আমার সংক্ষিপ্ত আত্ম কাহিনী (১৫)- আবুল কালাম মুহাম্মদ ইউসুফ (মোমতাজুল মুহাদ্দেছীন)

লিখেছেন লিখেছেন আবু জারীর ০১ জুন, ২০১৩, ০৩:৪২:৪৬ দুপুর

আমার সংক্ষিপ্ত আত্ম কাহিনী (১৪)- আবুল কালাম মুহাম্মদ ইউসুফ (মোমতাজুল মুহাদ্দেছীন)



আমার প্রথম গ্রেট ব্রিটেন সফরঃ

আমি এবং মাওলানা দেলাওয়ার হুসাইন সাঈদী ইংল্যান্ডের বার্মিংহামে অনুষ্ঠিতব্য সিরাত কনফারেন্সের দাওয়াতে ১৯৭৮ সনে প্রথমবার গ্রেট ব্রিটেন সফরে যাই। এই সম্মেলন উই,কে ইসলাম মিশন ও দাওয়াতুল ইসলাম গ্রেট ব্রিটেনের যৌথ উুদ্দ্যগে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এ সম্মেলনে পাকিস্তান ও ইন্ডিয়ার কয়েকজন খ্যাতনামা আলেম যোগদান করেছিলেন। সম্মেলন সমাপ্তিতে আমরা উপরোক্ত সংগঠনের উদ্দ্যগে গৃহিত প্রোগ্রামে সারা গ্রেট-ব্রিটেনে প্রায় এক মাস সফর করি।

এ পুরা সফরে আমরা দুজন অর্থাৎ আমি এবং সাঈদী সাহেব একত্রে ছিলাম। সাঈদী সাহেব একজন ভাল মানের ওয়ায়েজ ও মোফাচ্ছির। বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের বাইরে খুবই প্রসিদ্ধ। সাঈদী সাহেব আমার ছাত্র্ তিনি খুলনা আলীয়া মাদ্রাসায় ফাজেল ক্লাসে পড়াকালীন আমার ছাত্র ছিলেন। (যথা সম্ভব ১৯৬০,৬১ সনে) তখন আমি খুলনা আলীয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষ। সাইদী সাহেবের পিতার সাথে আমার খুব বন্ধুত্ব ও সুসম্পর্ক ছিল। ফলে সাইদী সাহেব (আল্লাহ তাকে আরও অধিকতর ইসলাম ও জাতির খেদমত করার তৌফিক দান করুক) । আমাকে পিতার মতই ভক্তি শ্রদ্ধা করেন। আর আমিও তাকে পুত্রবৎ স্নেহ করি। তার পরিবারের সাথেও আমার পরিবারের সম্পর্ক খুবই নীবিড়। গ্রেট ব্রিটেনে একমাসকাল সফরের পরে আমরা দেশে ফিরে আসি। আমাদের সফরের শেষের দিকে অধ্যাপক গোলাম আযম সাহেব লন্ডনে আমাদের সাথে মিলিত হন। কায়েকমাস তিনি লন্ডনে থেকে এ বৎসরই বাংলাদেশের নাগরিকত্বহীন আযম সাহেব জিয়া সরকারের বিশেষ অনুমতিতে অসুস্থ মাকে দেখার জন্য ১৯৭৮ সনে বদেশে প্রত্যাবর্তন করেন। এরপর হাইকোর্ট থেকে তার নাগরিকত্ব বহালের আগ পর্যন্ত তিনি আর দেশের বাহিরে যাননি। যদিও সরকার কয়েকবার তাকে বের হয়ে যাওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছিলেন।

১৯৮২ সালে পাকিস্তানে আমার দীর্ঘ সফরঃ

দেশ বিভক্তি হওয়ার পূর্বে আমি অসংখ্যবার পশ্চিম পাকিস্তানের পাঞ্জাব, সীমান্ত, সিন্ধু ও বেলুচিস্তানের বহু জায়গা সফর করেছি। যেহেতু তখন পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তান একদেশ ছিল এবং ভিসার প্রয়োজন ছিল না। উপরন্ত পূর্ব ও পশ্চি পাকিস্তানের মধ্যে সহজ যাতায়াতের উদ্দেশ্যে বিমান ভাড়ায় সাবসিডি দেয়া হত, তাই সফর মোটামুটি কম ব্যয়বহুল ছিল। তাছাড়া আমি পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের সদস্য ও পাকিস্তান জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় শুরার সদস্য হওয়ার কারণে পরিষদ ও শুরার অধিবেশনে যোগাদানের জন্যও আমাকে বছরে কয়েকবার করে পশ্চিম পাকিস্তান যেতে হতো। জাতীয় পরিষদের অধিবেশন চলাকালীন কখনও কখনও মাসাধিককাল রাওলপিন্ডিতে অবস্তান করতে হতো। এসব সফরের আগে পরে এবং বিরতির দিনে পশ্চিম পাকিস্তানে বিভিন্ন জায়গায় বিশেষ করে প্রধান প্রদান শহরে প্রগ্রাম করেছি। মুহতারাম ভাই আব্বাস আলী খান ও শামসুর রহমান সাহেবনদ্বয়ও জাতীয় পরিষদ সদস্য ছিলেন বিধায় অনেক ক্ষেত্রে আমরা যৌথভাবে প্রগ্রাম করেছি। কিন্তু দেশ বিভক্তি হওয়ার পরে আর ঐভাবে সফর সম্ভব ছিল না। কেননা এক দেশ এখন স্বতন্ত্র দু'টি স্বাধীন দেশে পরিণত হয়েছিল। তবে বাংলাদেশ সৃষ্টির পরে সর্বপ্রথম আমি ১৯৭৮ সালে ভিসা নিয়ে পাকিস্তান সফর করি। অতঃপর বেশ কয়েকবারই আমি পাকিস্তান সফর করেছি। বিশেষ করে আফগানিস্তানে সশস্ত্র জিহাদ শুর হওয়ার পরে যুদ্ধের প্রকৃতি অবস্থা জানার জন্য আমি একাধিকবার পাক-আফগান সীমান্তে মুজাহিদ নেতাদের সাথে সাক্ষাত করে তথ্য সংগ্রহ করেছি। এসব সফরেও জামায়াতে ইসলামী পাকিস্তানের পুরাতন বন্ধুরা পাকিস্তানের বিভিন্ন শহরে আমাকে দিয়ে প্রগ্রাম করিয়েছেন। বিভিন্ন পত্র পত্রিকা আমার সাক্ষাতকারও গ্রহণ করেছে। তবে পত্রিকায় প্রকাশিত ১৯৭৮ সনের সফর বিবরণ হারিয়ে যাওয়ায় ১৯৮২ সালের সফর বিবরণ পুস্তকে দেয়া হল।

পরবর্তি পর্বে থাকছেঃ ১৯৮২ সালে পাকিস্তানে আমার র্দীর্ঘ সফর...

বিষয়: বিবিধ

১৩২৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File