আমরা কেউ কি পারি না, এসব অন্যায় কাজকে কে অন্যায় বলতে?
লিখেছেন লিখেছেন Ruman ০৬ অক্টোবর, ২০১৭, ১১:৪৭:৩৪ রাত
সংস্কৃতির কতটা নৈতিক অধঃপতন হলে,শুধুমাত্র অন্তর্বাস পরে সমগ্র পৃথিবীর 600 কোটি মানুষের সামনে উলঙ্গ হতে এদেশের 25,000 তরুণী রেজিস্ট্রেশন করে !
এই ২৫ হাজার মেয়ে ও তাদের ফ্যামিলি চান,
তাদের মেয়ে বাংলাদেশ থেকে বিশ্বসুন্দরী প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করুক!
তাদের মেয়ে পণ্যদাসী হিসেবে বিক্রীত হোক।
সংক্ষিপ্ত রাস্তা ধরে খ্যাতি আর অর্থ উপার্জন করার জন্য কর্পোরেট যৌন দাসী হোক !
বাংলাদেশে এদের লাইফস্টাইল, পার্টি, বিয়ে, ডিভোর্স, বিলাসী জীবন আর সবশেষে বেশিরভাগেরই আস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হওয়া দেখেও কোটি মেয়ের লালিত স্বপ্ন এখন মিডিয়ার রঙ্গমঞ্চে নিজেকে অন্যের বিনোদনের খোরাক বানানো !
৮ কোটি বাঙালি নারী আর ২৫ হাজার আগ্রহী ক্যান্ডিডেট থেকে বাছাই করে জান্নাতুল নাইম এভ্রিল নামের এই মেয়েকে বিজয়ী বানিয়ে পাঠানো হচ্ছিল বাংলাদেশের পতাকা বিশ্বের দরবারে বহন করার জন্য !!
এই মেয়ের তো গুণের সীমা পরিসীমা নাই !
- মিসেস হয়ে অংশ নিয়েছে মিস বাংলাদেশ হবার জন্য
- দরিদ্র বাবা মা কিংবা এই কৃষক পরিবারের সাথে কোন সম্পর্ক রাখেনি গত ৩/৪ বছর। বিভিন্ন ভাবে প্রচুর টাকার মালিক হলেও পরিবারের খবর নেয়নি। ওর বাবা জানিয়েছেন, এই মেয়ের সাথে সম্পর্ক রাখেননি এবং ভবিষ্যতেও রাখবেন না। তাকে মেয়ে হিসাবে স্বীকার করেন না।
- মিস বাংলাদেশ প্রতিযোগিতায় ফর্ম পূরণ করেছে নিজের পরিচয় লুকিয়ে। বাবা সিঙ্গাপুরে থাকেন, ঢাকায় বাড়ি গাড়ির মালিক আর ভাই বড় ব্যবসায়ী এই মিথ্যা তথ্য দিয়ে।
- ম্যাট্রিকের পর সৎ কাপড়ের ব্যবসায়ীকে বিয়ে করলেও উচ্চাকাঙ্ক্ষী এভ্রিল সংসার করেছে মাত্র আড়াই মাস। নিজেই বাবার বাড়ি যাবার নাম করে পালিয়ে গিয়েছিল। তারপর একটা ১৭/১৮ বছর বয়সী মেয়ে স্বামীকে চাপ প্রয়োগ করে নিজেই ডিভোর্স নিয়েছে।
- এই ৩/৪ বছর ঢাকায় বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে মিডিয়াতে প্রতিষ্ঠিত হবার জন্যই এতসব চেষ্টা।
- পত্রিকার রিপোর্ট অনুযায়ী বিয়ের আগে পরে বহু অনৈতিক সম্পর্কে জড়িয়েছে স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য।
- ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের সাক্ষ্য অনুযায়ী চট্টগ্রামের একটা হোটেল রেইডে অনৈতিক কাজে গ্রেফতার হয়েছিল।
- জানাজানি হবার পর সাংবাদিক বিয়ের গুজব সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে এভ্রিল বলেন, সব মিথ্যা, বিয়ে হয়নি। এদিকে বিয়ের ছবি, ভিডিও আর কাবিননামা সব পত্রিকায় ভাইরাল।
একজন মিথ্যাবাদী, প্রতারক, উচ্চাভিলাষী, অল্প শিক্ষিত আর চরিত্রহীন মেয়ে হল কিনা বাংলাদেশের সেরা মেয়ে !! আর তাকে নির্বাচিত করল কিনা দেশের বিখ্যাত সব কর্পোরেট হাউজ আর বাছাই করা সেলিব্রেটি বিচারকরা !
এই মিস বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা আসলেই কি বাংলাদেশের সংস্কৃতি, আচার আচরণ আর শিল্পকে প্রতিনিধিত্ব করে? পত্রিকায় ছাপা হওয়া পোশাকে বাংলাদেশের কোন ছাপ নেই, অনেক খোলামেলা, উন্মুক্ত শরীরের প্রদর্শনী। ফাইনালের ফলাফলেও উল্টাপাল্টা ঘোষণা করে অনেক বিতর্কের জন্ম দিয়েছে আয়োজক অন্তর শো বিজ আর অমিকন এন্টারটেইনমেন্ট। মনে হয়েছে এভ্রিলকে বিজয়ী করার জন্যই যেন সব ওলট পালট করা হয়েছে। বিচারক শম্পা রেজা বলেছেন, বিচারকদের ফল উলটে দেয়া হয়েছে।
আয়োজকরা ৩ মাস সময় পেয়েও বাছাই করা মেয়েদের ব্যাকগ্রাউন্ড ভেরিফাই করতে পারেননি এটা অবিশ্বাস্য। এই প্রতিযোগিতা তাঁর বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়েছে। পুরো প্রোগ্রামটাকেই বাতিল ঘোষণা করা উচিত। এগুলো নারীকে পণ্য হিসেবে ব্যবহার করার হাতিয়ার মাত্র।
এই ২৫ হাজার মেয়ের ফ্যামিলি চান তাদের মেয়ে শর্টকাট রাস্তা ধরে নিজেকে বিসর্জন দিয়ে হলেও একবার মুকুটটা পড়ুক ,আর ভোগের বাজারে ডিমান্ডটা আরও বাড়ুক !
এরা কেউই চায় না,
- মেধা কাজে লাগিয়ে শিক্ষিত হবে আর পরিশ্রম করে নিজ পায়ে দাঁড়াবে।
- নিজের একটা সৎ ব্যক্তিত্ব আর পরিচয় গড়ে তুলবে।
- পরিবার, সমাজ আর দেশকে ভাল কিছু দেয়ার চেষ্টা করবে।
সবার ফোকাস - খ্যাতি, বিত্ত, বৈভব, ক্যামেরা, লাইট......... একশন !! যেভাবে আর যে পথেই আসুক না কেন !!
পরিশেষে একটি কথা বলতে চাই মা বাবার অবহেলা আর বিদেশী চ্যানেলের দৌরাত্নের কারনে আজ কিছু তরুন সমাজ অধপতনের পথে...
ফলশ্রুতিতে, রাস্তায় পাওয়া যায় পলিথিনে মোড়ানো পরিচয়হীন নবজাতক শিশু,,,,,
আমরা কেউ কি পারি না,
এসব অন্যায় কাজকে কে অন্যায় বলতে ?
বিদেশী নোংরা সংস্কৃতির আগ্রাসনকে বন্ধ করতে ??
আসুন ,
আবার ফিরে যাই আমাদের চিরায়ত বাংলামাতৃকার সামাজিক ঐতিহ্যে , মিশে যাই প্রাণের বাঙালির পারিবারিক সংস্কৃতির লালিত অতীতে !!
আমরা কী ওরা ?
আমরাতো আমরাই !
আল্লাহ আমাদের সঠিক পথে চলার তাওফিক্ব দিন ।
বিষয়: বিবিধ
৬৭১ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন