ঝলকে ঝলকে বৃষ্টি ভাসে
লিখেছেন লিখেছেন আফফান কান্দুরী ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ০৯:৪৯:১৪ রাত
বৃষ্টিভেজা রাত্রির অনুভূতি!!!
আমায় আজও রোমন্থন করায়!
এক ফকফকা ঝকঝকা দিনে আমার কর্ণকোঠায় লাগাব বলে ভাল একখানা টাটকা হেডফোন পাচ্ছিলাম না; সেই অভিপ্রায় নিয়ে স্বকীয় বসুন্ধরা ত্যাগ করলাম।
মিরপুরের এক নম্বর! মানুষের যান্ত্রিক জীবনের শুরু থেকে শেষ;সবকিছুর বাহুল্য সাক্ষাৎ এখানে মেলবে নানা রঙচঙে!
বের হলাম সন্ধ্যার মহা আগমনের মোটামুটি পূর্বে। ছোট্ট যান্ত্রিক ভ্রমণ আর অল্প কিছু পায়ে চলা পথ, অবশেষে হাতের নাগালে ঢাকা মিরপুর-১। আলোয় মাখামাখি এক যান্ত্রিক কানন! যেন কাঞ্চন-আলোর সমারোহে উজ্জ্বল কোনো সোনার শহর! ব্যস্ত নামক শব্দটা যেখানে সবার সঙ্গী হয়ে চলে। কর্মচঞ্চল নগরের মানুষগুলি ব্যস্তবাগীশ হয়ে এখানে আসে। আমি অবশ্য এটার একটা ব্যতিক্রম নামও দিয়েছি: "ব্যস্তপুর"! খুবই যুক্তিসংগত একটি নাম। যাহোক, আমি আমার আবশ্যকতা মেটালাম।
ফিরছি পথে রিমঝিম বৃষ্টি!!!
ঝরঝর করে ঝরছে! অভিমানিনী মেঘের গায়ে কে যেন ছুঁয়ে দিয়েছে! আর অমনি গোস্বা ক্রোধ ঢালা শুরু করেছে। তবে আমার মতো প্রকৃতিপ্রেমীর কাছে আকাশের এই রোষিত রূপ বড়ই মায়াময়ী লাগে!
জানি না কতক্ষণ ঝরবে এই বৃষ্টিজল। প্রকৃতি যেন অবিরাম কেঁদে চলেছে। ভেজা প্রকৃতির ধাওয়া খেয়ে মানুষ হুড়মুড়িয়ে গাড়িতে গিয়ে বসছে। প্রকৃতির জলপ্রবাহ আমাকেও ছুঁয়ে দিল। মনে অনিচ্ছা নিয়েই দ্রতপদে একটা লেগুনায় গিয়ে ওঠলাম!
ছোট্ট বাহনটাতে বসে আছি, বৃষ্টির শব্দ কানে বাজছে, দেহমনে তরঙ্গ তুলছে এই সুরধ্বনি। যে শব্দধ্বনি লিখে প্রকাশ করার ভাষা আমার জানা নেই! এক ধরনের ছন্দবদ্ধ শব্দ; যা আমার মনে কেমন এক শিহরণ তৈরি করেছে! কেমন হত! যদি এই মধুরব শোনতে শোনতে জীবনের সকালটা বিকেলের দিকে গড়িয়ে দিতে পারতাম! কিন্তু সকল ইচ্ছে বাসনাগুলো যে পূরণের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে না; এই চিরসত্য বাণী পাষাণী হৃদয় নিয়ে আমার সমুখে এখন হাজিরি দিয়ে গেল! জিন্দেগির স্বভাবজাত সীমাবদ্ধতাও খুব সরলভাবে তার সঙ্গ দিল!
তবু আমার জন্যে এ রিমঝিম প্রতিধ্বনিই দীপ্ত শান্তনা।
বৃষ্টি পড়লেই ঢাকা সিটির চেহারাটা কেমন বদলে যায়! গাড়ির ভেতর বসে অপরূপ লাগছিল এই বৃষ্টিস্নাত শহরটা! চোখের সামনে শত সহস্র বৃষ্টিকণাগুলো পিচঢালা পথে পড়ে পড়ে লাফাচ্ছিল! যেন আনন্দ খেলায় মেতে উঠছিল।
রঙভরা শহরে রঙহীন এই বৃষ্টি অপার্থিব লাগছিল আমার কাছে! এই সময়ে রোড ডিভাইডারে আকাশমুখী স্ট্রিট লাইটগুলোর হালকা আলো এক রোমাঞ্চকর দৃশ্যের অবতারণ ঘটালো! মনে হচ্ছিল পুরো ধরণিটা ভেজা-জ্যোৎস্নার জলে ভিজছে!
বৃষ্টির পানি কেটে কেটে গাড়ি চলছিল। পথের ছোট্ট এই জলসমুদ্রে চলন্ত গাড়িগুলো ঢেউ তুলে তুলে যাচ্ছিল।
বৃষ্টিপথেই নেমে পড়লাম। আকাশের মেঘরস ভেজাতে শুরু করল।
এক মুহূর্ত মনে হলো থেমে যাই, কিন্তু থামলাম না;
এই বৃষ্টি আজ আমি গায়ে মাখবো
বর্ণহীন এই বৃষ্টিতে রঙিন হয়ে ফিরবো আজ
তাই করলাম
বিষয়: সাহিত্য
৬৪৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন