ভাবছি দেশে ফোন করে পরীবারের সকলকে কাল থেকে রোযা রাখতে বলব কি না?
লিখেছেন লিখেছেন আবু জারীর ০৯ জুলাই, ২০১৩, ০৮:০৪:৩৭ রাত
বুধবার থেকে সৌদি আরবে রমজান শুরু
বাংলাদেশ সহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে নয় কেন? অথচ পূর্ব এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য এবং পাশ্চাত্যের মুসলমানরা কিন্তু কাল অর্থাৎ বুধবার থেকেই রোযা রাখবে। তাই ভাবছি দেশে ফোন করে পরীবারের সকলকে বিশ্বের সব মুসলমানদের সাথে কাল অর্থাৎ বুধবার থেকেই রোযা রাখতে বলব কি না?
চাঁদ দেখার পর বা চাঁদ দেখা গেছে বলে খবর পাওয়ার পর রোযা ছেড়ে দেয়া কি বৈধ? শাওয়ালের চাঁদ দেখার পর বা চাঁদ দেখা গেছে বলে খবর পাওয়ার পরেও রোজা রাখা কি হারাম নয়? ইবাদতের ক্ষেত্রে মুসলমানদের কাছে রাষ্ট্রিয় সীমা রেখার কি কোন মূল্য থাকতে পারে? পরিবর্তনশীল রাজনৈতিক সীমারেখার দোহাই দিয়ে আল্লাহর হুকুম লঙ্ঘন করাকি শরিয়ত সম্মত?
রজনৈতিক বা রাষ্ট্রিয় সীমা রেখা মুলমানদের জন্য কোন অন্তরায় হতে পারেনা। কারণ পুরা দুনিয়ার মালিক একমাত্র আল্লাহ এবং আমরা তাঁরই ইবাদত করি। অতএব আসুন আমরা সবাই মিলে একই দিনে সারা বিশ্বের মুসলমানেরা রোযা শুরু করি এবং একই দিনে ঈদ করি। তবে অবশ্যই স্থানীয় সময় অর্থাৎ সুবেহ সাদিকের পূর্বে সাহরী ও সূর্যাস্তের সাথে সাথেই ইফতার করতে হবে। নামাযও কিন্তু আমরা সে ভাবেই পড়ি যেমন স্থানীয় সময়ে সূর্যদয়ের পূর্বে ফযর, দ্বিপ্রহরের পরে যোহর, তৃতীয় প্রহরের পরে আসর, সূর্যাস্তের পরে মাগরীব এবং মধ্য রাতের পূর্বে এশা। অতএব, একই দিনে রোযা শুরু করার বিপরীতে কেউ আবার এমন যুক্তি দিবেন না যে একই দিনে রোযা রাখতে হলে একই সময়ে ইফতারিও করতে হবে অবশ্য সূর্যের অবস্থানের হিসেবে কিন্তু একই সময়েই ইফতার, সাহরী ও নামায় পড়ি আর ঘড়ির সময়টা কিন্তু আপিক্ষিক। ঘড়ি সূর্যের হিসাবে ঘোড়েনা ঘোড়ে ব্যক্তির করা সেটিং এর উপরে।
একই ভৌগলীক সীমার মধ্যেও কিন্তু নামায, ইফতারি ও সাহরীর সময়ের মধ্যে তারতম্ম আছে। যেহেতু একই রাষ্ট্রসীমার মধ্যে একই দিনে রোযা রাখার পরেও ঘড়ির টাইমের উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন সময় ইফতারী, সাহরী এবং নামায পড়া হয় সেহেতু একই দিনে বিশ্বব্যাপী কেন নয়?
ইবাদতের ব্যাপারে ঘড়ির সময়টা কিন্তু আপেক্ষিক মূল ব্যাপারটা কিন্তু সূর্যের অবস্থানের উপর নির্ভরশীল।
ইমাম আবু হানিফা (রহঃ) এর অভিমতঃ-
১. যে কোন একটি দেশে নতুন চাঁদের উদয় প্রমানিত হলে বিশ্বের সকল মানুষের উপর তার অনুসরন জরুরী হয়ে পড়ে [উৎস: আল মুখতার ১ম খন্ড ১২৯ পৃঃ / ফতহুল কাদীর (শেরহে ফাতহুল কাদীয়সহ) ১ম খন্ডঃ পৃ ২৪৩/মারাকীন ফালাহ পৃঃ ৫৪০-৫৪১/ আল-বাহরুর রায়েক ২য় খন্ড পৃঃ ২৯০]
২. আর উদয়ের স্থান ও সময়ের বিভিন্নতার কোন গুরুত্ব নেই । (উৎসঃ কাদী খান ১ম খন্ডঃ পৃঃ ১৯৮/ মাজমাউল আনহুর ১ম খন্ড পৃঃ২৩৯ / আল মুখতার ১ম খন্ড পৃঃ ১২৯ আল-ফাতওয়া আল হিন্দিয়াহ ১ম খন্ড, পৃঃ১৯৮/ আল বাহরুর রায়েক ২য় খন্ড পৃঃ ২৯০/ ফাতহুল কাদীর ২য় খন্ড পৃঃ ২৪৩/রদ্দুল মুহতার (শামী) ২য় খন্ড পৃঃ ৩৯৩)
৩. যদি পৃথিবীর পশ্চিমাংশের বাসিন্দারা রমজান মাসের নতুন চাঁদ দেখেন তাহলে তাদের এ দেখাতেই পূর্বাংশের লোকদের উপর (রোজা ও ঈদ) ওয়াজিব হয়ে যাবে (উৎসঃ আল-বাহুরুর রায়েক ২য় খন্ড পৃঃ ২৯০ / মাজমাউল আনহুর ১ম খন্ড ২৩৯ পৃঃ আল হিন্দিয়াহ (ফাতোয়ায়ে আলমগীরী) ২য় খন্ড ১৯৮-১৯৯ পৃঃ। ফাতহুল কাদীর ২য় খন্ড ২৪৩ পৃঃ। বাজাজিয়াহ ৪/৯৫)
বিষয়: বিবিধ
২৪৩৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন