হাসপাতালের জার্নাল ~ অরুণাচল দত্তচৌধুরী

লিখেছেন লিখেছেন বন্দু তোর জন্য ২২ জুলাই, ২০১৭, ১০:২২:২৮ সকাল

এই জার্নালে, কাব্য ভারাক্রান্ত কিছু দেব না এই রকমেরই ভাবনা ছিল। এমনিতেই মন খুব খারাপ। চাকরিতে ঢোকার সময় অবসরের জন্য আটান্ন বছর বয়স ধার্য ছিল। ভিআরএসএর অধিকারহীন এই চাকরির বাধ্যতামূলক বয়সসীমা বেড়েই চলেছে। এমতাবস্থায় স্বপ্ন দেখলাম জীবনানন্দ দাশ সরকারি ডাক্তার, তাঁর বয়স তেষট্টি পেরিয়েছে। রিটায়ারমেন্টের বয়স হেঁটে যাচ্ছে অনন্তের দিকে।

ঘুম ভাঙতেই কবিকে প্ল্যাঞ্চেটে ডাকলাম। সমান্তর পৃথিবী থেকে নেমে এসে তিনি লিখে দিয়ে গেছেন যা, সে'টুকু নীচে রইল।

------------------------------------------------------------------------

তেত্রিশ বছর ধরে আমি খেলা দেখাচ্ছি সরকারি সার্কাসে

মেডিকেল কলেজ থেকে সত্তরের বিভীষিকা দশক পেরিয়ে

অনেক ঘুরেছি আমি। ইন্টার্নশিপের সেই ধূসর জগতে,

সেখানে একবছর, আশা প্রহেলিকামাখা হাউসস্টাফ শিপেও

সে'খানে ছিলাম আমি। আরও ঘোর অনিশ্চিত চিকিৎসার রিঙএ,

আমি ক্লান্ত বাঘ এক, রিঙমাস্টারেরা শুধু চাবুক মারেন।

আমাকে দু'দণ্ড শান্তি দিলই না আজব এক হিটলারি ব্রেন।

মাইনে তার কবেকার ডিএ-হীন অতিদীন স্কেলে

চাকরির ক্ষেত্রটুকু মাননীয়াটির দেওয়া উস্কানির পর

আজ নিরাপত্তাহীন। সেই বাঘ হারিয়েছে দিশা

তবু অবসর-লোভ যখন সে চোখে দেখে সার্ভিস বুকের ভিতর,

তখনই ভবিষ্য দোলে অন্ধকারে, বুঝে যাই জেগেছে ভিলেন

বক্তৃতায় অতিদড় গলা যার… মাননীয়া শয়তানি ব্রেন।

তেষট্টি বছর পুড়ে ছাইভরা চিতার মতন

সন্ধ্যা আসে, মাথার মেধা ও স্মৃতি ক্রমশ বাতিল

পৃথিবীর সব রঙ নিভে এলে সিপিএ-র হয় আয়োজন

তখন কেসের ভয়ে ছানি-চোখ করে ঝিলমিল

মৃত্যুপথযাত্রী বাঘ… পাবই না, পেনশনে প্রাপ্য লেনদেন

থাকে শুধু অন্ধকার, মেরে ফেলে গিলবার শয়তানি ব্রেন।

বিষয়: বিবিধ

৫৭৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File