আমি আমার ইশ্বরের কথা বলে যাবো
লিখেছেন লিখেছেন অালোক ০৩ জুলাই, ২০১৭, ১০:১৯:৩৪ সকাল
আমি আমার ইশ্বরের কথা বলে যাবো
.
একই সাথে সরল এবং দুরূহ এক সংবেদন বিশ্বাস। দুরূহতর তার সাধনা-বিচার। বিশ্বাসের বিশ্লেষী সাধনা অনেককে করেছে অবিশ্বাসী। যেমন নিজের প্রথাগত পারিবারিক, সামাজিক, রাষ্ট্রিক বিশ্বাগুলোকে বিচার করে -- সংশয় ও একধরনের অবিশ্বাস ছাপিয়ে, ইতিহাসের অনেক প্রধান বিশ্বাসী --যেমন ইমাম গাজালী--হয়ে উঠেছেন প্রবল, অনুদ্বেল বিশ্বাসী। চিন্তার ইতিহাসে, বিশেষত বাঙলাদেশে, যথার্থ বিশ্বাস-সাধনা দুর্লভ। বাঙলাদেশের অধিকাংশ ধার্মিকের বিশ্বাস অাক্রান্ত হয়ে অাছে নানা রুগ্নতায়। অসুস্থতা সবসময় সংক্রামক ও খুবই সৃজনশীল।
অসুস্থ-বিকৃত ধর্ম-চর্চা উদ্ভাবন করেছে যে দুর্মর ব্যাধির তার নাম অবিশ্বাস।
এই বিকৃত ভূ-ভাগে বিশ্বাস ও অবিশ্বাস এভাবেই অাক্রান্ত করেছে একে অপরকে। বিশ্বাসের এই অসুস্থতায় রয়েছে নানা ঐতিহাসিক, সামাজিক ও মনস্তাত্ত্বিক কারণ। যেমন প্রথাগত অবিশ্বাসের উদ্ভবের পিছনে প্রধান ভূমিকা পালন করছে বিভিন্ন স্থূল উপাদান। বিভিন্ন কারণে অবিশ্বাসী হয়ে ওঠা বিখ্যাতদের নির্বোধ অনুকরণে গৌণ অবিশ্বাসীরা অবিশ্বাসের অভিনয় করছেন রুগ্ন ও অশিল্পিতভাবে।
নির্বিচার বিশ্বাস কখনোই যথার্থ হতে পারেনা।
কোরঅান তার বিশ্বাসীদের উৎসাহিত করেছে বিশ্বাসের বিশ্লেষ-যাচাইয়ে। 'ইবাদুর রাহমান' বা রাহমানের একান্ত বান্দাদের বৈশিষ্ট্য বর্ণনা প্রসঙ্গে কোরঅানে এসেছে,
"এবং তাদেরকে যখন তাদের প্রভুর নিদর্শনাবলী পাঠ করে শোনানো হয়, তখন তারা তার উপর হুমড়িয়ে পড়েনা অন্ধ ও বধির হয়ে।"
তেমনি কোরঅানিক বিশ্বাস ভাবনা নিন্দে করেছে অন্ধ, প্রথাগত বিশ্বাস-চর্চাকে।
বিভিন্ন প্রসঙ্গে ইশ্বরের অস্তিত্ব নিয়ে ভাবতে নিষেধ করা হয়েছে কোরঅান ও হাদিসে। সে নির্দেশ সাধারণের জন্য বলে মনে করেন অনেক বিশ্বাস-তাত্ত্বিক। যেমন, ইমাম গাজালী রহ.।
বিশ্বাসচর্চায় আমরা অভ্যস্ত নই। অভ্যস্ত হওয়া উচিত।
পাঠক, উপরের অালোচনাটি আপনাকে পাঠ করালাম একটি কবিতাকে কেন্দ্র করে। কবিতাটি লিখেছেন সময়ের অালোচিত কবি #অনিন্দ্য_আনিস।
তাহলে পাঠ করা যাক মুখ্য কবিতা!
.আমি আমার ঈশ্বরের কথা বলে যাবো
অনিন্দ্য আনিস
.
আমার ঈশ্বর কোথায় থাকে
জানেন না?
ঈশ্বর কোথায় থাকবে--তাঁর তো কোন
আকৃতি
নাই।
তা হলে--কি হলো?
অস্তিত্বহীনতা
কেমন করে সৃষ্টি লতায় জড়ালো
কেমন করে সৃষ্টি হলো
এই বিচিত্র মনোহর চিন্তাকর্ষণ পৃথিবী,
কার প্রেজেন্টেশন ?
মূর্খ লাদেন?
আকৃতিহীন অবস্থায় আমার ঈশ্বর জেগে
আছে।
তা হলে তাঁর রূপ।
বাতাসের দিকে তাকাও, বাতাসকে
দেখাও
আকাশের দিকে তাকাও আকাশকে
দেখাও
আকাশকে ছুঁয়ে দেখাও?
বাতাস ও আকাশ কেবলী অনুভব।
ঈশ্বর তাহলে কোথায়
ঈশ্বর আমার সবুজ শ্যামলীর ধান ক্ষেতে,
সোনালী নাড়ার ছাওনির কুড়ে ঘরে।
ঈশ্বর প্রতিটি মানুষের অন্তরে অন্তরে,
আমার ঈশ্বর কচি শিশুর মিষ্টি হাসির
মধ্যে।
তার শরীরের অপূর্ব বেহেস্তি গন্ধে,
ঈশ্বর কোথায়,
বৃদ্ধ দাদুর ঘর্মাট্য ললাটে
তার মুখের মৃদুগতির উচ্চারণে।
ঈশ্বরকে কি তাহলে কখন
দেখা যাবে না?
অবশ্যই, তিনি থাকেন আকাশের পর্বে
পর্বে বিনাস্ত
মাটির উপরে সবুজ অরণ্যে সুবিনাস্ত
মাটির নীচে অন্ধকারে মুখ লুকানো
আলোর মধ্যে
ঈশ্বর মানুষের প্রাণে প্রাণে, জনে
জনে অসংখ্য জনে।
তাঁর বসবাস সর্বত্রই,নিবিড় ছায়ার
সুবিনাস্ত
ঈশ্বর আমার শ্বাস প্রশ্বাস আমার অস্থি
কনা।
আমার শরীর নির্মানের কারিগর।
একটি ক্ষুদ্র পিপিলিকার মধ্যে আমার
ঈশ্বর
একটি ছোট্ট টুনটুনি,একটি বুলবুলির মধ্যে
আমার ঈশ্বর।
অসংখ্য অদৃশ্যের শক্ত হাত।
ঈশ্বর আমার ঈশ্বর।
.
সহায়তা :-
গড অ্যারাইজেজ
স্রষ্টা ও সৃষ্টিতত্ত্ব
বিষয়: বিবিধ
৬১২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন