গরীবের হাতি পোষার বাজেট ২০১৭-১৮!
লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মাদ আলী ০২ জুন, ২০১৭, ০৬:১৯:৫৩ সন্ধ্যা
কিছুদিন আগে লোকাল বাসে একটা বিশাল সমস্যা ফেস করলাম। বাসের কন্টাক্টর আর এক যাত্রির মধ্যে তুমুল বাকযুদ্ধ চলছে।
বিষয় বাস ভাড়া। কন্টাক্টর ভাঁড়া চাইছেন ৯ টাকা কিন্তু যাত্রির দাবী, তিনি কিছুদিন আগে এই পথে গেছেন ৮ টাকা ভাঁড়া দিয়ে! কেউ কাউকে ছাড় দিতে রাজি নয়।
গরিবের যুদ্ধ, রাজনৈতিক হালচাল বুঝে না। অল্প সময়ে থেমে গেলো।
এক টাকার যুদ্ধে জয়ী ঘাম জরানো যাত্রীকে বললাম, “ ভাইয়া বাংলাদেশ ব্যাংকের হাজার কোটি টাকার রিজারব চুরির ঘটনা জানেন।
- শুনেছি ...... গেলে দেশের টাকা গেছে। আমাদের কি করার আছে!
- আপনার সব খরচের ১০০ টাকা থেকে ১৫ টাকা ওইখানে ছিল। মোবাইলে যা রিচারজ করেন তার প্রতি ১০০ টাকাতে ভ্যাট, সুদ-ঘুষ সহ ২০ টাকার বেশি ঐ ফান্ডেই যাই। জানেন?
উনি হা করে তাকালেন, যেন ভিন গ্রহের কোন প্রাণির মুখে রুপকথার গল্প শুনছেন...
যাই হোক, এখানে রূপকথার গল্প শুনাতে আসিনি।
বলছিলাম বাজেটের কথা। মাল মুহিত সাহেব হাস্য বদনে ২০১৭-১৮ বছরের বাজেট ঘোষণা করলেন ৪ লাখ ২৬৬ কোটি টাকা। রাজস্ব প্রাপ্তি ধরা হয়েছে ২ লাখ ৯৩ হাজার ৪৯৪ কোটি টাকা। বাঙ্গালি বচনে চমৎকার চমৎকার।
আমি অর্থনীতিবিদ নয়। অর্থনীতির ছাত্রও নয়। অর্থনীতির মোটা মোটা বইয়ের বিশ্লেষণ করতে পারবোনা।
কিন্তু দাম বাড়া কমা নিয়ে দু এক লাইন গাইতে পারি।
গরীবেরা বাজেটের আনন্দে কিছু করতে পারুক আর না পারুক অন্তত হাতি তো পুষতে পারবেন। কি বলেন মাল মুহিত সাব?
গ্যাসের দাম বাড়ছে তো কি হয়েছে?
এমনিতে আজকাল গৃহিণীরা রান্না ঘরে গিয়ে গান ধরে “গ্যাসের চুলা নিবু নিবু করে! ”
আমরা সূর্যের আলোতে রান্না করার জন্য গোপাল ভাঁড়কে আমন্ত্রণ জানাতে পারি।
কম্পিউটারের দাম কমছে তো।
গরীবেরা দিনরাত কম্পিউটার খাবে!
একটা কথা বলি,
প্রতি চার লাখে এক লাখ ঘাটতি, ক্যামতে কি?
আমি বলছিনা জটিলতা আছে। দেশে বিএনপি – জামায়াত থাকতে জটিলতা কোথাই?
শুধু গ্রেপ্তারের সংখ্যাটা বাড়াতে হবে। কেন্দ্রীয় নেতা হলে তো কথাই নেই, ৫-১০ লাখ!
পকেটের টাকা শেষ তো দলীয় একটাকে কতল করে কৌটা পূরণে নেমে পরুন জামায়াত শিবির গ্রেপ্তারে।
মাল মুহিত সাহেব একটা কথা ভুলেই গেলেন। ছাত্রলীগ খাতে কোন বাজেট দেখলাম না! তাদের মদ-গাঁজা, ইয়াবার ঘাটতি পুরন করবে কে?
কিছু দিন আগে আমাদের এলাকায় ওবাইদুল কাদেরকে সংবর্ধনা দিতে গিয়ে আওয়ামীলীগের বিশাল সমাবেশের আয়োজন করা হয়। ছোট বলে সমাবেশে যোগদানের জন্য মাত্র ৫০০ টাকা পাওয়ায় আমার স্টুডেন্ট বেশ মনঃক্ষুণ্ণ হয়েছিল!
হওরে বাঁধ নির্মাণে বাজেটের ৬৬ শতাংশ নাকি হাওয়া হয়ে গিয়েছিলো।
ছাত্রলীগ খাতে সরাসরি বাজেট না দিলে বাকি ৩৪ শতাংশও হাওয়া হয়ে যাবে।
ব্যাংকে এক লাখ টাকার বেশি রাখলেই কর!
মানুষ চোরের ভয়ে ব্যাংকে টাকা রাখবে।
ওমা ! আওয়ামীলীগ দেখি পূর্ব প্রস্তুতি হিসেবে আগেই সেখানে চোর ঢুকিয়ে রেখেছে।
প্রথম আলোর বাজেট নিয়ে আজকের “কে কি পেল” শিরনামঃ
সাধারণ মানুষঃ
-----------
আয়কর ---> ছাড় নেই
ভ্যাট দিতে হবে ---> ১৫%
ব্যাংকে টাকা রাখলে ---> কর দিতে হবে
বিনিয়োগকারীঃ
---------------
করপোরেট কর ----> ছাড় নেই
বিদ্যুৎ খাত ----> বরাদ্দ বেশি
ব্যবসা পরিচালনার ব্যয় ----> কমানোর প্রতিশ্রুতি
উৎপাদন খরচ ----> বৃদ্ধির আশঙ্কা
পেনশনারঃ
-----------
পেনশনের টাকা -----> অর্ধেক মিলবে
বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট ----> ৫%
পেনশন স্কিম -----> চালুর প্রতিশ্রুতি
নারীঃ
-----
বিশেষ তহবিল ----> নেই
কর ছাড় ----> নেই
তাতে কি!
আসুন অর্থ মন্ত্রণালয়ের সামনে মাল মুহিত সাহেবে একটা ভাস্কর্য ঝুলিয়ে দিই......
বিষয়: বিবিধ
৭১১ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন