আমার সংক্ষিপ্ত আত্ম কাহিনী (০১)- আবুল কালাম মুহাম্মদ ইউসুফ (মোমতাজুল মুহাদ্দেছীন)

লিখেছেন লিখেছেন আবু জারীর ১৩ মে, ২০১৩, ১০:৫৩:১৪ রাত

আমার সংক্ষিপ্ত আত্ম কাহিনী (০১)- আবুল কালাম মুহাম্মদ ইউসুফ (মোমতাজুল মুহাদ্দেছীন)



আদি বাসস্থান ও সেখান থেকে স্থানান্তরঃ

আমাদের আদি বাড়ি ছিল বরিশাল জেলাধীন বাণারিপাড়া থানার চাখার গ্রামে। চাখার একটি প্রসিদ্ধ গ্রাম। যুক্ত বাংলার প্রধানমন্ত্রী মরহুম শেরে বাংলার পিতা ছিলেন এই গ্রামের আধিবাসী। এ গ্রামে তখন বেশ কিছু সম্ভ্রান্ত পরিবার বসবাস করত। ফলে গ্রামটি ছিল প্রসিদ্ধ। আমার পিতার মুখে শুনা, আব্বার দাদা জহিরুদ্দীন হাওলাদার এখান থেকে এসে বরিশাল জেলার মঠবাড়িয়া থানাধীন মাছুয়া গ্রামে বসতি স্থাপন করেন। আমার দাদা আপিলুদ্দীন হাওলাদারের জন্ম যতাসম্ভব এই গ্রামে। এখান থেকে এসে আমার দাদা বর্তমান শরনখোলা থানার রাজইর গ্রামে বসতি স্থাপন করেন। তখন এ এলাকাটা পুরাটাই মোড়েলগঞ্জ থানার অধীনে ছিল। অনেক পরে পরবর্তি এক সময় মাত্র চারটি ইউনিয়ন নিয়ে ফাড়ি থানা হিসেবে শরন খোলা থানা সৃষ্টি করা হয়। তখন মোড়েলগঞ্জ থানার প্রায় সব এলাকা জুড়ে সুন্দরবন ছিল।

অষ্টাদশ শতাব্দির শেষের দিকে ব্রিটেনের নাগরিক মোড়েল সাহেব তদানিন্তন বাঙ্গীয় বৃটিশ প্রশাসনের কাছে থেকে পুরা এলাকাটি তার জমিদারী হিসেবে নিয়ে নেন। অতপর মোড়েল সাহেবের নামানুসারে এলাকাটর নামকরণ করা হয় মোড়েলগঞ্জ থানা। মোড়েল সাহেব তার জমিদারীর অন্তর্ভূক্ত সুন্দরবনের জমি আবাদ করে বাসপোযোগী ও চাষপোযোগী করার জন্য নামে মাত্র খাজনায় পত্তন দেয়ার জন্য ঘোষণা দেন। তখন পার্শ্ববর্তী বিরিশাল জেলা হতে বেশ কিছু লোক এসে মোড়েল সাহেবের প্রজা হিসেবে নামে মাত্র খাজনার বিনিময়ে জমি পত্তন নিয়ে জংগল কেটে জমি আবাদ করে। এ সময় আমাদের দাদা আপিলুদ্দীন হাওলাদারও অন্যান্য লোকের সাথে রাজইর গ্রামে এসে জমি পত্তন নেন এবং জংগল ছাফকরে সবতি স্থাপন করেন। তখন নাকি এ এলাকায় বাঘ, শুকর ও সাপের বেশ উপদ্রব ছিল। খুব সহসী ও দুর্ধর্ষ লোক ছাড়া এখানে অন্য কেহ বসবাস করতে সাহস করত না।

আমার পিতা ও পিতামহঃ

আমার পিতা আজিমুদ্দীন হাওলাদার যথাসম্ভব ১৮৯৮ কিংবা ১৮৯৯ সনে রাজইর গ্রামে জন্ম গ্রহন করেন। আমার দাদা দুই ছেলে ও এক মেয়ে রেখে অল্প বয়সেই মারা যান। আমার আব্বা ছিলেন তিন জনের মধ্যে বড়্ আমার ছোট চাচা ও ফুফী অল্প বয়সেই মৃত্যুবরণ করেন। আমার বিধবা দাদী আমার আব্বাকে নিয়ে রাজইরের বাড়িতে বসবাস করতে থাকেন। আমার দাদী ছিলেন প্রখর বুদ্ধিমতি ও সাহসী। তাকে আমি দেখেছি। আমার মাইনর স্কুলে পড়ার সময়ই তিনি পরকলোক গমন করেন।

আমার মাত ও মাতা মহঃ

আমার মাতা ছিলেন আমাদের পার্শ্ববর্তী গ্রাম মঠেরপার নিবাসী মরহুম সিরাজুদ্দীন হাওলাদারের কন্যা। আমার নানাও দুই ছেলে ও এক কন্যা রেখে আমার দাদার ন্যায় অল্প বয়সে মারা যান। আমার নানি দুই ছেলে ও এক মেয়েসহ অল্প বয়সে বিধবা হন। আমার নানি ছিলেন বরিশাল জেলার তেলিখালী গ্রামের মেয়ে। নানির ভাইয়েরা নানিকে অল্প বয়সী হওয়ার কারনে তেলিখালী নিয়ে দ্বিতীয় বিবাহ দেন। ফলে আমার মা ও দুই মামা তাদের দাদা-দাদীর কাছে লালিত-পালিত হতে থাকেন। মায়ের দাদা হাজি নাসরুদ্দিন ছিলেন এলাকার খুবই গণ্যমান্য ও শদ্ধেয় ব্যক্তি। আমা বড় হলে পরে আম্মার গার্জিয়ান ও আমার দাদীর আগ্রহ ও অনুরোধে আম্মাকে আমার আব্বার সাথে বিবাহ দেন।

আমার সংক্ষিপ্ত আত্ম কাহিনী (০২)- আবুল কালাম মুহাম্মদ ইউসুফ (মোমতাজুল মুহাদ্দেছীন)

বিষয়: বিবিধ

২১৬২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File