বন্ধুত্ব।
লিখেছেন লিখেছেন Ruman ২৫ এপ্রিল, ২০১৭, ০১:২৩:০০ দুপুর
বন্ধুত্ব করতে কার না ভালো লাগে? তরুণ-তরুণীদের মাঝে বন্ধু হওয়ার প্রবণতা অনেক বেশি থাকে। বর্তমানে ইন্টারনেটের কল্যাণে অপরিচিত কারও বন্ধু হয়ে যাওয়া শুধু ক্ষণিকের ব্যাপার। ফেসবুক, টুইটার থেকে শুরু করে ইয়াহু চ্যাট রুম — কোথায় নেই বন্ধু! অনলাইন একটি চমত্কার জায়গা বন্ধুত্ব করার জন্য অবশ্যই, এমনকি ডেটিং আর প্রেমে পড়ার জন্যও। কিন্তু একটা কথা ভুলে গেলে মোটেও চলবে না যে এই অনলাইনে বন্ধুত্ব একটি ভয়ানক বিপজ্জনক বিষয়।অনলাইনে বন্ধুত্বের মাধ্যমেই নানা ধরনের ক্ষতি হয়ে যেতে পারে আপনার, হতে পারেন নানারকম প্রতারণাও শিকার। পরিচয়ের শুরুতেই নিজের ফোন নম্ব্বর দিয়ে দেয়াটা অনেক বড় বোকামি। ফেসবুক, টুইটার কিংবা ইয়াহু চ্যাট রুম — যে মাধ্যমেই কারও সঙ্গে পরিচিত হন না কেন, অন্যপাশের সত্যিকার মানুষটাকে কিন্তু আপনি জানেন না বা চেনেন না। হয়তো আপনারই দেয়া এই ফোন নম্বরটি চলে যাবে কোনো বাসের সিটের পেছনে,কিংবা টাকার ওপর। অথবা এই ফোন নম্বরে অনবরত বিরক্ত করা হতে পারে আপনাকে। আসতে পারে অশ্লীল মেসেজ ও কল। অল্প ক’দিনেই নিজের জীবনের সব ব্যক্তিগত কথা বলে দেয়া আরেকটি বোকামির পর্যায়ে পড়ে। নিজের ব্যক্তিগত কথা বলে দিলে পরে বিপদে পড়ার ঝুঁকি বেড়ে যায় অনেক। আপনি কী করেন, কী করতে পছন্দ করেন, কোথায় থাকেন, পরিবার-পরিজনসম্পর্কিত কথাবার্তা, আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুবান্ধবের নাম-ঠিকানা — এসবই ব্যক্তিগত তথ্য, কারণ এতে অপর মানুষটি খুব সহজেই আপনাকে খুঁজে বের করতে পারেন। মানুষটি ভালো না হলে এতে আপনার বিপদের আশঙ্কা বাড়বে। সুতরাং সতর্ক থাকুন। সবার জন্য ছবি উন্মুক্ত রাখা কিংবা ছবি দেয়াও ঠিক নয়। এই ভুলটি অনেকে না জেনেই করে থাকেন। আবার সতর্কভাবে অনলাইনব্যবহার না করলেও এই বোকামিটি অনেকেই করেন। অনলাইনে ছবি দেয়ার ব্যাপারে অনেক সতর্ক হতে হবে। আপনি সামান্য পরিচয়ে যাকে আপনার ছবি দিচ্ছেন, সে তা ব্যবহার করতে পারে অশ্লীল কোনো ছবিতে। নিজের ছবি ফেসবুকে বা অন্য কোথাও দেয়ার পর তা অবশ্যই সবার দেখার জন্য উন্মুক্ত রাখাও নিরাপদ নয়। কারণ যে কেউ এই ছবি ব্যবহার করতে পারে খারাপ কোনো কাজে। কেবল কিছু লাইক ও কমেন্ট পাওয়ার আশায় নিজের ছবির প্রাইভেসি সেটিং না দিয়ে রাখাটা চূড়ান্ত বোকামি, বিশেষ করে মেয়েদেরক্ষেত্রে।