অবাধ প্রেমে জোয়ার-ভাটা

লিখেছেন লিখেছেন হাবীব জামিল ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ০৫:৩৬:১৯ বিকাল

বর্তমান সময়ের খুবই আলোচিত, সমালোচিত আর বেশিরভাগ বন্ধুদের আড্ডার একমাত্র বিষয় হলো - 'প্রেম'। ইয়োং বয়সীরা যেন আর কোন টপিক্স খুঁজে পায় না। এত গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয় নিয়ে না লিখে পারলাম না। আশা করি পুরো লেখাটি পড়বেন।

একটা ক্রম দিয়ে লিখা শুরু করলাম। কারোও ক্ষেত্রে ভিন্ন হতে পারে। তবে বেশিরভাগ এই ধারাবাহিকতা রক্ষা করে।

Fun > Emotional state > Caring > Sharing > Extreme Love > Blackmail > Uncontrol Life = Devil Succeed

সারমর্ম হয়তো বুঝে গেছেন। মিষ্টি মিষ্টি কথা দিয়ে শুরু। মজার মজার খুনসুটি। কারোও ক্ষেত্রে ইমোশনাল কথা দিয়েই শুরু হয়। জীবনের কোন একটা ঘটনা বা ছোট ছোট কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা। আমার ভাষায় এটাকে বলি "ইমোশনাল হিট"।

তারপর শুরু একে অপরের প্রতি খুব যত্নশীল হওয়া। এই স্টেইজে ছোট ছোট কেয়ারিং মনে হবে অনেক কিছু করে ফেলেছে। খাবারের আগে ফোন দিয়ে খেতে বলবে। খেয়ে আবার ফোন দিতে হবে। ঔষধ খেলো কিনা, শরীর খারাপ কিনা, খেয়ে কী করবে, নানান উপদেশ তো থাকবেই! হাজারোও প্রশ্ন থাকে এই স্টেইজে। মনে হবে ওর মতো যত্নশীল আর কেউ নেই। এমনও দেখেছি, নিজ মায়ের সাথে এতো যত্নে কথা বলেনি কখনো। প্রতি ঘন্টায় ঘন্টায় আপডেট জানানোর মানুষ পেয়ে যাওয়ায় মনে হবে ও খুব যত্নশীল।

শেয়ারিং স্টেইজের কিছু আলোচনা উপরে চলে আসছে। জীবনের করুন হিস্ট্রি গুলো একে অপরকে শেয়ার করবে। এই স্টেইজে আগের মতো ফান আর হবে না। সারাক্ষণ তাদের দুঃখের কথা বলতে বলতে কাটবে। জীবনের প্রতিটা দিনের ঘটনা মনে করে করে একজন আরেকজনকে বলবে। রবীন্দ্রনাথের ঐ উক্তিটার সাথে মিল - "শেষ হইয়াও হইলো না শেষ...."। দুঃখের নদে জোয়ার বয়ে যায়। মানে দুঃখের আর শেষ নেই।

এত বেশি যত্নশীল, এত বেশি মনের মিল আর কোথাও নেই। এখানেই আবেগ আনকন্ট্রোল হয়ে পড়ে। ভালোবাসা উতলে উঠে। জীবনের সঙ্গী খুঁজে পেয়ে আশপাশ ভুলে যায়। মনে করে পৃথিবীটা শুধুই ওদের দুজনার। কাছের ফ্রেন্ড গুলোকে দূরে ঠেলতে থাকে।

আবেগে অন্ধ হয়ে পড়ে। খুব বেশি আবেগপ্রবণ হয়ে একজন আরেকজনের জন্যই জন্ম মনে করে আবেগীয় কাজটাও সেরেও ফেলে অনেকে। শালীন ভাষায় লিখলাম। বুঝে নিতে হবে।

হুশ ফিরে আসে হঠাৎ কোন এক ঝড়ে। ঝড়টা অনেক ধরনের হতে পারে। বিয়ের চাপ থাকে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে। কঠিন বাস্তবতায় পড়ে জীবনের ঝড় সামলাতে অক্ষম। এবার শুরু হয় নতুন স্টেইজ।

ব্ল্যাকমেইল। একজন পিছুটান নিতে শুরু করে। আরেকজন ব্ল্যাকমেইল করে করে সম্পর্ক এগুতে থাকে। আরোও আবেগপ্রবণ মুহুর্ত আসতে পারে এখানে। জোয়ার-ভাটার উৎকৃষ্ট সময় এখন।

আনকন্ট্রোল লাইফটা এখনি। কোন কোন জুটির বিয়ে হয়ে থাকে। তবে দাম্পত্য জীবনের কলহ লেগেই থাকে। এটাই হওয়ার কথ। বেশির ভাগ বিচ্ছেদ ঘটে জীবনটাকে ধ্বংস করে ফেলে। পাপের বুঝা আর টানতে না পেরে কেউ কেউ মৃত্যু ঝুঁকি নিয়ে দুনিয়া ত্যাগ করে। পরিনতি একটাই। জীবন সাজাতে ব্যার্থ।

এতক্ষণের লিখা কোন কাজে না আসলেও কিছু মূল্যবান কথা আপনার জীবনে কাজে আসতে পারে। সবকিছুর ফলাফল এককথায় বলবো। তার আগে আরেকটু কথা বলে নিই।

লিখাটা হুবুহু কোন প্রেমের কাহিনীর সাথে নাও মিলতে পারে। তবে ঘটনা গুলো অনেকটাই এমন হয়। এটা একটা ফাঁদ। পড়লেন তো হেরে গেলেন। কাউকে ভালো লাগলে সরাসরি পারিবারিক ভাবে বিয়ে করে ফেলুন না!

আমাদের সমাজে একটা ব্যাধি আছে। অবৈধ প্রেমকে সমর্থন করা হয়। কিন্তু দুজনের প্রেম বিয়েতে রূপান্তরিত করাকে অনেকেই সমর্থন করে না। বিয়ের আগে দুজনে পরিবারের কাছ থেকে খরচ নিয়ে চলতে পারে। প্রেম জমিয়েও করতে পারে। বিয়ের করে ফেললো তো মরলো। সাংসারিক বোঝা মাথায় চাপিয়ে দিয়ে গার্ডিয়ান গুলো স্বস্তির নিঃশ্বাস ছাড়লো।

এই অবৈধ প্রেমকে বৈধ করে চুটিয়ে প্রেম করলে সমস্যাটা কোথায়? সামাজিক জটিলতা থাকায় কেউ কেউ আকাশ বাতাস সাক্ষী রেখে কাজ সেরে ফেলে নিজে নিজেই। হাস্যকর হলেও বিষয়টা এখন খুবই গুরুত্বের সাথে দেখা উচিৎ।

ধর্ষণের হার দিন দিন বড়ার মূল কারন আমি মনে করি বিয়ে কঠিন করে দেয়া। ধর্ষেণের নিউজ নেই, এমন কোন দিন দেখছি না। অনেক নীরব ধর্ষণ কোন নিউজ হয় না। পতিতালয় গুলো বৈধ হওয়ায় একদিকে রমরমা ব্যাবসা চলছে। আরেকদিকে বিয়ে কঠিন করে দিয়ে তরুণ সমাজকে অন্ধকারে ফেলে শয়তানের চেলাগুলো হাত চাপরাচ্ছে।

অবাধ প্রেমের ফলাফল বলেই আমার লেখার সমাপ্তি টানছি। প্রথমে খুনসুটি, কেয়ারিং, শেয়ারিং, গভীর প্রেম। তারপরেই শুরু হয় কিছুটা মনোমালিন্য। পরিণতি আনকন্ট্রোল লাইফ। সবশেষে এখন শয়তান নামের তৃতীয় জন সফল।

বিষয়: বিবিধ

৮৪৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File