প্রসঙ্গ : দুর্নীতি
লিখেছেন লিখেছেন সেইন তীরের বাসিন্ধা ২৭ জানুয়ারি, ২০১৭, ০১:৪৮:৩২ দুপুর
দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) জনগণের টাকায় পরিচালিত কমিশনটি স্বায়ত্তশাসিত। দুর্নীতি প্রতিরোধ ও দুর্নীতিবাজদের খোঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করাই এই কমিশনের পবিত্র দায়িত্ব ও কর্তব্য। একাজটি করতে ব্যর্থ অযোগ্য ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গকে এ কমিশনের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি বা অপসারণ করা কি জাতির জন্য মঙ্গলজনক নয়? কিন্তু 'রক্ষকই যখন ভক্ষক' আপনি বিচার চাইবেন কার কাছে? তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে যে কমিশনের নাম শুনলে ভয়ে অনেকের শরীরের লোম খাড়া কিংবা ঘুম হারাম হয়ে যেতো সেই দুদক যেনো এখন লুলা-ল্যাংড়া বা আন্ধা হয়ে মুখ থুবড়ে পড়ে আছে। কিন্তু কেন? এই প্রশ্নের উত্তর কি কারো জানা আছে?
আসুন 'প্রথম আলো' পত্রিকার তথ্য মতে দেখি বিগত ৭ বৎসরে উল্লেখযোগ্য কিছু দুর্নীতির পরিসংখ্যান। আর্থিক কেলেঙ্কারি তথা অর্থ-আত্মসাৎ বা চুরি হয়েছে ৩০ হাজার কোটি টাকারও বেশি। যা দিয়ে অনায়াসেই একটি পদ্মাসেতু নির্মাণ করা যেতো।
তার মধ্যে প্রথমতঃ ২০১০ সালে শেয়ারবাজার থেকে ক্ষমতসীন দলের কতিপয় প্রভাবশালী ব্যক্তি ও তাদের প্রতিষ্ঠান ১৫ হাজার কোটি টাকা লুটপুটে নিয়ে যায়। আমার মতো লক্ষ লক্ষ ক্ষুদ্র ইনভেস্টর সর্বস্ব হারিয়ে কেউ কেউ সংসার, পরিবার-পরিজন রেখে দেশছাড়া হয়েছিল। আবার অনেকে আত্মহত্যাও করেছিল। অথচ যার বিরুদ্ধে এখনও কোনো মামলা পর্যন্ত হয়নি। কারণ............।
দ্বিতীয়তঃ হলমার্ক-এর ৪৫০০ কোটি টাকা আত্মসাৎকারী তানভীর মাহমুদ ও জেসমিন ইসলামের বিরুদ্ধে বিচারাধীন মামলার কোন শাস্তি বা সুরাহা এখনো হয়নি। কারণ............।
তৃতীয়তঃ ডেসটিনি'র ৪১১৯ কোটি টাকা। কালপ্রিট রফিকুল আমীনের কোন সাজা হয়নি হবে বলেও মনে হয় না। কারণ...........।
চতুর্থতঃ বিসমিল্লাহ গ্রুপের ১১০০ কোটি টাকা। দস্যু খাঁজা সোলায়মান ও নওরীন হাসিবের বিরুদ্ধে মামলার কেউ কিছু জানেন? না জানবেনও না, কিচ্ছু হবেও না ওদের। কারণ...........।
পঞ্চমতঃ বেসিক ব্যাংকের ৪৫০০ কোটি টাকা শেখ ফজলুল হক বাচ্চু একাই খাইয়া ফালাইলো। একটা মামলা পর্যন্ত হলো না তার বিরুদ্ধে।কারণ............।
ষষ্টতঃ বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের ৮০০ কোটি টাকা গায়েব। কোন হদিস নাই। কোন মামলা নাই। কারণ............।
উপরোক্ত দুর্নীতি সমুহের একটিরও কোনো সুষ্ঠ তদন্ত হয়নি, কেউ কোনো শাস্তিও পায়নি, এর কারণ কি?
এর চাইতে আর কত বড় দুর্নীতি করলে দুদক জনগণের হয়ে লড়বে?
শিক্ষায় দুর্নীতি,পরীক্ষার পূবর্ে প্রশ্নপত্র পাশ হচ্ছে। চাকুরীর বাজারে বানিজ্য চলছে, এমনকি মানুষের আবেগ-অনুভুতির জায়গা ক্রিকেটেও দুর্নীতি হচ্ছে। দুর্নীতি এখন সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ছড়িয়ে পড়েছে। লক্ষ্য করুন, দুর্নীতির চেইন কতটুকু লম্বা হলে একজন প্রভাবশালী মন্ত্রী বলতে পারেন--"কাজ দ্রুত এবং সহজ করার জন্য কেউ কাউকে ঘুষ দেয়া দোষের কিছু না।"
দুর্নীতি একটি ভয়ানক ব্যাধি, এ মহামারী থেকে জাতি মুক্তি চায়। তাই আসুন দুর্নীতিকে সবাই এক বাক্যে 'না' বলি। নিঃসন্দেহে আমরা একটি গর্বিত জাতি। এ গর্বিত জাতিকে যারা বহির্বিশ্বের কাছে বার বার ঘুষ ও দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ান বানালো, ভবিষ্যত প্রজন্ম তাদেরকে কিছুতেই ক্ষমা করবে না।
বিষয়: বিবিধ
৯২৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন