ঈদ হোক স্রষ্টার সন্তুষ্টিতে।। ফারহান আরিফ।।
লিখেছেন লিখেছেন ফারহান আরিফ ২৪ জুন, ২০১৭, ০২:৩৬:৪৪ রাত
(ওমন) রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ/(তুই) আপনাকে আজ বিলিয়ে দে শোন/আসমানি তাগিদ/(তুই)পড়বি ঈদের নামাজরে মন/সেই সে ঈদগাহে/যে ময়দানে সব গাজি মুসলিম/ হয়েছে শহিদ।
ঈদ শব্দের অর্থ খুশি বা আনন্দ, প্রফুল্লতা অথবা মনের সজিবতা। ইসলামি পরিভাষায় 'ঈদ' শব্দের বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে। মুসলমানরা বছরে দুইদিন ঈদ উৎসব পালন করে থাকেন।আল্লাহর নির্দেশিত ইবাদতের মধ্যে রোজা হল অন্য ও ফজিলত মণ্ডিত এক ইবাদত। পবিত্র রমজানের শেষে আকাশসম আনন্দের বারতা নিয়ে আগমন করে ঈদের খুশি।
মুসলিম সংস্কৃতিতে পবিত্র ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহা সুষমামণ্ডিত ও ঐতিহ্যবাহী।
রাসুলুল্লাহ (সাঃ)মদিনায় যাওয়ার পর দেখতে পেলেন পাবলিক প্রভাবে শরতের
পূর্ণিমায় নওরোজ এবং বসন্তের পূর্ণিমায়
শিহরিজান উৎসব হয়ে চলেছে।এসবে নানান ধরনের আচার অনুষ্ঠান ইসলামী
রীতিনীতির পরিপন্থী এবং বিজাতীয় প্রভাবে প্রচলিত ছিল।
হযরত আনাস (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন '"মহানবী (সাঃ)যখন মক্কা থেকে ইয়াসরিবে গমন করেন,তখন তিনি দেখতে পান যে,ইয়াসরিববাসীরা( যাদের মধ্যে ইতঃপূর্বে ইসলাম গ্রহণ করেছিল) দুটি জাতীয় উৎসব পালন করে।আর এ জাতীয় উৎসব পালনারর্থে তারা খেল- তামাসা ও আনন্দানুষ্ঠানের আয়োজন করতো।`"রাসুল (সাঃ)তাদের জিজ্ঞেস করলেন, " তোমরা এই যে দুটি দিন জাতীয় উৎসব পালন করো এর মূল উৎস ও তাৎপর্য কী?"
তারা বলল,"ইসলামের আগমনের পূর্বে জাহিলিয়াতের যুগে আমরা এ উৎসব এমনি হাসি-খেলা ও আনন্দ উৎসবের মাধ্যমেই উদযাপন করেছি,
এখন পর্যন্ত সেটাই চলে আসছে।"'একথা শোনে রাসুল (সাঃ)বললেন "আল্লাহ তালা তোমাদের এ দুটি উৎসব দিনের পরিবর্তে এরচেয়ে উত্তম দুটি দিন-ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহা দান করেছেন।
অতএব পূর্বের উৎসব বাদ দিয়ে
এ দুটি দিনের নির্দৃষ্ট অনুষ্টানাদি পালন করতে শুরু কর।"
( আবু দাউদ ও সুনামে আহমদ)
মুসলমানদের জিবনে ইসলাম প্রদত্ত ধর্মীয় উৎসব হিসাবে দুটি ঈদ সৃষ্টিকর্তা কর্তৃক আমাদের জন্য আশির্বাদ সরূপ ও তাঁর সন্তুষ্টি লাভের উপায়।মুসলিম জাতীয়তাবোধ ও সার্বজনীন ভ্রাতৃত্ববোধ জাগ্রতকারী হিসাবে বিশ্ব মুসলমানের কাছে সর্বদিক দিয়ে অনন্য বৈশিষ্টের অধিকারী। ঈদুল ফিতর মানে রোজা ভাঙার ঈদ। মুসলমানেরা আল্লাহর নির্দেশে তাঁর সন্তুষ্টি লাভের আশায় দীর্ঘ এক মাস উপবাস থেকে আত্বসংযম ও সিয়াম সাধনার মাধ্যমে রোজা রাখেন।আর শাওয়ালের প্রথম তারিখে মার্জিত আনন্দের মধ্য দিয়ে ঈদ আনন্দ উপভোগ করেন। ঈদুল ফিতর মুসলমানদের সামাজিক ও জাতীয় জিবনে রয়েছে তাৎপর্যপূর্ণ ও সুদূরপ্রসারী ভূমিকা।পারিবারিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক মূল্যবোধ ও সাম্যতা গঠনে ঈদুল ফিতর এক অনন্য দৃষ্টান্ত হিসাবে অনাদিকাল থেকে চলে আসছে।কেননা ঈদুল ফিতর সমাজের নিরন্ন, বস্ত্রহীন, অসহায় মানুষ গুলোর আর্থিক দৈন্যতা গুছিয়ে দেয়।সমাজের গরীব মিসকিন ও নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য ইসলাম যাকাতের যেমন বিধান করেছে তেমনি করে ঈদুল ফিতরের দিন নামাজের পূর্বে সদকায়ে ফিতর ওয়াজিব করেছে।এ দিন সমাজের ধনাঢ্য ব্যক্তিরা অসহায়দের পাশে দাঁড়িয়ে সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের মলিন মুখে ফূটিয়ে তোলেন নির্মল হাসি আনন্দের তীব্র উচ্চাস।ঈদ একেক বয়সের মানুষের কাছে একেক রঙে ধরা দেয়।শিশুদের কাছে ঈদ মানে নতুন সাজে সজ্জিত হওয়ার স্বপ্ন।যুবকদের কাছে নতুন সাজে প্রভুর সামনে হাজির হওয়ার মজা।বয়স্কদের কাছে নতুনের মুখে হাসি দেখে আনন্দ অনুভব করা; প্রভুর কাছে আরেকটি দিনের নতুন হালখাতার হিসাব দাখিল করা।এভাবে আমাদের সবার ঈদ হোক সৃষ্টিকর্তার সন্তুষ্টি লাভের জন্যে,আমরা এনে দিব সমাজের অসহায় গরিব নিপীড়িত মানুষের হৃদয়ে প্রাণবন্ত হাসি।সাধ্যমত অনাথ এতিমদের দান করে ভাগাভাগি করব ঈদের সোনালি আনন্দ।সবার মন থেকে ধুয়ে যাক পাপ পঙ্খিলতা,অহংকার ও হিংসা। উঁচু নিচু একে অন্যকে বুকে নিয়ে ঝেড়ে দেই ভেধাভেদ।আমাদের সবার মনে জাগ্রত হোক সার্বজনীন ভ্রাতৃত্ববোধ,মমতা ও নিখুঁত ভালবাসা।
লেখক,তরুণ কবি ও সাংবাদিক।
বিষয়: বিবিধ
৬৯৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন