ইসলামের দৃষ্টিতে নারীমুক্তির হাতছানী।

লিখেছেন লিখেছেন Ruman ১৮ এপ্রিল, ২০১৭, ০১:৫৩:৪৭ দুপুর

নারী-পুরুষের যৌথ প্রয়াসে সচল হয়েছে সভ্যতার গতিধারা। সুনিপুণ কারিগর আল্লাহ তার সৃষ্টির ভারসাম্য বজায় রাখার জন্যই এ ধারা চালু করেছেন। সুন্দর পৃথিবী গড়ার ক্ষেত্রে পুরুষের অবদান যেমন বিশাল, তেমনি নারীদেরও। নারীদের প্রেরণা না পেলে, তাদের আন্তরিক সহযোগিতা না থাকলে পৃথিবী এতো সুন্দর হতো না। সভ্যতা বিকাশের ক্ষেত্রে উভয়ের প্রয়াস সমান। উভয়েই কৃতিত্বের দাবিদার। সৃষ্টির সহজাত ধারায় নারী-পুরুষের মধ্যে মর্যাদাগত কোনো পার্থক্য নেই। কিন্তু তারপরও যুগে যুগে বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠী নারীদের বঞ্চিত করেছে তাদের প্রাপ্য অধিকার থেকে। তাদের ওপর চালিয়েছে অত্যাচারের খড়্গ। ছিনিয়ে নিয়েছে তাদের স্বাধীনতা ও স্বকীয়তা।

শুধু সামাজিকভাবেই নিগৃহীত হয়নি নারীরা। বিভিন্ন ধর্মেও নারীদের অবজ্ঞা ও অবমূল্যায়ন করা হয়েছে। পুরুষশাসিত সমাজে ধর্মের আবরণে নারীরা যুগে যুগে লাঞ্ছিত হয়ে আসছিলেন। নারীরা সবচেয়ে বেশি লাঞ্ছনার শিকার হয়েছেন ইসলামপূর্ব জাহেলি সমাজে। সে সময়ে নারীদের সামান্য মানুষ হিসেবে মূল্য দিতেও কুণ্ঠাবোধ করা হতো। নির্মমতা ও নিষ্ঠুরতার কোনো স্তর বাকি থাকেনি, যা সে সময়ে নারীদের সঙ্গে করা হয়নি। এসব আচরণ নীরবে সহ্য করা ছাড়া নারীদের আর কোনো উপায় ছিল না। ইসলাম আবির্ভাবের পর নারীদের ভাগ্যাকাশে দেখা দেয় প্রোজ্জ্বল জ্যোতি।

প্রকৃতি ও মানবতার ধর্ম ইসলাম এসেছে নারীদের জন্য আশীর্বাদ হিসেবে। ইসলামই প্রথম দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে ঘোষণা করে, নারীরাও মানুষ। তাদেরও সদাচরণ পাওয়ার অধিকার আছে। তাদের প্রতি কোনো ধরনের অবজ্ঞা, অবহেলা ও অপমান সহ্য করা হবে না। কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘তারা (নারীরা) তোমাদের পোশাক ও তোমরা তাদের পোশাক।’ যুগে যুগে অধিকারহারা নারীদের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার দৃপ্ত ঘোষণার মধ্য দিয়ে যাত্রা করে ইসলাম। কোন সমাজে, কোন ধর্মে নারীদের কীভাবে অধিকারহারা করা হয়েছে, সেগুলো নির্ণয় করে সেসব ক্ষেত্রে তাদের পুঙ্খানুপুঙ্খ অধিকার ফিরিয়ে দেয়।

ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক, রাষ্ট্রীয়, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক তথা সব ক্ষেত্রে নারী অধিকার প্রতিষ্ঠার অগ্রদূত ইসলাম। মানবজীবনের এমন কোনো ক্ষেত্র বাদ যায়নি, যেখানে নারীদের ব্যাপারে ইসলামের ন্যায়ানুগ ও বিবেচনাপ্রসূত নির্দেশনা অনুপস্থিত। কোরআনুল কারিমের বিভিন্ন আয়াত ও হাদিসে নারীদের অধিকার, মর্যাদা ও তাদের মূল্যায়ন সম্পর্কে সুস্পষ্ট বর্ণনা রয়েছে। ইসলামের দৃষ্টিকোণে নারী-পুরুষ পরস্পরে প্রতিযোগী নয় বরং সহযোগী। ইসলামের বিজয়গাথা ও সাফল্যের পেছনে তাদের যৌথ প্রয়াস সমানভাবে কার্যকর। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম যথার্থই বলেছেন, ‘কোনোকালে একা হয়নিকো জয়ী পুরুষের তরবারি/প্রেরণা দিয়েছে শক্তি দিয়েছে বিজয় লক্ষ্মী নারী।’

নারীরা মানবসভ্যতার অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। পুরুষদের প্রেরণা ও শক্তির মূল উৎস নারী। তাদের ব্যতিরেকে মানবসভ্যতার অস্তিত্ব কল্পনাতীত। সব উন্নতি-অগ্রগতির মূলে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে ভূমিকা রয়েছে নারীর। তাই এদের সঙ্গে ইসলামের নির্দেশনা অনুযায়ী আচরণ জরুরি। নারীদের অধিকার সুরক্ষায় আন্তরিক হতে হবে প্রত্যেক পুরুষকে। তবে একমাত্র ইসলামই নারীদের প্রকৃত নিরাপত্তা ও শান্তির আশ্রয়। সভ্যতার চোখ ধাঁধানো উৎকর্ষের যুগেও নারীদের অপব্যবহার ও তাদের প্রতি অনাচার করা হচ্ছে। ‘দুনিয়ার শ্রেষ্ঠ সম্পদ’ হিসেবে খ্যাত নারীরা আবারও অশুভ পরিণতির দিকে এগোচ্ছে। তাদের সে পথ থেকে ফিরে আসতে ইসলাম হাতছানি দিয়ে ডাকছে।

বিষয়: বিবিধ

৮০৭ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

382734
১৮ এপ্রিল ২০১৭ রাত ০৮:৫৮
হতভাগা লিখেছেন : এখনকার নারীরা ইসলামের বিপরীতে মনুষ্য আইনকে পছন্দ করে । পুরুষের ২য় বিবাহ (সামর্থ্য থাকলে)করার জন্য যেখানে আল্লাহই অনুমতি দিয়ে রেখেছেন সেখানে মনুষ্য আইনে প্রথম স্ত্রীর আনুমতির বিধান আনা হয়েছে ।
382742
১৯ এপ্রিল ২০১৭ রাত ১১:১৭
কুয়েত থেকে লিখেছেন : মানবতার ধর্ম ইসলাম এসেছে নারীদের জন্য আশীর্বাদ হিসেবে সুনিপুণ কারিগর আল্লাহ তার সৃষ্টির জন্যই এ ধারা চালু করেছেন ভালো লাগলো অনেক ধন্যবাদ

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File