে হওয়া উচিৎ। গণতান্ত্রীক ভাবে গৃহীত এমন মতামত মেনে নেয়া নাজায়েজ বা কুফুরী হবে কেন?
বায়তুল মোকাররমের খতীবের অসুস্থ্য বলে তার পরিবর্তে যদি অধিকাংশ মুছুল্লি দেওয়ানবাগী পীরকে ঈদের নামাযের ইমাম নিযুক্ত করার পক্ষে মত দেয় তাহলে সে মত মুমিন মুছুল্লিরা গ্রহণ করতে পারেনা কারণ সে সর্ব সম্মত ভবে শিরকী আক্বীদায় বিশ্বাসী এবং প্রকাশ্যে শীরকে লিপ্ত।
ইসলাম সম্পর্কে বিশেষ কোন সূক্ষ্ণ জ্ঞান আমার নাই তাই আমার মত একজন সাধারণ ব্লগার তথা অনলাইন এ্যাক্টিভিষ্টের পক্ষে এমন একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত দেয়া সম্ভব নয় তাই দিলামও না তবে যা বল্লাম এটা একান্তই আমার বুঝ এবং সাধারণ মত।
ধন্যবাদ।
বিষয়: বিবিধ
২৬৩২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন