নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন ও আমার পর্যবেক্ষণ
লিখেছেন লিখেছেন আপোষহীন কলম ১৮ ডিসেম্বর, ২০১৬, ০৮:০১:০১ সকাল
আগামী ২২ তারিখ নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন। আর মাত্র ৩ দিন পর নারায়ণগঞ্জের নগরবাসী নির্বাচন করবে কে হবে তাদের নগর পিতা(অথবা মাতা)। এ মুহূর্তে পুরো নারায়ণগঞ্জে এক উৎসব মুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। মেয়র সহ কাউন্সিলর প্রার্থীরা তাদের ভোটাদের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছেন।। মেয়র নির্বাচনে ৭ জন প্রার্থী থাকলে ও (কাল অবশ্য ২০ দলীয় জোট ভুক্ত এলডিপির প্রার্থী ধানের শীষের প্রার্থীকে সমর্থন করে নির্বাচন থেকে সরে দাড়িয়েছেন) মূল প্রতিযোগীতায় আছেন নৌকা প্রতীকে ডাঃ সেলিনা হায়াৎ আইভি (যিনি ২০১১-২০১৬ এর নভেম্বর পর্যন্ত মেয়র ছিলেন) এবং ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করছেন বিশিষ্ট আইনজীবি নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সাবেক সভাপতি এবং সাত খুন মামলায় বাদী পক্ষের আলোচিত আইনজীবী এড সাখাওয়াত হোসেন খান। এই নির্বাচন সমগ্র বাংলাদেশের আকর্ষণের কেন্দ্র বিন্দুতে পরিণত হয়েছে।প্রতিদিন ঢাকা থেকে শত শত সাংবাদিক নারায়ণগঞ্জে আসছেন এবং প্রতিদিন, প্রতিঘন্টায় তাদের প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিকস মিডিয়াগুলোতে নারায়ণগঞ্জের নির্বাচনের আপডেট দেওয়ার চেষ্টা করছেন। কেন্দ্রীয় ভাবে আওয়ামীলীগ ও বি এন পি এই নির্বাচনকে সিরিয়াস ভাবে নিয়েছে।(তবে বি এন পি কে খুব বেশী সিরিয়াস মনে হচ্ছে।তাদের দলীয় চেয়ারপার্সন ছাড়া প্রায় সকল কেন্দ্রীয় নেতারা নারায়ণগঞ্জ সফর করেছেন ও করছেন। বি এন পির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও কয়েকবার এসেছেন ইতিমধ্যে। কেন্দ্রীয় ভাবে বি এন পির স্হায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে প্রধান সমন্বয়ক করে মনিটরিং সেল ও গঠন করা হয়েছে।) দুই দলই এই নির্বাচনকে তাদের মর্যাদার লড়াই হিসেবে দেখছে। বি এন পি এই নির্বাচনে জিতে তাদের জনসমর্থন প্রমাণের চেষ্টা করছে।এমনকি তাদের কেউ কেউ বলছেন এই নির্বাচনে ফলাফল ছিনতাই হলে নারায়ণগঞ্জ থেকেই সরকার পতনের আন্দোলন শুরু হতে পারে।(কথার কথা ও হতে পারে।)আপাত দৃষ্টিতে ডাঃ সেলিনা হায়াৎ আইভি নির্বাচনে এগিয়ে আছেন বলে মনে করা হচ্ছে। তার বিগত ব্যাপক উন্নয়ন মূলক কাজের কারণেই তিনি এগিয়ে আছেন বলে মনে করা হচ্ছে। স্হানীয় মিডিয়াগুলোর ও নেক নজর তিনি পাচ্ছেন।সে দৃষ্টিতে বি এন পি প্রার্থীকে আন্ডার ডগ মনে হচ্ছে। নির্বাচন যদি নির্দলীয় হত বা আইভি স্বতন্ত্র প্রার্থী হতেন তাহলে তাহলে নির্বাচনে অন্য কোন প্রার্থীর টিকে থাকা তো অনেক দূরের বিষয় জামানত ধরে রাখাই কঠিন হত তা যেই হোন না কেন।কিন্তু এবার পরিস্থিতি সম্পূর্ণ ভিন্ন।নির্বাচন হচ্ছে দলীয় প্রতীকে।লড়াই হচ্ছে নৌকা আর ধানের শীষের মাঝে। বিষয়টা আইভির মাথায় চিন্তার ভাজ ফেলেছে। কারণ নারায়ণগঞ্জের এমন অনেক মানুষ আইভীর ভক্ত হলে ও তারা নৌকায় ভোট দিবেন না। কারণ বিগত সাত বছরে আওয়ামী লীগের বর্বরতার শিকার নারায়ণগঞ্জের হাজারো মানুষ।বিরোধী দলের বিশেষ করে বি এন পি, জামায়াতে ইসলাম,ছাত্রশিবিরের হাজারো নেতা কর্মীকে জেলে টুকানো হয়েছে,মামলা দেওয়া হয়েছে।বিরোধী নেতা কর্মীদের ঘরবাড়ি লুটপাট, হামলা সহ এমন কোন কাজ নেই যা সরকারী দল করে নি।এ ছাড়া জাতীয় জীবনে আওয়ামী বাকশালী ফ্যাসীবাদী শাসন মানুষের চোখের সামনে আছে।নির্বাচনে ভোট দেওয়ার সময় অবশ্য ই বিষয়গুলো ভোটারদের বিবেচনায় আসবে। এ ছাড়া নারায়ণগঞ্জ বি এন পি নেতাদের অক্লান্ত পরিশ্রম আর ধানের শীষের পক্ষে সৃষ্ট গনজোয়ারে সাখাওয়াত সাহেবের মত রাজনীতিতে নবীন প্রার্থী যদি নারায়ণগঞ্জ ইতিহাসের সবচেয়ে জনপ্রিয় জনপ্রতিনিধি ডা সেলিনা হায়াৎ আইভীকে হারিয়ে নগর ভবনের চেয়ারে বসতে পারেন তবে নারায়ণগঞ্জের একজন রাজনৈতিক কর্মী ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক হিসেবে আমি অন্তত আশ্চর্য হব না এ কথা হলফ করে বলতে পারি।
বিষয়: বিবিধ
৭৯৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন