স্বামীকে সন্তুষ্টি করতে স্ত্রীর যা করণীয়!
লিখেছেন লিখেছেন Ruman ২০ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ০৩:০৫:৩৪ দুপুর
আল্লাহ তা’আলা মানুষ সৃষ্টি করেছেন এবং তার জীবন
যাপনের পন্থা বাতলে দিয়েছেন।
তার জৈবিক ও আত্মিক চাহিদা পূরণের নিয়ম কানূন
বলে দিয়েছেন। আর মহান
সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের এই
বিধি বিধান মেনে চলার মাধ্যমেই
ইহলৌকিক মুক্তি ও
সমৃদ্ধি এবং পরলৌকিক শান্তি ও
সফলতা নিহিত। আল্লাহ
তা’আলা নারী ও পুরুষের
মধ্যে যে পারস্পরিক আকর্ষণ
সৃষ্টি করে দিয়েছেন এবং তাদের একের
সাথে অপরের সুখময় জীবন যাপনের
যে পন্থা দিয়েছেন, তা হচ্ছে বিয়ে।
স্বামীর অসন্তুষ্টি থেকে বিরত
থাকা।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
“তিনজন ব্যক্তির নামাজ তাদের মাথার
উপরে উঠে না।
• সে নারীর নামাজ, যে নিজ
স্বামীকে রাগান্বিত রেখে রাত যাপন
করে।
• পলাতক গোলামের নামাজ, যতক্ষণ
না সে মনিবের নিকট ফিরে আসে।
• সে আমিরের নামাজ, যার উপর তার
অধীনরা অসন্তুষ্ট।”
-স্বামীর অকৃতজ্ঞ না হওয়া। রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বলেন, “আল্লাহ তা’আলা সে নারীর
দিকে দৃষ্টি দেবেন না, যে নিজ স্বামীর
কৃতজ্ঞতা স্বীকার করে না, অথচ
সে স্বামী ব্যতীত স্বয়ংসম্পূর্ণ নয়।”
ইমাম মুসলিম বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বলেন, “আমি জাহান্নাম কয়েক বার
দেখেছি, কিন্তু আজকের ন্যায় ভয়ানক
দৃশ্য আর কোন দিন দেখিনি। তার
মধ্যে নারীর সংখ্যাই বেশী দেখেছি।
তারা বলল, আল্লাহর রাসূল কেন?
তিনি বললেন, তাদের না শুকরির
কারণে। জিজ্ঞাসা করা হল,
তারা কি আল্লাহর না শুকরি করে?
বললেন, না, তারা স্বামীর না শুকরি করে,
তার কৃতজ্ঞতা স্বীকার করে না।
তুমি যদি তাদের কারো উপর যুগ-যুগ
ধরে ইহসান কর, অতঃপর কোন দিন তোমার
কাছে তার বাসনা পূণ না হলে সে বলবে,
আজ পর্যন্ত তোমার কাছে কোন কল্যাণই
পেলাম না।”
স্বামীকে কষ্ট
দেওয়া থেকে বিরত থাকা।
ইমাম আহমদ
ও অন্যান্য মুহাদ্দিস বর্ণনা করেন,
“দুনিয়াতে যে নারী তার স্বামীকে কষ্ট
দেয়, জান্নাতে তার হুরগণ (স্ত্রীগণ)
সে নারীকে লক্ষ্য করে বলে, তাকে কষ্ট
দিয়ো না, আল্লাহ তোমার সর্বনাশ করুন।
সে তো তোমার কাছে ক’দিনের মেহমান
মাত্র, অতি শীঘ্রই
তোমাকে ছেড়ে আমাদের
কাছে চলে আসবে।”
নিষ্ঠা ও
আন্তরিকতার :
দাম্পত্য জীবনের সফলতার
প্রথম শর্ত হচ্ছে একে অপরকে নিষ্ঠা ও
আন্তরিকতার সাথে বরণ করে নেয়া।
তাদের সম্পর্ক হবে একান্ত আন্তরিক ও
একনিষ্ঠ। একের অন্তরে অপরের
প্রতি কোনো প্রকার
বিতৃষ্ণা থাকবে না।
কারণ
ছাড়া তালাক তলব না করা।
ইমাম
তিরমিজি, আবু দাউদ প্রমুখগণ সওবান
রাদিআল্লাহ আনহু থেকে বর্ণনা করেন,
“যে নারী কোন কারণ ছাড়া স্বামীর
কাছে তালাক তলব করল, তার উপর
জান্নাতের ঘ্রাণ পর্যন্ত হারাম।”
অবৈধ ক্ষেত্রে স্বামীর আনুগত্য না করা।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “আল্লাহর
অবাধ্যতায় মানুষের আনুগত্য
করা যাবে না।” এখানে নারীদের
শয়তানের একটি ধোঁকা থেকে সতর্ক
করছি, দোয়া করি আল্লাহ তাদের সুপথ
দান করুন। কারণ দেখা যায় স্বামী যখন
তাকে কোন জিনিসের হুকুম করে, সে এ
হাদিসের দোহাই দিয়ে বলে এটা হারাম,
এটা নাজায়েজ, এটা জরুরি নয়। উদ্দেশ্য
স্বামীর নির্দেশ উপেক্ষা করা।
আমি তাদেরকে আল্লাহর নিম্নোক্ত
বাণীটি স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি, আল্লাহ
তা’আলা বলেন, “যারা আল্লাহর উপর
মিথ্যা আরোপ করেছে, কিয়ামতের দিন
তাদের চেহারা কালো দেখবেন।”
হাসান বসরি রহ. বলেন, “হালাল ও
হারামের ব্যাপারে আল্লাহ ও তার
রাসূলের উপর মিথ্যা বলা নিরেট কুফরি।”
স্বামীর ডাকে অবহেলা না
করা:
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “কোন পুরুষ
যখন তার স্ত্রীকে নিজের বিছানায়
ডাকে, আর স্ত্রী তার
ডাকে সাড়া না দেয়, এভাবেই
স্বামী রাত যাপন করে, সে স্ত্রীর উপর
ফেরেশতারা সকাল পর্যন্ত অভিসম্পাত
করে।”
স্বামীর অনুমতি ছাড়া ঘর
থেকে বের না হওয়া।
আল্লাহ
তা’আলা বলেন, “তোমরা ঘরে অবস্থান কর”
ইবনে কাসির রহ. এর ব্যাখ্যায় বলেন,
“তোমরা ঘরকে আঁকড়িয়ে ধর, কোন
প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হয়ো না।”
নারীর জন্য স্বামীর আনুগত্য যেমন
ওয়াজিব, তেমন ঘর থেকে বের হওয়ার
জন্য তার অনুমতি ওয়াজিব।
স্বামী-স্ত্রীর একান্ত গোপনীয়তা প্রকাশ না করা :
আসমা বিনতে ইয়াজিদ
থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “কিছু পুরুষ
আছে যারা নিজ স্ত্রীর সাথে কৃত
আচরণের কথা বলে বেড়ায়, তদ্রুপ কিছু
নারীও আছে যারা আপন স্বামীর গোপন
ব্যাপারগুলো প্রচার করে বেড়ায়?! এ
কথা শুনে সবাই চুপ হয়ে গেল, কেউ কোন
শব্দ করল না। আমি বললাম, হ্যাঁ,
হে আল্লাহর রাসূল! নারী-পুরুষেরা এমন
করে থাকে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এমন
করো না। এটা তো শয়তানের
মতো যে রাস্তার মাঝে নারী শয়তানের
সাক্ষাৎ পেল, আর
অমনি তাকে জড়িয়ে ধরল,
এদিকে লোকজন তাদের
দিকে তাকিয়ে আছে!”
স্বামীর ঘর ছাড়া অন্য কোথাও বিবস্ত্র না হওয়া:
সূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
যে নারী স্বামীর ঘর ব্যতীত অন্য কোথাও
বিবস্ত্র হল, আল্লাহ তার গোপনীয়তা নষ্ট করে দেবেন।
বিষয়: বিবিধ
৮৬৪ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন