নামাজ পড়ার সঠিক নিয়ম

লিখেছেন লিখেছেন ইসলাম আমার ধর্ম ২৮ মে, ২০১৮, ০১:৩৩:২৫ রাত

নামায

(নামাযে কি কি পড়তে হয়) ইসলাম আমার ধর্ম

নামাযের কিছু গুরুত্বপূর্ণ মাসআলাহ [বিদ্রঃ আমার লেখায় যদি কোন ভুল এুটি থেকে থাকে তাহলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন ও আমার ব্লগটি যদি আপনাদের ভাল লাগে থাহলে আমাকে কমেন্টে জানাবেন ]

নামাযের কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ও মাসআলাহ

এক নজরে ফরয, ওয়াযিব ও সুন্নাতসমূহ

নামাযের বাইরের ফরয

নামাযের ভেতরের ফরয

নামাযের ওয়াজিব

নামাযে সুন্নাতে মুয়াক্কাদা

নামায ভঙ্গের কারণসমূহ

নামায পাঁচ প্রকার

নামাযের রাকা’আত সংখ্যা

নামায পড়ার সংক্ষিপ্ত নিয়ম

নামাযের বিস্তারিত নিয়ম

নামায পড়ার নিয়ম

প্রথম রাকা’আতের মাসআলাসমূহ :

প্রথম রাকা’আতে রুকুর আগের মাসআলাসমূহ

সেজদায় : প্রথম রাকা’আতের প্রথম সেজদার মাসআলাসমূহ

প্রথম রাকা’আতের দ্বিতীয় সেজদার মাসআলাসমূহ

দ্বিতীয় রাকা’আতের মাসআলাসমূহ :

রুকুর মধ্যে : দ্বিতীয় রাকা’আতের রুকুর মাসআলাসমূহ

সেজদায় : দ্বিতীয় রাকা’আতের প্রথম সেজদার মাসআলাসমূহ

দ্বিতীয় রাকা’আতের দ্বিতীয় সেজদার মাসআলাসমূহ

তৃতীয় রাকা’আতের মাসআলাহসমূহ :

রুকুর মধ্যে : তৃতীয় রাকা’আতের রুকুর মাসআলাহসমূহ

সেজদায় : তৃতীয় রাকা’অতের প্রথম সেজদার মাসআলাহসমূহ

তৃতীয় রাকা’আতের দ্বিতীয় সেজদার মাসআলাহসমূহ

চতুর্থ রাকা’আতের মাসআলাহসমূহ :

রুকুর মধ্যে : চতুর্থ রাকা’আতের রুকুর মাসআলাহসমূহ

সেজদা : চতুর্থ রাকা’আতের প্রথম সেজদার মাসআলাহসমূহ

চতুর্থ রাকা’আতের দ্বিতীয় সেজদার মাসআলাহসমূহ

আখেরী বৈঠকের মাসআলাহসমূহ

নামায শেষে তাসবীহ

নামায শেষে দোয়া

এক নজরে ফরয, ওয়াযিব ও সুন্নাত সমূহ

ক.নামাযের বাইরে ৭ (সাত) ফরয (আহকাম) :

১.শরীর পাক

২. কাপড় পাক

৩.নামাযের জায়গা পাক

৪.সতর ঢাকা

৫.কেবলামুখী হওয়া

৬.ওয়াক্তমত (সময়মত) নামায পড়া

৭.নামাযের নিয়ত করা।

খ. নামাযের ভিতরে ৬ (ছয়) ফরয (আরকান) :

১.তাক্বীরে তাহ্রীমা বলা

২.দাঁড়িয়ে নামায পড়া

৩.ক্বিরাত পড়া

৪.রুকু করা

৫.দু‘সিজদা করা

৬.আখেরী বৈঠক।

গ. নামাযে ১৪ (চৌদ্দ) ওয়াজিব :

১.আলহামদু শরীফ পুরা পড়া

২.আলহামদুর সাথে সূরা মিলানো

৩. রুকু সেজদায় দেরী করা

৪.রুকু হতে সোজা হয়ে খাড়া হওয়া

৫.দুই সেজদার মাঝে সোজা হয়ে বসা

৬.দারমিয়ানি (প্রথম ও শেষ) বৈঠক

৭.উভয় বৈঠকে আত্তাহিয়্যাতু পড়া

৮.ইমামের জন্য ক্বিরাত দিনের বেলায় আস্তে বা রাতের বেলায় জোরে পড়া

৯.বিতিরের নামাযে দোয়ায়ে কুনুত পড়া

১০. দুই ঈদের নামাযেই ছয় তাকবীর বলা

১১. প্রত্যেক ফরয নামাযের প্রথম দুই রাকা’আতে ক্বিরাত পড়া

১২. প্রত্যেক রাকা’আতের ফরযগুলির তারতীব ঠিক রাখা

১৩. প্রত্যেক রাকা’আতের ওয়াজিবগুলির তারতীব ঠিক রাখা

১৪. اَلسَّلَام ُعَلَيْكُمْ وَرَحْمَةُاللهِ (আস্সালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্ল¬াহ) বলে নামায শেষ করা।

ঘ. নামাযে সুন্নাতে মুয়াক্কাদা ১২ (বার) টি :

১. দুই হাত উঠানো

২. দুই হাত বাঁধা

৩. সানা পড়া

৪. তা’উজ পড়া

৫. তাসমিয়া পড়া

৬. আলহামদুর শেষে আমীন বলা

৭. প্রত্যেক ওঠা বসায় আল্লাহু আকবার বলা

৮. রুকুর তাসবীহ বলা

৯. রুকু হতে ওঠার সময় সামিআল্ল¬াহু লিমান হামিদাহ (রাব্বানা লাকাল হামদ) বলা

১০. সিজদায় তাসবীহ পড়া

১১. দুরুদ শরীফ পড়া

১২. দোয়ায়ে মাসূরা পড়া তবে দোয়ায়ে মাসুরা সব সময় না পড়লেও নামাজ হয়ে যাবে।

ঙ. নামায ভঙ্গের কারণসমূহ :

১. নামায অশুদ্ধ পড়া, নামাজে কিরাত ও তাসবীহ অশুদ্ধ পড়া

২. নামাযের ভিতর কথা বলা

৩. কোনো লোককে সালাম দেয়া

৪. সালামের উত্তর দেয়া

৫. উহ-আহ শব্দ করা

৬. বিনা ওজরে কাশি দেয়া

৭. আমলে কাছীর করা

৮. বিপদে কি ব্যথায় শব্দ করে কাঁদা

৯. তিন তাসবীহ পরিমাণ সতর খুলে থাকা

১০. মোক্তাদী ব্যতীত অপর ব্যক্তির লোকমা দেয়া

১১. সুসংবাদ ও দুঃসংবাদের উত্তর দেয়া

১২. নাপাক যায়গায় সিজদা করা

১৩. সাংসারিক কোন বিষয়ে প্রার্থনা করা

১৪. খাওয়া ও পান করা

১৫. হাঁচির উত্তর দেয়া

১৬. কিবলার দিকে হতে সিনা ঘুরে যাওয়া

১৭. নামাযে কোরআন শরীফ দেখে পড়া

১৮. ইমামের আগে মোক্তাদীরা দাঁড়ানো

১৯. প্রতি রুকনে দুইবারের বেশি শরীর চুলকানো

২০. নামাযে শব্দ করে হাসা।

নামায পড়ার (ভেতরের) নিয়ম

প্রথমে জায়নামাজে দাঁড়িয়ে জায়নামাযের দোয়া পড়তে হয়। এর পর নিয়ত করতে হবে।

জায়নামাযের দোয়া : اِنِّئْ وَجَّهْتُ وَجْهِئَ لِلَّذِئْ فَطَرَالسَّمَوَاتِ وَالْاَرْضَ حَنِيْفًا وَّمَا اَنَا مِنَ الْمُشْرِكِيْنَ

উচ্চারণ : ইন্নি ওয়াজ্জাহতু ওয়াজহিয়া লিল্লাযী ফাত্বারাসসামাওয়াতি ওয়াল আরদ্বা হানিফাও ওয়ামা আনা মিনালমুশরিকীন।

অর্থ : নিশ্চয়ই আমি তাঁর দিকে মুখ করলাম। যিনি আকাশ ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন, বস্তুত আমি মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত নই।

নিয়্যত : কোন নামায পড়া হচ্ছে তার ইচ্ছা করার নাম হলো নিয়্যত। আমরা যে নামায পড়বো সে সম্পর্কে মনে মনে স্থির করার পরে আল্লাহু আকবার বলে তাকবীরে তাহরিমা বলে নামায শুরু করতে হবে। যেমন-আমি ফযরের দুই রাকাত সুন্নাত নামায কেবলামুখী হয়ে পড়ছি। কেউ কেউ ইচ্ছা করলে আরবীতেও নিয়্যত করতে পারেন।

দুই রাকা’আত নামায হলে رَكْعَتَئ “রাকা’আতাই”, তিন রাকা’আত নামায হলে رَكْعَتَئ ‘রাকা’আতাই’-এর স্থলে ثلَاثَ رَكْعَاتِ‘‘ছালাছা রাক’আতি’’ এবং ৪ রাকাত হলে اَرْبَعْئَ رَكْعَاتِ “আরবা রাক‘আতি” বলতে হবে।

ফজর اَلْفَجْرِ – এর স্থলে যে ওয়াক্ত বা যে নামায পড়বে সে নাম বলতে হবে। যেমন-যোহর হলে যোহর, আছর হলে আছর, মাগরেব হলে মাগরেব, এশা হলে এশা বলতে হবে। আর নামায ফরয হলে সুন্নাতি রাসূলিল্লাহি (رَسُوْل ِاللهِ سُنَّةِ) এর স্থলে ফারদুল্লাহি (فَرْضُ اللهِ) ওয়াজিব হলে ওয়াজিবুল্লাহি (وَاجٍبُ اللهِ) বলতে হবে।

নামায পাঁচ প্রকার

১.ফরয :

যা সরাসরি কোরআন থেকে পাওয়া এবং রাসূল ফরয, তথা অবশ্যই পালনীয় বলে নির্দেশ করেছেন।

যা আদায় করা জরুরী, পরিত্যাগ করা হারাম। ফরয নামাজের রাকা’আত সংখ্যা সুনির্দ্ধারিত। যেমন ফজর দুই রাকা’আত, যোহর চার রাকা’আত, আছর চার রাকা’আত, মাগরিব তিন রাকা’আত এবং এশা চার রাকা’আত মোট সতের রাকা’আত।

২. ওয়াজিব :

যা আদায় করা জরুরী, পরিত্যাগ করা মাকরূহে তাহ্রীমী।

৩.সুন্নাতে মুয়াক্কাদা :

যা নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাল্লাম নিয়মিত আদায় করেছেন। এটা পরিত্যাগ করা গুনাহ।

৪. সুন্নাতে গায়রে মুয়াক্কাদা :

যা নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাল্লাম যে কাজ অধিকাংশ সময় করেছেন, তবে কখনো কখনো পরিত্যাগও করেছেন।

৫. নফল :

যা আদায়ে ছওয়াব রয়েছে, পরিত্যাগে গোনাহ নেই। নফল নামায সম্পূর্ণ ঐচ্ছিক। কেউ ইচ্ছা করলে পড়লো এবং কেউ ইচ্ছা করলে নাও পড়তে পারে। যে ব্যক্তি তা পড়ে সে প্রশংসাযোগ্য।

নামাযের রাকা’আত সংখ্যা

ক. দুই রাকা’আত খ. তিন রাকা’আত ও গ. চার রাকা’আত নামায।

ক. দুই রাকা’আত নামায :

নামায দুই রাকা’আত হলে দ্বিতীয় রাকা’আতে সেজদা শেষে প্রথমে তাশাহুদ, তারপর দুরূদ, তারপর দোয়া মাছুরা পড়ার পর সালাম ফেরাতে হবে।

খ.তিন বা চার রাকা’আত নামায :

নামায তিন বা চার রাকা’আত হলে প্রথম দ্বিতীয় রাকা’আতে শুধুমাত্র তাশাহুদ পড়তে হবে। দুরূদ, দোয়া মাছুরা ইত্যাদি পড়তে হবে না। তাশাহুদ পড়া শেষ হলেই আল্লাহু আকবার বলে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে প্রথম বা দ্বিতীয় রাকা’আতের মতই সূরা ফাতিহা অথবা তার সাথে অন্য সূরা মিলিয়ে রুকু, সিজদা ইত্যাদি করে অবশিষ্ট ৩য় বা ৩য় ও ৪র্থ রাকা’আত শেষ করে শেষ সিজদাহ দিয়ে বসতে হবে তারপর তাশাহুদ তারপর দুরূদ তারপর দোয়া মাছুরা পড়ার পর সালাম ফেরাতে হবে।

১. ফরয নামায হলে :

ফরয নামায হলে ১ম ও ২য় রাকা’আতে সূরা ফাতিহা পড়ে অন্য সূরা মিলাতে হবে কিন্তু ৩য় ও ৪র্থ রাকা’আতে শুধু সূরা ফাতিহা পড়ে রুকুতে যেতে হবে, কোন সূরা মিলাতে হবে না। যদি কেউ সূরা মিলিয়ে পড়ে ফেলে তবে নামাজে সমস্যা হবে না।

২. ওয়াযিব, সুন্নাত ও নফল নামায হলে :

নামায ওয়াযিব, সুন্নাত ও নফল হলে হলে ৩য় ও ৪র্থ রাকা’আতে সূরা ফাতিহার সাথে অন্য সূরা মিলাতে হবে।

৩.জামায়াতে নামায হলে :

ক.নামায জামায়াতে হলে ইমাম ফজর, মাগরিব ও এশা ফরয নামাযে ১ম ও ২য় রাকা’আতে সূরা ক্বেরাত উচ্চস্বরে পড়তে হবে। ৩য় ও ৪র্থ রাকা’আতে সূরা উচ্চস্বরে পড়তে হবে না।

খ.যোহর ও আছরের জামায়াতে ১ম ও ২য় রাকা’আতে সূরা ক্বেরাত আস্তে পড়তে হবে। সমস্ত তাকবীর, সামিআল্লাহু লিমান হামিদাহ ও আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ উচ্চস্বরে পড়তে হবে।

৪.একা নামায পড়লে :

ফরয নামায সমূহ একা পড়লে ইমামের মতো পড়তে হবে। অথবা সমস্ত নামায আগাগোড়া সুন্নাত নামাযের মতো নীরবেও পড়া যায়। একা নামায আদায়কারীকে প্রতি রাকা’আতে সূরা ফাতিহা পড়তে হবে।

আস্তে আস্তে একা নামায পড়ার ক্ষেত্রে তাকবীর, তাহরীমা, সূরা ক্বেরাত পড়ার নিয়ম :

যে সব নামায আস্তে আস্তে পড়তে হয় সেসব নামাযে সূরা ক্বেরাত এমনভাবে পড়তে হবে যাতে নিজ কানে নিজের পড়ার আওয়াজ শুনা যায়, পড়ার সময় ঠোঁট, জিহ্বা, মুখ নড়া-চড়া করে, সূরা ক্বেরাত পড়ার সময় জিহ্বা ও ঠোঁট ব্যবহারের মাধ্যমে হরফের সহীহ উচ্চারণ হওয়া। শুধুমাত্র ধ্যান করে বা ঠোঁট মুখ-জিহ্বা না নেড়ে মনে মনে তাকবীর, তাহরীমা, আল্লাহু আকবার বললে এবং সূরা ক্বেরাত পড়লে তা আদায় হবে না এবং নামায হবে না।

৫. ইমামের পেছনে নামায পড়লে :

فَرْضُ اللهِ تَعَالٰي“ফারদুল্লাহি তা’আলা।” এরপর اِقْتَدَيْتُ بِهَذَ الْاِمَام“একতাদাইতু বিহাজাল ইমাম” বলতে হবে। মনে মনে ইমাম যেভাবে নামাজ পড়াবেন সেভাবে ইমামকে অনুসরণ করার ইচ্ছা করতে হবে।

৬. নিজে ইমামতি নামায পড়ালে :

اَنَا اِمَام ُلِمَنْ حَضَرَ وَمَنْ يَّحْضُرُ “আনা ইমামু লিমান হাজারা ওয়া মাই-ইয়াহ দূরু।” “যারা উপস্থিত আছে এবং যারা উপস্থিত হবে আমি তাদের ইমামতিতে নিযুক্ত বলে মনস্থির করতে হবে।”

নামায পড়ার সংক্ষিপ্ত নিয়ম

১. প্রথমে কেবলামুখী হয়ে জায়নামাযে দাঁড়িয়ে জায়নামাযের দোয়া পড়তে হয় এবং যে নামায পড়ার ইচ্ছা করেছেন মনে মনে তার নিয়্যত করতে হবে। যেমন, আমি আল্লাহতায়ালার সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে ফজরের দুই রাকা’আত সুন্নাত নামায পড়ছি।

২. এরপর উভয় হাত কান পর্যন্ত ওঠাবেন। হাতের তালু ও আঙুল কিবলামুখী থাকবে এবং আঙুলগুলো কানের লতি বরাবর নিচে থাকবে।

৩. এরপর আল্লাহু আকবার’বলে নাভির উপরে হাত বাঁধুন। ডান হাত বাম হাতের উপর থাকবে এবং দৃষ্টি সেজদার স্থানে নিবদ্ধ থাকবে।

৪. এরপর অনুচ্চস্বরে ‘সুবহানাকা আল্লাহুম্মা’পড়–ন এবং ‘আউযুবিল্লাহ’ ‘বিসমিল্লাহ’ পড়ে সূরা ফাতিহা পড়ুন।

৫. এরপর অনুচ্চস্বরে আমীন বলে অন্য একটি সূরা কিংবা একটি বড় আয়াত বা ছোট তিন আয়াত তেলাওয়াত করুন। ইমামের পিছনে নামায পড়লে ‘সুবহানাকা আল্লাহুম্মা’র পর কিরাত পড়লে চলবে। কেউ যদি পড়ে ফেলে তবে সে সূরা ফাতেহার বেশী পড়বেনা।

৬. এরপর আল্লাহু আকবার’ বলতে বলতে রুকু করুন। রুকুতে পিঠ সোজা থাকবে এবং হাতের আঙুলগুলো ফাঁকা ফাঁকা করে শক্ত করে হাঁটু ধরতে হবে। রুকুতে তিন বার বা পাঁচ বার তাসবীহ পড়ুন।

৭. এরপর সামিআল্লাহু লিমান হামিদাহ’ বলতে বলতে সোজা হয়ে দাড়ান এবং ‘রাব্বানা লাকাল হামদ’ বলুন। ইমামের পিছনে থাকলে ইমাম সামিআল্লাহু লিমান হামিদা’ বলবে আর মুক্তাদী শুধু ‘রাব্বানা লাকাল হামদ’ বলুন।

৮. এরপর আল্লাহু ‘আকবার’বলতে বলতে সেজদায় যান। সেজদায় যথক্রমে দুই হাটু, দুই হাত, নাক এবং সবশেষে কপাল ভূমিতে রাখুন। হাতের আঙুলগুলো কিবলামুখী থাকবে। কনুই পাঁজর থেকে এবং পেট উরু থেকে আলাদা থাকবে। পুরুষের কনুই ভূমিতে বিছানো যাবে না। সেজদায় তিন বার বা পাঁচ বার তাসবীহ পড়ুন।

৯. এরপর যথাক্রমে কপাল, নাক এবং সবশেষে হাত উঠিয়ে তাকবীর বলতে বলতে বসুন।

১০.এরপর পুনরায় তাকবীর বলতে বলতে দ্বিতীয় সেজদা করুন।

১১.এরপর তাকবীর বলতে বলতে উঠুন। ওঠার সময় যথাক্রমে কপাল, নাক, হাত সবশেষে হাটু ভূমি থেকে উঠিয়ে সোজা দাঁড়িয়ে যান। দাঁড়িয়ে হাত বাঁধুন এবং ‘বিসমিল্লাহ’সহ সূরা ফাতিহা ও অন্য একটি সূরা পড়ুন। ইমামের পিছনে হলে কিরাত পড়বেন না।

১২.এরপর পূর্বের নিয়মে রুকু, কাওমা, সেজদা, জলসা এবং দ্বিতীয় সাজদা করুন। পুরুষের বেলায় সেজদা থেকে উঠে বাম পা বিছিয়ে তার উপর বসুন এবং ডান পা খাড়া রাখুন ও দুই হাত উরুর উপর রাখুন। (হাতের আঙুলের অগ্রভাগ হাঁটু বরাবর থাকবে)।

১৩.এবার আত্তাহিয়্যাতু’ পড়ুন।“আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু” পর্যন্ত পোঁছালে মধ্যমা ও বৃদ্ধাঙ্গুলের মাথা পরষ্পরের সঙ্গে মিলিয়ে গোলক তৈরী করুন, কনিষ্ঠা ও অনামিকা মুড়ে তালুর সাথে লাগিয়ে রাখুন এবং তর্জনী উঠিয়ে ইশারা করুন। ‘লা-ইলাহা’ বলার সময় তর্জনী উঠবে, ‘ইল্লাল্লাহু’ বলার সময় নামবে।

১৪.এরপর বৈঠকের শেষ পর্যন্ত ডান হাত এ অবস্থাতেই থাকবে। দুই রাকা’আত বিশিষ্ট নামায হলে আত্তাহিয়্যাতু’শেষ হওয়ার পর দরূদ শরীফ পড়–ন। এরপর দোয়া মাসূরা পড়ে ডানে বামে সালাম ফিরিয়ে নামায শেষ করুন।

১৫.যদি তিন বা চার রাকা’আত বিশিষ্ট নামায হয় তাহলে ‘আত্তাহিয়্যাতু’র পর কোনো দরূদ না পড়ে তাকবীর বলতে বলতে দাঁড়িয়ে যান। এরপর এক রাকা’আত কিংবা দুই রাকা’আত পড়ে নামায শেষ করুন।

১৬.ফরয নামাযের তৃতীয় ও চতুর্থ রাকা’আতে সূরা ফাতিহার পর অন্য সূরা পড়া জরুরী নয়।

উপরোক্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের বিস্তারিত আলোচনা

নামায পড়ার নিয়ম :

চার রাকা’আত নামাযের নিয়ম কানুন জানলে দুই রাকা’আত ও তিন রাক’আতের নিয়ম কানুনও জানা হয়ে যাবে তাই চার রাকা’আত নামায কিভাবে পড়তে হবে তার বিস্তারিত নিয়ম কানুন নি¤েœ তুলে ধরা হলো :

প্রথম রাকা’আতে রুকুর আগের মাসআলাহ সমূহ :

১. হাত উঠানো (হাতের তালু ও আঙ্গুলগুলো কিবলামুখী করে কাঁধ কিংবা কান পর্যন্ত উঠানো) (সুন্নাত)।

২. তাকবীরে তাহরীমা বলা (ফরজ) اَللهُ اَ كْبَرُ “আল্লাহই সর্বশ্রেষ্ঠ বলা”

৩.হাত বাঁধা (তাকবীরে তাহরীমা উচ্চারণের সময় হাত উঠাবার পর হাত নামিয়ে ডান হাত বাম হাতের পিঠের উপর স্থাপন করা)। ডান হাতের আঙ্গুলগুলি দিয়ে বাম হাতের কব্জীকে শক্ত করে ধরা (সুন্নাত)।

৪.দুই হাত নাভির উপরে বুকের উপরও বাঁধা যাবে (সুন্নাত)।

৫.মাথা সামান্য ঝুঁকিয়ে রাখা।

৬.দু’চোখের নজর (দৃষ্টি) সেজদার জায়গায় রাখা।

৭.সানা পড়া (সুন্নাত) سُبْحَانَكَ اَللّٰهُمَّ وَبِحَمْدِكَ وَتَبَارَكَ اسْمُكَ وَتَعَاَلَ جَدُّكَ وَلَا اِلٰهَ غَيْرُكَ

উচ্চারণ : সুবহানাকা আল্লাহুম্মা ওয়া বিহামদিকা ওয়া তাবারাকাসমুকা ওয়া তা‘আলা জাদ্দুকা ওয়া লা ইলাহা গাইরুকা”।

অর্থ : হে আল্লাহ! আপনার পবিত্রতা এবং প্রশংসা বর্ণনা করছি : আপনার নাম বড়ই মহান। আপনার মাহাত্ম্য ও সম্মান অতীব উচ্চ এবং আপনি ছাড়া অন্য কোন উপাস্য নেই, যার সামনে মাথা নত করা যায়।

৮.তা‘উজ (আউযুবিল্লাহ) পড়া (সুন্নাত)।

اَعُوْذُ بِاللهِ مِنَ الْشَّيطَانِ الرَّجِيْمِ

উচ্চারণ : আউযু বিল্লাহি মিনাশ শাইত্বা-নির রাজীম।

অর্থ : আমি বিতাড়িত শয়তানের (ওয়াসওয়াসা) কুমন্ত্রণা হতে একমাত্র আল্ল¬াহতায়ালার আশ্রয় প্রার্থনা করছি।

৯.তাসমিয়া (বিসমিল্লাহ) পড়া (সুন্নাত)।

بِسْمِ اللهِ الرَّحْمَـٰنِ الرَّحِيمِ

উচ্চারণ : বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম।

অর্থ : আমি পরম দাতা দয়াময় আল্লাহতাআলার নামে আরম্ভ করছি।

১০.আলহামদু সূরা সম্পূর্ণ অংশ পড়া (ওয়াজিব)।

ا َ لْحَمْدُ لِلّٰهِ رَبِّ الْعَالَمِيْنَ ﴿٢﴾ ا َلرَّحْمَـٰنِ الرَّحِيمِ ﴿٣﴾ مَالِك يَوْم ِالدِّينِ ﴿٤﴾ إِيَّاكَ نَعْبُدُ وَإِيَّاكَ نَسْتَعِينُ ﴿٥﴾ اِهْدِنَا الصِّرَاطَ الْمُسْتَقِيمَ ﴿٦﴾ صِرَاطَ الَّذِين أَنْعَمْتَ عَلَيْهِمْ غَيْرِالْمَغْضُوب عَلَيْهِمْ وَلَا الضَّالِّينَ ﴿٧﴾

উচ্চারণ : আল হামদু লিল্লাহি রাব্বিল আলামীন। আর রাহমানির রাহীম। মালিকি ইয়াওমিদ্দীন। ইয়্যাকা না’বুদু ওয়া ইয়্যাকা নাসতাঈন। ইহদিনাস সিরাত্বাল মুসতাক্বীম। সিরাত্বাল লাযীনা আন‘আমতা আলাইহিম, গাইরিল মাগদূবি আলাইহিম ওয়ালাদদ্বোয়াল্লিন। আমীন”।

অর্থ : সমস্ত প্রশংসা একমাত্র আল্ল¬াহতায়ালার জন্য যিনি সকল সৃষ্টিজগতের পালনকর্তা। যিনি দাতা, দয়াময় মেহেরবান। যিনি বিচার দিনের মালিক (অধিপতি), আমরা সর্বাবস্থায় একমাত্র তোমারই ইবাদত (দাসত্ব) করি এবং তোমারই সাহায্য প্রার্থনা করি। আমাদেরকে সরল-সঠিক পথ দেখাও, সেসব লোকের পথ যাদেরকে তুমি নিয়ামত দান করেছো। তাদের পথ নয়, যাদের প্রতি তোমার গযব (অভিশম্পাৎ) নাযিল হয়েছে এবং যারা পথভ্রষ্ট হয়েছে।

সারাদিন কমপক্ষে ৩২ বার (অর্থাৎ ফরয ১৭ রাকা’আতে, সুন্নাত ১২ রাকা’আতে এবং বিতর ৩ রাকা’আতে) আমরা নামাযে কি ওয়াদা করছি আর বাস্তবে কি করছি তা ভেবে দেখা দরকার।

১১.সূরা ফাতিহা পড়া শেষে اَمِيْن ‘আমিন’ বলা (সুন্নাত)।

১২.সূরার শুরুতে بِسْمِ اللهِ الرَّحْمَـٰنِ الرَّحِيمِ ‘বিসমিল্লাহ’ পড়া (সুন্নাত)।

১৩.ক্বিরাত পড়া (ফরজ)। قُلْ هُوَ اللهُ أَحَدٌ ﴿١﴾ اَللهُ الصَّمَدُ ﴿٢﴾ لَمْ يَلِدْ وَلَمْ يُولَدْ ﴿٣﴾ وَلَم ْيَكُنْ لَّهُ كُفُوًا أَحَدٌ ﴿٤

উচ্চারণ : ক্বুল-হুওয়াল্লাহু আহাদ। আল্লাহুস সামাদ। লাম ইয়ালিদ ওয়ালাম ইউলাদ। ওয়ালাম ইয়াকুল্লাহু কুফুওয়ান আহাদ”।

অর্থাৎ : বলুন, তিনি আল্লাহ এক, অদ্বিতীয়। আল্লাহ কারো মুখাপেক্ষী নন, সকলেই তার মুখাপেক্ষী। তিনি কাউকে জন্ম দেন নাই এবং তাঁকেও জন্ম দেয়া হয় নাই এবং তাঁর সমতুল্য কেউ নই। (সূরা ১১২ ইখলাছ : আয়াত ১-৪)

১৪.সূরা মিলানো (ওয়াজিব)।

১৫.প্রথম রাকা’আতে সূরা/আয়াত বড় পড়া।

রুকূর মধ্যে : প্রথম রাকা’আতের রুকুর মাসআলাহ সমূহ

১.রুকুতে যাবার সময় اَللهُ اَكْبَرُ আল্লাহু আকবার’ বলা (সুন্নাত)।

“আল্লাহু আকবার”-আল্লাহ সর্বশ্রেষ্ঠ

২.রুকু করা (ফরজ)।

৩.রুকুতে দেরী করা (ওয়াজিব)।

৪.রুকুতে থেকে তাসবিহ পড়া কমপক্ষে ৩ বার (সুন্নাত)।

রুকুর তাসবীহ হলো- سُبحَانَ رَبِّيَ الْعَظِيْم “সুবহানা রাব্বিয়াল আজীম”-আমি আমার মহান প্রভুর পবিত্রতা বর্ণনা করছি।

এছাড়াও পড়া যায়- سُبْحَنَاكَ اَللّٰهُمَّ رَبَّناَ وَبِحَمْدِكَ اَللّٰهُمَّ اغْفِرْلِي

উচ্চারণ : সুবহানাকা আল্লাহুম্মা রাব্বানা ওয়াবিহামদিকা আল্লাহুম্মাগ-ফিরলী।

অর্থ : হে আল্লাহ তুমি পাক পবিত্র, হে আমাদের রব তোমার প্রশংসা সহকারে ফরিয়াদ করছি! তুমি আমাকে মাফ কর।

রুকুতে যাবার নিয়ম :

ক. রুকুতে গিয়ে জড়িয়ে ধরার মত দু’হাত হাঁটুতে স্থাপন করা। (হাঁটুতে হাতের তালু রেখে হাত দিয়ে হাঁটুকে মজবুতভাবে ধরতে হয়) তাতে শরীরের ভারটা হাতের উপর পড়ে এবং কনুই ও হাঁটু সোজা থাকে।

খ. পুরুষের ক্ষেত্রে দুই বাহু পাঁজর থেকে আলাদা করে ফাঁক করে রাখা।

গ. পিঠ সোজাসুজি লম্বা করে বিছিয়ে রাখা। কোমর, পিঠ ও মাথা এক রেখা বরাবর সমান থাকবে এবং মাটির সমান্তরাল থাকে। মাথা পিঠ থেকে নিচু হয় না এবং পিঠ বাঁকা অবস্থায় থাকে না। অর্থাৎ মাথা পিঠের বরাবর রাখা।

ঘ.রুকুতে কোমর ও মাথা একসমান থাকবে। মাথা কোমর থেকে উঁচুও হবেনা, নিচুও হবে না।

রুকু হতে উঠার নিয়ম :

ক. রুকু হতে উঠার সময়- ‘সামিআল্লাহু লিমান হামিদাহ’ বলা সুন্নাত। سَمِعَ اللهُ لِمَنْ حَمِدَهُ

উচ্চরণ : “সামিআল্লাহু লিমান হামিদা”

অর্থ : আল্লাহতায়ালা প্রশংসাকারীর প্রশংসা শোনেন।

খ. রুকু হতে সোজা হয়ে খাড়া হওয়া (ওয়াজিব)।

গ. রুকু হতে সোজা হয়ে খাড়া হওয়ার পর দোয়া পড়া।

رَبَّنَا لَكَ الْحَمْدُ – حَمْدًا كَثِيْرًا طَيِّبًا مُبَارَكًا فِيْهِ –

উচ্চারণ : ‘রাব্বানা লাকাল হামদ, হামদান কাছিরান, ত্বাইয়্যেবান, মোবারাকান ফীহি’।

অর্থ : হে আল্লাহ! সমস্ত প্রশংসা তোমার জন্য, এমন ব্যাপক প্রশংসা, যাতে রয়েছে খুবই উত্তম বরকত। এ প্রশংসায় মঙ্গল হোক বরকত হোক।

১. হযরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, (নামাযে রুকু হতে মাথা উঠানোর সময়) ইমাম যখন সামিআল্লাহু-লিমান হামিদাহ বলবে, তোমরা তখন আল্লাহুম্মা রাব্বানা লাকাল হামদ বল। কেননা, যে ব্যক্তির এ কথা ফেরেশতাদের এ কথার সাথে (অর্থাৎ একই সময়ে) উচ্চারিত হবে, তার অতীতের সকল গোনাহ মাফ করে দেয়া হবে। (সহীহ আল বোখারী -৭৫২)

২. হযরত রিফ’আ ইবনে রাফে’ যুরাকী রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন আমরা নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পিছনে নামায আদায় করছিলাম। রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবীদের জামায়াতে ইমামতি করছিলেন, যখন তিনি নামাযে রুকু থেকে সামিআল্লাহু লিমান হামিদাহ বলে দাঁড়ালেন, তখন এক সাহাবী পিছন থেকে রাব্বনা লাকাল হামদ বলার পর হামদান কাছীরান ত্ব্যায়্যিবান মুবারকান ফিহি এই শব্দগুলিও বললেন। নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাম ফিরিয়ে সাহাবীদেরকে জিজ্ঞেস করলেন যে, কওমের মধ্যে উক্ত কালেমাগুলি কে বলেছিলেন? এক সাহাবী বললেন হুযুর! এই কালিমাগুলি আমি আদায় করেছিলাম। হুযুর সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন যখন তুমি এই কালেমাগুলি আদায় করতেছিলে-তখন আমি দেখলাম ৩০ জন ফেরেশতা ঐ কালেমাগুলি লুফে নেয়ার জন্য লাফিয়ে দ্রুত ধাবিত হচ্ছেন কার আগে কে ঐ কালেমাগুলি নিয়ে তার সওয়াব লিখবেন। (সহীহ আল বোখারী-৭৫৫)

ঘ.দুই হাত দু‘পাশে সোজা করে রাখা।

ঙ.রুকু হতে সোজা হয়ে খাড়া হওয়ার সময় রুকুর সমান হওয়া।

চ.রুকুতে দৃষ্টি পায়ের পাতার উপর রাখা।

সেজদায় : প্রথম রাকা’আতের প্রথম সেজদার মাসআলাহ সমূহ

১.সেজদাতে যাবার সময় اَللهُ اَكْبَرُ ‘আল্ল¬াহু আকবার’ বলা (সুন্নাত)।

২.সেজদা করা (ফরজ)।

৩.সেজদাতে দেরী করা (ওয়াজিব)।

৪.সেজদাতে থেকে তাসবিহ পড়া কমপক্ষে ৩ বার (সুন্নাত)।

سُبحَانَ رَبِّيَ الْاَعْلَي “সুবহানা রাব্বিয়াল আ’লা”-আমার মহান প্রভুর পবিত্রতা বর্ণনা করছি।

এছাড়াও পড়া যায়-سُبحَانَكَ اَللّٰهُمَّ رَبَّناَ وَبِحَمْدِكَ اَللّٰهُمَّ اغْفِرْلِيْ ْ

উচ্চারণ : সুবহানাকা আল্লাহুম্মা, রাব্বানা, ওয়াবিহামদিকা, আল্লাহুম্মাগ-ফিরলী।

অর্থ : হে আল্লাহ! তুমি পাক পবিত্র, হে আমাদের রব! তোমার প্রশংসা সহকারে ফরিয়াদ করছি, তুমি আমাকে মাফ কর।

সেজদায় যাওয়ার নিয়ম :

ক. হাতের পূর্বে হাঁটু যমীনে রাখা।

খ. তারপর দুই হাত রাখা।

গ. অতঃপর নাক রাখা।

ঘ. সবশেষে কপাল রাখা।

ঙ. পুরুষের দুই কনুই উপরে উঠিয়ে রাখা।

চ. পিঠ সোজা করে রাখা।

ছ. দুই পায়ের পাতা খাড়া করে রাখা।

জ. দুই পায়ের আঙ্গুলগুলো ভাঁজ করে কেবলামুখী করে রাখা।

ঝ. হাতের তালু ও আঙ্গুলগুলো বিছিয়ে রাখা।

ঞ.তালু থেকে কনুই পর্যন্ত দুইহাত মাটি থেকে উঁচু করে রাখা।

ট. একবারে মিলিয়ে না রাখা আবার বেশী ফাঁকও না রাখা।

ঠ. কেবলামুখী রাখার জন্য মিলিয়ে রাখা।

ড. সিজদায় দুই হাতের তালু ঘাড় অথবা কান বরাবর রাখা।

ঢ.এ সময় দৃষ্টি নাকের ডগার ওপর রাখা।

৫.সেজদা হতে উঠার সময় اَللهُ اَكْبَرُ ‘আল্লাহু আকবার’ বলা।

সেজদা হতে উঠার নিয়মসমূহ :

ক. প্রথম মাথা ও কপাল উঠাতে হয়।

খ. অতঃপর নাক উঠাতে হয়।

গ. সবশেষে হাত উঠাতে হয়।

৬. সেজদা হতে সোজা হয়ে বসা (ওয়াজিব)।

সেজদা হতে সোজা হয়ে বসার নিয়ম :

ক. বাম পা মাটিতে বিছিয়ে দিয়ে তার উপর বসতে হয়।

খ. ডান পায়ের আঙ্গুলের উপর পাতা দাঁড় করিয়ে রাখতে হয়।

গ. পায়ের আঙ্গুলগুলো ভাঁজ করে কিবলামুখী করে রাখতে হয়।

ঘ. বসা অবস্থায় দৃষ্টি কোলের দিকে অথবা শাহাদাত অঙ্গুলির দিকে রাখা।

ঙ. বসার সময় সেজদার মত লম্বা করা।

চ. বসা অবস্থায় দোয়া পড়া-

اَللّٰهُمَّ اغْفِرْلِيْ وَارْحَمْنِيْ وَاهْدِنِيْ وَاعْفِنِيْ وَارْزُقْنِيْ وَازْبِرْنِيْ وَارْفَعْنِيْ

উচ্চারণ : আল্লাহুম্মাগ ফিরলী, ওয়ারহামনী, ওয়াহদিনী, ওয়া’ফিনী, ওয়ার জুকনী, ওয়াজ বিরণী, ওয়ার ফানি।

অর্থ : হে আল্লাহ! আমাকে ক্ষমা কর, আমার প্রতি দয়া কর, আমাকে হেদায়েত দান কর (অর্থাৎ দ্বীনের উপর প্রতিষ্ঠিত রাখ) আমাকে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখ, আমার রুজির ব্যবস্থা করে দাও, আমাকে সুস্থতা দান কর, আমার মান মর্যাদা বাড়িয়ে দাও।

প্রথম রাকাতের দ্বিতীয় সেজদার মাসআলাহ সমূহ

১.সেজদাতে যাবার সময় اَللهُ اَكْبَرُ ‘আল্লাহু আকবার’বলা।

২.সেজদা করা (ফরজ)।

৩.সেজদাতে দেরী করা (ওয়াজিব)।

৪.সেজদাতে থেকে তাসবিহ পড়া কমপক্ষে ৩ বার। سُبحَانَ رَبِّيَ الْاَعْلَي

উচ্চারণ : “সুবহানা রাব্বিয়াল আ‘লা”-

অর্থ : আমার মহান প্রভুর পবিত্রতা বর্ণনা করছি।

এছাড়াও পড়া যায় – سُبحَانَكَ اَللّٰهُمَّ ّرَبَّناَوَبِحَمْدِكَ اَللّٰهُمَّ اغْفِرْلِيْ

উচ্চারণ : সুবহানাকা আল্লাহুম্মা রাব্বানা ওয়াবিহামদিকা আল্লাহুম্মাগ-ফিরলী।

অর্থ : হে আল্লাহ! তুমি পাক পবিত্র, হে আমাদের রব, তোমার প্রশংসা সহকারে ফরিয়াদ করছি! তুমি আমাকে মাফ কর।

সেজদাতে যাওয়ার নিয়ম :

ক.হাতের পূর্বে হাঁটু যমীনে রাখা।

খ.তারপর দুই হাত রাখা।

গ.অত:পর নাক রাখা।

ঘ.সবশেষে কপাল রাখা।

ঙ.দুই কনুই উপরে উঠিয়ে রাখা।

চ.পিঠ সোজা করে রাখা।

ছ.দুই পায়ের পাতা খাড়া করে রাখা।

জ.দুই পায়ের আঙ্গুলগুলো ভাঁজ করে কেবলামুখী করে রাখা।

ঝ.হাতের তালু ও আঙ্গুলগুলো বিছিয়ে রাখা।

ঞ. তালু থেকে কনুই পর্যন্ত দুইহাত মাটি থেকে উঁচু করে রাখা।

ট.একবারে মিলিয়ে না রাখা আবার বেশী ফাঁকও না রাখা।

ঠ.কেবলামুখী রাখার জন্য মিলিয়ে রাখা।

ড.সিজদায় দুই হাতের তালু ঘাড় অথবা কান বরাবর রাখা।

ঢ.এ সময় দৃষ্টি নাকের ডগার ওপর রাখা।

৫.সেজদা হতে উঠার সময় اَللهُ اَكْبَرُ ‘আল্লাহু আকবার’ বলা (সুন্নাত)।

সেজদা হতে উঠার নিয়ম :

ক.প্রথম মাথা ও কপাল উঠাতে হয়।

খ.অতঃপর নাক উঠাতে হয়।

গ.সবশেষ হাত উঠাতে হয়।

ঘ.তারপর হাঁটু উঠাতে হয়।

৬.সেজদা হতে সোজা হয়ে দাঁড়ানো (ওয়াজিব)।

সেজদা হতে সোজা হয়ে দাঁড়ানোর নিয়ম :

সেজদা হতে দাঁড়াবার সময় দুইহাত পা ও হাঁটু ধরে উরুর উপর ভর করে দাঁড়াতে হয়।

দ্বিতীয় রাকায়াতের মাসআলাহ সমূহ :

১.হাত বাঁধা।

২.দুই হাত নাভির ওপরে বাঁধা, জায়েজ আছে বুকের উপর বাঁধা।

৩.মাথা সামান্য ঝুঁকিয়ে রাখা।

৪.দৃষ্টি সেজদার জায়গায় রাখা।

৫.তাসমিয়া بِسْمِ اللهِ (বিসমিল্লাহ) পড়া।

৬.আলহামদু শরীফ পুরা পড়া (ওয়াজিব)।

৭.সূরা ফাতিহার পর اَمِيْنْ আমিন বলা।

৮.সূরার শুরুতে بِسْمِ اللهِ বিসমিল্লাহ পড়া।

৯.ক্বিরাত পড়া (ফরজ)।

১০.সূরা মিলানো (ওয়াজিব)।

১১.দ্বিতীয় রাকাতে সূরা/আয়াত ছোট পড়া।

রুকুর মধ্যে : দ্বিতীয় রাকাতের রুকুর মাসআলাহ সমূহ

১.রুকুতে যাবার সময় اَللهُ اَكْبَر ‘আল্লাহু আকবার’বলা।

২.রুকু করা (ফরজ)।

৩.রুকুতে দেরী করা (ওয়াজিব)।

৪.রুকুতে থেকে তাসবিহ পড়া কমপক্ষে ৩ বার (সুন্নাত)।

سُبحَانَ رَبِّيَ الْعَظِيْم “সুবহানা রাব্বিয়াল আজীম”-আমি আমার মহান প্রভুর পবিত্রতা বর্ণনা করছি। তাসবীহ’র পর অতিরিক্ত দোয়া পড়া উত্তম। যেমনÑ

سُبحَانَكَ اَللّٰهُمَّ رَبَّناَوَبِحَمْدِكَ اَللّٰهُمَّ اغْفِرْلِيْ

“সুবহানাকা আল্লাহুম্মা রাব্বানা ওয়াবিহামদিকা আল্লাহুম্মাগ-ফিরলী।”

অর্থ : হে আল্লাহ তুমি পাক পবিত্র, হে আমাদের রব! তোমার প্রশংসা সহকারে ফরিয়াদ করছি, তুমি আমাকে মাফ কর।

রুকুতে যাবার নিয়ম :

ক. রুকুতে গিয়ে প্রথমে দুহাত হাঁটুতে স্থাপন করা। (হাঁটুতে হাতের তালু রেখে হাত দিয়ে হাঁটুকে মযবুতভাবে ধরতে হয়) তাতে শরীরের ভারটা হাতের উপর পড়ে এবং কনুই ও হাঁটু সোজা থাকে।

খ. দুই বাহু পাঁজর থেকে আলাদা করে ফাঁক করে রাখা।

গ. পিঠ সোজাসুজি লম্বা করে বিছিয়ে রাখা। কোমর, পিঠ ও মাথা এক রেখা বরাবর সমান থাকবে এবং মাটির সমান্তরাল থাকে। মাথা পিঠ থেকে নিচু হয় না এবং পিঠ বাঁকা অবস্থায় থাকে না। অর্থাৎ মাথা পিঠের বরাবর রাখা।

রুকূ হতে উঠার নিয়ম :

ক.রুকু হতে উঠার সময় – সামিআল্লাহু লিমান হামিদা বলা (সুন্নাত)। سَمِعَ اللهُ لِمَنْ حَمِدَهُ “সামিআল্ল-াহু লিমান হামিদা”- আল্লাহতায়ালা প্রশংসাকারীর প্রশংসা শোনেন।

খ. রুকু হতে সোজা হয়ে খাড়া হওয়া (ওয়াজিব)।

গ.রুকু হতে সোজা হয়ে খাড়া হওয়ার পর দোয়া পড়া।

رَبَّنَالَكَ الْحَمْدُ – حَمْدًا كَثِيْرًا طَيِّبًا مُبَارَكًا فِيْهِ

রাব্বানা লাকাল হামদ, হামদান কাছিরান, তাইয়্যেবান, মোবারাকান ফীহি’। অর্থ : হে আল্ল¬াহ! সমস্ত প্রশংসা তোমার জন্য, এমন ব্যাপক প্রশংসা, যাতে রয়েছে খুবই উত্তম বরকত। এ প্রশংসায় মঙ্গল হোক, বরকত হোক।

ঘ. দুই হাত দু‘পাশে সোজা করে রাখা।

ঙ.রুকু হতে সোজা হয়ে খাড়া হওয়ার সময় রুকুর সমান হওয়া।

চ.রুকুতে দৃষ্টি পায়ের পাতার উপর রাখা।

সেজদায় : দ্বিতীয় রাকা’আতের প্রথম সেজদার মাসআলাহ সমূহ

১.সেজদাতে যাবার সময় اَللهُ اَكْبَرُ ‘আল্ল¬াহু আকবার’ বলা।

২.সেজদা করা (ফরজ)।

৩.সেজদায় দেরী করা (ওয়াজিব)।

৪.সেজদাতে থেকে তাসবিহ পড়া কমপক্ষে ৩ বার (সুন্নাত)।

سُبحَانَ رَبِّيَ الْاَعْلَي “সুবহানা রাব্বিয়াল আ‘লা”-আমার মহান প্রভুর পবিত্রতা বর্ণনা করছি।

এছাড়া দুই সেজদার মাঝখানে বসে পড়লে খুবই উত্তম একটি দোয়া যা হাদীস থেকে প্রমাণিত।

سُبحَانَكَ اَللّٰهُمَّ رَبَّناَ وَبِحَمْدِك َ اَللّٰهُمَّ اغْفِرْلِيْ

উচ্চারণ : সুবহানাকা আল্লাহুম্মা রাব্বানা ওয়াবিহামদিকা আল্লাহুম্মাগ-ফিরলী।

অর্থ : হে আল্লাহ! তুমি পাক পবিত্র, হে আমাদের রব! তোমার প্রশংসা সহকারে ফরিয়াদ করছি। তুমি আমাকে মাফ কর।

সেজদাতে যাওয়ার নিয়ম :

ক.হাতের পূর্বে হাঁটু যমীনে রাখা।

খ.তারপর দুই হাত রাখা।

গ.অতঃপর নাক রাখা। ঘ. সবশেষে কপাল রাখা।

ঙ.দুই কনুই উপরে উঠিয়ে রাখা।

চ.পিঠ সোজা করে রাখা।

ছ.দুই পায়ের পাতা খাড়া করে রাখা।

জ.দুই পায়ের আঙ্গুলগুলো ভাঁজ করে কেবলামুখী করে রাখা

ঝ.হাতের তালু ও আঙ্গুুলগুলো বিছিয়ে রাখা।

ঞ. তালু থেকে কনুই পর্যন্ত দুইহাত মাটি থেকে উঁচু করে রাখা।

ট.একবারে মিলিয়ে না রাখা আবার বেশী ফাঁকও না রাখা।

ঠ.কেবলামুখী রাখার জন্য মিলিয়ে রাখা।

ড.সিজদায় দুই হাতের তালু ঘাড় অথবা কান বরাবর রাখা।

ঢ.এ সময় দৃষ্টি নাকের ডগার ওপর রাখা।

৫.সেজদা হতে উঠার সময় اَللهُ اَكْبَرُ ‘আল্লাহু আকবার’ বলা।

সেজদা হতে উঠার নিয়মসমূহ :

ক.প্রথম মাথা ও কপাল উঠাতে হয়।

খ.অতঃপর নাক উঠাতে হয়।

গ.সবশেষে হাত উঠাতে হয়।

৬.সেজদা হতে সোজা হয়ে বসা (ওয়াজিব)।

সেজদা হতে সোজা হয়ে বসার নিয়ম :

ক.বাম পা মাটিতে বিছিয়ে দিয়ে তার উপর বসতে হয়।

খ.ডান পায়ের আঙ্গুলের উপর পাতা দাঁড় করিয়ে রাখতে হয়।

গ.পায়ের আঙ্গুলগুলো ভাঁজ করে কিবলামুখী করে রাখতে হয়।

ঘ.বসা অবস্থায় দৃষ্টি কোলের দিকে/শাহাদাত অঙ্গুলির দিকে রাখা।

ঙ.বসার সময় সেজদার মত লম্বা করা।

চ.বসা অবস্থায় দোয়া পড়া : اَللّٰهُمَّ اغْفِرْلِيْ وَارْحَمْنِيْ وَاهْدِنِيْ وَاعْفِنِيْ وَارْزُقْنِيْ وَازْبِرْنِيْ وَارْفَعْنِيْ

উচ্চারণ : আল্লাহুম্মাগ ফিরলী, ওয়ারহামনী, ওয়াহদিনী, ওয়া’ফিনী, ওয়ার জুকনী, ওয়াজ বিরণী, ওয়ার ফাহনী।

অর্থ : হে আল্লাহ! আমাকে ক্ষমা কর, আমার প্রতি দয়া কর, আমাকে হেদায়েত দান কর (অর্থাৎ দ্বীনের উপর প্রতিষ্ঠিত রাখ) আমাকে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখ, আমার রুজির ব্যবস্থা করে দাও, আমাকে সুস্থতা দান কর, আমার মান মর্যাদা বাড়িয়ে দাও।

দ্বিতীয় রাকা’আতের দ্বিতীয় সেজদার মাসআলাহ সমূহ

১.সেজদাতে যাবার সময় اَللهُ اَكْبَرُ ‘আল্লাহু আকবার’ বলা।

২.সেজদা করা (ফরজ)।

৩.সেজদায় দেরী করা (ওয়াজিব)।

৪.সেজদা অবস্থায় তাসবিহ পড়া কমপক্ষে ৩ বার। سُبحَانَ رَبِّيَ الْاَعْلَي

উচ্চারণ : সুবহানা রাব্বিয়াল আ‘লা।

অর্থ : আমার মহান প্রভুর পবিত্রতা বর্ণনা করছি।

এছাড়াও পড়া যায়- سُبحَانَكَ اَللّٰهُمَّ رَبَّناَوَبِحَمْدِكَ اَللّٰهُمَّ اغْفِرْلِيْ

“সুবহানাকা আল্লাহুম্মা রাব্বানা ওয়াবিহামদিকা আল্লাহুম্মাগ-ফিরলী।”

অর্থ : হে আল্লাহ! তুমি পাক পবিত্র, হে আমাদের রব! তোমার প্রশংসা সহকারে ফরিয়াদ করছি। তুমি আমাকে মাফ কর।

সেজদাতে যাওয়ার নিয়ম :

ক.হাতের পূর্বে হাঁটু যমীনে স্থাপন করা।

খ.তারপর দুই হাত স্থাপন করা।

গ.অতঃপর নাক স্থাপন করা।

ঘ.সবশেষে কপাল স্থাপন করা।

ঙ.দুই কনুই উপরে উঠিয়ে রাখা।

চ.পিঠ সোজা করে রাখা।

ছ. দুই পায়ের পাতা খাড়া করে রাখা।

জ.দুই পায়ের আঙ্গুলগুলো ভাঁজ করে কেবলামুখী করে রাখা।

ঝ.হাতের তালু ও আঙ্গুলগুলো বিছিয়ে রাখা।

ঞ. তালু থেকে কনুই পর্যন্ত দুই হাত মাটি থেকে উঁচু করে রাখা।

ট. একবারে মিলিয়ে না রাখা আবার বেশী ফাঁকও না রাখা।

ঠ.সিজদায় দুই হাতের তালু ঘাড় অথবা কান বরাবর রাখা।

ড.এ সময় দৃষ্টি নাকের ডগার দিকে রাখা।

৫.সেজদা হতে উঠার সময় اَللهُ اَكْبَرُ ‘আল্ল¬াহু আকবার’ বলা।

সেজদা হতে উঠার নিয়ম :

ক.প্রথম মাথা ও কপাল উঠাতে হয়।

খ. অতঃপর নাক উঠাতে হয়।

গ.সবশেষে হাত উঠাতে হয়।

৬.প্রথম তাশাহহুদের বৈঠকের মাসআলাহ সমূহ :

ক.দ্বিতীয় রাকা’আতে উভয় সেজদা শেষ করে তাশাহহুদের জন্য বসা (ওয়াজিব)।

খ.বাম উরুর উপর বাম হাত এবং ডান উরুর উপর ডান হাত রাখা।

গ.ডান হাতের শাহাদাত আঙ্গুল দ্বারা কিবলার দিকে ইঙ্গিত করা।

ঘ.আঙ্গুল হাঁটুর নীচে ঝুঁকে না পড়া।

ঙ.বুড়ো আঙ্গুল মধ্যমার উপর রেখে একটা বৃত্তের মতো বানানো।

তাশাহহুদের বৈঠকে বসার নিয়ম :

ক.বাম পায়ের পাতা মাটিতে বিছিয়ে দিয়ে তার উপর বসতে হয়।

খ.ডান পায়ের পাতা দাঁড় করিয়ে রাখতে হয়।

গ.পায়ের আঙ্গুলগুলো কিবলামুখী করে রাখতে হয়।

৭.তাশাহহুদ পড়া (ওয়াজিব)।

اَلتَّحِيَّاتُ لِلّٰهِ وَالصَّلَوْاةُ والْطَيِّبَاتُ اَلسَّلَامُ عَلَيْكَ اَيُّهَا النَّبِيُّ وَرَحْمَةُ اللهِ وَبَرَكَاتُهُ – اَلسَّلَامُ عَلَيْنَا وَ عَلٰى عِبَادِ اللهِ الصَّالِحِيْنَ اَشْهَدُاَن ْلَّا اِلٰهَ اِلَّاالله ُوَاَشْهَدُ اَنّ َمُحَمَّدًا عَبْدُه وَرَسُوْلُهُ –

উচ্চারণ : আত্তাহিয়্যাতু লিল্লাহি ওয়াস্সালাওয়াতু ওয়াত তাইয়্যিবাত। আসসালামু আলাইকা আইয়্যুহান্নাবীয়্যু ওয়া রাহমাতুল্লা¬হি ওয়াবারাকাতুহু। আসসালামু আলাইনা ওয়া আ‘লা ইবাদিল্ল¬াহিস সালিহীন। আশহাদু আল লা ইলাহা ইল্ল¬াল্লাহু ওয়া আশহাদুআন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রাসুলুহু।

অর্থ : সমস্ত সম্মান মর্যাদা আল্লাহতায়ালার জন্য এবং নামায (শারীরিক ইবাদাত) এবং আত্মিক (জীবাত্মার) মানসিক (বক্ষস্থিতঅদৃশ্য গোশত পিন্ড কলব) ও শারীরিক (দেহাভ্যন্তরস্থ রিপুর অনিষ্টমুক্ত) পবিত্রতা বা পরিশুদ্ধতা শুধুমাত্র আল¬াহতায়ালার জন্য নিবেদিত। হে নবী! আপনার প্রতি সালাম (শান্তি) রহমত (করুণা) এবং বরকত (অনুগ্রহ) অবারিত ধারায় বর্ষিত হোক। আমাদের প্রতি এবং সালিহীন (আত্মিক মানসিক শারীরিক পরিশুদ্ধসম্পন্ন) বান্দাদের প্রতিও সীমাহীন সালাম (শান্তি) বর্ষিত হোক। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্ল¬াহ ছাড়া অন্য কোন উপাস্য নেই এবং আমি আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, হযরত মুহাম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর বান্দাহ ও রাসূল (প্রেরিত পুরুষ)।

তাশাহহুদের বৈঠক হতে উঠে দাঁড়াবার নিয়ম :

ক.তাশাহহুদের বৈঠক শেষে اَللهُ اَكْبَرُ ‘আল্লাহু আকবার’ বলে উঠে দাঁড়াতে হয়।

খ. পায়ের পাতার অগ্রভাগে এবং হাঁটু যমীনে ঠেকিয়ে দুই উরুতে ভর দিয়ে দাঁড়াতে হয়।

তৃতীয় রাকা’আতের মাসআলাহ সমূহ

১. হাত বাঁধা।

২.দুইহাত নাভির উপরে আহলি হাদিস হলে বুকের উপর বাঁধা।

৩.মাথা সামান্য ঝুঁকিয়ে রাখা।

৪.দৃষ্টি সেজদার জায়গায় রাখা।

৫.তাসমিয়া (বিসমিল্লাহ) পড়া।

৬.সূরা ফাতিহা সম্পূর্ণ অংশ পড়া (ওয়াজিব)।

اَ لْحَمْدُ لِلّٰهِ رَبِّ الْعَالَمِيْنَ ﴿٢﴾ ا َلرَّحْمَـٰنِ الرَّحِيمِ ﴿٣﴾ مَالِكِ يَوْمِ الدِّينِ ﴿٤﴾ إِيَّاكَ نَعْبُدُ وَإِيَّاكَ نَسْتَعِينُ ﴿٥﴾ اِهْدِنَا الصِّرَاطَ الْمُسْتَقِيمَ ﴿٦﴾ صِرَاطَ الَّذِينَ أَنْعَمْتَ عَلَيْهِمْ غَيْرِالْمَغْضُوبِ عَلَيْهِمْ وَلَاالضَّالِّينَ ﴿٧﴾

উচ্চারণ : আলহামদু লিল্লাহি রাব্বিল আলামীন। আর রাহমানির রাহীম। মালিকি ইয়াওমিদ্দীন। ইয়্যাকা না’বুদু ওয়া ইয়্যাকা নাসতা’ঈন। ইহদিনাস সিরাত্বাল মুসতাক্বীম। সিরাতাল লাযীনা আন‘আমতা আলাইহিম, গায়রিল মাগদূবি আলাইহিম ওয়ালাদদ্বোয়াল্লীন। আমীন”।

অর্থ : সমস্ত প্রশংসা একমাত্র আল্লাহতায়ালার জন্য যিনি সকল সৃষ্টিজগতের পালনকর্তা। যিনি দাতা, দয়াময় মেহের বান। যিনি বিচার দিনের মালিক (অধিপতি), আমরা সর্বাবস্থায় একমাত্র তোমারই ইবাদত (দাসত্ব) করি এবং তোমারই সাহায্য প্রার্থনা করি। আমাদেরকে সরল-সঠিক পথ দেখাও, সেসব লোকের পথ যাদেরকে তুমি নিয়ামত দান করেছো। তাদের পথ নয়, যাদের প্রতি তোমার গযব (অভিশম্পাৎ) নাযিল হয়েছে এবং যারা পথভ্রষ্ট হয়েছে।

বি: দ্র: ফরয নামায হলে সূরা ফাতেহার পর রুকুতে যেতে হয়। আর সুন্নাত নামায হলে সূরা ফাতেহার পর ক্বেরাত পড়ে রুকুতে যেতে হয়।

রুকুর মধ্যে : তৃতীয় রাকা’আতের রুকুর মাসআলাহ সমূহ

১.রুকুতে যাবার সময় اَللهُ اَكْبَر ‘আল্লাহু আকবার’ বলা।

২.রুকু করা (ফরজ)।

৩.রুকুতে দেরী করা (ওয়াজিব)।

৪.রুকুতে গিয়ে তাসবীহ পড়া কমপক্ষে ৩ বার (সুন্নাত)। سُبحَانَ رَبِّيَ الْعَظِيْم

উচ্চারণ : সুবহানা রাব্বিয়াল আজীম।

অর্থ : আমি আমার মহান প্রভুর পবিত্রতা বর্ণনা করছি।

এছাড়ও পড়া যায় – سُبحَانَكَ اَللّٰهُمَّ رَبَّناَ وَبِحَمْدِكَ اَللّٰهُمَّ اغْفِرْلِيْ

উচ্চারণ : সুবহানাকা আল্লাহুম্মা রাব্বানা ওয়াবিহামদিকা আল্লাহুম্মাগ-ফিরলী।

অর্থ : হে আল্লাহ! তুমি পাক-পবিত্র, হে আমাদের রব! তোমার প্রশংসা সহকারে ফরিয়াদ করছি, তুমি আমাকে মাফ কর।

রুকুতে যাবার নিয়ম :

ক. রুকুতে প্রথমে দুহাত হাঁটুতে স্থাপন করা। (হাঁটুতে হাতের তালু রেখে হাত দিয়ে হাঁটুকে মযবুতভাবে ধরতে হয়, তাতে শরীরের ভারটা হাতের উপর পড়ে এবং কনুই ও হাঁটু সোজা থাকে)।

খ. দুই বাহু পাঁজর থেকে আলাদা করে ফাঁক করে রাখা।

গ. পিঠ সোজাসুজি লম্বা করে বিছিয়ে রাখা। (কোমর, পিঠ ও মাথা এক রেখা বরাবর সমান থাকবে এবং মাটির সমান্তরাল থাকে মাথা পিঠ থেকে নিচু হয় না এবং পিঠ বাঁকা অবস্থায় থাকে না।

ঘ.মাথা পিঠের বরাবর রাখা।

৫.রুকু হতে উঠার সময় সামিআল্লাহু লিমান হামিদা বলা (সুন্নাত)। سَمِعَ اللهُ لِمَنْ حَمِدَهُ

উচ্চারণ : সামিআল্লাহু লিমান হামিদা।

অর্থ : (আল্লাহতায়ালা প্রশংসাকারীর প্রশংসা শোনেন)

৬.রুকু হতে সোজা হয়ে দাঁড়ানো (ওয়াজিব)।

৭.রুকু হতে সোজা হয়ে দাঁড়ানোর পর দোয়া পড়া। رَبَّنَا لَكَ الْحَمْدُ – حَمْدًا كَثِيْرًا طَيِّبًا- مُبَارَكًا فِيْهِ

উচ্চারণ : রাব্বানা লাকাল হামদ, হামদান কাসিরান, তাইয়্যেবান, মোবারাকান ফীহি’।

অর্থ : হে আল্লাহ! সমস্ত প্রশংসা তোমার জন্য, এমন ব্যাপক প্রশংসা, যাতে রয়েছে খুবই উত্তম বরকত। এ প্রশংসায় মঙ্গল হোক, বরকত হোক।

৮.দুই হাত দু‘পাশে সোজা করে রাখা।

৯.রুকু হতে সোজা হয়ে দাঁড়ানোর সময় রুকুর সমান হওয়া।

১০.রুকুতে দৃষ্টি পায়ের পাতার উপর রাখা।

সেজদায় : তৃতীয় রাকা’আতের প্রথম সেজদার মাসআলাহ সমূহ

১.সেজদাতে যাবার সময় اَللهُ اَكْبَر ‘আল্ল¬াহু আকবার’ বলা।

২.সেজদা করা (ফরজ)।

৩.সেজদায় দেরী করা (ওয়াজিব)।

৪.সেজদাতে থেকে তাসবিহ পড়া কমপক্ষে ৩ বার বলা (সুন্নাত)। سُبحَانَ رَبِّيَ الْاَعْلَي

উচ্চারণ : সুবহানা রাব্বিয়াল আ‘লা।

অর্থ : আমার মহান প্রভুর পবিত্রতা বর্ণনা করছি ।

سُبحَانَكَ اَللّٰهُمَّ رَبَّناَ وَبِحَمْدِكَ اَللّٰهُمَّ اغْفِرْلِيْ

উচ্চারণ : সুবহানাকা আল্লাহুম্মা রাব্বানা ওয়াবিহামদিকা আল্লাহুম্মাগ-ফিরলী।

অর্থ : হে আল্লাহ! তুমি পাক পবিত্র, হে আমাদের রব! তোমার প্রশংসা সহকারে ফরিয়াদ করছি! তুমি আমাকে মাফ কর।

সেজদাতে যাওয়ার নিয়ম :

ক.হাতের পূর্বে হাঁটু যমীনে রাখা।

খ.তারপর দুই হাত রাখা।

গ.অতঃপর নাক রাখা।

ঘ.সবশেষে কপাল রাখা।

ঙ.দুই কনুই উপরে উঠিয়ে রাখা।

চ.পিঠ সোজা করে রাখা।

ছ.দুই পায়ের পাতা খাড়া করে রাখা।

জ.দুই পায়ের আঙ্গুলগুলো ভাঁজ করে কেবলামুখী করে রাখা।

ঝ.হাতের তালু ও আঙ্গুলগুলো বিছিয়ে রাখা।

ঞ.তালু থেকে কনুই পর্যন্ত দুইহাত মাটি থেকে উঁচু করে রাখা

ট.একবারে মিলিয়ে না রাখা আবার বেশী ফাঁকও না রাখা।

ঠ.কেবলামুখী রাখার জন্য মিলিয়ে রাখা।

ড. সিজদায় দুই হাতের তালু ঘাড় অথবা কান বরাবর রাখা।

ঢ. এ সময় দৃষ্টি নাকের ডগার ওপর রাখা।

৫.সিজদায় থেকে উঠার সময় اَللهُ اَكْبَر ‘আল্ল¬াহু আকবার’ বলা।

সেজদা থেকে উঠার নিয়মসমূহ :

ক.প্রথম মাথা ও কপাল উঠাতে হয়।

খ. অতঃপর নাক উঠাতে হয়।

গ.সবশেষে হাত উঠাতে হয়।

৬.সেজদা হতে সোজা হয়ে বসা (ওয়াজিব) ।

সেজদা হতে সোজা হয়ে বসার নিয়ম :

ক.বাম পা মাটিতে বিছিয়ে দিয়ে তার উপর বসতে হয়।

খ. ডান পায়ের আঙ্গুলের উপর পাতা দাঁড় করিয়ে রাখতে হয়এ

গ. পায়ের আঙ্গুলগুলো ভাঁজ করে কিবলামুখী করে রাখতে হয়।

ঘ. বসা অবস্থায় দৃষ্টি পাঁজরের দিকে অথবা শাহাদাত অঙ্গুলির দিকে রাখা।

ঙ. বসার সময় সেজদার মত লম্বা করা।

চ. বসা অবস্থায় দোয়া পড়া : اَللّٰهُمَّ اغْفِرْلِيْ وَارْحَمْنِيْ وَاهْدِنِيْ وَاعْفِنِيْ وَارْزُقْنِيْ وَازْبِرْنِيْ وَارْفَعْنِيْ

উচ্চারণ : আল্ল¬াহুম্মাগ ফিরলী, ওয়ারহামনী, ওয়াহদিনী, ওয়াহ’ফিনী, ওয়ার জুকনী, ওয়াজ বিরণী, ওয়ার ফাহনী।

অর্থ : হে আল্ল¬াহ! আমাকে ক্ষমা কর, আমার প্রতি দয়া কর, আমাকে হেদায়েত দান কর (অর্থাৎ দ্বীনের উপর প্রতিষ্ঠিত রাখ) আমাকে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখ, আমার রুজির ব্যবস্থা করে দাও, আমাকে সুস্থতা দান কর, আমার মান মর্যাদা বাড়িয়ে দাও।

তৃতীয় রাকা’আতের দ্বিতীয় সেজদার মাসআলাহ সমূহ

১.সেজদাতে যাবার সময় اَللهُ اَكْبَرُ ‘আল্লাহু আকবার’ বলা।

২.সেজদা করা (ফরজ)।

৩.সেজদায় দেরী করা (ওয়াজিব)।

৪.সেজদাতে থেকে তাসবিহ পড়া কমপক্ষে ৩ বার বলা (সুন্নাত)। سُبحَانَ رَبِّيَ الْاَعْلَي

উচ্চারণ : সুবহানা রাব্বিয়াল আ‘লা।

অর্থ : আমার মহান প্রভুর পবিত্রতা বর্ণনা করছি।

এছাড়াও পড়া যায় –

سُبحَانَكَ اَللّٰهُمَّ رَبَّناَ وَبِحَمْدِكَ اَللّٰهُمَّ اغْفِرْلِيْ

উচ্চারণ : সুবহানাকা আল্লাহুম্মা রাব্বানা ওয়াবিহামদিকা আল্লাহুম্মাগ-ফিরলী।

অর্থ : হে আল্লাহ! তুমি পাক পবিত্র, হে আমাদের রব! তোমার প্রশংসা সহকারে ফরিয়াদ করছি, তুমি আমাকে মাফ কর।

সেজদাতে যাওয়ার নিয়ম :

ক.হাতের পূর্বে হাঁটু যমীনে রাখা।

খ.তারপর দুই হাত রাখা। গ. অতঃপর নাক রাখা।

ঘ.সবশেষে কপাল রাখা।

ঙ.দুই কনুই উপরে উঠিয়ে রাখা।

চ.পিঠ সোজা করে রাখা।

ছ.দুই পায়ের পাতা খাড়া করে রাখা।

জ.দুই পায়ের আঙ্গুলগুলো ভাঁজ করে কেবলামুখী করে রাখা।

ঝ.হাতের তালু ও আঙ্গুলগুলো বিছিয়ে রাখা।

ঞ.তালু থেকে কনুই পর্যন্ত দুইহাত মাটি থেকে উঁচু করে রাখা।

ট.একবারে মিলিয়ে না রাখা আবার বেশী ফাঁকও না রাখা।

ঠ.কেবলামুখী রাখার জন্য মিলিয়ে রাখা।

ড.সেজদায় দুই হাতের তালু ঘাড় অথবা কান বরাবর রাখা।

ঢ.এ সময় দৃষ্টি নাকের ডগার ওপর রাখা।

৫.সেজদা হতে উঠার সময় اَللهُ اَكْبَرُ আল্ল¬াহু আকবার’ বলা।

সেজদা হতে উঠার নিয়ম :

ক.প্রথম মাথা ও কপাল উঠাতে হয়।

খ.এরপর নাক উঠাতে হয়।

গ.সবশেষে হাত উঠাতে হয়।

৬.সেজদা হতে সোজা হয়ে দাঁড়ানো (ওয়াজিব)।

সেজদা হতে সোজা হয়ে দাঁড়ানোর নিয়ম :

সেজদা হতে দাঁড়াবার সময় দুইহাত পা ও হাঁটু ধরে উরুর উপর ভর করে দাঁড়াতে হয়।

চতুর্থ রাকা’আতের মাসআলাহ সমূহ

১.হাত বাঁধা।

২.দুইহাত নাভির ওপরে (আহলি হাদিস হলে বুকের উপর) বাঁধা।

৩.মাথা সামান্য ঝুঁকিয়ে রাখা।

৪.দৃষ্টি সেজদার জায়গায় রাখা।

৫.তাসমিয়া – بِسْمِ اللهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيْم (বিসমিল্ল¬াহ) পড়া।

৬.আলহামদু সূরা পড়া (ওয়াজিব)।

اَ لْحَمْدُ لِلّٰهِ رَبِّ الْعَالَمِيْنَ ﴿٢﴾ ا َلرَّحْمَـٰنِ الرَّحِيمِ ﴿٣﴾ مَالِكِ يَوْمِ الدِّيْنِ ﴿٤﴾ إِيَّاكَ نَعْبُدُ وَإِيَّاكَ نَسْتَعِيْنُ ﴿٥﴾

اِهْدِنَا الصِّرَاطَ الْمُسْتَقِيْمَ ﴿٦﴾ صِرَاطَ الَّذِيْنَ أَنْعَمْتَ عَلَيْهِمْ غَيْرِالْمَغْضُوْبِ عَلَيْهِمْ وَلَاالضَّالِّيْنَ ﴿٧﴾

উচ্চারণ : আলহামদু লিল্লাহি রাব্বিল আলামীন। আর রাহমানির রাহীম। মালিকি ইয়াওমিদ্দীন। ইয়্যাকা না’বুদু ওয়া ইয়্যাকানাসতা ঈন। ইহদিনাস সিরাত্বাল মুসতাক্বীম। সিরাতাল লাযীনা আন‘আমতা আলাইহিম, গায়রিল মাগদূবি আলাইহিমওয়ালাদদ্বোয়াল্লিন। আমীন”।

অর্থ : সমস্ত প্রশংসা একমাত্র আল¬াহতায়ালার জন্য যিনি সকল সৃষ্টিজগতের পালনকর্তা। যিনি দাতা, দয়াময় মেহেরবান। যিনি বিচার দিনের মালিক (অধিপতি), আমরা সর্বাবস্থায় একমাত্র তোমারই ইবাদত (দাসত্ব) করি এবং তোমারই সাহায্য প্রার্থনা করি। আমাদেরকে সরল-সঠিক পথ দেখাও, সেসব লোকের পথ যাদেরকে তুমি নিয়ামত দান করেছো। তাদের পথ নয়, যাদের প্রতি তোমার গযব (অভিশম্পাৎ) নাযিল হয়েছে এবং যারা পথভ্রষ্ট হয়েছে।

বিঃ দ্রঃ ফরয নামায হলে সূরা ফাতেহা পড়ার পর রুকুতে যেতে হয়। আর সুন্নাত নামায হলে সূরা ফাতেহা পড়ার পর ক্বেরাত পড়ে রুকুতে যেতে হয়।

রুকুর মধ্যে : চতুর্থ রাকা’আতের রুকুর মাসআলাহ সমূহ

১.রুকুতে যাবার সময় اَللهُ اَكْبَرُ ‘আল্ল¬াহু আকবার’বলা।

২.রুকু করা (ফরজ)।

৩.রুকুতে দেরী করা (ওয়াজিব)।

৪.রুকুতে তাসবীহ পড়া কমপক্ষে ৩ বার (সুন্নাত)।سُبحَانَ رَبِّيَ الْعَظِيْم

উচ্চারণ : সুবহানা রাব্বিয়াল আজীম।

অর্থ : অর্থ-আমি আমার মহান প্রভুর পবিত্রতা বর্ণনা করছি।

এছাড়াও পড়া যায়-

উচ্চারণ : সুবহানাকা আল্লাহুম্মা রাব্বানা ওয়াবিহামদিকা আল্লাহুম্মাগ-ফিরলী।

অথ : হে আল্লাহ! তুমি পাক পবিত্র, হে আমাদের রব! তোমার প্রশংসা সহকারে ফরিয়াদ করছি, তুমি আমাকে মাফ কর।

রুকুতে যাবার নিয়ম :

ক. রুকুতে গিয়ে দুহাত হাঁটুতে স্থাপন করা। (হাঁটুতে হাতের তালু রেখে হাত দিয়ে হাঁটুকে মযবুতভাবে ধরতে হয়) তাতে শরীরের ভারটা হাতের উপর পড়ে এবং কনুই ও হাঁটু সোজা থাকে।

খ. দুই বাহু পাঁজর থেকে আলাদা করে ফাঁক করে রাখা।

গ. পিঠ সোজাসুজি লম্বা করে বিছিয়ে রাখা। (কোমর, পিঠ ও মাথা এক রেখা বরাবর সমান থাকবে এবং মাটির সমান্তরাল থাকে। মাথা পিঠ থেকে যেন নিচু না হয় এবং পিঠ বাঁকা অবস্থায় না থাকে।

ঘ. মাথা পিঠের বরাবর রাখা।

৫. রুকু হতে উঠার সময় সামিআল্ল¬াহু লিমান হামিদা বলা (সুন্নাত)। سَمِعَ اللهُ لِمَنْ حَمِدَهُُ

উচ্চারণ : সামিআল্লাহু লিমান হামিদা

অর্থ : আল্লাহতায়ালা প্রশংসাকারীর প্রশংসা শোনেন)

৬.রুকু থেকে সোজা হয়ে দাঁড়ানো।

৭.রুকু থেকে সোজা হয়ে দাঁড়ানোর পর দোয়া পড়া।رَبَّنَا لَكَ الْحَمْدُ – حَمْدًا كَثِيْرًا طَيِّبًا – مُبَارَكًا فِيْهِ

উচ্চারণ : রাব্বানা লাকাল হামদ, হামদান কাছিরান, তাইয়্যেবান, মোবারাকান ফীহি।

অর্থ : হে আল্লাহ! সমস্ত প্রশংসা তোমার জন্য, এমন ব্যাপক প্রশংসা, যাতে রয়েছে খুবই উত্তম বরকত। এ প্রশংসায় মঙ্গল হোক,বরকত হোক।

৮.দুই হাত দু‘পাশে সোজা করে রাখা।

৯.রুকু হতে সোজা হয়ে দাঁড়ানোর সময় রুকুর সমান হওয়া।

১০.রুকুতে দৃষ্টি পায়ের পাতার উপর রাখা।

সেজদা : চতুর্থ রাকা’আতের প্রথম সেজদার মাসআলাহ সমূহ

১.সেজদাতে যাবার সময় اَللهُ اَكْبَر ‘আাল্ল¬াহু আকবার’ বলা।

২.সেজদা করা (ফরজ)।

৩.সেজদা দেরী করা (ওয়াজিব)।

৪.সেজদাতে থেকে তাসবিহ পড়া কমপক্ষে ৩ বার বলা (সুন্নাত)। سُبحَانَ رَبِّيَ الْاَعْلَي

উচ্চারণ : সুবহানা রাব্বিয়াল আ‘লা।

অর্থ : আমার মহান প্রভুর পবিত্রতা বর্ণনা করছি।

এছাড়াও পড়া যায়Ñ سُبحَانَكَ اَللّٰهُمَّ رَبَّناَوَبِحَمْدِكَ اَللّٰهُمَّ اغْفِرْلِيْ

উচ্চারণ : সুবহানাকা আল্লাহুম্মা রাব্বানা ওয়াবিহামদিকা আল্লাহুম্মাগ-ফিরলী।

অর্থ : হে আল্লাহ! তুমি পাক পবিত্র, হে আমাদের রব! তোমার প্রশংসা সহকারে ফরিয়াদ করছি, তুমি আমাকে মাফ করো।

সেজদাতে যাওয়ার নিয়ম :

ক.হাতের পূর্বে হাঁটু যমীনে রাখা।

খ.তারপর দুই হাত রাখা।

গ.অতঃপর নাক রাখা।

ঘ.সবশেষে কপাল রাখা।

ঙ.দুই কনুই উপরে উঠিয়ে রাখা।

চ.পিঠ সোজা করে রাখা।

ছ.দুই পায়ের পাতা খাড়া করে রাখা।

জ.দুই পায়ের আঙ্গুলগুলো ভাঁজ করে কেবলামুখী করে রাখা।

ঝ.হাতের তালু ও আঙ্গুলগুলো বিছিয়ে রাখা।

ঞ. তালু থেকে কনুই পর্যন্ত দুইহাত মাটি থেকে উঁচু করে রাখা।

ট.একবারে মিলিয়ে না রাখা আবার বেশী ফাঁকও না রাখা।

ঠ.কেবলামুখী রাখার জন্য মিলিয়ে রাখা।

ড. সেজদায় দুই হাতের তালু ঘাড় অথবা কান বরাবর রাখা।

ঢ.এ সময় দৃষ্টি নাকের ডগার ওপর রাখা।

৫.সেজদা হতে উঠার সময় اَللهُ اَكْبَر ‘আল্ল¬াহু আকবার’ বলা।

সেজদা হতে উঠার নিয়মসমূহ :

ক. প্রথমে মাথা ও কপাল উঠাতে হয়।

খ. এরপর নাক উঠাতে হয়।

গ. সবশেষে হাত উঠাতে হয়।

৬.সেজদা হতে সোজা হয়ে বসা (ওয়াজিব)।

সেজদা হতে সোজা হয়ে বসার নিয়ম :

ক.বাম পা মাটিতে বিছিয়ে দিয়ে তার উপর বসতে হয়।

খ. ডান পায়ের আঙ্গুলের উপর পাতা দাঁড় করিয়ে রাখতে হয়।

গ.পায়ের আঙ্গুলগুলো ভাঁজ করে কিবলামুখী করে রাখতে হয়।

ঘ.বসা অবস্থায় দৃষ্টি কোলের দিকে কিংবা শাহাদাত আঙ্গুলের দিকে রাখা।

ঙ.বসার সময় সেজদার মত লম্বা করা।

চ.বসা অবস্থায় দোয়া পড়া : اَللّٰهُمَّ اغْفِرْلِيْ وَارْحَمْنِيْ وَاهْدِنِيْ وَاعْفِنِيْ وَارْزُقْنِيْ وَازْبِرْنِيْ وَارْفَعْنِيْ

উচ্চারণ : আল্ল¬াহুম্মাগ ফিরলী, ওয়ারহামনী, ওয়াহদিনী, ওয়াহফিনী, ওয়ার জুকনী, ওয়াজ বিরণী, ওয়ার ফাহনী।

অর্থ : হে আল্ল¬াহ! আমাকে ক্ষমা কর, আমার প্রতি দয়া কর, আমাকে হেদায়েত দান কর (অর্থাৎ দ্বীনের উপর প্রতিষ্ঠিত রাখ) আমাকে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখ, আমার রুজির ব্যবস্থা করে দাও, আমাকে সুস্থতা দান কর, আমার মান মর্যাদা বাড়িয়ে দাও।

চতুর্থ রাকাতের দ্বিতীয় সেজদার মাসআলাহ সমূহ

১.সেজদাতে যাবার সময় اَللهُ اَكْبَر ‘আল্ল¬াহু আকবার’ বলা।

২.সেজদা করা (ফরজ)।

৩.সেজদাতে দেরী করা (ওয়াজিব)।

৪.সেজদাতে থেকে তাসবিহ পড়া কমপক্ষে ৩ বার (সুন্নাত)। سُبحَانَ رَبِّيَ الْاَعْلَي

উচ্চারণ : সুবহানা রাব্বিয়াল আ‘লা।

অর্থ : আমার মহান প্রভুর পবিত্রতা বর্ণনা করছি।

এছাড়াও পড়া যায়- سُبحَانَكَ اَللّٰهُمَّ رَبَّناَ وَبِحَمْدِكَ اَللّٰهُمَّ اغْفِرْلِيْ

উচ্চারণ : সুবহানাকা আল্লাহুম্মা রাব্বানা ওয়াবিহামদিকা আল্লাহুম্মাগ-ফিরলী।

অর্থ : হে আল্লাহ! তুমি পাক পবিত্র, হে আমাদের রব! তোমার প্রশংসা সহকারে ফরিয়াদ করছি! তুমি আমাকে মাফ করো ।

সেজদাতে যাওয়ার নিয়ম :

ক.প্রথমে হাঁটুতে হাত রেখে অত্যন্ত আরামের সাথে হাঁটু যমীনে রাখা।

খ.তারপর দুই হাত যমীনে রাখা।

গ.অতঃপর নাক রাখা।

ঘ.সবশেষে কপাল রাখা।

ঙ.দুই কনুই উপরে উঠিয়ে রাখা।

চ.পিঠ সোজা করে রাখা।

ছ.দুই পায়ের পাতা খাড়া করে রাখা।

জ.দুই পায়ের আঙ্গুলগুলো ভাঁজ করে কেবলামুখী করে রাখা।

ঝ.হাতের তালু ও আঙ্গুলগুলো বিছিয়ে রাখা।

ঞ. তালু থেকে কনুই পর্যন্ত দুই হাত মাটি থেকে উঁচু করে রাখা।

ট.একবারে মিলিয়ে না রাখা আবার বেশী ফাঁকও না রাখা।

ঠ.সেজদায় দুই হাতের তালু ঘাড় অথবা কান বরাবর রাখা।

ড.এ সময় দৃষ্টি নাকের ডগার দিকে রাখা।

৫.সেজদা হতে উঠার সময় اَللهُ اَكْبَر ‘আল্ল¬াহু আকবার’ বলা।

সেজদা হতে উঠার নিয়ম :

ক.প্রথমে মাথা ও কপাল উঠাতে হয়।

খ.এরপর নাক উঠাতে হয়।

গ.সবশেষে হাত উঠাতে হয়।

৬.সেজদা হতে সোজা হয়ে বসা (ওয়াজিব)।

আখেরী বেঠকের মাসমালাসমূহ

১.আখেরী বৈঠক (ফরজ)।

২.আত্তাহিয়্যাতু পড়া (ওয়াজিব)।

اَلتَّحِيَّاتُ لِلّٰهِ وَالصَّلَوْاةُ وَالْطَيّبَاتُ – اَلسَّلَامُ عَلَيْكَ ا َيُّهَا النَّبِيُّ وَرَحْمَةُ اللهِ وَبَرَكَاتُهُ ا َلسَّلَامُ عَلَيْنَا وَ عَلٰى عِبَادِ اللهِ الصَّالِحِيْنَ – اَشْهَدُ اَنْ لَّا اِلٰهَ اِلَّااللهُ وَاَشْهَدُاَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُ هْ وَرَسُوْلُهُ –

উচ্চারণ : আত্তাহিয়্যাতু লিল্লাহি ওয়াছছালাওয়াতু ওয়াত তাইয়্যিবাত। আসসালামু আলাইকা আইয়্যুহান্নাবীয়্যু ওয়া রাহমাতুল্লা¬হি ওয়াবারাকাতুহু। আসসালামু আলাইনা ওয়া আ‘লা ইবাদিল্লাহিছ ছালিহীন। আশহাদু আল লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়া আশহাদুআন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রাসুলুহু।

অর্থ : সমস্ত সম্মান মর্যাদা, নামায এবং আত্মিক, মানসিক, অদৃশ্য গোশত পিন্ড কলব ও শারীরিক পবিত্রতা বা পরিশুদ্ধতা শুধুমাত্র আল্লাহতায়ালার জন্য নিবেদিত। হে নবী! আপনার প্রতি সালাম (শান্তি) রহমত (করুণা) এবং বরকত (অনুগ্রহ) অবারিত ধারায় বর্ষিত হোক। আমাদের প্রতি এবং সালিহীন (আতিœক মানসিক শারীরিক দিক থেকে পরিশুদ্ধ) বান্দাদের প্রতিও সীমাহীন সালাম (শান্তি) বর্ষিত হোক। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্ল¬াহ ছাড়া অন্য কোন ইলাহ নেই এবং আমি আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে,হযরত মুহাম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর বান্দাহ ও রাসূল।

৩.দরূদ শরীফ পড়া (সুন্নাত)।

اَللّٰهُمَّ صَلِّ عَلٰى مُحَمَّدٍ وَعَلٰى اَلِ مُحَمَّدٍ كَمَا صَلَّيْتَ عَلٰى اِبْرَهِيْمَ وَعَلٰى اَلِ اِبْرٰهِيْمَ اِنَّكَ حَمِيْدٌ مَّجِيْدٌ

اَللّٰهُمَّ بَارِكْ عَلٰى مُحَمَّدٍ وَعَلٰى اَلِ مُحَمَّدٍ كَمَا بَارَكْتَ عَلٰى اِبْرَ هِيْمَ وَعَلٰى اَلِ اِبْرٰهِيْمَ اِنَّكَ حَمِيْدٌ مَّجِيْدٌ

উচ্চারণ : আল্লাহুমা সালি আ‘লা মুহাম্মদিওঁ ওয়া আ‘লা আলি মুহাম্মাদিন কামা সাল্লাইতা আ’লা ইবরাহীম ওয়া আ’লা আলি ইবরাহীমইন্নাকা হামীদুম মাজীদ। আল্লাহুমা বারিক আ’লা মুহাম্মাদিওঁ ওয়া আ’লা আলি মুহাম্মাদিন কামা বারাকতা আ’লা ইবরাহীম ওয়া আ’লা আলি ইবরাহীম ইন্নাকা হামীদুম মাজীদ।

অর্থ : হে আল্লাহ! তুমি হযরত মুহাম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং তার বংশধরদের প্রতি রহমত বর্ষণ করো। যেমন রহমত বর্ষণ করেছো হযরত ইব্রাহিম আলাইহিস সালাম এবং তার বংশধরদের প্রতি। নিশ্চয়ই তুমি অত্যন্ত প্রশংসিত এবং মহান। হে আল্লাহ হযরত মুহাম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবংতাঁর বংশধরদের প্রতি বরকত (অনুগ্রহ) বর্ষণ করো যেমন বরকত (অনুগ্রহ) বর্ষণ করেছো হযরত ইব্রাহিম (আঃ) এবং তার বংশধরদের প্রতি। হে মহিমাময়! নিশ্চয়ই সকল প্রকার প্রশংসা তোমারই প্রাপ্য।

৪.দোয়ায়ে মাছুরা পড়া (সুন্নাত)।

اَللّٰهُمَّ اِنِّيْ ظَلَمتُ نَفْسِيْ ظُلْمًاكَثِيْرًا وَّ لاَيَغْفِرُ الذُّنُوْبَ اِلاَّ اَنْتَ فَاغْفِرْلِي ْمَغْفِرَةً مِّنْ عِنْدِكَ وَارْحَمْنِىْ اِنَّكَ ا َنْتَ الْغَفُوْرُ الرَّحِيْمُ

উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ইন্নী জালামতু নাফসী জুলমান কাসীরাওঁ ওয়া লা-ইয়াগফিরুজ্জুনুবা ইল্লা আনতা, ফাগফিরলী, মাগফিরাতাম মিন ইনদিকা, ওয়ারহামনী ইন্নাকা আনতাল গাফুরুর রাহীম।

অর্থ : হে আল্লাহ! আমি আমার আত্মার উপর বড়ই অত্যাচার করেছি এবং তুমি ভিন্ন কেউই পাপসমূহ ক্ষমা করতে পারে না। অতএব তুমি নিজ হাতে আমাকে ক্ষমা করো এবং আমার উপর রহমত (করুণা) বর্ষণ করো। নিশ্চয়ই তুমি ক্ষমাশীল ও দয়াবান।

৫.সালাম দিয়ে নামায শেষ করা (ওয়াজিব)।اَلسَّلَامُ عَلَيْكُمْ وَرَحْمَةُ اللهِ

উচ্চারণ : আস্সালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ

অর্থ : তোমার প্রতি আল্লাহর সালাম (শান্তি) ও রহমত (করুণা) বর্ষিত হোক) বলে নামায শেষ করা।

৬.প্রথমে ডান দিকে ফেরা।

৭.তারপর বামদিকে ফেরা।

৮.ডানদিকে ও বাম দিকে ফেরার সময় দেহ কেবলামুখী থাকা।

৯.মাথা নিচু করতে হবে না।

১০.স্থির সোজা বসা অবস্থায় শুধু চেহারা ডানে-বামে ঘুরাতে হবে।

আখেরী বৈঠকে বসার নিয়ম :

ক. বাম পায়ের পাতা মাটিতে বিছিয়ে দিয়ে তার উপর বসতে হয়। খ. ডান পায়ের পাতা দাঁড় করিয়ে রাখতে হয়।

গ. পায়ের আঙ্গুলগুলো কিবলামুখী করে রাখতে হয়।

ঘ. বাম উরুর উপর বাম হাত এবং ডান উরুর উপর ডান হাত রাখা।

ঙ. ডান হাতের শাহাদাত আঙ্গুল দ্বারা কিবলার দিকে ইঙ্গিত করা।

চ. আঙ্গুল হাঁটুর নীচে ঝুঁকে না পড়া।

ছ. বুড়ো আঙ্গুল মধ্যমার উপর রেখে একটা বৃত্তের মতো বানানো।

জ. দৃষ্টি শাহাদাত আঙ্গুলটির দিকে থাকা।

নামায শেষে তাসবীহ

হাদীসের আলোতে নামায শেষে তাসীহ পাঠের ফযীলত :

১.হযরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন-“দরিদ্র মুহাজিরগণ রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাল্লামের নিকটে এসে আরয করলেন, সম্পদশালীরা জান্নাতের সমুচ্চ মর্যাদা ও চিরস্থায়ী নিয়ামত লাভের আমাদের চেয়ে অগ্রগামী হয়ে গেলেন!’ নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাল্লাম জিজ্ঞেস করলেন, ‘কিভাবে তারা অগ্রগামী হয়ে গেল? সাহাবীরা বললেন, ‘নামায-রোযা ইত্যাদি আমল আমরাও করি, তারাও করেন, কিন্তু সম্পদশালী হওয়ার কারণে তারা দান-সদকা করে থাকেন, ক্রীতদাস মুক্ত করে থাকেন, যা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়।’ নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাল্লাম বললেন, আমি কি তোমাদেরকে এমন বিষয় শিখিয়ে দিব যার দ্বারা তোমরা তোমাদের অগ্রগামী হয়ে যাবে আর ওই আমল করা ছাড়া কেউ তোমাদের চেয়ে অগ্রগামী হতে পারবে না? তারা বললেন, ‘অবশ্যই বলুন, ইয়া রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাল্লাম! নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাল্লাম ‘বললেন তোমরা প্রতি নামাযের পর তেত্রিশ বার করে সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহু আকবার পড়বে’।”

বর্ণনাকারী বলেন, “কিছুদিন পর মুহাজির সাহাবীগণ পুনরায় নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাল্লামের খিদমতে উপস্থিত হলেন এবং বললেন, ‘ইয়া রাসূলুল্লুাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাল্লাম! আমাদের সম্পদশালী ভাইরা এই আমল সর্ম্পকে জানতে পেরেছেন এবং তারাও তা করতে আরম্ভ করেছেন!’ নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাল্লাম তখন বললেন,‘এটা আল্লাহর অনুগ্রহ, যাকে ইচ্ছা তিনি তা দান করে থাকেন’।” (সহীহ মুসলিম)

২.হযরত কা’ব ইবনে ইজরাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাল্লাম বলেন-নামায শেষে বাক্যগুলি যে পাঠ করে সে নিষ্কাম হয় না। বাক্যগুলো হল-তেত্রিশ বার সুবহানাল্লাহ, তেত্রিশ বার আলহামদুলিল্লাহ, চৌত্রিশ বার আল্লাহু আকবার।’ (সহীহ মুসলিম)

নামায শেষে দোয়া

১. সালাম ফিরানোর পর ৩ (তিন) বার আস্তাগফিরুল্লাহ (َسْتَغْفِرُ اللَّهَا) এবং

২. একবার আল্লাহু আকবার (اَللهُ اَ كْبَرُ)

৩.এরপর-পড়তে হয় اَللّٰهُمَّ اَنْتَ السَّلاَمُ وَمِنْكَ السَّلاَمُ تَبَارَكْتَ يَاذَا الْجَلاَلِ وَالْاِكْرَامِ

উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা আনতাছ সালামু ওয়া মিনকাছ সালামু তাবারাকতা ইয়া জালজালালি ওয়াল ইকরাম।

অর্থ : হে আল্লাহ! শান্তির উৎস তুমি, তোমার থেকেই আসে শান্তি। হে প্রতাপশালী মহা মর্যাদার অধিকারী।

তুমি বড়ই বরকতময়-প্রাচুর্যশালী।

দোয়ার পদ্ধতি :

দু’আর শুরু ও শেষে আল্লাহতায়ালার হামদ-ছানা ও নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাল্লামের প্রতি দরূদ পাঠ করা উচিত। বিনয় ও ন¤্রতার সঙ্গে কেঁদে কেঁদে দোয়া করা উচিত এই বিশ্বাস নিয়ে যে, আল্লাহতায়ালা আমাদের দোয়া শোনেন এবং কবুল করেন। তিনিই সকল সমস্যা থেকে মুক্তি দান করেন এবং সকল প্রয়োজন পূরণ করেন। আল্লাহ ছাড়া দোয়া কবুলকারী ও বিপদ থেকে পরিত্রাণকারী আর কেউ নেই।

হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন-“আমি নামাজ পড়ছিলাম। নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গে আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু ও উমর রাদিয়াল্লাহু আনহু ছিলেন। যখন আমি বসলাম তো প্রথমে আল্লাহতায়ালার হামদ-ছানা করলাম এবং নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি দরূদ পড়লাম। এরপর নিজের জন্য দোয়া করলাম। নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে লক্ষ্য করে বললেন, ‘প্রার্থনা কর, তোমার প্রার্থনা মঞ্জুর হবে। প্রার্থনা কর, তোমাকে দান করা হবে’।” (জামে আত-তিরমিযী)

সাহু সাজদা :

যদি ভুলক্রমে নামাজের কোনো ফরয আগ-পিছ হয়ে যায় কিংবা কোনো ওয়াজিব বাদ পড়ে যায় অথবা নামাযি রাকা’আত-সংখ্যা ভুলে যায় তাহলে সাহু সেজদা করলে নামায শুদ্ধ হয়ে যাবে। তবে ইচ্ছাকৃতভাবে এ কাজগুলো করলে নামায ভেঙ্গে যাবে এবং পুনরায় নামায আদায় করতে হবে।

সাহু সাজদার নিয়ম :

সাহু সাজদার পদ্ধতি হল, নামাযের শেষ বৈঠকে আত্তাহিয়্যাতু পড়ার পর একদিকে (ডান দিকে) সালাম ফিরিয়ে দু’টি সাহু সাজদা করবে। এরপর আত্তাহিয়্যাতু ও দরূদ শরীফ ও দোয়া পড়ে সালাম ফিরায়ে নামায শেষ করবে। আল্লাহুম্মা আমিন

বিষয়: Contest_priyo

৬২৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File