শেখ হাসিনাকে ছিনতাই: শোকরানা মাহফিলের বিজয়!
লিখেছেন লিখেছেন Ruman ০৫ নভেম্বর, ২০১৮, ১০:৪৫:৩৯ রাত
চারিদিকে এত এত হতাশা ও ক্ষোভ দেখছি। শোকরানা মাহফিলের খারাপ দিক তো অবশ্যই আছে। সেগুলো আপনারা সচেতন বিবেকবানরা ইতোমধ্যে স্বচক্ষে দেখেছেন ও বুঝেছেন। সমালোচনাও ব্যাপক হচ্ছে। তাই নেগেটিভ দিকগুলো নিয়ে আমি আর এখানে আলাপ করছি না।
তবে আপাতত আমি এর পজিটিভ দিকগুলো নিয়ে ভাবতে আগ্রহী।
একটা বিষয় আগে খোলাসা করি। অনেকেই বলছেন, এই শোকরানা মাহফিল উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। অর্থাত আসন্ন নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়ার জন্য আওয়ামী লীগকে সহায়তা করার প্রচেষ্টা হতে পারে এটা।
কিন্তু ভ্রাতাগণ! এত হালকা হিসাব-নিকাশ করলে হবে? আমার হিসাবটা বলি। ধরেন, আওয়ামী লীগ যদি সত্যিই একটা সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ নির্বাচন দেয়, তাহলে নির্বাচনের সময় ভোট পেতে এই শোকরানা মাহফিলের একটা হালকা এডভান্টেজ হয়ত পাবে আওয়ামী লীগ। কিন্তু তারচেয়েও অধিক বাস্তবতা হলো, নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হলে এই একটা শোকরানা মাহফিলই আওয়ামী লীগকে নির্বাচনী বৈতরণী পার হতে সফলতা দিতে পারবে না। এটা নিশ্চিত।
কারণ, বর্তমান পরিস্থিতি অনুযায়ী নির্বাচনী বৈতরণী পার হতে হলে ২০১৪-এর ৪ জানুয়ারির মতো আরেকটা ভোট ডাকাতির নির্বাচনের মধ্যদিয়েই ক্ষমতা আকড়ে ধরে রাখা ছাড়া আওয়ামী লীগের আর কোনো উপায় নেই। সুতরাং, এই শোকরানা মাহফিলকে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়ার সাথে সম্পর্কিত করাটা খুব একটা গুরুত্বপূর্ণ নাহ।
শোকরানা মাহফিলের গুরুত্বপূর্ণ পজিটিভ দিক অবশ্যই আছে। আলেম-ওলামার সাথে শেখ হাসিনা এত ক্লোজলি এমন জনসমাবেশে অংশগ্রহণ করবেন- এমনটা কি আগে কখনো ভাবা সম্ভব হয়েছিল?
গণবিচ্ছিন্ন ইসলামবিদ্বেষী বাম ও সেকুলারদের বুড়ো আঙুল দেখিয়ে কওমিদের স্বীকৃতি দিয়ে তিনি ওলামায়ে কেরাম ও তৌহিদি জনতার পক্ষে চলে আসবেন, এটা তো আগে অসম্ভব ও অকল্পনীয় ছিল। হোক এটা শেখ হাসিনার নির্বাচনী কৌশল। অন্তত শাসক হিসেবে এটুকু বোধ তো তার এসেছে যে, ভোটের রাজনীতির স্বার্থে জনবান্ধব ওলামায়ে কেরামই হলো মূল শক্তি।
অন্যদিকে, ইতোমধ্যে গণবিচ্ছিন্ন বাম প্রগতিশীল ও সেকুলাররা তার ভোটের রাজনীতির জন্য অকার্যকর প্রমাণিত হয়েছে। এমনকি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মাথায় কাঠাল ভেঙে সেকুলারদের ক্রমাগত ইসলামবিদ্বেষী কর্মকাণ্ড এবং আলেম-ওলামা ও মাদরাসার বিরুদ্ধে তাদের মিথ্যাচারের ফলস্বরূপ শেখ হাসিনা ও তার দল ইসলামবিরোধী হিসেবে জনগণের কাছে চিত্রিত হয়েছিল। দেরিতে হলেও বিচক্ষণ শেখ হাসিনা এটা হাড়ে হাড়ে বুঝতে পেরেই তার এতদিনকার পুরনো ভোটের রাজনীতির কৌশল ও পক্ষ চেইঞ্জ করেছেন। একে আমি সাধুবাদ জানাই। এক কথায় বলবো, এই শোকরানা মাহফিলের মধ্যদিয়ে শেখ হাসিনার মতো একজন প্রবল ক্ষমতাধর শাসককে ইসলামবিদ্বেষী সেকুলারদের হাত থেকে চূড়ান্তভাবে ছিনতাই করতে সক্ষম হয়েছেন ওলামায়ে কেরাম। মারহাবা!!
অলরেডি আওয়ামী জোটের ইনু মেননদের মাথা নষ্ট অবস্থা। প্রলাপ বকা শুরু করেছে তারা। সুলতানা কামালদের মতো সুশীল সেকুলাররা মনের কষ্ট প্রকাশ করছে দেখলাম ডেইলি স্টারের একটা রিপোর্টে।
শেষ কথা, শেখ হাসিনাই প্রথমে ওলামায়ে কেরামের কাছে এসেছেন। তারপর ওলামায়ে কেরাম তার প্রতি সদয় হয়েছেন। মনে রাখতে হবে, শেখ হাসিনা এখন পর্যন্ত একজন প্রবল ক্ষমতাধর শাসক। পলিটিক্স না বুঝে চললে দুনিয়ায় টিকতে পারবেন না। ৫ মে-তেও টিকে থাকা সম্ভব হয়নি। শোকরানা মাহফিলের খারাপ দিকগুলোর সমালোচনা অবশ্যই করেন। তবে মূল পলিটিক্সটাও মাথায় রাইখেন কিন্তু!
বিষয়: বিবিধ
৯৭১ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন