আর কত বর্বরতা
লিখেছেন লিখেছেন সাইদুর রহমান সিদ্দিক ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ০৩:৪৯:৪৬ দুপুর
আমরা যদি মানুষ এবং সমাজকে বিভক্ত করি তাহলে অবশ্যই প্রাচিন যুগ মধ্য যুগ বর্তমান যুগে রুপান্তরিত করে বিভক্ত করবো। কিন্তুু আমরা সারাদিন রাত হিসেব কষে খাতার মাধুর্য নষ্ট করেও কখনও দুই শ্রেণীর ব্যক্তিকে কখনও তিন যুগে রুপান্তরিত করতে পারবো না। প্রথম শেণী হলো একজন আদর্শ শিক্ষক পরের শ্রেণীই হলো একদল সাংবাদিক।
.
মেধা বিকাশ সহ বড় বড় স্বপ্ন যার কাছ থেকে দেখা শুরু করে দেই সেটার প্রথম পর্যায়ে আছে একদল আদর্শ শিক্ষক। যাদের মাধ্যমে মেধা বিকাশিত করি তাদের মধ্যে হলো সাংবাদিক। এ দুই পেশা চলে এসেছে পৃথিবী সৃষ্টি থেকে। যেখানে ধর্ম বিভিন্ন হলেও প্রত্যেক জাতির জন্য রয়েছিল শিক্ষক এবং তার বাণী পৌছে দেওয়ার জন্য রয়েছিল একজন সহ বিভিন্ন মাধ্যম।
.
সমাজ বৈষম্য এর মতভেদ অনুযায়ী যাদের মনুষত্ব আছে তারা এই দুই শ্রেণীর লোকদের কখনও অপমান করতে পারে না। যদি কখনও এই দুই শ্রেণীর লোক কোন কারনে হেয় প্রতিপন্ন হয় তাহলে ধংস্বের মুখে পড়বে অর্থনীতি, রাজনীতি, সমাজ, সংস্কৃতি সহ বিশ্বের সব কিছু। সেই সাথে অপমান করা হবে সৃষ্টিকর্তা সহ তাদের বাণী পৌছে দেওয়ার মাধ্যেম কে।
.
আমি দেখেছি নিঃস্বার্থ ভাবে কঠোর পরিশ্রম করে হলেও শুধু মাত্র সমাজে একটু মাথা উচু করে দাড়িয়ে থাকার জন্য যে ব্যক্তিরা অক্লান্ত পরিশ্রম করে থাকে তাদের মধ্যে সাংবাদিক ছাড়া কিছুই পাওয়া যায় না। সংস্কৃতি সমাজ বাচিয়ে রাখার জন্য যে মানুষগুলির অবদান তারাই একজন আদর্শ সাংবাদিক। তারাই জাতির মেরুদণ্ড। তারাই জাতির ভবিষ্যৎ।
.
রাতের আকাশে যখন মিট মিট করে তারার আলো জলে, তখন আমরা বিভিন্ন শ্রেণীর লোকেরা একটু বিশ্রামের আশায় কুণো ঘরের আশ্রয় খুজতে থাকি। অবকাশ নেওয়ার জন্য বেছে নেই দামি দামি খাট পালং আর পরিবারের হাসিমাখা মুখের সৃতি, এক সময় গভীর ঘুমে আচছন্ন হয়ে যাই প্রতিক্ষায় থাকি কাক ডাকা ভোরের আলোর জন্য। এক সময় কোন রাজ প্রসাদের স্বপ্নে মগ্ন হয়ে হারিয়ে যাই দুর কোন দেশে।..... ঠিক সেই সময়ে একদল লোক কাজ করে, একদল লোক চেষ্টা করে আপনার কাক ডাকা ভোরটা যেন একটু অন্যভাবে কাটে, চেষ্টা করে দেশ বিদেশের নানা লিড দেওয়া খবরগুলো আপনার সকালের হাতে পৌছে দেওয়ার জন্য। তারা আর কেউ নয়, তারা হলো একদল সাংবাদিক। যাদের রাতের ঘুম ঠিকমত হয় না, দিনেও হয় না কোন অবকাশ যাপনের সময়।
.
আপনি সকাল শুরু করেন দু চার টাকা হকারকে দিয়ে দেন শুধুমাত্র নিত্য নতুন লিড নেওয়া খবরগুলো পড়ার জন্য। আপনি দু চার টাকা দিয়ে মগ্ন হয়ে যান একটি খবরের ভিতরের খবরে। কিন্তুু একটি বারেও হয়তো ভাবেন না কোন এক পেশাজীবি সাংবাদিক আপনার হাতের খবরটি পৌছে দেওয়ার জন্য কতই না পরিশ্রম করেছে। কতই না কষ্ট করের পিছনের খবরটি আপনার হাতে এনে পৌছে দিয়েছে__ কথায় আছে " কিছু কিছু সুর হয়তো আপনাকে পাগল করে দেয়, কিছু গান আপনার মনকে সান্তনা দেয়" আপনি হারিয়ে যান সুরের মোহে আপনি নিমিজ্জিত হয়ে যান কোন গানের কলির কাছে। সেই ধরনের সুখ দেওয়ার জন্য পিছনে অনেক মানুষ কাজ করে, তারা কখনও আপনার সামনে আসতে চায় না। সেই ধরনের লোকগুলো হলোই আমাদের দেশে শুধু না, সারাবিশ্বের সাংবাদিক। তারা সব সময় পিছন থেকে আপনাদের জন্য সমাজের জন্য সংস্কৃতির জন্য পরিশ্রম করে। হয়তে জানবেন তাদের সার্থকথা কোথায়..... তাদের একটু সার্থকতা রয়েছে সেটা হলো__ যখন আপনারা কোন নিউজ বা কোন কিছু জানার পর একটু হলেও খুশি হয়ে যান, তখনেই একজন সাংবাদিক নিজেকে খুশি মনে করে।
.
ছোটবেলায় দেখার সৌভাগ্য হয়নি কোন সাংবাদিক কে,শুধু শুনতাম বাবা মায়ের কাছে, দেখারও অনেক আগ্রহ হতো। সেই সাথে সাংবাদিকতা পেশাকে আমার মুল পেশা হিসেবে কাজ করার জন্য। যখন বড় হয়ে দু একজন আদর্শবান সাংবাদিকের সংস্পর্শ পেলাম তখন দেখলাম তাদের কষ্টগুলো, তাদের পারিশ্রমিক এর লে আউট গুলো, তাদের উপর ঝুকি সমুহ। একজন নিরাপত্তাকর্মী সরকারের কাছ থেকে নিরাপত্তা ঝুকি পেয়ে থাকে, কিন্তুু সেই স্টলেই একজন সাংবাদিক কর্মি খবর কাভার করলে কখনওই নিরাপত্তা ঝুকি পায় না। হয়তো পেয়ে যায় একটু খানি মানুষের জ্ঞানকোষে বাহবা করতালি পেয়ে যায়।
.
আমি আদিকাল মধ্যকাল নিয়ে একদমেই আপনাদের মাঝে ভাবিয়ে নিতে অভ্যাস্ত করবো না। আমি বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ এ কঠর বিশ্বাসী, তাই ছোট মাথায় দু কলম লিখে দিতে চাই। আজকের বিশ্বে যদি কারো কাছে ওৎ পেতে থাকি তাহলে নিশ্চয়ই যে কোন ইলেকট্রিক, ক্যাবল ও অনলাইন মিডিয়র উপর নির্ভর করে থাকি। আর এসব মিডিয়া আমাদের জনগণের জন্যই তৈরি হয় করা হয়, বস্ত নিষ্ঠ সত্য সংবাদ মাধ্যমের জন্য যে সব সাংবাদিক কাজ করে তারা আপনাদের মুখ ফিরিয়ে দেয় না, কিঞ্চিৎ হলেও একটু সুখের বাণী কিংবা দুঃখের বাণী প্রকাশ করে আপনাদের জন্য। আপনি সংবাদ দেখে হয়তো শান্তনাবোধ করেন, নয়তো আপনার মুখোশ উম্মচন করায় বিরোধিতা শুরু করে দেন। সেখানেও বিপদে পড়ে যায় একজন সাংবাদিক। হয়তো মিটে যায় আপনার ঝামেলা, নয়তো বা আপনার সংবাদ প্রকাশ করার জন্য সাংবাদিকেরেই উপর চড়াও হয়ে যান..... কি আজিব একটা পেশা তাই না...!
.
একদিন কোন কবিকে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিল কোন একজন সাংবাদিক, একজন বড় কন্ঠ শিল্পিকে সমাজের সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিল কোন একজন সাংবাদিক, একটি সত্য সংবাদকে সবার সামনে তুলে ধরেছেন যে ব্যক্তি সেটাই সাংবাদিক, একটি অপরাধকে সবার সামনে পরিচয় করে দিয়েছে যে ব্যক্তি, সেটাই সাংবাদিক..... আমি সাংবাদিকদের বি-পথে হাটতে দেখিনি কখনও, যদিও আজ মিডিয়ার অভাব নেই, মানুষের চাহিদা অনুযায়ী বাড়ছে মিডিয়া, বাড়ছে মিডিয়া কর্মি, বাড়ছে নিউজ এর মান তেমন বাড়ছে কর্মসংস্থান । কখনও বা দেখা যায় দু এক জায়গায় কোন সাংবাদিক বি-পথে হাটতে। তার পিছনে খুজলে দেখা যাবে কোন রাজনৈতিক ব্যক্তির হাত রয়েছে। আবার খুজলে দেখা যাবে প্রশাসনিক লোকের হাত রয়েছে। তার পরেও জীবন বাজি রেখে আপনাদের জন্য সত্য সংবাদ উপহার প্রতিনিয়তো তারা দিয়েই যাচ্ছে।
.
খুবেই লজ্জা লাগে, যখন কোন সাংবাদিক তার দেওয়া সুন্দর খবরটি পড়ার জন্য আগ্রহের সহিত পত্রিকা উল্টাতে থাকে, যখন দেখে অপর পৃষ্টায় বড় অক্ষরে লেখা রয়েছে " অমুজ জায়গায় সাংবাদিক কে হত্যার হুমকি..... অমুক জায়গায় সাংবাদিক হত্য। তখন একজন আদর্শ সাংবাদিকের মন কেমন করে উঠবে সেটা সেই ব্যক্তি ছাড়া কেউ বুঝতে পারবে না। হয়তো আপনিও সেদিন দু চার টাকা খরচ করে প্রতিদিনের মত সেই শিরোনামটিও পড়ে থাকেন। এটা যে সংবাদপত্রেরেই একটি খবর মনে করে। আবার একদিন হারিয়ে যায় সেই সংবাদটি, আবার নতুন নতুন খবরের জন্য হয়তো অপেক্ষা করতে থাকেন। এটাই যে নীতি এটাই আমাদের ধারা বটে।
.
দেশব্যাপী কিছুদিন পর পর খুবেই বাজে সংবাদ পাওয়া যায়, সেটা হলো একজন শিক্ষক লাঞ্ছিত একজন সাংবাদিক হত্যা। শুধু এগুলো খেলা দেখে যাবে সমাজ তা কেমন করে হয় বলুন। আমাদের সমাজের নীতি কি এই একটাই.....??? দু চার টাকা দিয়ে প্রতিদিন পত্রিকা পড়ি আর আনন্দ বেদনা বা সারা বিশ্বের খবর পড়ার জন্য.???? এতেই কি সাংবাদিক এর ঋণ শোধ হয়ে যায়..??? জানি উত্তর দিতে পারবেন না। আর আপনাদের উত্তর নেওয়ারও কোন অফশন রাখা হয়নি এখানে। জানি প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য হয়তো দু দিন রাজপথ বন্ধ করবেন, এক সকাল বা দু সকাল। তারপর আবার ঘরের কোণায় দু চার টাকা দিয়ে পত্রিকা কিনে পড়তে বসবেন।
.
আমি দোষারপ করি না কোন পাগলপ্রেমী পত্রিকা পড়ুয়া ভাই বোনদেরকে, আমি হেয় সমপন্ন করি না আপনারা যারা এখনও সত্য সংবাদ এর উপর নির্ভর করে থাকেন। বরং আমি স্যালুট জানাই আপনাদের, আপনারা পত্রিকা পড়েন জন্যই হয়তো আমাদের রুটি-রুজি এখনও দুনিয়াতে রয়েছে। আপনারা একটু বিনোদন উপভোগ করেন জন্যই আমরা সব সময় জীবন বাজি রেখে হলেও আপনাদের সত্য সংবাদ বিনোদন উপহার দিয়ে থাকি।
.
আমি ধিক্কার জানাই সেই সব লোক সকলের, যারা আজ নিজের সার্থ হাসিল করার জন্য, সাংবাদিক শ্রেণীর সকল পেশাজীবি লোকদের অপমান করে, যাদের জন্য সত্য সংবাদ সংবাদ প্রকাশ করার কারনে নিজেকেই পারি দিতে হয় ওপারে। আমি নাম প্রকাশ করে কোন সাংবাদিক এর কথা বলবো না,আমি নাম প্রকাশ করে কোন শিক্ষক এর কথা বলবো না। আমি এতটুকু বলবো..... সকল সাংবাদিক, সকল শিক্ষক হত্যার বিচার চাই। আমি আন্দলনও করতে বলবো না, কারন মিডিয়া কর্মি ও শিক্ষক সব সময় আইনের উপর নির্ভর করে থাকে।
.
টিকে থাকা মানুষ লড়ে যায়, আর একজন মিডিয়া কর্মি সব সময় অন্যের জন্য লড়ে যায়.... আমি সকলের রুহের আত্নার মাগফেরাত কামনা করি, সেই সাথে সব হত্যার বিচার এর জন্য পথপানে চেয়ে থাকলাম।
বিষয়: বিবিধ
৭২৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন