মেয়েটি বড্ড অভিমানী ছিল
লিখেছেন লিখেছেন ব্লগার সুয়েব ০২ মে, ২০১৭, ০৮:৩৬:০৭ রাত
শুক্রবার ছুটির দিন এইদিন অফিস বন্ধ থাকে আমার জুম্মার নামাজ
পড়ে এসে বাসায় বসে বই পড়তেছিলাম। হঠাত্ ফোনটা বেজে উঠলো
ফোনটা রিসিব করতেই এক
মধ্যবয়সী মহিলার কান্নার
আওয়াজ পেলাম। মহিলাঃ তুমি কি সুয়েব?
আমিঃ হ্যাঁ, কেন?
মহিলাঃ আমি জান্নাতের মা একটু কি আসবে বাবা আমাদের বাড়িতে
জান্নাত না তোমার উপর খুব অভিমান করে শুয়ে আছে কিছুই খাচ্ছে না
একটু কি আসবে বাবা।
. কি বলবো ভেবে পাইতেছিলাম মেয়েটি সত্যি পাগল হয়ে গিয়েছে। আজ
যাই ওর বাসায় তারপর মজা দেখাবো ফাজলামি করে না।
.
বাসায় থেকে বেরিয়ে পড়ি জান্নাতের বাসায় যাওয়ার জন্য। হঠাত্ বুকের
বামপাশে চিন চিন ব্যাথা অনুভব করলাম পিছনে কেউ আমাকে চিৎকার
করে ডাকছিল কিন্তু আমি দাঁড়াইনি। দৌঁড়াতেই থাকলাম।
.
মাঝ রাস্তায় মনে হলে কিছু একটা একটা কিনে নিয়ে যাই পাগলি টির
জন্য তাই পাশের দোকান থেকে অনেক গুলো চকলেট কিনে নিয়ে আবার
যাওয়া শুরু করলাম।
. জান্নাতের বাসার পাশে আসার সাথে মনটা যেন কিছু একটা হারিয়ে
ফেলেছে এইরূপ মনে হচ্ছে ।
.
জান্নাতের কথা গুলি বার বার মনে পড়তেছিল।
কিছু দিন আগে ফোন দিয়ে বলেছিল সুয়েব ভাইয়া তুমি কি আমাকে বিয়ে
করবে । .
উওর বলেছিলাম আমার তো আর মাথা খারাপ হয়নি যে তোকে বিয়ে
করবো।
.
জান্নাত আবারও বললো ঠিক আছে এতো ভাব নিতে হবে না যেদিন আমি
পৃথিবী ছেড়ে চলে যাব তখন বুঝতে পারবে আমি কত ভাল ছিলাম। .
ওর কথাগুলো আমাকে লজ্জিত করে দিল ।
কিন্ত জবাব দেয়ার কোন ভাষা আমার অভিধানে মওজুদ ছিল না।
.
এইসব কথা ভাবতে ভাবতে চলে আসলাম
জান্নাতের বাসার কাছে। .
বাসার কাছে এসেই দেখি প্রচুর ভিড় এতো মানুষ দেখে মনটা কেঁপে
উঠলো কিছু বুঝতে পারছি না।
একটু সামনে এগিয়ে গেলাম গিয়ে দেখি জান্নাতের আম্মু কান্না করতেছে
কি হয়েছে জিগ্যেস করার মতো সাহস বুকের মধ্যে নেই!
. জান্নাতের আম্মু এগিয়ে এলেন আমার দিকে
এগিয়ে এসে বললেন তুমি সুয়েব না?
আমি মাথা নাড়ালাম জ্বি।
জান্নাত তো বাবা চলে গিয়েছে খুব অভিমানী মেয়েটি আমার ।
.
মুখ থেকে কথা বেড় হতেছে না। জান্নাতের আম্মু আরও বললেন মেয়েটি তোমাকে খুব বেশি ডিস্টাব
করতো তাই না বাবা এখন থেকে আর তোমাকে জান্নাত ডিস্টাব করবে
না ও আল্লাহ ডাকে সারা দিয়ে চলে গিয়েছে।
.
আর তোমাকে অনেক কথা বলে গিয়েছে তুমি জীবনটাকে নিজের মতো
করে সাজিয়ে নিতে। ও চলে যাবার পর একদম কাঁদবে না এই কথা বলে গিয়েছে আর নিজের
খেয়াল রাখতে।
আর পাড়লে ওকে ক্ষমা করে দিয়।
.
কি বলবো মুখ থেকে কোন কথা বেড় করতে পারতেছি না ভাষা হারিয়ে
ফেলেছি । .
মুহূর্তের মধ্যে দুই চোখ জলে বড়ে গিয়েছে।
হাত থেকে চকলেটের বেগ মাটিতে পড়ে গেলো।
.
সোজা দৌঁড়ে গেলাম জান্নাতের কাছে গিয়ে আস্তে করে বললাম এই
জান্নাত দেখ তোর সুয়েব ভাই এসেছে তোকে দেখতে একবার চোখ মেলে দেখ।
এই জান্নাত উট না প্লিজ আমাকে ক্ষমা করে দেয় আর তোকে কখন
গালি দেবো না।
প্লিজ একবার উটে দেখ ।আমার ভুল হয়েছে রে ক্ষমা করে দেয়।
.
জান্নাতের ছোট ভাই কাছে এসে বললো ভাইয়া আপুর এই ডাইরী আপনাকে দিতে বলেছেন । ডাইরী হাতে নিয়েই প্রথম পিস্টা খুলে দেখি
লিখে রেখেছে। সুয়েব ভাই কেমন আছেন জানি আপনি আসবেন আম্মুকে
বলে রেখেছি আপনারা কথা । জানি আপনি খুব রেগে আছেন আমার উপর
অনেক ডিস্টাব করেছি আপনাকে আসলে সত্যি বলে কি জানেন ভাই
আপনাকে প্রথম যেদিন দেখেছিলাম খুব ভাল লেগেছিল কংকালের মতো
একটি ছেলে এতো ভাব আপনার !যাই হউক আপনার সাথে কথা বলতাম এইজন্য আপনি শিবির করেন আর শিবিরের ছেলেরা খুব ভাল আমি
জানি। যেমন আপনি।
.
আর হা একটু হাসেন না আপনার হাসি খুবই সুন্দর আরও একটি কথা
আপনাকে বলতেই তো ভুলে গিয়েছি। আপনার বিয়ে দেখার খুব শখ ছিল
কিন্তু দিন দিন শরীর যে অবস্থা মনে হয় না দেখতে পারবো। .
আচ্ছা ভাই শুনলাম মিমি নামের মেয়েটি নাকি
তোমায় ভালোবাসে? মেয়েটির পুরো নাম কি জানি না তবে মনে হয়
মিমি। শুনেছি মেয়েটি নাকি খুব সুন্দর আর মুটা ।
.
আমি কিন্তু এটাই চেয়েছিলাম যে আমি চলে যাবার পড় তোমাকে কেউ ভালোবাসুক, তোমার জীবনটাকে
নিজের মতো করে
সাজিয়ে নিক। আমার কথা ভেবে ওকে দূরে ঠেলে দিও না, ও কিন্তু।
আল্লাহ হাফিজ।
.
ডাইরী পড়ে মনে হলো অকাশ ভেঙে পড়েছে আমার মাথায় কিছু বলতে পারতেছিনা না।
খুব চিত্কার করে বলতে ইচ্ছা করতেছে।
জান্নাত ফিরে আয় একটি বারের জন্য এই
ভাইটির সাথে কথা বলে যায়.বড় ভুল করে ফেলেছি আমি ক্ষমা করে দেয়
আমাকে.লাইফে কত মানুষ দেখিছি সবাই তোর মতো নয় রে যাকে
সবচেয়ে বেশি আপন ভাবতাম সেও মিথ্যা ছিল রে.শুধু তুই একজন ছিলি রে আমাকে বুঝতে পারতি আর কেউ এখন আমাকে বুঝতে পারেনি। আজ
বুঝতে পারতেছি তুই কি ছিলি..তুই একজনই ছিলি সামান্যতম মাথা
ব্যাথা হলে পাগল হয়ে যেতি দেখ কি আজব বেপার যে আমাকে নিজের
আপনজন মনে করতো তাকে আমি দূরে সরিয়ে দিতাম।
আর যে সারাক্ষণ অভিনয় করে গিয়েছে আমার সাথে তাকে খুব সহজেই
বিশ্বাস করে ফেলিছিলাম। সত্যি খুব বড় ভুল করে ফেলেছি খুব মনে পড়তেছে তোকে আজকের এইদিনে তোকে খুব প্রয়োজন ছিল তোর
বিষয়: বিবিধ
১১৩১ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন