মুসলিম নারীর পর্দা

লিখেছেন লিখেছেন মোঃ আবদুল্লাহ ০৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ০২:২৪:৩৫ দুপুর



মুসলিম নারীর পর্দা

-শাইখ নাসিরুদ্দিন আলবানি (রঃ)

----------------------------------------------------------

পর্দার শর্ত সমুহঃ

১। স্বতন্ত্র অঙ্গ ব্যাতিত সমস্ত শরীর ঢেকে রাখা।

২। কোন সাজ সজ্জায় সজ্জিত হবে না।

৩। পরিহিত কাপড় পুরু হতে হবে; স্বচ্ছ, পাতলা হবে না।

৪। প্রশস্ত ঢিলাঢালা হওয়া, সংকীর্ণ না হওয়া।

৫। সুগন্ধি যুক্ত হবে না।

৬। পুরুষের পোশাকের সাদৃশ্য হবে না।

৭। কাফির মহিলাদের পোশাকের সাদৃশ্য হবে না।

৮। প্রসিদ্ধ কোন পোশাক হবে না।

প্রথম শর্তঃ স্বতন্ত্র অঙ্গ ব্যাতিত সমস্ত শরীর ঢেকে রাখা।

আল্লাহ বলেন,

ঈমানদার নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের যৌন অঙ্গের হেফাযত করে। তারা যেন যা সাধারণতঃ প্রকাশমান, তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে এবং তারা যেন তাদের মাথার ওড়না বক্ষ দেশে ফেলে রাখে এবং তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভ্রাতা, ভ্রাতুস্পুত্র, ভগ্নিপুত্র, স্ত্রীলোক অধিকারভুক্ত বাঁদী, যৌনকামনামুক্ত পুরুষ, ও বালক, যারা নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ, তাদের ব্যতীত কারো আছে তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে, তারা যেন তাদের গোপন সাজ-সজ্জা প্রকাশ করার জন্য জোরে পদচারণা না করে। মুমিনগণ, তোমরা সবাই আল্লাহর সামনে তওবা কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও। [সুরা নুর 24:31]

আল্লাহ আরও বলেন,

হে নবী! আপনি আপনার পত্নীগণকে ও কন্যাগণকে এবং মুমিনদের স্ত্রীগণকে বলুন, তারা যেন তাদের চাদরের কিয়দংশ নিজেদের উপর টেনে নেয়। এতে তাদেরকে চেনা সহজ হবে। ফলে তাদেরকে উত্যক্ত করা হবে না। আল্লাহ ক্ষমাশীল পরম দয়ালু। [সুরা আহযাব] ‌[33:59]

চেহারা ও হাতের বিধানঃ

আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বরনিত, আসমা বিনতে আবু বাকর (রাঃ) পাতলা কাপড় পরিহিত অবস্থায় রাসুল (সঃ) এর নিকট প্রবেশ করলেন। রাসুল (সঃ) তার দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে বললেনঃ হে আসমা! নারী যখন যৌবনে পদার্পণ করে তখন তার এটা ব্যাতিত প্রকাশ বৈধ নয়। তিনি চেহারা ও দু কব্জির দিকে ইঙ্গিত করে দেখালেন।(আবু দাউদ)

নারী চেহারা ও দু কব্জি ব্যাতিত সৌন্দর্য প্রকাশ করতে পারবে না।

আবু দাউদে বর্ণিত উক্ত হাদিস থেকে প্রমাণিত হয় নারীদের চেহারা ও দু কব্জি প্রকাশ করা বৈধ। এটাকে বহুসূত্রে বর্ণিত হাদিস শক্তিশালী করে। ইমাম বায়হাকি এটাকে শক্তিশালী করেছেন। বিশেষত নাবি (সঃ) এর যুগে উপস্থিত মহিলাদের চেহারা ও দু কব্জি প্রকাশ করা চালু ছিল। নবী (সঃ) তাদেরকে বাধা দেন নি।

এ ব্যাপারে আমরা কিছু হাদিস পেশ করছিঃ

প্রথম হাদিসঃ

জাবির বিন আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি ঈদের দিবসে রাসুলুল্লাহ (সঃ)-এর সাথে সালাতে উপস্থিত ছিলাম। তিনি খুৎবার পূর্বে আযান, ইকামত ব্যতীত সালাত আদায় করলেন।। অতপর বিলালের উপর ভর করে দাড়ালেন,লোকদেরকে আল্লাহর ভীতি,তার আনুগত্যের উৎসাহ ও উপদেশ নসীহত করলেন,অতপর মহিলাদের নিকটে নিকট এসে ওয়াজ নসিহত করে বললেনঃ তোমরা সাদাকাহ করো কেননা তোমাদের অধিকাংশই জাহান্নামের জালানি হবে। একজন মহিলা নারীদের মাঝে বলছিল।তার দু’গাল লালচে কালো দাগ মিশ্রিত ছিল। সে বললঃ কেন হে রাসুলুল্লাহ; রাসুল (সঃ) বললেনঃ তোমরা অধিক অনুযোগ কর ও স্বামীর অবাধ্য হয়ে থাকো।রাবী বলেনঃ ফলে মহিলাগন তাদের অলংকার হতে দান করতে লাগল।তারা বিলালের চাদরে কানের দুল ও আংটি ফেলতে লাগল।(সহিহ মুসলিম ৩/১৭, নাসায়ি ১/২৩৩, বায়হাকি ৩/২৯৬, আহমাদ ৩০০, দারিমি ১৩৩)

কেউ যদি বলে এটা পর্দার বিধানের পূর্বে ছিল, তাহলে এটা দ্বারা দলিল পেশ করা যাবে না।

এর উত্তর হলোঃ এটা স্পষ্ট প্রমাণিত যে, ঘটনাটি পর্দার বিধানের পরে হয়েছিল। তার প্রমানে আমরা এখন দুটি হাদিস পেশ করছিঃ

১ম হাদিসঃ

উম্মে আতিয়্যাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত, নাবি (সঃ) মহিলাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন যে, তারা যেন ঈদের সালাতে বের হয়, উম্মে আতিয়্যাহ (রাঃ) বলেনঃ আমাদের কারো কারো চাদর নেই। নাবি (সঃ) বললেনঃ তার বোন তাকে চাদর পড়াবে।(বুখারি ও মুসলিম)

এ হাদিসে প্রমাণিত হল মহিলাগন ঈদের সালাতে চাদর পরিহিত হয়ে পর্দার সাথে বের হতেন। আর যে মহিলার দু’গাল লালচে কালো দাগ ছিল তিনি পর্দার অবস্থায় ছিলেন। এটাকে দ্বিতীয় হাদিসও শক্তিশালী করে।

২য় হাদিসঃ

উম্মু আতিয়্যাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সঃ) যখন মদীনায় আগমন করলেন তখন আনসারদের নারীগণ এক বাড়িতে একত্রিত হলো। অতঃপর নাবী (সঃ) তাদের নিকটে উমার বিন খাত্তাব (রাঃ)-কে এ কথা নিয়ে পাঠালেন, উমার (রাঃ) দরজায় দাড়ালেন ও সালাম দিলেন,নারিগন সালামের উত্তর দিলেন। অতঃপর তিনি বললেনঃ আমি রাসুলুল্লাহ (সঃ)এর পক্ষ হইতে তোমাদের নিকট প্রেরিত হয়েছি। তারা বললেনঃ স্বাগতম রাসুলুল্লাহ (সঃ) ও তার দূতকে। উমার (রাঃ) বললেনঃ তোমরা আনুগত্যের শপথ নিবে যে, আল্লাহর সাথে কোন কিছুর শরীক করবে না, চুরি করবে না, যিনা করবে না, সন্তানদের হত্যে করবে না, অপবাদ দিবে না যা তোমাদের এবং তোমাদের পুরুষদের মধ্যে পার্থক্য করে দিবে এবং ভালো কাজের অবাধ্য হবে না, মহিলাগন বললেনঃ হা, এ বাইয়াত নিচ্ছি।অতঃপর উমার (রাঃ) তার হাতকে দরজার বাহিরে প্রসারিত করলেন এবং মহিলাগন ভিতরে হাত প্রসারিত করলো। তারপর উমার (রাঃ) বললেনঃ আল্লাহ সাক্ষ থাকুন। উম্মু আতিয়্যাহ (রাঃ) বলেনঃ এবং আমাদেরকে নির্দেশ দিতেন যে, আমরা কুমারী, যুবতী ও ঋতুবর্তীগন যেন দু’ঈদে বের হই এবং আমাদেরকে জানাজার অনুসরন করতে নিষেধ করতেন। আর আমাদের প্রতি জুমা ফরজ নয়। আমি অপবাদ সম্পর্কে তাঁকে জিজ্ঞেস করেছি এবং ভালো কাজের অবাধ্য হবে না এর অর্থ জিজ্ঞেস করেছি। তিনি বললেনঃ সেটা হলো বিলাপ করে শোক করা।-(মুসনাদে আহমাদ ৬/২০৮-৪০৯, বায়হাকি ৩/১৮৪, যিয়ায়া মাকদেসীর আল মুখতারহ ১/১০৪-১০৫)

ঈসমাঈল বিন আব্দুর রাহমান বিন আতিয়্যাহ সূত্রে তিনি তার দাদী উম্মু আতিয়্যাহ হতে। সহিহ ইবনু খুজাইমা ও সহিহ ইবনু হিব্বান। ইসমাইল একজন মকবুল বা গ্রহণীয় রাবী। আর বাইয়াতের আয়াত মক্কা বিজয়ের দিবসে অবতীর্ণ হয়েছিল। অতএব প্রমাণিত হচ্ছে যে, মহিলাগন ঈদের সালেতে বের হতেন পর্দার বিধান ফরজ হবার পর। আর এটাকে শক্তিশালী করেছে উমার (রাঃ)-এর হাদিস যে, তিনি মহিলাদের নিকট প্রবেশ করেন নি। মহিলাদের বায়াত নিয়েছেন দরজার আড়াল থেকে। এ ঘটনা স্পষ্ট যে নাবি (সঃ) মহিলাদেরকে ঈদের সালতে বের হবার নির্দেশ দিয়েছেন।

দ্বিতীয় হাদিসঃ

ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ খাশ’য়াম গোত্রের একজন মহিলা বিদায় হজ্জে কুরবানির দিবসে রাসুলুল্লাহ (সঃ)-কে জিজ্ঞেস করলেন আর ফযল বিন আব্বাস (রাঃ) রাসুলুল্লাহ (সঃ)-এর পিছনে সওয়ারী ছিলেন। ফযল বিন আব্বাস (রাঃ) একজন উজ্জ্বল সুন্দর পুরুষ ছিলেন। হাদিসটি দীর্ঘ। এর মধ্যে আছে ফযল বিন আব্বাস (রাঃ) ঐ মহিলাটির দিকে তাকাইতে ছিলেন আর ঐ মহিলা খুবই সুন্দরী ছিলেন। মহিলাটি ফযলের দিকে তাকাচ্ছিলেন। অতপর রাসুলুল্লাহ (সঃ) ফযলের থুতনি ধরে তার চেহারা অন্য দিকে ফিরিয়ে দিলেন।(সহিহ বুখারিঃ ৩/২৯৫,৪/৫৪,১১/৮, সহিহ মুসলিমঃ ৪/১০১, আবু দাউদঃ১/২৮৬, নাসায়ি২/৫, ইবনু মাজাহ ২/৩১৪, মালিক ১/৩০৯, তিরমিজি ১/১৬৭,বায়হাকি,ইবনু হাযম)

এ হাদিস প্রমান করে যে চেহারা পর্দার অন্তর্ভুক্ত নয়

। যেমন ইবনু হাযম বলেনঃ যদি চেহারা পর্দা হত, তাহলে মহিলাগণ দৃঢ়ভাবে পর্দা করতেন লোকদের নিকট প্রকাশ কর হতে। আর মহিলাটির চেহারা ঢাকা থাকলে ফযল বিন আব্বাস (রাঃ) বুঝতে পারতেন না যে, তিনি সুন্দরী না কুৎসিত। খাশয়ামার ঘটনা দ্বারা কেউ যদি দাবী করেন যে, তিনি মুহরিম ছিলেন। তাহলে আমি(আলবানি) বলবঃ এটা কখন নয়। কেননা এর কোন দলিল নেই যে, তিনি মুহরিম ছিলেন। বরং এর বিপরীতটাই স্পষ্ট যে, খাশয়ামাহ নাবি (সঃ)-কে পাথর নিক্ষেপ করার পর অর্থাৎ হালাল হওয়ার পর প্রশ্ন করেছিলেন।

এ ঘটনা আলি (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি রাসুলুল্লাহ (সঃ) এর পাথর নিক্ষেপের পর মানহার বা যবাহের স্থানে প্রবেশ করেছিলেনঃ তাতে অতিরিক্ত আছে, আব্বাস (রাঃ) তাঁকে বললেনঃ হে রাসুলুল্লাহ আপনি কেন আপনার ভাতিজার চেহারা ফিরালেন? নাবি (সঃ) বললেনঃ আমি একজন যুবক ও যুবতীকে দেখলাম, শয়তান তাদের উপর আশংকামুক্ত হয়নি।

অন্য বর্ণনায় ফযল (রাঃ) হতে নিজের উক্তি মুসনাদে আহমাদে(১/২২১) বর্ণিত আছে। ফযল (রাঃ) বলেনঃ

আমি মহিলাটির দিকে তাকাইতে ছিলাম, নাবি (সঃ) তা দেখে আমার চেহারা তার চেহারার দিক হতে পরিবর্তন করে দিলেন। আমি আবার তাকালাম । ফলে নবী (সঃ) আমার এহারা তার চেহারা হতে ঘুরিয়ে দিলেন। এমনিভাবে তিনবার করলেন। তাতে আমি বিরত থাকলাম না। হাদিসের রাবীগন নির্ভরযোগ্য তবে মুনকাত।

------------------------------------------------------------------------------------------------

তৃতীয় হাদিসঃ

সাহল বিন সাদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ একজন মহিলা রাসুলুল্লাহ (সঃ)-এর নিকটে এসে বললেনঃ হে আল্লাহর রাসুল,আমি আপনাকে আমার সর্বস্ব দিয়ে দেয়ার জন্য এসেছি। নবী (সঃ) তার দিকে দৃষ্টি উচু ও নিচু করে দেখলেন। অতপর তার মাথা নামিয়ে নিলেন। মহিলাটি যখন দেখল নবী (সঃ) তাঁকে দেখে কিছুই ইচ্ছে করছেন না তখন তিনি বসে গেলেন।(বুখারি ৯/১০৭, সহিহ মুসলিম ৪/১৪৩, নাসায়ি ২/৮৬, বায়হাকি ৭/৮৪) হাফেজ ইবনু হাজার ফাতহুল বারীতে(৯/১৭৩) বলেনঃ বিবাহের উদ্দেশ্যে মহিলাদের সৌন্দর্যের প্রতি দৃষ্টি দেয়া বৈধ, যদি বিবাহে উৎসাহিত না হয় তাহলে প্রস্তাব দিবে না, কেননা নবী (সঃ) তার দৃষ্টিকে উচু নিচু করে দেখলেন এবং তাঁর পছন্দ না হওয়ায় প্রস্তাব দেননি। অতপর তিনি বললেন আমার নারীর প্রয়োজন নেই।

----------------------------------------------------------------------------------------------------

চতুর্থ হাদিসঃ

আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন,মুমিনগণ সর্বাঙ্গ ঢেকে আল্লাহর নবীর সাথে ফজরের সালাতে উপস্থিত হতেন। অতঃপর সালাত শেষ করে যার যার বাড়িতে চলে যেতেন।আধারের কারনে তাদেরকে চীনা যেত না।(সহিহ বুখারি, সহিহ মুসলিম ও আবু দাউদ)

আধারের কারনে তাদের চীনা যেত না- এ কথা দ্বারা বুঝা যায় যদি আধার না হত তাহলে চীনা যেত। আর চীনা যেত তাদের চেহারা দেখে যা তাদের খোলা থাকত। এর স্পষ্ট বর্ণনা রয়েছে যে,আমাদের কারো চেহারা কেউ চিনতে পারত না।(মুসনাদে আবু ই’য়ালা ২.২১৪ সহিহ সনদে)

---------------------------------------------------------------------------------------------------

পঞ্চম হাদিসঃ

ফাতিমাহ বিনতে কাইস (রাঃ) হতে বর্ণিত, আবু আমর বিন হাফস তাঁকে চুরান্ত তালাক দিয়েছে। অন্য এক বর্ণনায় আছে, তিন তালাক দিয়েছে অথচ সে অনুপুস্থিত, অতপর তিনি রাসুলুল্লাহ (সঃ)-এর নিকটে এসে এ ঘটনা উল্লেখ করলেন...... নাবি (সঃ) তাঁকে উম্মে শরিকের বাড়িতে ইদ্দত পালন করার নির্দেশ দিলেন। অতঃপর বললেন এ মহিলার নিকটে আমার সাহাবীরা যায়। তুমি উম্মে মাকতুমের নিকট ইদ্দত পালন কর। সে অন্ধ মানুষ, তাঁর নিকটে বসে কাপড় রাখা যাবে। অন্য বর্ণনায় আছে, তুমি উম্মে শরিকের নিকটে যাও। উম্মে শরিক একজন ধনী আনসারি মহিলা। আল্লাহর রাস্তায় মহা দানশীল। তাঁর নিকট মেহমান আসে। আমি বললাম অতি সত্বর আমি যাবো। নবী (সঃ) বললেনঃ তুমি তা করো না। উম্মে শরীকের অসংখ্য মেহমান। আমি অপছন্দ করব তোমার চাদর পড়ে যাওয়াকে অথবা তোমার পিন্ডলি হতে কাপড় খুলে যাওয়াকে আর লোকেরা তোমাকে দেখবে এবং অনেকে তা অপছন্দ করবে। বরং তুমি তোমার ভাতিজা উম্মে মাকতুমের নিকটে যাও। সে জন্মান্ধ।তুমি যদি তোমার চাদর রাখ তাহলে সে তোমাকে দেখতে পাবে না। অতঃপর আমি তাঁর নিকটে চলে গেলাম। যখন আমার ইদ্দত শেষ হল আমি শুনতে পেলাম একজন আহ্বানকারী আহ্বান করছে আসসালাতু জামে’য়াহ। আমি মসজিদে আসলাম এবং রাসুলুল্লাহ (সঃ)-এর সাথে সালাত শেষ করলাম। রাসুলুল্লাহ (সঃ) সালাত শেষ করে মিম্বারে বসলেন। অতঃপর বললেনঃ আল্লাহর শপথ, আমি তোমাদেরকে উৎসাহ দেয়ার জন্য এক্কত্রিত করি নাই এবং ভীতি প্রদর্শনের জন্যও একত্রিত করি নাই। বরং তোমাদেরকে একত্র করেছি তামীমুদদারী খ্রিস্টান লোক সে এসে বায়াত নিয়ে ইসলাম গ্রহন করেছে এবং আমাকে একটি হাদিস শুনিয়েছে যা আমি তোমাদেরকে মাসিহু দাজ্জাল সম্পর্কে বর্ণনা করতাম।(সহিহ মুসলিমঃ ৪/১৯৫-১৯৬, ৮/২০৩)

এ হাদিস দ্বারা স্পষ্ট বুঝা যাচ্ছে যে, চেহারা পর্দার অন্তর্ভুক্ত নয়। এ জন্যই নাবি (সঃ) ফাতিমা বিনতে কায়েসকে লোকেরা দেখবে তা স্বীকৃতি দিয়েছেন। অথচ তার উপর চাদর ছিল যা দিয়ে তার মাথা ঢাকা ছিল।অতএব বুঝা গেল মাথা ঢাকা যেরুপ ওয়াজিব চেহারা ঢাকা সেরুপ ওয়াজিব নয়। কিন্তু নবী (সঃ) ভয় করেছিলেন যে, তাঁর মাথা হতে কাপড় পড়ে যেতে পারে। আর এ ঘটনা ছিল নবী (সঃ) এর শেষ জীবনে। কেননা ফাতিমা বিনতে কাইস উল্লেখ করেছেন যে, তার ইদ্দত শেষ হবার পর তিনি নবী (সঃ)-কে তামিমুদদারির আসার ও ইসলাম গ্রহন করার কথা বলতে শুনেছেন। আর তামিমুদদারি নবম হিজরীতে ইসলাম গ্রহন করেন। অতএব আরো প্রমান করে যে, এ ঘটনা পর্দার আয়াত অবতীর্ণ হওয়ার পরে হয়েছিল বিধায় হাদিস দ্বারা বুঝা যায় চেহারা পর্দার অন্তর্ভুক্ত নয়।

ষষ্ঠ হাদিসঃ

ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তাঁকে বলা হয় আপনি কি নবী (সঃ) এর সাথে কখনো ঈদের সালাতে উপস্থিত হয়েছেন? তিনি বললেনঃ হাঁ। যদি তার নিকট আমার মর্যাদা না থাকত তাহলে কম বয়সী হবার কারনে আমি ঈদে উপস্থিত হতে পারতাম না। তিনি বের হয়ে কাসির ইবনু সলতের ঘরের নিকট স্থাপিত নিশানার নিকট আসলেন এবং সালাত আদায় করলেন। রাবী বলেন, অতঃপর আল্লাহর নবি (সঃ) নামলেন। আমি যেন দেখতে পাচ্ছি তিনি হাতের ইঙ্গিতে লোকদেরকে বসিয়ে দিচ্ছেন। অতঃপর তিনি লোকদেরকে ঠেলে সামনে অগ্রসর হলেন এবং মহিলাদের নিকট এলেন। তাঁর সাথে বিলাল ছিল। অতপর পাঠ করলেন,

يَا أَيُّهَا النَّبِيُّ إِذَا جَاءَكَ الْمُؤْمِنَاتُ يُبَايِعْنَكَ عَلَىٰ أَن لَّا يُشْرِكْنَ بِاللَّهِ شَيْئًا

হে নবী, ঈমানদার নারীরা যখন আপনার কাছে এসে আনুগত্যের শপথ করে যে, তারা আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করবে না...।মুমতাহিনাঃ১২

এ আয়াত পাঠ করে নবী (সঃ) শেষ করলেন। অতপর আয়াত পাঠ শেষে বললেনঃ তোমরা কি এ আয়াতের উপর আছো? তাদের কেউ জবাব দিল না। শুধু একজন মহিলা বলল, হাঁ হে আল্লাহর নবী। (রাবি বলেনঃ নবী (সঃ) নারীদেরকে উপদেশ দিলেন, নসিহত করলেন এবং দান সাদকাহ করার নির্দেশ দিলেন। সে সময় বিলাল তাঁর কাপড় প্রসারিত করে বললেনঃ আমার মা-বাপ আপনার জন্য কুরবান হোক, আমি তখন নারীদের নিজ নিজ হাত বাড়িয়ে বিলাল (রাঃ)-এর কাপরে দান সামগ্রি ফেলতে দেখলাম।) অন্য বর্ণনায় আছে, তখন নারীগণ তাদের ছোট বড় আংটিগুলো বিলালের কাপড়ের মধ্যে ফেলতে লাগলেন। অতপর তিনি ও বিলাল তাঁর বাড়ির দিকে চলে গেলেন।(বুখারি ২/২৭৩, আবু দাউদ ১/১৭৪, বায়হাকি ৩/৩০৭, নাসায়ি ১/২২৭ আহমেদ ১/৩৩১)

ইবনে হাজম বলেনঃ ইবনু আব্বাস (রাঃ) রাসুলুল্লাহ (সঃ)-এর উপস্থিতিতে নারীদের হাত দেখলেন। এতে এটাই প্রমাণিত হয় যে, মহিলাদের হাত পর্দার অন্তর্ভুক্ত নয়। এ ছাড়া বাকি সকল অঙ্গের পর্দা ফরজ। আমি আলবানি বলবঃ এ ঘটনায় নবী (সঃ)-এর হাতে নারীদের বায়াত নেয়ার কথা উল্লেখ আছে। এতে প্রমাণিত হয় যে, এ ঘটনা পর্দার বিধান অবতীর্ণের পরে হয়েছিল। কেননা পর্দার বিধান ফরজ হয় তৃতীয় হিজরিতে। আর বায়াতের আয়াত অবতীর্ণ হয় ষষ্ঠ হিজরিতে। এটাকে আরো শক্তিশালী করে যেটা ফাতহুল বারীতে(২/৩৭৭) রয়েছে যে, ইবনু আব্বাসের ঈদে উপস্থিত হবার ঘটনা ছিল মক্কা বিজয়ের পর। একে আরো শক্তিশালী করে যা তাবারানি বর্ণনা করেনঃ

কইস বিন আবি হাযিম হতে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ আবু বকরের অসুস্থতার সময় আমি তার নিকটে প্রবেশ করে দেখলাম তাঁর নিকটে তাঁর স্ত্রী রয়েছে, সাদা নক্সা বিশিষ্ট তাঁর দু’হাত, তিনি হলেন আসমা বিনতে উমাইস। হাইসামি বলেন(৫/১৭০) রাবীগন সহীহ রাবী। আসমা বিনতে উমাইস সাহাবিয়্যাহ ও আবু বকর (রাঃ)-এর স্ত্রী ছিলেন। তিনি তাঁর দু’কব্জি অপরিচিত ব্যক্তির সামনে স্বামীর উপস্থিতিতে প্রকাশ করলেন কেউ তাঁর প্রতি অস্বীকৃতি জানান নি। এতে বুঝা যায় এটা তাদের নিকট প্রসিদ্ধ ছিল।

---------------------------------------------------------------------------------------------------

সপ্তম হাদিসঃ

সুবাইয়া বিনতে হারিস হতে বর্ণিত যে, তিনি সাদ বিন খাওলাহ এর তত্ত্বাবধানে ছিলেন। বিদায় হজের সময় তিনি ইন্তেকাল করেন এবং তিনি বদরী সাহাবি ছিলেন, তাঁর মৃত্যুর চার মাস দশ দিন পূর্ণ হবার পূর্বেই সুবাই’আহ সন্তান প্রসব করেন। নিফাস হতে পবিত্র হবার পূর্বেই তাঁর সাথে আবু সানাবিল বিন বা’কাক সাক্ষাৎ করলেন। তখন সুবাই’আহ সুরমা লাগিয়েছিলেন।(খিজাব লাগিয়েছিলেন ও প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।) আবু সানাবিল তখন তাকে বললেনঃ নিজের প্রতি সহনশীল হও অথবা এধরনের কিছু বলেছেন। সম্ভবত তুমি বিবাহের ইচ্ছে করেছ। আর এটা তোমার স্বামীর মৃত্যুর চার মাস দশ দিন অতিবাহিত হবার পর হবে। সুবাই’আহ বলেন, এরপর আমি নবী (সঃ) এর নিকটে এসে আবু সানাবিল যা বলেছেন তা উল্লেখ করলাম। নবী (সঃ) বলেছেন যখন তুমি সন্তান প্রসব করেছ তখনই তুমি হালাল(পবিত্র) হয়েছ।(মুসনাদে আহমাদ ৬/৪৩২ দু’সুত্রে, এর মধ্যে একটি সহিহ অপরটি হাসান। এর মুল কথা বুখারি, মুসলিম ও অন্যান্য গ্রন্থে রয়েছে)

এ হাদিস স্পষ্ট প্রমান করে যে, দু’কব্জি সাহাবাদের স্ত্রীদের চেনার ক্ষেত্রে পর্দার অন্তর্ভুক্ত হয়নি। এমনভাবে চেহারা অথবা অন্তত পক্ষে চোখ। সুবাই’আহ (রাঃ) আবু সানাবিলের সামনে প্রকাশ করে বিশেষতঃ তিনি তাকে বিবাহের প্রস্তাব দেন কিন্তু তিনি রাযী হন নি।

----------------------------------------------------------------------------------------------------

অষ্টম হাদিসঃ

ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, একজন মহিলা নবী (সঃ) এর নিকট বায়াতের জন্য আসলেন। তিনি খিজাব লাগানো ছিলেন না। নবী (সঃ) তাঁর খিজাব না লাগানো পর্যন্ত বায়াত নিলেন না।(হাদিস হাসান বা সহিহ, আবু দাউদ ২/১৯০, বায়হাকি ৭/৮৫ এর অনেক শাওয়াহিদ বা প্রামানিক হাদিস রয়েছে যা আমি আস-সামুকুল মুস্তাতব ফি ফিরাহিস সুন্নাহ ওয়াল কিতাব নামক গ্রন্থে বর্ণনা করেছি।)

উপরোক্ত হাদিস সমুহ মহিলাদের চেহারা ও দু’কব্জি খোলা রাখার বৈধতা প্রমান করে।

এমনিভাবে আরো বর্ণিত আছেঃ

আতাআ বিন আবী বারাহ হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমাকে ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেছেনঃ একজন জান্নাতি মহিলাকে দেখেছ? আমি বললাম হাঁ। তিনি বললেনঃ এ কালো মহিলা নবী (সঃ)-এর নিকটে এসে বললঃ আমি মৃগীরোগী এবং আমি বিবস্ত্র হয়ে পড়ি, আপনি আমার জন্য দুয়া করুন। নবী (সঃ) বললেনঃ তুমি যদি ধৈর্য ধারণের ইচ্ছে কর তাহলে তোমার জন্য জান্নাত। আর তুমি চাইলে আমি তোমার জন্য আল্লাহর কাছে দুয়া করব তিনি যেন তোমাকে সুস্থতা দান করেন। মহিলাটি বলল আমি ধৈর্য ধারন করব। তিনি আরো বললেনঃ আপনি আল্লাহর নিকট দুয়া করুন যেন আমি বিবস্ত্র হয়ে না পড়ি। নবী (সঃ) তার জন্য দুয়া করলেন।(সহিহ বুখারী ১০/৯৪, সহিহ মুসলিম ৮/১৬, মুসনাদে আহমাদ ৩২৪০ নং হাদিস)

এ হাদিসগুলো দ্বারা প্রমাণিত হয় মুখমন্ডল ও দু’কব্জি প্রকাশ করা বৈধ যা আল্লাহর এ বানীতেও-(সুরা নুরঃ৩১) রয়েছে- (إِلَّا مَا ظَهَرَ مِنْهَا )(কিন্তু যা প্রকাশ পাবার ) এর অর্থ গত হয়েছে।এরপর মহান আল্লাহ বলেনঃ(وَلْيَضْرِبْنَ بِخُمُرِهِنَّ عَلَىٰ)(তারা যেন ওড়না দ্বারা বক্ষদেশ আবৃত করে রাখে)। পূর্বে আলোচিত কিছু হাদিস প্রমান করে চেহারা পর্দার অন্তর্ভুক্ত নয়। কেননা আল খুমরু(الخمر) হল খিমার(خمار) শব্দের বহুবচন। এটার অর্থ হল যা দ্বারা মাথা ঢাকা হয়। আর আল জুয়ুব(الجيوب) শব্দটি জাইব(الجيب) শব্দের বহুবচন। তা হল বর্ম বা জামার একটি অংশ। সেটা হল কামিস। অতএব মহান আল্লাহ নির্দেশ দিয়েছেন ঘাড় ও বক্ষ আবৃত করে রাখো। এতে বুঝা যায় ঘাড় ও বক্ষ ঢেকে রাখা ওয়াজিব। আর তিনি চেহারা আবৃত করে রাখার নির্দেশ দেন নি। এতে বুঝা যায় চেহারা পর্দার মধ্যে নয়। এ কারনে ইবনে হাজম মুহাল্লার মধ্যে (৩/২১৬-২১৭) বলেছেনঃ আল্লাহ তায়ালা মহিলাদের বক্ষদেশে চাদর দ্বারা আবৃত করার নির্দেশ দিয়েছেন, এতে করে বুঝা যায় ঘাড় ও বক্ষ ঢাকা কর্তব্য এবং চেহারা খুলা রাখা বৈধ। এটা ব্যাতিত সম্ভব নয়।

তিনি এটা দ্বারা সুরা নুরঃ ৩০ আয়াতের প্রথম অংশের দিকে ইঙ্গিত করেছেনঃ

قُل لِّلْمُؤْمِنِينَ يَغُضُّوا مِنْ أَبْصَارِهِمْ وَيَحْفَظُوا فُرُوجَهُمْ

মুমিনদের পুরুষদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গর হেফাযত করে।[সুরা নুরঃ৩০]

এ আয়াতে জানা যায়, মহিলাদের কিছু অংশ খোলা থাকে, যার দিকে দৃষ্টি যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। এ কারনে আল্লাহ তায়ালা পুরুষদেরকে দৃষ্টি নত রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন। যেমন নবী (সঃ) বলেছেনঃ

তোমরা রাস্তায় বসা থেকে বেচে থাকো...যদি তোমাদের বসতেই হয় তাহলে রাস্তার হক আদায় কর। তিনি বললেন রাস্তার হক হল- চক্ষুকে নিচু রাখা, কষ্ট দেয়া হতে বিরত থাকা, সালামের উত্তর দেয়া, ভালো কাজের নির্দেশ দেয়া ও মন্দ কাজের নিষেধ করা।(সহিহ বুখারি ১১/৯, সহিহ মুসলিম ৭/৩, আবু দাউদ ২/২৯১)

নবী (সঃ) আরো বলেনঃ

হে আলী তোমার দৃষ্টিকে বার বার নিক্ষেপ কর না, কেননা প্রথমবার তোমার জন্য বৈধ, দ্বিতীয়বার বৈধ নয়।(সহিহ মুসলিম ২/৩৫২, আবু দাউদ ১/৩৩৫, তিরমিযী ৪/১৪)

জারীর বিন আবদিল্লাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি রাসুলুল্লাহ (সঃ)-কে অপ্রত্যাশিত দৃষ্টি যাওয়া সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেছিলাম। তিনি আমার চক্ষু ফিরিয়ে নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।(সহিহ মুসলিম ৬/১৮২,আবু দাউদ ১/৩৩৫, তিরমিজি ৪/১৪)

আল্লামা কুরতুবি(১২/২৩০) ও অন্যান্য মুফাসসিরগন

“তারা যেন মাথার কাপড় দ্বারা বক্ষদেশ আবৃত করে।”

এ আয়াত অবতীর্ণের কারন বর্ণনা করেছেন যে, সে যুগে মহিলারা তাদের মাথা চাদর দ্বারা আবৃত করতেন এবং পিঠের দিকে ঝুলিয়ে রাখতেন। তাতে গলা ঘাড় ও দুই কান অবশিষ্ট থাকত। পর্দা হত না। তখন আল্লাহ নির্দেশ করেন বক্ষদেশের উপর চাদর আবৃত কর।

অতঃপর মহান আল্লাহ বলেছেনঃ

وَلَا يَضْرِبْنَ بِأَرْجُلِهِنَّ لِيُعْلَمَ مَا يُخْفِينَ مِن زِينَتِهِنَّ

তারা যেন তাদের গোপন সাজ-সজ্জা প্রকাশ করার জন্য জোরে পদাচারন না করে।(সুরা নুরঃ৩১)

এ আয়াত প্রমান করে, মহিলাদের উপর তাদের পা ঢেকে রাখাও ওয়াজিব। কিন্তু তাদের কেউ পায়ের সৌন্দর্য তথা পায়ের মল পুরুষকে শব্দ শুনানো ব্যাতিত পড়তে পারে। তবে এটা সম্ভব হবে না কেননা এতে শরিয়তের বিধান প্রকাশ হবার ভয় আছে।

মহান আল্লাহ পূর্বে আলোচিত সুরা নুরের(৩০-৩১) আয়াতে অপরিচিত ব্যাক্তিদের সামনে মহিলাদের সৌন্দর্যের যা গোপন রাখতে হবে এবং যা প্রকাশ করা যাবে তা আলোচনা করেছেন। আর অন্য আয়াতে নির্দেশ দিয়েছেন তারা যখন ঘর থেকে বের হবে তখন নিজেদেরকে চাদর আবৃত করে নিবে। আল্লাহ বলেনঃ

يَا أَيُّهَا النَّبِيُّ قُل لِّأَزْوَاجِكَ وَبَنَاتِكَ وَنِسَاءِ الْمُؤْمِنِينَ يُدْنِينَ عَلَيْهِنَّ مِن جَلَابِيبِهِنَّ ۚ ذَٰلِكَ أَدْنَىٰ أَن يُعْرَفْنَ فَلَا يُؤْذَيْنَ ۗ وَكَانَ اللَّهُ غَفُورًا رَّحِيمًا [٣٣:٥٩]

হে নবী! আপনি আপনার পত্নীগণকে ও কন্যাগণকে এবং মুমিনদের স্ত্রীগণকে বলুন, তারা যেন তাদের চাদরের কিয়দংশ নিজেদের উপর টেনে নেয়। এতে তাদেরকে চেনা সহজ হবে। ফলে তাদেরকে উত্যক্ত করা হবে না। আল্লাহ ক্ষমাশীল পরম দয়ালু। [মুহিউদ্দীন খান] ‌[33:59]

যখন এ আয়াত নাযিল হয় তখন আনসারি মহিলাগণ মাথার পশ্চাদাংশ চাদর পরিহিত হয়ে বের হতেন। জিলবাব এমন ওড়নাকে বলা হয়, যা মহিলারা কাপড়ের উপর পরিধান করে।

চেহারা পর্দার অন্তর্ভুক্ত নয়। এটা অধিকাংশ উলামাদের অভিমত। যেমন ইবনু রুশদ বিদায়া(১/৮৯) গ্রন্থে বলেছেন, ইমাম আবু হানিফা, ইমাম মালিক, ইমাম শাফেয়ী তাদের অন্তর্গত। এক বর্নায় ইমাম আহমেদ তাদের অভিব্যক্ত করেছেন যা মাজমু গ্রন্থের(৩/১৬৯) পৃষ্ঠায় রয়েছে।

বিষয়: বিবিধ

১০৬৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File