ই-কমার্স জনপ্রিয় করতে সরকারী প্রনোদনা প্রয়োজন

লিখেছেন লিখেছেন চোথাবাজ ১৩ জানুয়ারি, ২০১৩, ০২:০১:৫১ দুপুর



বাংলাদেশে ই-কমার্স একটি নতুন বিষয়। তাই সারা দেশের মানুষকে ই-কমার্সে আগ্রহী করে তুলতে দরকার ব্যাপক প্রচারনা। ই-কমার্স একটি সম্ভবনাময় অর্থনৈতিক খাত হয়ে উঠতে পারে। এর সুবিধা সবাই জানতে ও বুঝতে পারলেই দ্রুত এগিয়ে যাবে ই-কমার্স। শনিবার রাজধানীর ডেইলি ষ্টার অডিটরিয়ামে এক গোলটেবিল বৈঠকে একথা বলেন বক্তারা। বেসিস ও বাংলাদেশ ব্যাংকের আয়োজনে ই-কমার্স সপ্তাহ ২০১৩ উপলক্ষে আয়োজিত ‘ই-কমার্স ইন বাংলাদেশ: হাউ রেডি আর উই’ শিরোনামের বৈঠকে একথা বলেন তারা।

বৈঠকে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান বলেন, ‘আমাদের দেশে ই-কমার্স সাইটে যারা ব্যাবসা করছেন, তারা অনেকটা নিজ উদ্যোগেই শুরু করেছেন। তাদের কে সরকারের লিগ্যাল সাপোর্ট দেওয়া উচিত। ’

বৈঠকে সাবেক বাণিজ্য মন্ত্রী আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘ই-কমার্স সহজ করতে শুধু ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে নয়, ডেভিড কার্ডের ব্যাপক ব্যাবহার শুররু করা দরকার। যাতে করে যে কেউ চাইলেই অনলাইনে কেনাকাটা বা অর্থ লেনদেন করতে পারে সহজে। বিদেশ থেকে অনেকে দেশি পণ্য কিনতে আগ্রহী থাকে সেদিকেও নজর রাখতে হবে।’

গোলটেবিল বৈঠকের সভাপতি অধ্যাপক ড. জামিলুর রেজা চৌধুরী বলেন, ‘যেহেতু ই-কমার্স একটি সম্ভবনাময় খাত তাই এরসঙ্গে সংশ্লিষ্ঠ প্রতিষ্ঠানের প্রতি সরকার সুনজর দেওয়া দরকার। ট্যাক্স নিয়েও ভাবা দরকার। লেনদেনে আগ্রহী ব্যাংকগুলোকে কিভাবে আরো কম বেনিফিটে উন্নত সেবা দিতে পারে তা ভাবতে হবে। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টাই এগিয়ে নিতে পারে ই-কমার্স।’

প্রিয়.কম সম্পাদক জাকারিয়া স্বপন তার বক্তৃতায় বলেন, 'বাংলাদেশে ই-কমার্স ব্যবহারে কোনও প্রনোদনা নেই। আমেরিকাতে ই-কমার্স জনপ্রিয় করার লক্ষ্যে সরকার অনলাইনে কেনাকাটা করার জন্য ট্যাক্স ফ্রি করে দিয়েছে। গ্রাহকের কোনও সরাসরি লাভ না হলে তারা সেটা গ্রহন করতে অনেক বেশি সময় লেগে যাবে। পাশাপাশি, বাংলাদেশের মানুষরা কোনও কিছুর রেকর্ড রাখতেই স্বাচ্ছন্দ বোধ করেন না। ভ্যাট দেয়ার প্রচলন খুব কম। ট্যাক্স দেয় মাত্র ১৫ লক্ষ মানুষ। কিন্তু ই-কমার্স হলে, তাদের সকল ট্রানজেকশন রেকর্ড করা থাকবে। সরকার আরো বেশি লাভবান হবে। তাই সরকারের উচিৎ হবে, কয়েক বছর ট্যাক্স না নিয়ে এটাকে জনপ্রিয় করে সবাইকে এর আওতায় নিয়ে আসা।"

আলোচনায় উঠে আসে ই-কমার্সের অবকাঠামোগত উন্নয়নের দিকও। যেহেতু দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারের চেয়ে মোবাইল ব্যবহারকারির সংখ্যা বেশি তাই মোবাইলে কিভাবে ই-কমার্সের উন্নয়ন করা যায় তা নিয়ে ভাবনার কথা জানান বক্তারা। এছাড়া মোবাইল অপারেটর, বিটিআরসিকে আরো বিশেষ ভুমিকা রাখতে হবে বলে জানান তারা। কুরিয়ার সার্ভিসের ভূমিকা নিয়ে কথা বলেন কেউ কেউ। সরকারকে সঠিক ভ্যাট বা ট্যাক্স দিয়ে রেকর্ডের আওতায় থাকার বিষয়ে আলোচনা করেন অনেকে। এই খাতে যাতে দুর্নীতি প্রবেশ না করতে পারে সেদিকে সজাগ থাকার আহবান জানান।

অনুষ্ঠানে বেসিস সভাপতি ফাহিম মাশরুর বলেন, ‘ই-কমার্সে আমাদের তরুণ উদ্যেক্তাদের অনেক আইডিয়া আছে। দরকার শুধু একটা প্লাটফর্ম। তাই এই সম্ভবনাময় খাতে দেশের পলিসি মেকারদের বিশেষ ভুমিকা রাখা দরকার। এগিয়ে আসতে হবে সরকারকে।’

বৈঠকে অন্যদের মধ্যে আরো কথা বলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রনালয়ের সচিব নজরুল ইসলাম খান, ডাচ-বাংলা ব্যাংকের চেয়ারম্যান সায়েম আহমেদ, বিকাশের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কামাল কাদির, একসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) এর উপদেষ্টা আনীর চৌধুরী, বেসিস-এর প্রাক্তন সভাপতি মাহবুব জামান, এসএসএল কমার্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইফুল ইসলাম, বাংলাদেশ উইম্যান চেম্বার অ্যান্ড কমার্সে ইন্ডাষ্ট্রির সহ-সভাপতি হাসিনা নেওয়াজ, ডেইলি ষ্টার সম্পাদক মাহফুজ আনাম, আইসিটি মন্ত্রণালয়ের পরামর্শক মুনির হাসান, বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মইনুল ইসলাম, সূর্যমুখির সিইও ফিদা হকসহ আরো অনেকে।

অনুষ্ঠানে মূল বিষয়বস্তু উপস্থাপন করেন ডাচ-বাংলা ব্যাংকের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল কাশেম মো. শিরিন। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন ই-কমার্স সপ্তাহের আহ্বায়ক শামীম আহসান।

একটি চোথাবাজি পরিবেশনা

বিষয়: বিবিধ

১৩৪৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File