অনেকেই আছেন যারা বন্ধুবান্ধব কিংবা পরিচিত মানুষের সঙ্গে চ্যাটিংয়ের সময় অন্য কারও সম্পর্কে খারাপ কথা বলে থাকেন। এটাও একটিবড় ধরনের বোকামি। এতে আপনি অনেক বড় ঝামেলায় জড়িয়ে যেতে পারেন; কারণএই চ্যাটিং যদি অন্য কারও সামনে চলে আসে, কিংবা আপনি যাকে বিশ্বাস করে বলেছেন, সেই মানুষটাই যদি অন্য কারও কাছে এসবের স্ক্রিন শট দেয়,তবে আপনি বিপদে পড়ে যাবেন। যত ভালো বন্ধুই হোক, কিংবা যত ভালো পরিচিতিই থাকুক না কেন কারও সম্পর্কে অনলাইনে খারাপ কিছু বলবেন না।আবেগের বশে এমন কোনো ধরনের কথা বলা একদমই উচিত নয়, যাতে আপনি পরে বিপদে পড়তে পারেন। কারণ যে কোনো কিছুর স্ক্রিন শট রেখে পরে ব্ল্যাকমেইল করতে পারেন অন্য পাশের ব্যক্তিটি। কারও সঙ্গে কথা বলারসময় যদি মনে হয় যে তার কথাবার্তা অশালীন, তাহলে তখনই সাবধান হয়ে যান। সবচেয়ে ভালো হয়, এ ধরনের আপত্তিকর আচরণ দেখলে ব্লক করে দেয়া যাতে সে পরে কোনো যোগাযোগ করতে না পারে। নতুন পরিচিত বন্ধুর সঙ্গে সারা দিন চ্যাটিং অনেকেই করেন। দু-এক দিনের পরিচিত নতুন বন্ধুর সঙ্গে সারা দিনই চ্যাটিংয়ের মাধ্যমে কথা চালিয়ে যান অনেকেই। এটা অনেক বড় একটি বোকামি, কারণ এতে আপনার দৈনন্দিন রুটিনের সঙ্গে পরিচিত হচ্ছে আপনার নতুন বন্ধুটি। আর এত দ্রুত কাউকে নিজের জীবনে স্থান দেয়ার ফলাফল হতে পারে ভয়ানক।অনেকেই আছেন যারা স্কাইপ কিংবা ইয়াহু অথবা ফেসবুকে অপরিচিত কিংবা সামান্য পরিচিত মানুষের সঙ্গে ভিডিও চ্যাট করে থাকেন। কয়েক দিনের পরিচিত মানুষ হলেও এই কাজটি করা বোকামির পর্যায়ে পড়ে। কারণ এতে আপনার অনেক ছবি তুলে রাখা যায় এবং ওয়েব ক্যামেরার মাধ্যমে আপনার ঘরের অনেক কিছু অন্যপাশের ব্যক্তির কাছে স্পষ্ট হয়ে যায়। এর মাধ্যমে আপনি নিজেই তাকে ব্ল্যাকমেইল করার নানা উপকরণ দিয়ে দিচ্ছেন। খুব ঘনিষ্ঠ মানুষ ছাড়া ভিডিও চ্যাট করা অনুচিত। অনলাইনে দু-তিন দিনের পরিচিত কোনো মানুষের সঙ্গে দেখা করতে যাওয়া অনেক বড় বোকামি। কারণ যে মানুষটির সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছেন, তাকে আপনি ভালোকরে জানেনই না। খারাপ মানুষ হলে ছিনতাই, রেপ্ড এমনকি খুন হওয়ার মতোবিপদের সঙ্গে নিজেকে জড়িয়ে ফেলতে পারেন। ইদানীং এ ধরনের ঘটনা বেড়ে চলেছে। সুতরাং সতর্ক থাকুন। কারও সম্পর্কে ভালোভাবে না জেনে নিজের সব তথ্য দিয়ে দেবেন না। এতে আপনার জীবনে বিরাট ঝামেলা হতে পারে।ব
বিষয়: বিবিধ
৭০৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন