তরুণদের প্রতি।
লিখেছেন লিখেছেন Ruman ০৯ আগস্ট, ২০১৭, ১০:২৫:৩৬ সকাল
ইসলামের হেফাযতের জন্য এ দেশের তরুণরা যদি সংকল্পবদ্ধ হয় তবে তা সেনাবাহিনীর শক্তির চেয়ে কম নয়। সেনাবাহিনী যেমন দেশের সশস্ত্র শক্তি তেমনি তরুণসমাজ দেশের নৈতিক শক্তি, যা অনেক বেশি অপরাজেয়। গোটা ইসলামী ইতিহাসে এমন ঘটনা খুব কমই পাওয়া যাবে যেখানে মুসলমান তার প্রতিপক্ষের চেয়ে লোকবল ও অস্ত্রবলের দিক দিয়ে অগ্রগামী ছিল। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আমরা আমাদের দুশমনদের তুলনায় দুর্বল ছিলাম, কিন্তু যা আমাদেরকে প্রতি রণাঙ্গনে বিজয়ের বরমাল্য দান করেছে তা হচ্ছে ঈমান ও আমলের দুর্দম শক্তি। এই শক্তিকে জাগ্রত করার জন্য আমাদের তরুণরা যদি সংকল্পবদ্ধ হয় তবে সেদিন খুব দূরে নয় যখন গোটা জাতি ইসলামী আদর্শের উত্তম নমুনা হয়ে যাবে। তারা এমন অপ্রতিরোধ্য শান ও শওকত অর্জন করতে সক্ষম হবে যে, দুশমনের পক্ষে এদিকে মুখ তুলে তাকানোরও হিম্মত হবে না। কখনও যদি নির্বুদ্ধিতার কারণে এমন কাজ করেও বসে তবে আমরা তার উত্তর সীমান্তে নয়, তাদের ঘরে পৌঁছে দিতে পারব।
তরুণ ছাত্ররা যেমন গোটা দেশে আদর্শিক চেতনা বিতরণ করতে পারে তেমনি দেশের সামরিক ও অর্থনৈতিক উন্নতিতেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে। শর্ত শুধু এই যে, তারা আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য পুরনো চাহিদা ও অভ্যাসের কিছু কুরবানী দানে সংকল্পবদ্ধ হবেন এবং চেতনা ও কর্মে যে দুর্বলতাগুলো আছে তা দূর করতে সচেষ্ট হবেন।
লর্ড মেকলের প্রবর্তিত শিক্ষা-ব্যবস্থা আমাদের কর্মের উদ্যম ও নৈতিক পবিত্রতাকে যেমন বিনষ্ট করেছে, তেমনি আমাদের গোটা শিক্ষাব্যবস্থাকে পদ ও পদবীর পূজারী বানিয়ে দিয়েছে। আর আমাদের চিন্তা-চেতনাকেও এত বিষাক্ত করে দিয়েছে যে, আমাদের চিন্তার ধারাই বদলে গেছে। এই শিক্ষায় দ্বীন শুধু অনুপস্থিত নয়, এর জন্য যে পরিবেশ নির্বাচন করা হয়েছে তা একে দ্বীনের প্রতিপক্ষ ও ঈমান বিনষ্টকারী বানিয়ে দিয়েছে। যার অপরিহার্য ফলাফল এই হয়েছে যে, আমাদের ছাত্রদের চিন্তা ও হৃদয় ঈমানী চেতনা থেকে ধীরে ধীরে শূন্য হয়ে যাচ্ছে। আল্লাহ ও তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মাহাত্ম্য ও মুহাববত এবং তাঁদের আনুগত্যের প্রেরণা আমাদের জাতীয় শিক্ষাঙ্গণগুলো থেকে শুধু নিঃশেষই হয়ে যাচ্ছে না; বরং এই পবিত্র ও কল্যাণকর প্রেরণা বিলুপ্ত করার মাধ্যম হিসেবে কাজ করছে। উপরন্তু প্রাচ্যবিদ গবেষকদের নানামুখী চক্রান্ত সন্দেহ ও সংশয়ের এমন জাল বিছিয়ে দিয়েছে যে, দ্বীন ও ঈমানকে রক্ষা করা বাস্তবিক পক্ষে মর্দে মুজাহিদের কাজ।
নিঃসন্দেহে ছাত্রভাইদের মধ্যে এমন অনেক মর্দে মুজাহিদ আল্লাহ তৈরি করেছেন, যারা এইসব চক্রান্ত ছিন্ন করতে সক্ষম হয়েছেন কিন্তু সময়ের দাবি এই যে, জ্ঞান-বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় পারদর্শিতা অর্জন যেমন আমাদের ভাইদের সামনে একটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য হিসেবে রয়েছে তেমনি গুরুত্বের সঙ্গে; বরং আরো অধিক গুরুত্ব দিয়ে ইসলাম ও ইসলামী জ্ঞান-বিজ্ঞানকে গ্রহণ করা প্রয়োজন। আমরা যদি মুসলমান না হই তবে কিছুই হতে পারিনি। আর মুসলমান একটি সাম্প্রদায়িক উপাধী নয়; বরং ইসলামী জীবন-দর্শন, ইসলামী চেতনা এবং ইসলামী কর্ম ও চরিত্রের যারা অধিকারী তাদেরই নাম মুসলিম। বলাবাহুল্য, এর জন্য কুরআন ও সুন্নাহর জ্ঞান পূর্ণ আগ্রহের সঙ্গে অর্জন করা জরুরি।
বিষয়: বিবিধ
৭১৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন