মিডিয়াতে অপপ্রচার ও আমাদের দায়িত্ব - ইউনুছ আব্দুদ্দাইয়ান
লিখেছেন লিখেছেন ব্লগার সুয়েব ২২ জানুয়ারি, ২০১৭, ০৫:১০:০৬ বিকাল
আগেকার দিনে চিঠি বা দূত পাঠিয়ে সংবাদের আদান প্রদান হতো।
আল্লাহর রাসূল (সা) মাঝে মধ্যে পাহাড়ের উপরে উঠে গুরুত্বপূর্ণ বার্তা
প্রদান করতেন যাতে করে দুরবর্তী লোকেরাও তাঁর কথা শুনতে পায়
এবং তাঁকে দেখতে পান। রাসূলে কারীম (সা) মাঝে মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ
বিষয় মাটিতে লাঠি দ্বারা চিত্র অংকন করে সাহাবায়ে কেরামকে
বুঝাতেন। কালপরিক্রমায় প্রিন্টেড ও ইলেক্ট্রনিক এই দুই ধরনের মিডিয়ার সাথে আমরা পরিচতি হই। বর্তমানে এর সাথে যোগ হয়েছে
অনলাইন ও সোশাল মিডিয়া। মূলত সংবাদপত্র, রেডিও, টেলিভিশন,
লিফলেট, পোস্টার, ওয়েবসাইট প্রভৃতির মাধ্যমে ঘরে বসেই বিশ্বের
বিভিন্ন প্রান্তের খবর জানা যায়। বিশেষভাবে অনলাইন ও ইলেক্ট্রনিক
মিডিয়ার মাধ্যমে যেকোন সংবাদ বিশ্বের আনাচে কানাচে অতিদ্রুত
ছড়িয়ে দেয়া সম্ভব। এরফলে জনমত গড়ে উঠে। আরব বসন্তের কথা আমরা জানি। আরব বসসন্ত ও পরবর্তীতে পৃথিবীর কয়েকটি দেশে
সরকার পরিবর্তনে কিংবা সরকার বিরোধী বিক্ষোভে জনমত গঠনে
সোশাল মিডিয়া তথা টুইটার, ফেইসবুক ও ব্লগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা
পালন করে। আজকের তরুণ সমাজ অনলাইন মিডিয়ার প্রতি বেশি
আকৃষ্ট। অডিও, ভিডিও, কার্টুন ইউটিউবই ইন্টারনেটে প্রকাশিত
পরিসংখ্যান অনুসারে বিশ্বের প্রায় ৮০% মানুষ টেলিভিশন দেখে। অতএব, মিডিয়া বর্তমান বিশ্বকে কিভাবে নিয়ন্ত্রণ করছে তা বলার
অপেক্ষা রাখেনা। জিম মরিসন যথার্থই মন্তব্য করেছেন যে,
Whoever controles the media- controls the mind.
মিডিয়া কোনো একজন ব্যক্তি, বা সংগঠন কিংবা দেশের ইমেজ
বৃদ্ধি বা নষ্ট করার ক্ষেত্রেও বিরাট ভূমিকা পালন করে। একজন
ভালো মানুষও মিডিয়ার অব্যাহত অপপ্রচারের ফলে বিশ্বের কোটি
কোটি মানুষের কাছে খারাপ মানুষ হিসেবে পরিচিত হতে পারে। আমরা
দেখি অনেক সময় অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হারিয়ে যায় মিডিয়া
কভারেজের অভাবে। আর মিডিয়া কভারেজ পেয়ে অনেক নন ইস্যুও ইস্যুতে পরিণত হতে সময় লাগেনা। অখ্যাত যে কোনো ব্যক্তি
মিডিয়ার কভারেজ পেয়ে বিশ্ব পরিচিতি লাভ করতে পারে।
আফগানিস্তানের কিশোরী মালালা মিডিয়ার বদৌলতেই বিশ্বে এতো
খ্যতি অর্জন করেছেন। অথচ মালালার মতো লাখো শিশু-কিশোর
পৃথিবীর আনাচে কানাচে নানাভাবে নির্যাতিত হচ্ছে তার খবরও কেউ
জানেনা। মিডিয়ার প্রচারণার ফলেই অল্প সময়ে মানুষের মধ্যে কোনো আদর্শ জনপ্রিয়তা লাভ করতে পারে। আবার কোনো
আদর্শ সম্পর্কে মানুষের মধ্যে সন্দেহ ও সংশয় সৃষ্টি হতে পারে।
এভাবে বিশ্বজনমত গঠনে মিডিয়া গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে
আসছে।
কিন্তু দু:খজনক বাস্তবতা এই যে বর্তমান বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ
সংস্থাগুলো ইহুদীদের নিয়ন্ত্রণে। রয়টারের ৮০% কর্মকর্তা-কর্মচ
ারী ইহুদী। এসোসিয়েট প্রেস (এপি) এর ৯০% পুঁজিই ইহুদীদের।
আমেরিকান ব্রড কাস্টিং কর্পরোরেশান (এবিসি), ন্যাশনাল ব্রড
কাস্টিং সিস্টেম (এনবি এস), ক্যাবল নিউজ নেটওয়ার্ক (সি এন এন),
ফ্রান্স নিউজ এজেন্সেী, বিবিসি প্রভৃতি সংবাদ সংস্থা ইহুদী নিয়ন্ত্রিত। অঅন্তর্জাতিক গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ পত্রের মধ্যে লন্ডন
টাইমস, ম্যাঞ্চেস্টার গার্ডিয়ান, অবজারভার প্রভৃতি পত্রপত্রিকাও
ইহুদী নিয়ন্ত্রণাধীন। ইহুদীরা মুসলমানদের এক নম্বর শত্রু। তাই
আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমে মুসলমানদেরকে মৌলবাদী
(Fundamentalist), সাম্প্রদায়িক (Communal) বর্বর সন্ত্রাসী
(Terrorist) হিসেবে চিত্রিত করে বিশ্বব্যাপী ইসলামের নবজাগরণ ঠেকাতে চায়। মুসলিম দেশগুলোতেও তাদের দালালরা একই পরিভাষা
ব্যবহার করে ইসলাম, ইসলামী অন্দোলন ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে
মিথ্যা প্রচারণায় লিপ্ত রয়েছে। পাশ্চাত্যের মিথ্যা প্রচারণায়
মুসলমানরা আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদের শিকার হয়েও উল্টো
‘টেরোরিস্ট’ হিসেবে চিহিৃত হচ্ছে।
মিডিয়ার গুরুত্ব সম্পর্কে বর্তমানে কাউকে বুঝাতে হবে বলে আমার
মনে হয়না। ইসলামের বিরোধিতা যেভাবেই করা হোকনা কেন তার
মোকাবিলায় ভূমিকা পালন করা মুসলমানদের উপর অপরিহার্য। যদি
মিডিয়ার মাধ্যমে ইসলামের বিরোধিতা করা হয় তাহলে মিডিয়ার
মাধ্যমে তার জবাব দিতে হবে। যদি সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে
বিরোধিতা হয় সংস্কৃতির মাধ্যমে তার জবাব দিতে হবে। যদি বুদ্ধিবৃত্তিক কুট কৌশলে বিরোধিতা হয় বৃদ্ধিবৃত্তিক কুটকৌশলের
মাধ্যমে তার জবাব দিতে হবে। কলমের মাধ্যমে বিরোধিতা হলে
কলমের মাধ্যমে জবাব দিতে হবে। মিডিয়া অপপ্রচারের জবাব মিডিয়ার
মাধমে না দিয়ে অন্যভাবে দেয়া যায়না। এই প্রসংগে আল্লাহ তায়ালা
ইরশাদ করেন, “শত্রুর মোকাবিলার জন্য যত বেশি সম্ভব যুদ্ধ
সরঞ্জাম ও সদাপ্রস্তুত অশ্ব বাহিনী সংগ্রহ করে রাখো। এসব নিয়ে তোমরা আল্লাহর শত্রুদের এবং তারা ছাড়া আরও কিছু লোককে
যাদের তোমরা চেননা, আল্লাহ চেনেন, ভীত ও সন্ত্রস্ত করে দিতে
পারবে। এ লক্ষ্য অর্জনের জন্য তোমরা আল্লাহর পথে যা কিছু ব্যয়
করো তা তোমরা পুরোপুরি ফেরত পাবে। তোমাদের উপর
কোনোক্রমেই যুলম করা হবেনা’ -আনফাল ৬০।
.
