ওরসের স্বরুপ

লিখেছেন লিখেছেন ইনসানিয়াত ০৩ ডিসেম্বর, ২০১৭, ০২:৫৪:১৯ রাত



লিখক : মাওলানা আবদুল হামিদ

---------------------------------

সিলেট -

০৩/১২/২০১৭ ইংরেজি

**********************

গত ১৭ নভেম্বর শুক্রবার জুমুআর নামাজ আদায় করেছিলাম হযরত শাহপরান (রহঃ) দরগাহ মসজিদে। নামাজ আদায়ের পর যখন মসজিদের দক্ষিণ পার্শের সিঁড়ি দিয়ে নামছিলাম ঠিক এই সময় উচ্ছ কন্ঠে এক ব্যক্তির ঘোষণা শুনে চমকে উঠলাম। কিছু যুবককে মাজার জিয়ারত করে উল্টো সিঁড়ি দিয়ে (মাজারের দিকে মুখ করে পেছনে পেছনে) নেমে আসছে দেখে একজন ভদ্রলোক স্পষ্ট ঘোষণা করছিলেন- “হে যুবক! আল্লাহ বলেছেন- তোমরা নামাজ পড়ে আমার কাছে চাও, আর তোমরা যাচ্ছো উল্টো দিকে?” ভদ্রলোক আরেকটু দূরে মহিলা ইবাদতখানার সামনে গিয়ে মহিলাদের উদ্দেশ্য করে বলছিলেন- “হে মহিলাগণ! তোমরা এখানে কেন আসছো? এখানে এসে তোমরা নিজেরাও গোনাহগার হইতেছো এবং অন্যদেরকেও গোনাহগার বানাইতেছো।” মনে হয়েছিল তিনি কোন মাদ্রাসার মুহাদ্দিস কিংবা মুফতি হবেন। সুন্দর চেহারা, সফেদ দাড়ি আর লম্বা পাঞ্জাবী উনাকে একজন আল্লাহ ওয়ালা মানুষের পরিচয় দিচ্ছিল।

শুক্রবার দিন হিসেবে মাজারে ছিল হাজার হাজার মানুষের ভিড়। মহিলাদের উপস্থিতিও কম ছিল না। কিশোরী, তরুণীসহ প্রায় সকলশ্রেণীর শত শত মহিলা ছিলেন। কেউই ভদ্রলোকের কথার জবাবে কিছুই বলতে পারেন নি। পারবেনই বা কেমন করে? যেই লোকগুলো নামাজ পড়ে মসজিদ থেকে বের হয় সাভাবিক সিঁড়ি বেয়ে, সেই লোকগুলো মাজার থেকে বের হয় উল্টো সিঁড়ি বেয়ে। আল্লার ঘরকে পিছনে ফেলে আসলে কোন অসুবিধা হয় না; অথচ মাজারকে পেছনে ফেলে আসা যায় না! মানুষ আল্লাহর ঘরের চেয়ে মাজারকে বেশী সম্মান করছে! আল্লাহ বলেছেন- তোমরা আমার কাছে চাও। কিন্তু মানুষ আশ্চর্যজনকভাবে মাজারে গিয়ে মৃত মানুষের কাছে চায়! মহিলাদেরকে নিজের আত্মীয় স্বজনের কবর জিয়ারতে যেতেও হাদিসে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে; অথচ মহিলাগণ দলবেঁধে হাজারো পুরুষের সমাবেসে বেপর্দাবস্থায় কবর জিয়ারতে যাচ্ছে। এটা শরিয়ত গর্হিত কাজ ও কবীরাহ গোনাহ। এমন পরিস্থিতিতে ভদ্রলোকের ঘোষণা খুবই যথার্থ ছিল।

সারা দেশে অলী-আউলিয়াদের শত শত মাজার রয়েছে। সকল শ্রেণী-পেশার মানুষ মাজারে জিয়ারতের জন্য যান। আল্লাহর ওলীদের কবর জিয়ারত করে আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করেন, আল্লাহ যেন তার প্রিয় বান্দাদের ওসিলায় উদ্দেশ্য পূরণ করেন। এতে কোন অসুবিধা নেই বরং এটা অনেক সোয়াবের কাজও বটে। কিন্তু কেউ যদি এমন ধারনা করেন যে, মাজারে গিয়ে বললেই তার সকল উদ্দেশ্য পূরণ হয়ে যাবে; তাহলে এটা শিরিকের মত জঘণ্য অপরাধ হবে। কারণ, একমাত্র আল্লাহ তাআলা কুল মাখলুকের সৃষ্টিকর্তা ও পালনকর্তা। সৃষ্টির অস্তিত্ব ও বিলুপ্তি তাঁরই হাতে। মানুষের জীবন-মৃত্যু, সুস্থতা-অসুস্থতা, সচ্ছলতা-অসচ্ছলতা, উন্নতি-অবনতি, এককথায় সকল কল্যাণ ও অকল্যাণ একমাত্র আল্লাহ তাআলার হাতে। তাঁর ইচ্ছায় সব কিছু হয়, তাঁর ইচ্ছা ছাড়া কিছুই হয় না। তাঁর কোনো সহযোগী নেই এবং তিনি কোনো উপায়-উপকরণের মুখাপেক্ষী নন। কারণ পৃথিবীর সকল বস্তু ও বস্তুগুণ তাঁর সৃষ্টি, জীবন ও জীবনোপকরণ তাঁর সৃষ্টি, প্রকৃতি ও প্রকৃতির নিয়ম তাঁরই সৃষ্টি। গোটা জাহান তাঁর মাখলুক এবং কুল মাখলুক তাঁরই আদেশের অধীন। এই সর্বময় ক্ষমতা একমাত্র আল্লাহর। কোনো মাখলুকের তাতে বিন্দুমাত্র অংশীদারিত্ব নেই। তদ্রুপ উপায়-উপকরণ ছাড়া কাজ করার ক্ষমতা আল্লাহ তাআলা অন্য কাউকে দান করেননি। অতএব কেউ যদি আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো স¤পর্কে এই বিশ্বাস রাখে যে, তিনি কোনো উপায়-উপকরণ ছাড়া অলৌকিকভাবে হাজত পূরণ করতে পারেন, মুসীবত থেকে রক্ষা করতে পারেন, পরিস্থিতিকে অনুকূল বা প্রতিকূল করতে পারেন তাহলে তা হবে পরিষ্কার শিরক। আল কোরআনে ইরশাদ হচ্ছে- “তিনি আল্লাহ, তোমাদের রব, রাজত্ব একমাত্র তাঁর। আর তাঁর পরিবর্তে তোমরা যাদেরকে ডাক তারা তো খেজুর বিচির তুচ্ছ আবরণেরও মালিক নয়” (-সূরা ফাতির : ১৩)। অন্য আয়াতে ইরশাদ হয়েছে- “আসমান ও যমীনের রাজত্ব একমাত্র আল্লাহর। তিনি যা ইচ্ছা সৃষ্টি করেন। যাকে ইচ্ছা কন্যাসন্তান দান করেন এবং যাকে ইচ্ছা পুত্রসন্তান দান করেন। অথবা তাদেরকে দান করেন পুত্র-কন্যা উভয়ই। আর যাকে ইচ্ছা বন্ধ্যা করে দেন। নিশ্চয়ই তিনি সর্বজ্ঞ, ক্ষমতাশালী” (সূরা শূরা : ৪৯,৫০)। অথচ, আমাদের সমাজে কল্পনাপ্রসূত কুসংস্কারে বিশ্বাসী একশ্রেণীর মানুষ আছেন তাদের অবস্থা এমন; আল্লাহ না করুন! শয়তানের ধোকায় পরে মাজারে গিয়ে সিজদা দেয়, সন্তান চায়, মনের মকসুদ উপস্থাপন করাসহ এরকম নানা অপরাধে লিপ্ত হয়। ইসলামি শরিয়তে কোনো মৃত ব্যক্তিকে তাসাররুফ ক্ষমতার অধিকারী অর্থাৎ গায়বী ক্ষমতা-বলে কার্যস¤পাদনে সক্ষম মনে করা কুফরী। এছাড়াও মাজারগুলোতে সরলমনা অনেকেই ভন্ডদের দ্বারা প্রতাড়িত হন। সেদিন দেখলাম জালালাবাদ পত্রিকায় নিউজ করা হয়েছে, শাহজালাল (রহঃ) মাজারের পার্শে জমজমের পানি বিক্রির নামে মানুষের সাথে প্রতাড়না করা হচ্ছে। শুধু তাই নয়, এরকম প্রতিনিয়ত হাজারো মানুষ প্রতাড়িত হচ্ছেন বিভিন্ন কৌশলের ফাঁদে পড়ে। মাজারগুলোকে কন্দ্রে করে চলছে নানা অপকর্ম ও অসামাজিক কার্যকলাপ। আর ওরস? সে তো পাপের শো-ডাউন!

দুই/তিন বছর আগে আমি কৌতুহলবশত গিয়েছিলাম শাহপরান (রহঃ) মাজারে 'ওরস' পরিদর্শন করতে। আমার পরিচিতজনদের অনেকেরই সাক্ষাৎ পেয়েছি। কেউ কেউ গেছেন আমার মত কৌতুহলী হয়ে আবার কেউ কেউ গেছেন নিজেদের অন্য স্বার্থে। আমাকে দেখে কৌতুহলবশত অনেকেই জিজ্ঞেস করেছেন হুজুর আপনি এখানে কেন? কি করছেন এখানে? বিষয়টা কেউ কেউ ইতিবাচক নিলেও অনেকেই খারাপ চোখে দেখেছেন। দু'একজন বড় ভাইয়ের কাছে আমার বিরুদ্ধে বিচার দিয়েছেন। অবশ্য বিচারক কোন এ্যাকশান নেন নি। আমার বুঝে আসে না, যারা বিচার দিলেন তারা খারাপ জেনেই তো বিচার দিলেন; অথচ তারাই বা কেন গেলেন? যাই হোক, সেদিন হাসি-খুশি সহিহ-সালামত 'ওরস' পরিদর্শন করলাম এবং অদেখা, অজানা অনেক কিছুই দেখলাম, জানলাম। কিছু চিত্র মোবাইলে ক্যামেরাবন্দিও করেছিলাম। পরবর্তীতে ফেইসবুকে সচিত্র একটি পোস্টও করেছিলাম।

'ওরস' একটি আরবি শব্দ। এর অর্থ- ‘বাসর যাপন’। কিছু লোকের পরিভাষায়- কোন অলীর মাজারে তার মৃত্যু দিবস পালন উপলক্ষে ভক্তদের সমবেত হওয়া। ‘ওরস’ পালনের কোন ভিত্তি ইসলামি শরীয়তে নেই। রাসূল (সাঃ) এর যুগে বা সাহাবায়ে কেরাম (রাঃ)- এর যুগে কেউ কখনো ‘ওরস’ পালন করেন নাই। আর যে বিষয়ে কোন দিক-নির্দেশনা ইসলামি শরীয়তে পাওয়া যায় না, তা পালন করা যায় না। সোয়াবের আশায় এটা করা সু¯পষ্ট বিদআত ও গোমরাহী।

সারা দেশে অসংখ্য অলী-আউলিয়াদের মাজারে প্রতি বছর আয়োজন করা হয় তথাকথিত "মহা পবিত্র ওরস শরীফ”। নামে পবিত্রতা থাকলেও মুলত; নগ্ন-অশ্লীলতা, সুন্দরীদের দেহ প্রদর্শন, টাকার ছড়াছড়ি, মদ, গাঁজা আর অসামাজিক কার্যকলাপে ভূলুন্ঠিত হচ্ছে পবিত্রতা। বিপথগামী হচ্ছে সমাজ-পারিপার্শিকতা। নিন্মে ‘ওরস’ উপলক্ষে যা হয়, তার সংক্ষিপ্ত বিবরণ তুলে ধরছি :

‘ওরস’ একটি অভিনব অনুষ্টান! যা সুস্পষ্ঠ বিদআত, ইসলাম সমর্থন করে না। এর কারণ-

১। পুজা উপলক্ষে যেভাবে মেলা বসে ঠিক তেমনিভাবে মাজারে 'ওরস' উপলক্ষে মেলা বসে।

২। বাদ্য-বাজনা যোগে ভগবান ও দেব-দেবীর বন্দনা যে ভাবে করা হয়, সেইম সেভাবেই ‘ওরসের' সময়ও মাজারে ঢোল, বাঁশি, তবলা দিয়ে কাওয়ালী ও মারেফতি গান গেয়ে বন্দনা করা হয়ে থাকে।

৩। মন্দিরে দেব-দেবীকে বা ব্রাহ্মণকে মাথানত করে যে ভাবে প্রনাম করা হয়, তেমনি নামধারী কিছু মুসলমান জীবিত, মৃত, অলি-দরবেশ, ফকির, ভন্ডপীরকে প্রনামরুপী সেজদাহ করে! নাউযুবিল্লাহ!

৪। মন্দিরে বার্ষিক পুজার সময় পাঠা বলি দেয়, ঠিক তেমনি মাজারে ওরুসের সময় গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া, উট, দুম্বা ইত্যাদি জীবিত বা পীর-অলীর নামে জবাই করে এবং ধুমধামের সহিত তা ভক্ষন করে। পীর অলীর নামে মান্নত করা, জবাই করা 'শিরক'।

৫। বেপর্দা নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেশা।

৬। বাউল- যাত্রা, সার্কাস, কাওয়ালী, মারেফতি, গান-বাজনা, গাঁজা সেবন, জুয়া, পুঁতুল নাচ, হিজড়া নাচ ইত্যাদি।

বিশ্বাসগত ও কর্মগত অসংখ্য শিরকের সমষ্টি হচ্ছে প্রচলিত ওরস। এ ওরস স¤পর্কে একটু ভাবা উচিত। আল্লাহ তাআলা তাঁর প্রতি ভক্তি-শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য কিছু স্থান নির্ধারণ করে দিয়েছেন। যেমন-কাবা, আরাফা, মুযদালিফা, মিনা ও হারাম শরীফ ইত্যাদি। এবং মানুষকে সেসব স্থান যিয়ারতের আদেশ করেছেন। তাই পৃথিবীর সকল প্রান্ত থেকে সফর করে ঈমানদারগণ এ পবিত্র স্থানগুলোর যিয়ারতের উদ্দেশ্যে বছরের একটি নির্দিষ্ট সময়ে সমবেত হয়। তারা মহান প্রভূ আল্লাহ তাআলার নির্দেশে সফরের কষ্ট সহ্য করে সেলাইবিহীন বিশেষ পোশাকে উপসি'ত হয় এবং আল্লাহ তাআলার হুকুমে তাঁর নামে কোরবানী করে, মান্নত আদায় করে এবং কাবা শরীফের তাওয়াফ করে। যেসব স্থানে আল্লাহ তাআলা তাকবীল (চুম্বন করা), ইলতিযাম (জড়িয়ে ধরা) এবং সাঈ তথা দৌড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন, সেসব স্থানে তা যথাযথ পালন করে। তারা আল্লাহ তাআলার নিকট বিভিন্ন প্রয়োজন কামনা করে এবং তার শাহী দরবারে দুআ করে। এগুলি হচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। আর ইবাদতমাত্রই এক ও অদ্বিতীয় মাবুদ আল্লাহ তাআলার জন্য নির্ধারিত। এ কাজগুলোই যদি গায়রুল্লাহর জন্যে করা হয়, তাহলে তা হবে শিরক এবং সে ব্যক্তি হবে মুশরিক। যদি নিরপেক্ষ দৃষ্টিতে বিচার করা হয়, তাহলে দিবালোকের ন্যায় স্পষ্ঠ হয়ে যাবে যে, বর্তমানে মাজারগুলোতে ওরসের নামে সাধারণত যা হয়ে থাকে তা কোন পর্যায়ের কাজ। মাজারের উদ্দেশ্যে দীর্ঘ সফর করা হয়। সাথে পশু নেওয়া হয়। বিশেষ বিশেষ স্থান ও কবরগুলো তাওয়াফ করা হয়, কবরে সিজদা করা হয়। কবরের পর্দা ও খুটিতে ভক্তিভরে চুম্বন করা হয় (তাকবীল), জড়িয়ে ধরা হয় (ইলতিযাম), কবরবাসীর উদ্দেশ্যে কুরবানী করা হয়। মান্নত আদায় করা হয়। শুধু তাই নয়, সরাসরি কবরস্থ ব্যক্তির কাছে আপদ-বিপদ দূর হওয়ার জন্যে, কাজ সমাধা হওয়ার জন্যে, মনের বিভিন্ন বাসনা পূর্ণ হওয়ার জন্যে প্রার্থনা করা হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, হজ্বের স্থানসমূহের সম্মান ও ভক্তির চাইতে মাজারের ভক্তি-শ্রদ্ধাই মাজারপন্থীদের অন্তরে বেশি ও গভীর হয়ে থাকে। এ সব কাজ যদি শিরক না হয় তবে শিরক আর কিসের নাম?

তাছাড়া ইসলামে কবর যিয়ারতের বিধান আছে, কিন্তু কবরকে উৎসবের স্থানে পরিণত করার সুযোগ নেই। কবর যিয়ারতের উদ্দেশ্য হল, আখিরাতের স্মরণ জাগ্রত করা এবং কবরবাসীর জন্য দোয়া করা। হাদীস শরীফে আছে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, “আমি তোমাদেরকে কবর যিয়ারত করতে নিষেধ করেছিলাম। এখন তোমরা যিয়ারত করতে পার। কারণ তা আখিরাতের কথা মনে করিয়ে দেয়” (সুনানে আবু দাউদ হাদীস : ২১২৭)। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজেও তাঁর সাহাবীদের কবর যিয়ারত করেছেন এবং তাদের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করেছেন। কবর যিয়ারতের মাসাইল ও নিয়মকানুন আছে। সে মোতাবেক কবর যিয়ারত করলে তা হবে ছওয়াবের কাজ। পক্ষান্তরে কোনো কবরকে মাজারে পরিণত করে নির্দিষ্ট স্থানে জমায়েত হওয়া এবং উৎসবে পরিণত করা সমপূর্ণ হারাম। হাদীস শরীফে পরিষ্কার ভাষায় তা নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এক হাদীসে নবী নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “তোমরা নিজেদের ঘরকে কবর বানিয়ো না। (অর্থাৎ কবরের মতো ইবাদত-বন্দেগী শূন্য করো না) এবং আমার কবরকে উৎসবের স্থান বানিয়ো না। বরং আমার প্রতি দরূদ পড়। কেননা তোমরা যেখানেই থাক না কেন তোমাদের দরূদ আমার নিকট পৌঁছবে”(সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ২০৪০ )। নবী (সাঃ)-এর কবরকেই যখন উৎসবের স্থান বানানোর অবকাশ নেই তখন অন্যদের কথা তো বলাই বাহুল্য।

আমাদের সমাজ আজ কোরআন-সুন্নাহ থেকে বিমুখ হয়ে সব ধরনের জঘণ্য পাপাচারে লিপ্ত। একশ্রেণীর অর্থলোভীরা যেখানে সেখানে মাজারের ব্যনার দিয়ে রমরমা ব্যবসা চালু করে। আর চলতে থাকে ওরসের নামে কুফুর, শিরিক, বিদআতসহ নগ্ন-অশ্লীলতা, সুন্দরীদের দেহ প্রদর্শন, টাকার ছড়াছড়ি, মদ, গাঁজা আর অসামাজিক কার্যকলাপ। যার দ্বারা ভূলুন্ঠিত করা হচ্ছে পবিত্রতা ও বিপথগামী হচ্ছে সমাজ। যেন দেখার কেউ নেই! আসুন, 'ওরস' নামক মহা পাপাচারকে আমরা সবাই বর্জন করি।

------------------------

তারিখ : ২৪/১১/২০১৭ ইং

মাওলানা আবদুল হামিদ

শিক্ষক : জামেয়া ইসলামিয়া আনওয়ারে মদিনা মাদরাসা, ইসলামপুর সিলেট।

বিষয়: বিবিধ

৭২১ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File