রক্তাক্ত ৫ মে’র পথ ধরেই আজকের বাংলাদেশ!

লিখেছেন লিখেছেন Ruman ০৫ মে, ২০১৮, ০২:০৩:২২ দুপুর

ইতিহাস আমাদেরকে একাত্তরে একটি ২৬শে মার্চ কালো রাতের সংগ্রামী চেতনা উপহার দিয়েছিল। আর ৫ মে রাতে উপহার দিয়েছে আরেকটি রক্তাক্ত সংগ্রামী চেতনা! উভয় চেতনাই আমাদের জাতীয় জীবনে জালিমের বিরুদ্ধে মজলুমের লড়াইকে জাগিয়ে তুলতে সবসময় অনুপ্রাণিত করে।

৫ মে একটা রক্তাক্ত ইতিহাস! শাহাদতি রক্তের কালি দিয়ে হেফাজত ও তৌহিদি জনতা রচনা করেছিল ঈমানদীপ্ত দাস্তান। ঈমান আকিদা তখন ক্ষত-বিক্ষত হচ্ছিল ইসলামবিদ্বেষী নাস্তিক ও সেকুলারদের ঘৃণ্য অপতৎপরতায়। রাসূলের অপমানে অপমানিত ও বিক্ষুব্ধ হয়েছিল তৌহিদি জনতা। তাদের হৃদয়ে ব্যাপক রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। পীর আউলিয়ার এই পুণ্যভূমিতে ইসলামকে কোণঠাসা করার সবরকম অপচেষ্টা করেছিল বাতিল সেকুলার মৌলবাদী অপশক্তি।

সেদিন এই জুলুম ও অনাচারের বিরুদ্ধে হেফাজতের ডাকে রুখে দাঁড়িয়েছিল বাংলাদেশের আপামর তৌহিদি জনতা। সেদিন পবিত্র শাহাদতি রক্তের আখরে এক অমর মহাকাব্য রচিত হয়েছিল খোদার এই জমিনে! এই মহাকাব্যের মহান শহীদেরা চিরকালের নায়ক হিসেবে বেঁচে থাকবে আমাদের হৃদয়ে, ঈমান-আকিদার আলোকবর্তিকা হয়ে।

পবিত্র শাহাদতি রক্ত কখনোই বৃথা যেতে পারে না। মহান আল্লাহ রাব্বুল আ’লামীন জালিমদের পরিণতি লিখে রেখেছেন। তিনি নিশ্চয়ই এই পবিত্র রক্তের প্রতিদান সময়মতো আমাদের দিবেন। তাই, অধৈর্য ও হতাশ হওয়া মুমিনদের শোভা পায় না। বিজয় আসবে একমাত্র আল্লাহর ইচ্ছায়; অন্য কারো ইচ্ছায় নয়। তাছাড়া জানবাজ মুমিনেরা জয়-পরাজয়ের হিসাব কষে রক্ত দিতে নামে না। তারা তো সেকুলারদের মতো নগদ দুনিয়াবি প্রতিদান পাবার আশা করে না। তারা শাহাদাতের সুধা পান করেন একমাত্র পারলৌকিক প্রতিদানের আশায়— যা স্বয়ং আল্লাহ তা’য়ালা তাদেরকে প্রতিশ্রুতি দিয়ে রেখেছেন! সুবহানআল্লাহ!!

৫ মে’র রক্তাক্ত পথ ধরেই আজকের এই নতুন বাংলাদেশের আবির্ভাব! অর্জন একেবারেই কিছু নাই বললে ভুল হবে। কারণ—

মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ইসলামবিদ্বেষের আবরণে কলুষিত করার সেকুলার অপতৎপরতাকে রুখে দিয়েছে হেফাজত। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা কারো বাপ-দাদার সম্পত্তি নয়। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা হেফাজতেরও, আলেম ওলামারও লালন করার অধিকার রয়েছে।

মুক্তিযুদ্ধের সংগ্রামী চেতনা ইসলামেরও চেতনা। জালিমের বিরুদ্ধে মজলুমের লড়াইয়ের চেতনার সাথে ইসলামেরও কোনো ফারাক নেই। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আমাদেরকে ফ্যাসিবাদ ও জুলুমের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর শিক্ষা দেয়। ইসলামের শিক্ষাও তা-ই। সুতরাং, মুক্তিযুদ্ধের সাথে সম্পর্কহীন ভুয়া সেকুলারিজমের ধুয়া তুলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ইসলামের বিরুদ্ধে দাঁড় করানোর ফ্যাসিবাদী ও আধিপত্যবাদী শক্তির যৌথ প্রজেক্টকে ইতোমধ্যে নস্যাৎ করে দিয়েছে হেফাজত।

আজকে ইসলামবিদ্বেষী সেকুলার শিবসেনারা হেফাজতের থাবার আঘাতে জর্জরিত। এদেশে সেকুলার মৌলবাদের কবর রচনা করেছে হেফাজত। হেফাজতের এই অবদান কেউ অস্বীকার করতে পারেন? আর যা-ই হোক, হেফাজত হেফাজতই। গণমানুষের হেফাজত। মজলুমের বাহুবল!

বাংলাদেশের আকাশে হেফাজত একটি নক্ষত্রসম! এই নক্ষত্রের আলো ক্ষীণ হলে পুরো আকাশটাই মলিন হয়ে যায়। আবার এই নক্ষত্র নড়ে উঠলে পুরো আকাশটা সমস্ত বজ্রশক্তি নিয়ে গর্জে ওঠে।

হেফাজত একটি দল বা সংগঠন মাত্র নয়। ভবিষ্যতে দল হিসেবে টিকে থাকুক আর না-থাকুক, এটা একটা দুর্মর চেতনা হিসেবে জেগে থাকবে বাংলার ঘরে-ঘরে, প্রান্তরে-প্রান্তরে, প্রতিটি আল্লাহভীরু ও রাসূলপ্রেমিক হৃদয়ে….

যেকোনো কণ্ঠে, যেকোনো ব্যানারে, যেকোনো স্থানে হেফাজত দাঁড়িয়ে যেতে পারে। মিশে যেতে পারে। বিদ্যুৎবেগে ছড়িয়ে পড়তে পারে। হেফাজতের এই প্রবল সম্প্রসারণক্ষমতা ও আত্মীকরণশক্তি কেবল তৌহিদি জনতার ঈমানের জোরেই সম্ভব হয়েছে।

ঈমান-আকিদার শক্তিতে বলীয়ান হেফাজত কোনো জাহেলিয়াত, ফ্যাসিবাদ ও আধিপত্যবাদের কাছে মাথা নত করে না। জালিমের বিরুদ্ধে মজলুমের আমরণ রক্তসংগ্রামকে হেফাজত ধারণ করে।

বেঁচে থাকুক হেফাজত সংগ্রামী চেতনা হয়ে ঈমানদীপ্ত কোটি কোটি হৃদয়ে!

জয়তু হেফাজত!

বিষয়: বিবিধ

৬৬২ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

385265
০৫ মে ২০১৮ দুপুর ০২:১০
আমি আল বদর বলছি লিখেছেন : হেফাজত তুমি কার Tongue
385266
০৫ মে ২০১৮ সন্ধ্যা ০৬:৫৩
হতভাগা লিখেছেন : ০৫.০৫.২০১৩ এ অনেক অভিযোগ আছে । হেফাজতের লোকদেরকে নাকি গুলি করা/ মারা হয়েছে। কিন্তু একটা লাশও তো কেউ দেখাতে পার্লো না । শাপলা চত্বরের আশে পাশে যে সব ভবনগুলো আছে সেখানের কোনটাতেই তো গুলির চিন্হ বা রক্তের দাগ পাওয়া যায় নি!

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File