যুদ্ধাপরাধের বিচার প্রকৃয়া সম্প্রসারণের মাধ্যমে আগামী ৫০ বছরের মধ্যে বাংলাদেশ স্থান করে নিতে পারে উন্নত রাষ্ট্রের তালিকায়।

লিখেছেন লিখেছেন আবু জারীর ২৭ জানুয়ারি, ২০১৩, ০৯:৩০:৪৯ রাত



শ্রদ্ধেয় সাংবাদিক জনাব এবিএম মুসার বিচারের দাবীতে এভাবেই ফেজবুকে ভার্চুয়াল আন্দোলন চলছে।

আগামি ৫০ বছরের মধ্যে বাংলাদেশ স্থান করে নিতে যাচ্ছে উন্নত দেশের তালিকায়।

না আশ্চর্য হবেন না। এটা আমার কথানা। একেবারে আন্তর্জাতিক অঙ্গনের খবর।

আমি ছোট্ট মানুষ তাই চিন্তার পরিধিও ছোট। তবে যে জিনিসটা সহজেই বুঝি সেটা হল কোন দেশকে উন্নত হতে হলে সে দেশের কর্মক্ষম প্রতিটি মানুষেরই কর্মের ব্যবস্থা থাকতে হয়। বেকারত্বকে পাঠাতে হয় যাদুঘরে।

বর্তমানে বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষের মধ্যে ৫/৬কোটিই বেকার। বেকারত্বের এই বোঝা নিয়ে বাংলাদেশ উন্নত দেশে পরিনত হবে এটা ভাবা অলীক স্বপ্ন ছাড়া আর কিছুই না। তাহলে বিশ্বের নামিদামি সংস্থা যে রিপোর্ট করল, বাংলাদেশ আগামি ৫০ বছরের মধ্যে উন্নত দেশে পরিনত হতে যাচ্ছে তাকি ভুয়া? নাকি আমাদের হাওয়া দেয়ার জন্য বাড়িয়ে বলা?

যেহেতু আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম এবং নামিদামি সংস্থার রিপোর্ট তাই বিষয়টা ভুয়া হওয়ার প্রশ্নই ওঠেনা। যদি ভুয়া না হয় তাহলে বিষয়টা কি এবং কিভাবে সম্ভব?

আমাদের এক জাতীয় নেতা, লোকে বলে হাইব্রিড হানিফ। তা যাই হোক, তিনি যে বোমা ফাটিয়েছেন তাতে নির্দিধায় প্রমাণীত হয়ে গেছে যে বর্ষিয়ান সাংবাদিক সর্বজন শ্রদ্ধেয় জনাব এবিএম মুসা সাহেব ও যুদ্ধাপরাধী!

যে দেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে ৩০ লক্ষ লোক শহীদ হয়েছেন, তিন লক্ষ মা বোন সম্ভ্রম হারিয়েছেন এবং অসংখ্য লোক পঙ্গু হয়েছেন সে দেশে যে মাত্র হাতে গোনা ১০/১২ জনই যুদ্ধাপরাধী না বরং এ সংখ্যা লাখে লাখে তা হলফ করে বলা যায়।

হাইব্রিড নেতাদের বোমার আঘাতে এবিএম মুসার মত লক্ষ লক্ষ যুদ্ধাপরাধির নাম যে আলোর মুখ দেখবে তাতে কোন সন্দেহ নাই। আর এ বিপুল সংখ্যক যুদ্ধাপরাধির বিচারের জন্য আন্তর্জাতিক নাম দিয়ে যে হাজার হাজার ডোমেস্টিক আদালত করতে হবে তাতেও কোন সন্দেহ নাই।

সেই আদালতের জন্য কোর্ট বিল্ডিং বানাতে হবে। তাতে প্রসিকিউটর লাগবে, বিচারক লাগবে, স্বাক্ষি লাগবে। স্বাক্ষিদের প্রশিক্ষন ক্যাম্প লাগবে। ক্যামেরা ট্রায়েলের জন্য উপযুক্ত প্রযুক্তি লাগবে। এক কথায় বলতে গেলে বিশাল কর্মযজ্ঞ হবে।

বিদেশ থেকে পর্যটক আসবে এ বিচার দেখতে। আসবে আইনজিবী। আবার আমাদের আইনজ্ঞরাও অধিকতর প্রশিক্ষনের জন্য বিদেশে যাবে। স্কাইপি পরামর্শের জন্য প্রতিটি স্তরকে ডিজিটালইজেশান করতে হবে।

তাহলে বুঝুন কেমন কর্মজজ্ঞ হতে যাচ্ছে আগামী দিনগুলোতে।

হাইব্রিড হানিফের ভাষ্য মতে যদি জনাব এবিএম মুসা যুদ্ধাপরাধি হন তাহলে যারা ৭১ সালে সশরীরে মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেন নি বরং পাকবাহিনীর অধিনে সরকারী চাকুরী করে হানাদার বাহিনীর হাতকে শক্তিসালী করেছে সেই সময়কার ডিসি, এসপি, সিভিল কর্মকর্তা কর্মচারী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষগণ বাদ যাবেন কিভাবে?

তৎকালিন ডিসি এবং রাজাকার রিক্রুটার এবং প্রশিক্ষক বার্তমান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রি জনাব মখা আলমগীর, তদিয় ভ্রাতুষ্পুত্র এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক জনাব মুনতাসির মামুন, পকিস্তানের পক্ষে বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারী শহীদ মুনির চৌধুরী, নীলিমা ইব্রাহীম, তৎকালিন দৈনিক পাকিস্তানের সম্পদক শামসুর রাহমান, বাংলা এ্যাডেমির মহাপরিচালক কবীর চৌধুরী তদিয় ভ্রাতা মেজর কাইয়্যুম চৌধুরী জিনি কিনা ৯৫ হাজার পাক আর্মীর সাথে সারেন্ডার করে আজীবনের জন্য পাকিস্তান চলে গেছে সেই ভদ্রলোক এবং তার পরিবার।

পাক সরকারের প্রতি আনগুত্বকারী সাংসদ সাজেদা চৌধুরী, মাতৃত্বকালিন সময় সহ যুদ্ধের পুরা নয় মাস পাক আর্মীর তত্বাবধানে ক্যান্টনমেন্ট অবস্থানের জন্য জয় পুতুল জনননী সহ কাকে কাকে এ অবিযোগে অভিযুক্ত করা হবে আর কাকে কাকে বাদ দেয়া হবে তা একমাত্র হাইব্রিড হানিফ সাহেবই ভালো বলতে পারবেন।

এসব আলামত দেখে আমার কেন যেন মনে হচ্ছে বাংলাদেশ আগামী ৫০ বছরের মধ্যে যদি উন্নত দেশের কাতারে সামিল হয়তে চায় তাহলে যুদ্ধাপরাধের বিচারের পযেক্টটা বাস্তবায়নের মাধ্যমেই বেকারত্ব দূর করে কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌছুতে পারে। আর যার কৃতিত্ব নিতে পারি হাইব্রিড হানিফ এবং তার দল।



বঙ্গবন্ধুকে ‘তৃতীয় শ্রেণির নেতা’ বলায় প্রবীণ সাংবাদিক এ বি এম মূসাকে ‘মানসিক ভারসাম্যহীন’ অ্যাখ্যায়িত করেছে আওয়ামী লীগ।

আওয়ামী লীগের সংবাদ বিজ্ঞপ্তি (application/pdf)

শুক্রবার রাতে ক্ষমতাসীন দলটির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “বঙ্গবন্ধু তৃতীয় শ্রেণির নেতা ছিলেন বলে তিনি (মূসা) যে ঔদ্ধত্যপূর্ণ, অশোভন কটুক্তি করেছেন তা নিতান্তই অনাকাঙ্খিত, দুর্ভাগ্যজনক। যা কেবল একজন মানসিক ভারসাম্যহীন, বঙ্গবন্ধুবিদ্বেষী প্রতিক্রিয়াশীল ব্যক্তির মুখেই শোভা পায়।”

এ প্রসঙ্গে এই আওয়ামী লীগ নেতা উল্লেখ করেন যে, বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে প্রাক্তন ছাত্রলীগ ফাউন্ডেশন আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এ বি এম মূসা শেখ মুজিবুর রহমান সম্পর্কে বলেন, ‘৬ দফা প্রণয়নের প্রাক্কালে বঙ্গবন্ধু তৃতীয় শ্রেণির নেতা ছিলেন।’

১৯৭৩ সালের সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের টিকিটে বিজয়ী মূসার ওই বক্তব্যের প্রতিবাদ জানাতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর ধানমণ্ডির কার্যালয়ে জরুরি এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

এ বি এম মূসা বেশ কিছুদিন ধরে আওয়ামী লীগের ‘দরদী’ সেজে সরকারের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে ক্রমাগত ‘ভিত্তিহীন কল্পকাহিনী’ প্রচার করে চলেছেন বলে সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন হানিফ।

তিনি বলেন, “অবস্থাদৃষ্টে মনে হয় তিনি (মূসা) তার প্রকৃত উদ্দেশ্য আর লুকিয়ে রাখতে পারছেন না। তিনি ব্যক্তি এবং গোষ্ঠী স্বার্থে শেখ হাসিনার সরকারকে হেয় প্রতিপন্ন করার জেহাদে অবতীর্ণ হয়েছেন।

“সরকার ও জাতীয় নেতৃবৃন্দের চরিত্র হনন, সরকারের সাফল্য ম্লান করার মিথ্যা প্রচারণার মাধ্যমে এবিএম মূসা কার্যত বিএনপি-জামায়াত জোটের ষড়যন্ত্রকেই প্রকারন্তরে সহায়তা করে চলেছেন।”

একাত্তর সালে মূসা মুক্তিযুদ্ধে অংশ না নিয়ে পাকিস্তানি ‘দালাল’ হামিদুল হক চৌধুরীর দৈনিক পাকিস্তান অবজারভার পত্রিকার প্রতিনিধি হিসেবে পাকিস্তানি পাসপোর্ট নিয়ে হংকংয়ে গিয়ে বাংলাদেশবিরোধী প্রচারণায় অংশগ্রহণ করেন বলে সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক বলেন, ওই সময় মূসা বলেছিলেন, ‘বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধ চলছে না, সেখানে হিন্দুস্তানি দুস্কৃতিকারীরা পাকিস্তানের সংহতির বিরুদ্ধে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে।’

“এভাবে কার্যত তিনি আমাদের মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন।”

প্রবীণ এই সাংবাদিককে ‘স্বঘোষিত বঙ্গবন্ধু ও আওয়ামী লীগপ্রেমী’ অভিহিত করে হানিফ আরো দাবি করেন, ১৯৭৫ সালে জাতির জনককে সপরিবারে হত্যার প্রতিবাদে কোনো ভূমিকা পালন না করে ‘খুনি মোশতাক ও সামরিকচক্রের’ অপকর্মের পক্ষে সাফাই গাইতে কলম ধরেছিলেন মূসা।

“দেশের বয়োজ্যষ্ঠ কলামিস্ট হিসেবে আমরা তাকে শ্রদ্ধার আসনেই দেখতে চাই। কিন্তু তিনি ইতোমধ্যেই সকল সরকারের কাছ থেকে ব্যক্তিগত সুযোগ-সুবিধা আদায় করে নিজের যে স্বার্থান্ধ, ক্ষুদ্র মানসিকতার পরিচয় দিয়েছেন তা বেদনাদায়ক।”

সাংবাদিক মূসা একটি টেলিভিশন চ্যানেলের অনুমতি চেয়ে না পাওয়ার প্রসঙ্গ টেনে এই আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, বর্তমান সরকারের কাছে একটি টেলিভিশন চ্যানেলের অনুমতি চেয়ে না পাওয়ায় তিনি তার ক্ষোভ নানাভাবে ব্যক্ত করে চলেছেন। তিনি এখন শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগ এমনকি বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে নানা রকম বেসামাল উক্তি করে নিজের মনের জ্বালা মেটাতে উঠে পরে লেগেছেন।

বহস্পতিবারের ওই আলোচনা সভায় প্রাক্তন ছাত্রলীগ ফাউন্ডেশনের সভাপতি নূরে আলম সিদ্দিকী আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে যে ধরনের ‘বিষোদগার’ করেছেন তা ‘উন্মাদের প্রলাপ’ ছাড়া আর কিছুই নয় বলে মন্তব্য করেন হানিফ।

তিনি এও দাবি করেন, নূরে আলম ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাসভবনের ফ্লোরে গড়াগড়ি খেয়ে ছাত্রলীগের সভাপতির পদটি বাগিয়ে নিয়েছিলেন। কিন্তু দুভার্গ্যজনক হলেও সত্য বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে নৃশংসভাবে হত্যার পর প্রতিবাদ না করে তিনি সামরিক স্বৈরশাসকদের পদলেহন করতে দ্বিধা করেননি। সামরিক স্বৈরশাসকদের উচ্ছিষ্ট গ্রহণ করে তাদের নির্দেশে আওয়ামী লীগ ভেঙেছিলেন।

“তাদের পৃষ্ঠপোষকতায় ডলার বাজারে নয়-ছয় করে তিনি(নূরে আলম সিদ্দিকী) কোটিপতি হয়েছেন। গণবিচ্ছিন্নতার কারণে দলের মনোনয়ন পেয়েও নির্বাচনে জয়লাভ করতে পারেন নি। ১-১১ এর পর কিংস পার্টি গঠন করার চেষ্টা করেছেন।

বিষয়: রাজনীতি

১২৯১ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File