১৭ বছরের মাস্টার্স বনাম ১১ বছরের দাওরায়ে হাদীস।
লিখেছেন লিখেছেন Ruman ০৩ মে, ২০১৭, ০৮:০৩:৪১ সকাল
১.
কওমি মাদরাসাগুলো আবাসিক হয়ে থাকে। আমি পর্যবেক্ষণ করে দেখেছি, একজন কওমি ছাত্রকে দিনে ন্যূনতম ১৩-১৪ ঘণ্টা পড়াশুনা করতে হয়। কেউ কেউ এরচেয়ে বেশি সময়ও পড়াশুনা করে। এর বিপরীতে একজন সাধারণ শিক্ষার্থী শত চেষ্টা করলেও দিনে ১০ ঘণ্টার বেশি পড়তে পারে না। কেউ কেউ তো সর্বোচ্চ ৮ ঘণ্টা পড়ে। এর সবচেয়ে বড় কারণ, অনাবাসিক হওয়ার কারণে যাতায়াতের পেছনে প্রচুর সময় নষ্ট হয়। কাজেই কওমি মাদরাসায় কর্মঘণ্টার সর্বোচ্চ পরিমাণ সদ্ব্যবহার হয়।
২.
সাধারণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছুটির পরিমাণ অনেক বেশি। শীতকালীন ছুটি, গ্রীষ্মকালীন ছুটি, বার্ষিক ক্রীড়াপ্রতিযোগিতা, ধর্মীয় উৎসব। এ ছুটিগুলোর একটিও কওমি মাদরাসায় নেই।
বিভিন্ন পরীক্ষার আগে-পরে সাধারণ বিদ্যালয়গুলোতে যে পরিমাণ ছুটি দেওয়া হয়, তা কওমি মাদরাসার তুলনায় দ্বিগুণ। কোথাও কোথাও তিনগুণ। যার কারণে কওমি মাদরাসায় কর্মদিবসের সংখ্যা অনেক বেশি।
৩.
কওমি মাদরাসার নিয়ম হলো, শিক্ষার্থী যতো উপরের দিকে ওঠে তার ক্লাসের পরিমাণ ততো বাড়ে। সাধারণ শিক্ষায় এর সম্পূর্ণ বিপরীত। কমতে কমতে সপ্তাহে পাঁচ দিন, দিনে মাত্র তিন ক্লাসে নেমে আসে।
মরার ওপর খরার ঘা হয়ে আসে সেশন জট, ছাত্র আন্দোলন, ক্লাস বর্জন, রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে শিক্ষকদের ক্লাসে অনুপস্থিতি।
আল্লাহর কাছে শুকরিয়ার বিষয় হলো, এই গযবনাক সমস্যাগুলোর একটিও কওমি মাদরাসায় নেই।
৪.
কাজেই তর্ক করে নয়, বাস্তবতার আলোকেই বলছি, পড়াশুনার মান, শিক্ষাব্যবস্থা, সময়ের সদ্ব্যবহার ও আন্তরিক পরিবেশে পাঠদানের কারণে কওমি শিক্ষার্থীরা যতো দ্রুত কোর্স সম্পন্ন করতে পারে, তা অন্যরা নানাবিধ জটিলতার কারণে পারে না।
আমি পূর্ণ আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলছি, কওমি মাদরাসার পাঠদানপদ্ধতি যদি সাধারণ শিক্ষাব্যবস্থায় প্রয়োগ করা হয় তাহলে মাত্র ১১ বছরে মাস্টার্স কমপ্লিট করা সম্ভব।
এবার সিদ্ধান্ত আপনার হাতে।
বিষয়: বিবিধ
৮৪১ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
১৯৯১ তে মাদরাসায় ভর্তি হলাম নূরানীতে।
২০০৫ সালে সেপ্টেম্বরে দাওরা শেষে বের হলাম, আমার হিসেবে ১৪ বছর লেগেছে। এক ক্লাস ২বার পড়িনি, ছিয়াজদহম ও পড়িনি, নূরানীর পর দোয়াজদহম থেকে শুরু করেছি।
সুন্দর পোষ্ট, অনেক অনেক ধন্যবাদ
মন্তব্য করতে লগইন করুন