আল্লাহ তায়ালা এখানে কুওয়াত বা শক্তি অর্জনের কথা বলেছেন।
বর্তমানে আধুনিক যে সমরাস্ত্র আছে তার শক্তি, জ্ঞানের শক্তি,
অর্থনৈতিক শক্তি সবই এর অন্তর্ভুক্ত। আল্লাহর রাসূলের যুগে তীর
ও অশ্ব যুদ্ধের জন্য প্রয়োজন ছিল তাই তিনি তা সংগ্রহ করেছেন।
তাঁর সময় বৈষয়িক প্রস্তুতি কাফেরদের তুলনায় কম থাকলেও এমনটি
কখনও হয়নি যে, তিনি আদৌ কোনো প্রস্তুতি গ্রহণ করেননি। তাই ইসলাম বিরোধীদের অপপ্রচার মোকাবিলায় বিকল্প মিডিয়া করার
প্রস্তুতি গ্রহণ এবং তার বাস্তবায়নে চেষ্টা করা মিডিয়া জিহাদের
অন্তর্ভুক্ত। আফসোসের বিষয় হচ্ছে, অনেকেই মুসলমানদের শক্তিশালী মিডিয়া
নাই কেন তার জন্য নানা ধরনের প্রশ্ন করছেন। অথচ তাঁদের সামনে
যখন মিডিয়ার কোনো প্রজেক্ট প্রস্তাবনা দেয়া হয় তখন তাঁরা বলে
বসেন, “টাকা মিডিয়াতে ইনভেস্ট করলে কি লাভ হবে”? অমুক
ব্যবসাতে খাটালে এতো % লাভ হবে। আমি মনে করি শুধু নগদ
জাগতিক লাভ নয় বরং মিডিয়া চ্যলেঞ্জ মোকাবিলায় মুসলিম ব্যবসায়ীদের একটি অংশকে আন্তর্জাতিক মানের অনলাইন, প্রিন্টেড
ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া প্রতিষ্ঠা করা ও ইতোমধ্যে প্রতিষ্ঠিত
মিডিয়া উদ্যোগসমূহকে সহযোগিতা করার জন্য এগিয়ে আসতে হবে।
বর্তমানে ইলেক্ট্রনিক ও প্রিন্টেড কিছু মিডিয়াতে ইসলাম ও
মুসলমানদের অবস্থা তুলে ধরার চেষ্টা করা হচ্ছে কিন্তু তা
প্রয়োজনের তুলনায় নেহায়েতই কম। তবে ইউরোপে এখনও মূলধারার কোনো মিডিয়া মুসলমানদের নেই বললেই চলে। তাই মুসলমানদেরকে
এই দিকে গুরুত্বের সাথে নজর দেয়া উচিত। এছাড়া প্রতিনিয়ত মিডিয়াতে ইসলাম সম্পর্কে অনেক প্রশ্ন উপস্থাপন
করা হয়। সে সম্পর্কে ভারসাম্যমূলক জবাব আসা দরকার। কিন্তু
এক্ষেত্রে মুসলমানদের তেমন কোনো স্পোকসম্যান নেই। তাই
মিডিয়াতে ভারসাম্যমূলক বক্তব্য তুলে ধরার মতো যোগ্য লোক
তৈরি করতে হবে। মিডিয়াতে নেতিবাচক প্রচারণার ফলে অনেক মানুষ
বিভ্রান্ত অবস্থায় রয়েছে। তাই মুসলিম হিসেবে আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে ইসলামের প্রকৃত রূপ মিডিয়াতে তুলে ধরা। কিন্তু কারো কারো
প্রবণতা হচ্ছে বসে বসে শুধু সমালোচনা করা। আমাদেরকে মনে রাখতে
হবে যে, সমালোচনা করা সহজ কিন্তু বাস্তব উদ্যোগ গ্রহণ করা
এবং উক্ত উদ্যোগকে সফল করা কঠিন। এছাড়া মিডিয়াতে ভূমিকা
রাখার মতো যাদের যোগ্যতা আছে তারা প্রতিনিয়ত লেখা-লেখি করা
এবং শক্তিশালী মিডিয়া প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহণ করা সময়ের দাবি। মিডিয়া কর্মীদেরকে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করা দরকার। আর
মুসলমানদেরকেও নিজস্ব মিডিয়া তৈরি করার প্রতি সিরিয়াস হতে হবে
এবং মুসলিম মিডিয়া কর্মীদেরকে মেইনস্ট্রিম মিডয়াসমূহে কাজ করার
প্রতি আগ্রহী হতে হবে। পাশ্চাত্যের মিডিয়ার নেতিবাচক প্রচারণার
ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করা মিডিয়া চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার আসল
পথ নয়। এর আসল জবাব হচ্ছে ‘বিকল্প শক্তিশালী মিডিয়া’।
.
মিডিয়াতে ইসলাম সম্পর্কে নেতিবাচক প্রচারণার ইতিবাচক ফলও
রয়েছে। পাশ্চাত্যের অনেক চিন্তাশীল মিডিয়াতে ঢালাওভাবে ইসলাম
সম্পর্কে বিষোদাগার করায় তারা ইসলাম সম্পর্কে জানতে আগ্রহী
হয়ে উঠেন এবং তাদের মনের নানা প্রশ্নের জবাব অনুসন্ধান করতে
গিয়ে সত্যের সন্ধ্যান খুঁজে পান। এছাড়া মুসলমানদের একটি অংশ যারা
ইসলাম ভালোভাবে জানতোনা তারা সহকর্মী ও বন্ধুদের নানা প্রশ্নের সঠিক জবাব জানতে গিয়ে নিজেরা ভালোভাবে ইসলাম জানার
চেষ্টা করছে। এরফলে যেসব মুসলমান আগে ইসলাম অনুশীলন করতেননা
তাঁরা ইসলাম অনুশীলন শুরু করেন। যেসব মুসলিম মহিলা আগে হিজাব
পরিধান করতেননা তাঁরা হিজাব পরিধান করা আরম্ভ করেন। তাঁদের
মাঝে ইসলামের প্রতি মহব্বত ও আকর্ষণ অনেকগুণ বৃদ্বি পাচ্ছে। ইসলাম সম্পর্কে মিডিয়ার নেতিবাচক প্রচারণার ফলে অমুসলিম
চিন্তাশীলদের কেউ কেউ কুরআন অধ্যয়ন শুরু করেন এবং ইসলামের
প্রতি আকৃষ্ট হন। এই প্রসংগে একটি ঘটনা উল্লেখ করছি। ২০০৯
সালের এপ্রিল মাসে আমি অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি
সেমিনারে অংশ গ্রহণ করি; তুরুষ্কের ততকালীন প্রধানমন্ত্রী ও
বর্তমান প্রেসিডেন্ট এরদোগান উক্ত সেমিনারে মূল বক্তা ছিলেন। রাত দশটার দিকে সেমিনার শেষ হওয়ার পর লন্ডন ফেরার পথে
অক্সফোর্ড বিশ্বদিল্যায়ের একজন ছাত্রী ও দুইজন ছাত্রের সাথে
পরিচয় হয়। আলাপ আলোচনার এক পর্যায়ে জানলাম উক্ত ছাত্রীর
নাম মারইয়াম এবং সে নও মুসলিমাহ। আমি তার কাছে ইসলাম গ্রহণ
করার প্রেক্ষাপট সম্পর্কে জানতে চাইলাম। প্রতি উত্তরে সে জানায়
যে তার বাড়ি ফ্রান্সে। তার পিতা-মাতা ও পুরো পরিবার প্রচ-ভাবে মুসলিম বিদ্বেষী ছিল। ৯/১১ এর পর তার পিতা একটি বই তাকে পড়ার
জন্য দেয়। উক্ত বইতে মুসলমানদেরকে কুকুরের সাথে তুলনা করা প্রচ-
ভাবে ঘৃণা ছড়ানো হয়। মারইয়াম এই ধরনের মন্তব্য পাঠ করার পর
চিন্তা করে “আসলেই মুসলমানরা কি এতো বেশি খারাপ? সে এই
প্রশ্নের জবাব জানার জন্য তার মুসলিম বন্ধুদের সাথে মত-বিনিময়
করতে আগ্রহী হয়। মুসলিম বন্ধুরা তাকে তাদের সাথে আলাপ- আলোচনার পরিবর্তে তার সকল প্রশ্নের জবাব খুঁজে পাবার জন্য
কুরআন অধ্যয়ন করার উপদেশ দেয়। সে তাদের উপদেশমতো কুরআন
পাঠ করা শুরু করে। কিন্তু প্রথম তিন মাস কুরআন পাঠ করে কোনো
মজা অনুভব করেনি। তার মতে ইসলাম সম্পর্কে নেতিবাচক মনোভাব
নিয়ে কুরআন পাঠের চেষ্টা করায় প্রথম তিন মাস সে কোনো মজা
পায়নি। তিন মাস পর উন্মুক্ত মন-মগজ নিয়ে কুরআন পাঠ শুরু করার পর তার মনে হয়েছে কুরআনের প্রতিটি আয়াত যেন তার মনের নানা
প্রশ্নের জবাব দিচ্ছে। এইভাবে ছয়মাস তিলাওয়াত করে কুরআন পাঠ
শেষ করে। কুরআন পাঠ করতে গিয়েই সে নিজেকে ‘কুরআনী’ বলে
পরিচয় দেয়া শুরু করে এবং এক পর্যায়ে ইসলাম কবুল করেন। মারইয়াম
আল-কুরআন অধ্যয়ন করেই ইসলাম কবুল করে। কিন্তু তার মতে
কুরআন পাঠ করে ইসলাম জানার চেষ্টা না করলে তার পক্ষে ইসলাম কবুল করা হয়তো বা সম্ভব হতোনা। কেননা কুরআনে ইসলামের
যেসব বিধান চমৎকারভাবে বিবৃত আছে তা খুব কম মুসলমানই অনুসরণ
করে। উপরের ঘটনা থেকে এই বাস্তব সত্য ফুটে উঠেছে যে, অনেক অমুসলিম
ইসলাম সম্পর্কে পরিচালিত অপপ্রচারের জবাব খুঁজতে গিয়েই ইসলামের
সুমহান আদর্শের সন্ধান পায়। এছাড়াও মুসলমানদের সাথে উঠা-বসা,
লেন-দেন করে ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে অমুসলিমদের কেউ কেউ
ইসলাম কবুল করছে। অতি সম্প্রতি ইস্ট লন্ডন মসজিদে একটি যুবক
ইসলাম কবুল করে। ইসলাম কবুল প্রসংগে সে জানায় যে, দীর্ঘদিন ইসলাম নিয়ে পড়াশুনা করে ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট হয়। সে আরো
জানায় যে, তার মুসলিম বন্ধুদের চলাফেরা, কথা-বার্তা, উঠা-বসা, লেন-
দেন প্রভৃতি তাকে বিমোহিত করে। এইভাবে অনেক মুসলমান সত্যের
সাক্ষ্য হিসেবে নিজেদের জীবন গড়ার চেষ্টা করছেন এবং তাঁদেরকে
দেখেই চিন্তাশীল অনেক অমুসলিম এই কথা অকপটে স্বীকার করছেন
যে, “মুসলিমরা সন্ত্রাসী নয় বরং পরোপকারী’’। এই প্রসংগে একটি বাস্তব ঘটনা উল্লেখ করতে চাই। কিছুদিন আগে যুক্তরাজ্যে একজন
অমুসলিম তার ঘর বিক্রির সময় পার্শ্ববর্তী ঘরের চেয়ে তার ঘরের
মুল্য ত্রিশ হাজার পাউন্ড বেশি দাবি করে। এজেন্ট বেশি মূল্য চাওয়ার
কারণ জিজ্ঞাসা করার পর তিনি জবাব দেন যে, “আমার পার্শ্বে
একজন পরোপকারী মুসলিম ভালো প্রতিবেশী রয়েছেন। তিনি কাউকে
কষ্ট দেননা বরং সব সময় প্রতিবেশীর প্রতি যতœশীল থাকেন। যেকোন স্থানে ঘর কেনা সম্ভব কিন্তু ভালো প্রতিবেশী পাওয়া
কঠিন’।
পাশ্চাত্যে ও বিভিন্ন মুসলিম দেশে কিছু ইলেক্ট্রনিক ও প্রিন্টেড
মিডিয়াতে অব্যাহতভাবে ইসলাম বিরোধী প্রচারণা পরিচালিত হচ্ছে।
কিছু মিডয়াতে মুসলমানদেরকে টেরোরিস্ট হিসেবে চিত্রিত করার
চেষ্টা করছে এবং ইসলামকে পাশ্চাত্যের জন্য হুমকি স্বরূপ হিসেবে
উপস্থাপন করছে। ইউরোপে যে শতাব্দীকাল থেকে মুসলমানদের বসবাস
রয়েছে সে কথা প্রকাশ না করে শুধু ইমিগ্র্যান্ট হিসেবে দেখানোর চেষ্টা করছে এবং মুসলানরা ইউরোপের মুলস্রোতধারা থেকে
বিচ্ছিন্ন বলে তারা মনে করে। তাদের প্রচারণা হচ্ছে, ইসলাম আজকের
যুগে অচল এবং মুসলমানরা রক্ষণশীল, উগ্র ও টেরোরিস্ট। মিডিয়াতে
মুসলমানদের বিরদ্ধে এই ধরনের প্রচারণার ফলে মুসলমানদের উপর
বিশেষভাবে মুসলিম ছাত্র-ছাত্রীদের উপর গ্যাং এ্যটাক বৃদ্ধি পেয়েছে।
তাই Q News এর প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ফুয়াদ নাহদী পাশ্চাত্যের মিডিয়ার সমালোচনা করে বলেন, A western news agenda
dominated by hostile, careless coverage of islam
distors reality and destroys trust. Western reports,
when positive, are seen as selective and partisan;
when negative, hypocritical and insensitive (Diana
Abdel- Maged, The British Media: Fair or biased ) একশ্রেণীর পশ্চিমা মিডিয়ার ইসলাম সম্পর্কে ব্যাপক অপপ্রচারের
কারণে বাস্তব অবস্থা খারাপভাবে চিহ্নিত হচ্ছে এবং আস্থা নষ্ট
করছে। কোনো ইতিবাচক রিপোর্ট প্রকাশ করা হলে তা হয় বাছাই
করা এবং একপেশে। আর যখন কোনো নেতিবাচক বিষয় তুলে ধরা হয়
তা জয় মোনাফেকি সূলভ এবং অসংবেদনশীল। (ডায়ানা আবদেল
মাজেদ. দি ব্রিটিশ মিডিয়া : ফেয়ার অর বায়াসড) কিছু মিডিয়া নিরপেক্ষতা বজায় রাখার নীতি পোষণ করলেও যেকোন সন্ত্রাসী
ঘঁটনার জন্য মুসলমানদেরকে অভিযুক্ত করার একটা প্রবণতা প্রায়
সকল মিডিয়াতেই রয়েছে। যেকোন ঘটনার জন্য ঢালাওভাবে সকল
মুসলমানকে দায়ী করা যৌক্তিক নয়। ইতোপূর্বে সন্দেজনকভাবে
বিভিন্ন ঘটনায় যাদেরকে আটক করা হয়েছিল তাদের অনেকেই
পরবর্তীতে নির্দোষ প্রমাণিত হয়েছেন; তাঁদের কেহই কথিত ঘটঁনার সাথে সম্পৃক্ত ছিলনা। তাই সন্ত্রাসের সাথে ইসলাম ও মুসলমানকে
ঢালাওভাবে সম্পৃক্ত করার সুযোগ নেই। যেমনিভাবে খৃস্টান ও ইয়াহুদী
কেউ সন্ত্রাসী কার্যক্রম করলে তার জন্য পুরো খৃস্টান বা ইয়াহুদী
ধর্মাবলম্বীকে দায়ী করা যায়না। কতিপয় মিডিয়ার প্রবণতা হচ্ছে
মুসলমান কেউ সন্ত্রাসের সাথে স¤ৃক্ত হবার সন্দেহের তালিকায়
থাকলেও তা যেভাবে ফলাও করে ছাপা হয় অপরদিকে একই ধরনের ঘটনা কোনো নন-মুসলিম করলে তা মিডিয়াতে উপক্ষো করা হয়। এই
সস্পর্কে বিগত ৭ই ডিসেম্বর ২০০৯ ’ দি মুসলিম পোস্ট পত্রিকায়
এইভাবে শিরোনাম করা হয়, Media Silent as non-Muslim
bomb makers pleads guilt। উক্ত রিপোর্ট অনুসারে
Terence Gavan নামক বৃটিশ ন্যাশনালিষ্ট পার্টির জনৈক মেম্বার
বোমা তৈরিসহ ২২ টি ঘটঁনায় অভিযুক্ত হয়। এর মাঝে ৬টি টেরোরিজম এ্যাক্টের অধীন ছিল। Woolwich Crown Court
তাকে দোষী সাব্যস্ত করে রায় দেয়। অথচ বোমা সন্ত্রাসের মত
ঘটনায় তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হলেও বৃটিশ মিডিয়া তা উপেক্ষা
করে। কিন্তু শুধুমাত্র সন্দেহের তালিকায় থাকার কারণে অনেক
মুসলমানের ছবি ফলাও করে ছাপা হয়। এধাধহ যদি মুসলমান হতো
তাহলে প্রায় সকল পত্রিকাতেই সম্ভবত হেডলাইন করা হতো এভাবে ÒIslamic terrorist found guilty of possessibg bomb
factory/Evil Muslim bomb maker admits guilty/
Mastermind Muslim bomb expert Guilty ... বাংলাদেশে
কিছু মিডিয়া আন্তর্জাতিক কতিপয় মিডিয়ার মতো জঙ্গি,
টেরোরিস্ট, আল কায়েদা, তালেবানী রাষ্ট্র ইত্যাদি পরিভাষা
একইভাবে ব্যবহার করে। ধর্মীয় সংখ্যা লঘুদের উপর নির্যাতনের কল্পিত কাহিণী প্রচার করে বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট
করতে চায়। প্রকৃত সত্য প্রকাশ না করে তারা ইসলাম ও ইসলামী
আন্দোলন সম্পর্কে তারা দেশে-বিদেশে নেতিবাচক ধারণা দিতে চায়।
তারা ইসলামী আন্দোলনন ও তার নেতৃত্ব সম্পর্কে মনগড়া রিপোর্ট
প্রচার করছে অথচ তাঁদের বক্তব্য, স্টেমেন্ট পত্রিকায় ছাপায়না।
তারা আওয়ামী-ছাত্রলীগ কর্তৃক মন্দির ভাংগা হলেও জামায়াত- শিবেরর উপর তার দায় বর্তায় অথচ জামাত শিবিরের কর্মীরা বিভিন্ন
জায়গায় যে মন্দির পাহারা দেয় তার সংবাদ ও ছবি ছাপায়না। অপরাধ
সংক্রান্ত সংবাদ ব্কিৃত করে প্রচার করছে যার ফলে সত্যিকার
অপরাধীরা আরও অপরাধ করতে উতসাহীত হয়। যেমন নারায়ণগঞ্জে
ত্বকী হত্যার পর প্রথমেই জামায়াত-শিবিরের উপর দোষ চাপায়। অথচ
ত্বকীর পিতা পরে স্পষ্ট করেই বলে দেয় যে, “এর সাথে জামাত শিবিরের কেউ সম্পৃক্ত নয়। আওয়ামী লীগের কতিপয় নেতাই জড়িত‘।
আভ্যন্তরীন রাজনীেিত বিদেশেী হস্তক্ষেপের ক্ষেত্র তৈরি করে। কিছু
পত্রিকায় বিদেশেী কয়েকজন রাষ্ট্রদুতের বক্তব্য বাংলাদেশের
প্রধানমন্ত্রী-ও বিরোধী দলের নেতার বক্তব্যের চেয়ে বেশি গুরুত্ব
পায়। কিছু মিডিয়াতে বাংলাদেশকে অকার্যকর জঙ্গি রাষ্ট্রে পরিণত
করার প্রচারণা চালাতে দেখা যায়। এমনকি সংখ্যা গরিষ্ঠ মানুষের জীবন ধারা মুল্যবোধ কটাক্ষ করা হয়। দাঁড়ি টুপী ধারীদেরকে রেডিও টিভিতে
নাটক উপন্যাসে এমনভাবে উপস্থাপন করা হয় যাতে দর্শকের ঘৃণা
জন্মে। আন্তর্জাতিক মিডিয়া সাধারণত লোকাল মিডিয়াকে সোর্স হিসেবে
ব্যবহার করে। এরফলে আন্তর্জাতিক মিডিয়াতে নেতিবাচক প্রচারণা
চলে যার ফলে প্রকারন্তরে বাংলাদেশের ইমেজ নষ্ট হচ্ছে। জাতি
বিভক্ত হয়ে পড়ছে। অথচ দেশ গড়ার জন্য জাতীয় ঐক্য জরুরী।
জঙ্গিবাদের উথ্যান হতে তা সহায়তা করছে। জনগনের মধ্যে দেশ
সম্পর্কে নেতিবাচক মনোভাব সৃষ্টি হচ্ছে অথচ বাংলাদেশ হচ্ছে অফুরন্ত সম্ভাবনার দেশ। আমাদের দেশের নদ-নদীতে মাছ আছে; বনে
জংগলে কাঠ আছে। জমিতে হরেক রকমের ফসল ফলে। গ্যাস ও কয়লার
খনি আছে। এই সকল প্রাকৃতিক সম্পদ কাজে লাগাবার জন্য আছে
মানব সম্পদ। তাই মানব সমপদকে কাজে লাগানোর জন্য রাজনৈতিক
স্থিতীশীলতার পাশাপাশি জাতীয় ঐক্য প্রয়োজন। মেধাবীদেরকে
রাজনৈতিক দৃষ্টিভংগীতে না দেখে তাদেও মেধা দেশের উন্নয়নে কাজে লাগানো প্রয়োজন। পর্ণোগ্রাফী যুব চরিত্র নষ্ট করছে। অথচ
যুবকরাই হচ্ছে দেশের কর্মক্ষম জনশক্তি। মিডিয়াতে যারা কাজ করেন তাদের অনেকই বিশ্বাস ও চেতনায় ইসলাম
বিদ্বেষী। ভিনদেশীদের এজেন্ট হিসেবে কেউ কেউ দায়িত্ব পালন করেন।
এই জন্য তাঁরা মাসিক ভাতা পান। ব্যবসায়ী মিডিয়া মালিকরা নিজেদের
স্বার্থের কারণে একজনের অপরাধ আরেকজনের উপর চাপিয়ে দিয়ে
প্রকৃত ঘটনা ধামা চাপা দিতে চায়। হতাশা বা সমালোচনা নয় প্রয়োজন বাস্তব উদ্যোগ ও
সহযোগিতার : আফসোস হচ্ছে মুসলমানদের হাতে প্রচুর সম্পদ
আছে। আলজাজিরা বাদ দিলে বিবিসি, ভয়েস অব আমেরিকার মত
ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া নেই। দি টাইমস, দি গার্ডিয়ান, দি ইন্ডেপেন্ডেন্স
এর মত আন্তর্জাতিক মানের কোনো পত্রিকা নেই। তাই
মুসলমানেরা পাশ্চাত্যে মিডিয়ার আক্রমন ও অপপ্রচারের শিকার। কেননা অপপ্রচারের জবাব দেয়ার মত কোনো শক্তিশালী মাধ্যম
মুসলমানদের হাতে নেই। এমতাবস্থায় মুসলিম তরূন সমাজের যাদের
মিডিয়া স্টাডিজ পড়ার আগ্রহ আছে তাদেরকে মিডিয়া কর্মী হিসেবে
ক্যারিয়ার গঠনের পরিকল্পনা নেয়া সময়ের অনিবার্য দাবি। রেডিও, টিভি
ও পত্রপত্রিকায় কাজ করা মুসলিম তরূন সমাজের একটি অংশের
ক্যারিয়ার ফিল্ড হওয়া উচিত। যারা সাংবাদিকতা পেশায় নিয়োজিত তাদের প্রশিক্ষন কর্মসুচী থাকা দরকার। এছাড়াও আন্তর্জাতিক
বিভিন্ন সংবাদ সংস্থার প্রতিনিধি হওয়ার চেষ্টা করা যেতে পারে।
নিজেদের সাধ্যমত অনলাইন পত্রিকা, ব্লগও ওয়েবসাইট চালু করা যায়।
ব্যক্তিগত ও সামষ্টিক উদ্যোগ মিডিয়া হাউজ করা যেতে পারে।
মিডিয়া ব্যক্তিত্বদের সাথে যোগাযোগ ও সম্পর্ক বৃদ্ধি করে তাদের
নানা লেখনীতে নিজেদের কিছু ইস্যু নিয়ে আসার চেষ্টা করা। সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট করে সাংবাদিকদের বৃত্তি ও চিকিতসা সেবা করা
দরকার। গ্লোবাল মিডিয়া মনিটরিং টীম করা প্রয়োজন –তারা
বিভিন্ন মিডিয়া মনিটরিং করবেন এবং অনলাইন আক্রাইভ রাখবেন।
মিডিয়াতে স্পোকস পারসন হিসেবে বিভিন্ন ভাষায় পারদশী একটি গ্রুপ
সৃষ্টি করতে হবে। মিডিয়ার নাই নাই বলে হা হুতাশ করে যেমনি মিডিয়া অভাব পুরণ করা
যাবেনা। তেমনিভাবে সফল মিডিয়া গড়ার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ
খরচের মানসিকতা না থাকলে মিডিয়া প্রজেক্ট বাস্তবায়ন হবেনা। এই
প্রসংগে অনেক দিন আগে শুনা একটি গল্প মনে পড়ছে। একজন লোক
খাবার সহ কুকুরকে নিয়ে পথ চলছে। কিছু দুর যাওয়ার পর কুকুরটি
ক্ষুধায় ছটফট কওে মারা যাওয়ার উপক্রম। লোকটি তা দেখে কাঁদছে। আরেকজন পথিক তার কান্নার কারণ জানতে চায়। তিিেন জবাবে বলেন,
“ভাই আমার কুকুর ক্ষুধায় মারা যাচ্ছে তাই কাঁদছি”। লোকটি আবার
জানতে চায় “তোমার সাথে এগুলো কি”? তিনি জবাব দেন “এগুলো
খাবার”। পথিক তাকে বলে, “তোমার খাবার থেকে কিছু খাবার
দিলেইতো কুকুরটির ক্ষুধা নিবারন হয়”। লোকটি জবাব দেয় “ভাই
কাঁদতে পয়সা লাগেনা কিন্তু খাবার দিলেতো পয়সা খরচ হয়”। আমাদেরকে মিডিয়ার জন্য শুধু কাঁদলে হবেনা প্রূেয়াজনের আলোকে
অর্থ খরচ করতে হবে। বাংলাদেশে রাজনৈতিক ও মিশনারী টাগেট নিয়ে কিছু মিডিয়া প্রতিষ্ঠিত
হয়। ১৯৯০ সালের পর ব্যবসায়ীদের ইনভেস্টমেন্ট কিছু পত্রিকা ও
স্যটেলাইট চ্যানেল চালু করা হয়। বিদেশী সাহায্যেও কিছু মিডিয়া
প্রতিষ্ঠিত হয়। তাই তাদের অর্থের অভাব হয়না। কিন্তু যারা ইসলামী
আদর্শে বিশ্বাসী তাদেরকে নিজের পকেটের টাকা খরচ করেই মিডিয়া
করতে হবে। এই ক্ষেত্রে আল্লাহ পাক কিছু ব্যক্তিকে অর্থ উপর্জনের মেধা দিয়েছেন আর কিছু ব্যক্তিকে মিডিয়া কর্মী হওয়ার
যোগ্যতা দান করেছেন। মিডিয়া কর্মীদের অনেকর কাছে অনকে সুন্দর
পরিকল্পনা আছে কিন্তু উক্ত পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য পর্যাপ্ত
অর্থ নাই। আর কিছু ব্যক্তির অর্থ আছে কিন্তু তাদের কাছে
কোনো প্রজেক্ট নাই। যাদের অর্থ আছে তারা এমন জায়গায়
ইনভেমস্ট করতে চান যেখান থেকে দ্রুত রিটার্ন আসবে। ব্যবসায়িক দৃষ্টিকোণ থেকে তা সঠিক। কিন্তু মুসলিম কিছু ব্যবসায়ী ও
সামর্থবান বিত্তশালীরা যদি মিডিয়া, রিসার্চ, থিঙ্ক ট্যাঙ্কসহ জ্ঞান
গবেষনার কাজে বিনিয়োগ না করেন তাহলে তাদের অধিক মুনাফার জন্য
বিনিয়োগকৃত অর্থ তাঁরা যে ভোগ করতে পারবেন তার কি কোনো
নিশ্চিয়তা আছে? আমি পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে অবস্থানরত অনেক ধনী
ব্যক্তির কথা জানি যাঁরা দুনিয়ার মোড়লদের অনুমতি ছাড়া নিজের এ্যকাউন্ট থেকে নিজের খরচের জন্যও টাকা উত্তোলন করতে
পারছেননা। তাই সময়ের অনিবার্য্য দাবি পুরণে ইলেক্ট্রনিক, প্রিন্টেড,
অনলাইন ও সোশাল মিডিয়ায় কাংখিত ভূমিকা পালন করা জরুরী।
বিষয়: বিবিধ
৮২১ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন