খানা খাওয়ার আদব
লিখেছেন লিখেছেন সত্য প্রচার করুন ২০ আগস্ট, ২০১৭, ০৫:৩৮:০২ বিকাল
#সহীহ_হাদিসের_আলোকে_খানা_খাওয়ার_সুন্নাতসমূহ।
১. উভয় হাত কব্জি পর্যন্ত ধোয়া।
(আবু দাউদ, হাঃ নং ৩৭৬১)
২. দস্তরখানা বিছিয়ে খানা খাওয়া।
(বুখারী শরীফ, হাঃ নং ৫৩৮৬)
বি.দ্র. (ক) প্রথমে খানা তথা আল্লাহর নেয়ামতের দিকে মুখাপেক্ষী হয়ে বসা, তারপর দস্তরখানা বিছানো।
(বুখারী শরীফ, হাঃ নং ৫৩৮৫, ৫৩৯৯)
(খ) দস্তরখানা খুব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা উচিত। এর উপর ঝুটা (উচ্ছিষ্ট খাবার) হাড্ডি ইত্যাদি না ফেলা বা তাতে পা না রাখা উচিত।
(মুসলিম হাঃ নং ২০৩৩)
৩. (উঁচু স্বরে) বিসমিল্লাহ পড়া।
(বুখারী শরীফ, হাঃ নং ৫৩৭৬)
৪. ডান হাত দিয়ে খাওয়া।
(বুখারী, হাঃ নং ৫৩৭৬/ মুসলিম, হাঃ নং ২০২০)
৫. খানার মজলিসে বয়সের দিক দিয়ে যিনি বড় এবং বুযুর্গ, তাঁর দ্বারা খানা শুরু করানো।
(মুসলিম, হাঃ নং ২০১৭)
৬. খাদ্য এক ধরনের হলে নিজের সম্মুখ হতে খাওয়া।
(বুখারী শরীফ, হাঃ নং ৫৩৭৬)
৭. খাদ্যের কোন অংশ পড়ে গেলে উঠিয়ে (প্রয়োজনে পরিষ্কার করে) খাওয়া।
(মুসলিম, হাঃ নং ২০৩৩)
৮. হেলান দিয়ে বসে না খাওয়া।
(বুখারী শরীফ, হাঃ নং ৫৩৯৮)
৯. খাদ্যের ত্রুটি বের না করা।
(বুখারী শরীফ, হাঃ নং ৫৪০৯)
১০. জুতা পরিহিত থাকলে জুতা খুলে খানা খাওয়া।
(মুস্তাদরাকে হাকেম, হাঃ নং ৭১২৯)
১১. খানার সময় তিনভাবে বসা যায়। ক. উভয় হাঁটু উঠিয়ে এবং পদ যুগলে ভর করে।
(মুসলিম, হাঃ নং ২০৪৪)
খ. এক হাঁটু উঠিয়ে এবং অপর হাঁটু বিছিয়ে।
(শরহুস্ সুন্নাহ, হাঃ নং ৩৫৭৭)
গ. উভয় হাঁটু বিছিয়ে অর্থাত নামাযে বসার ন্যায় বসে সামান্য সম্মুখ পানে ঝুঁকে আহার করা।
(আবু দাউদ, হাঃ নং ৩৭৭৩)
বি.দ্র. উযরের কারণে আসন দিয়ে বসারও অনুমতি আছে।
(সূরা নূর, আয়াত-৬১/ আল ইতহাফ, ৫ : ৪৮০)
১২. আহার গ্রহণ শেষে খানার পাত্রসমূহ আঙ্গুল দ্বারা ভালভাবে চেটে পরিস্কার করে খাওয়া। এতে খাবারের পাত্রসমূহ আহারকারীর জন্য মাগফিরাত কামনায় মহান আল্লাহর দরবারে দু‘আকরে। হাতের আঙ্গুলসমূহ যথাক্রমে মধ্যমা, শাহাদাত, বৃদ্ধা চেটে খাওয়া।
(মুসলিম, হাঃ নং ২০৩৩/ তিরমিযী, হাঃ নং ১৮০৪/ তাবরানী আউসাত, হাঃ নং ১৬৪৯)
১৩. খানা শেষে এই দু‘আ পড়া :
الحمد لله الذى اطعمنا وسقانا وجعلنا من المسلمين
(আবু দাউদ, ৩৮৫০)
১৪. খানা শেষে আগে দস্তরখানা উঠিয়ে তারপর নিজে উঠা।
(ইবনে মাজাহ, হাঃ নং ৩২৯৫)
১৫. দস্তরখানা ও অবশিষ্ট খানা উঠানোর সময় এই দু‘আ পড়া :
الحمد لله حمدا كثيرا طيبا مباركا فيه غير مكفى ولا مودع ولا مستغنى عنه ربنا
(বুখারী শরীফ, হাঃ নং ৫৪৫৮)
১৬. খানা খেয়ে উভয় হাত ধোয়া।
(তিরমিযী, হাঃ নং ১৮৪৬)
১৭. কুলি করে মুখ পরিষ্কার করা।
(বুখারী শরীফ, হাঃ নং ৫৪৫৫)
১৮. খানার শুরুতে বিসমিল্লাহ পড়তে ভুলে গেলে স্মরণ হওয়ার পর খানার মাঝে এই দু‘আ পড়া : بسم الله اوله واخره
(আবু দাউদ, হাঃ নং ৩৭৬৭)
১৯. কারো মেহমান হয়ে খানা খেলে প্রথমে আল্লাহর শুকর আদায়ে ১৩নং এ বর্ণিত দু‘আ পড়ার পর মেযবানের শুকরিয়া আদায়ে এই দু‘আ পড়া :
اللهم اطعم من اطعنى واسق من سقانى
(মুসলিম, হাঃ নং ২০৫৫)
হাদীসে মেযবানকে শুনিয়ে এ দু‘আটি পড়তেও উতসাহিত করা হয়েছে :
اكل طعامكم الابرار وصلت عليكم الملائكة وافطر عندكم الصائمون
(আবু দাউদ, হাঃ নং ৩৮৫৪)
২০. খানা খাওয়ার সময় একেবারে চুপ থাকা মাকরূহ। এজন্য খাওয়ার ফাঁকে ফাঁকে পরস্পরে ভাল কথা আলোচনা করা। কিন্তু যে ধরনের কথা বা সংবাদে দুশ্চিন্তা বা ঘৃণার উদ্রেক হতে পারে, তা খানার সময় বলা অনুচিত।
(বুখারী শরীফ, হাঃ নং ৫৩৭৬)
আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে আমল করার তৌফিক দান করেন। (আমিন)
বিষয়: বিবিধ
৫৪১ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন