দুঃখের ভালোবাসা

লিখেছেন লিখেছেন মুহাম্মাদ আবদুর রাজ্জাক ২৭ অক্টোবর, ২০১৬, ০৭:১৭:৫১ সকাল

- আম্মু মামি কেন আসলো আমাদের

বাসায়, আবার দেখি চলে গেল?

(রাজু)

- মিস্টির বিয়ে ইদের পরে, তাই দাওয়াত

দিতে আসলে, এই নেয় বিয়ের কার্ড।

(মা)

- এতো তারাতারি বিয়ে দিবে কেন

মিস্টির! এবার সে এসএসসি পরীক্ষা

দিলো, বয়স অনেক কম?

(রাজু)

- ভালো ছেলে পেলো তাই, ছেলে

বিদেশে থাকে, মিস্টিকে বিয়ে করে

বিদেশে নিয়ে যাবে।

(মা)

- ও আচ্ছা, তাহলে আমরা দুই দিন আগে

যাবো।

(রাজু)

- ঠিক আছে তুই চলে যাবি ইদের আগে,

আমি বিয়ের দিন যাবো আমার বাসায়

কাজ আছে।

(মা)

- ঠিক আছে আম্মু, আমাকে টাকা দেও

আমি মার্কেট করে আসি, আমি একটা

পান্জাবী কিনবো এবং তোমার জন্য

একটা শাড়ি কিনবো।

(রাজু)

- বিকালে গিয়ে মার্কেট করে

আসবি, ইদের মার্কেট সহ।

(মা)

.

বিকালে চলে গেলাম মার্কেট করতে,

আমার বন্ধু সহ, মার্কেট করে বাড়ি

পিরবো এমন সময়, একটা মেয়ে দেখলাম

রিক্সাই করে যাচ্ছে, মেয়েটার হাতে

একটা বই আছে, বই পড়তে পড়তে যাচ্ছে।

আমি দেখে মুহূর্তের বিতর তাকে পছন্দ

করে পেললাম, আমার বুকের বিতর

ভুমিকম্প শুরু হল, জীবনে প্রথম এতো

ক্রাশ খাইলাম। মেয়েটা চলে গেলো

আমি কিছু ও বলতে পারলাম না। আমি

কী আর করবো বাসায় চলে গেলাম কিন্তু

তার মায়াবী চেহারা আমার চোখের

সামনে ভাঁসে। সেদিন রাত আর ঘুম

হয়েনি আমার তার কথা ভাবতে ভাবতে

মিস্টির বিয়ের কথা ভুলে গেলাম,

মিস্টির বিয়েতে ইদের আগে আর যাওয়া

হলো না গাঁয়ে হলুদের রাতে গেলাম।

আমাদের বাসা থেকে অনেক দূর

মিস্টিদের বাসা। মিস্টিদের বাসায়

ঢুকতে না ঢুকতে দেখি সব মেয়ে তাদের

বাড়িতে। মিস্টিদের বাসায় গেলাম

নাস্তা দিলো, নাস্তা করে একটু শুইতে

গেলাম।

ঘুম থেকে ওঠে দেখি সন্ধ্যা হয়েগেছে,

মোবাইল টিপাটিপি করতে পারি না,

বিয়ের স্টেস সাঁঝিয়ে দিলাম অনেক

শয়তানি করলাম তখন রাত 11 টা বাজে

বর পক্ষ রাতে আসবে তাই আমি অপেক্ষা

করতেছি।

বর পক্ষ না আসলে এখন ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে

মেয়েটাকে নিয়ে স্বপ্নের দেশে চলে

যেতাম, অবশ্যই এখনো তাকে নিয়ে

ভাবতেছি।

হঠাৎ বর পক্ষ চলে আসলো গাড়ি নিয়ে,

আমি তাকিয়ে দেখে হা- করে আছি

আমি অবাক হয়ে গেলাম দেখে, মনে হয়

স্বপ্নে দেখতেছি।

ওই মেয়েটা কে রিক্সাই দেখলাম সেদিন

সে এখন দেখি বিয়েতে, আমার ভাগ্য

খুলে গেলো কিছু একটা করতে হবে, আজ

রাতের বিতর।

তাদের কে বাসায় নিলাম নাস্তা

দিলাম, আর আমি এক নজরে মেয়েটার

দিকে তাকিয়ে দেখতেছি, হলুদ শাড়ি

গায়ে দিল মনে হয় পরী বসে আছে। এমন

দৃশ্য দেখতে দেখতে অনেক রাত হয়ে

গেল, এখনো কিছু ও করতে পারলাম না।

.

- এই যে মিস্টার শুনেন, আপনাকে

বলছি?

- জ্বী বলুন? [মেয়েটা আমাকে ডাকছে

বুকে ভুমিকম্প হচ্ছে কথা আসে না মুখ

দিয়ে]

- আমাকে একটু সহযোগিতা করুন,

আপনারা হলুদের ভাটিটা একটু দেখিয়ে

দিন।

- চলুন আমার

সাথে।

- আচ্ছা ঠিক আছে, আপনি কী হোন

মিস্টি আপুর?

- আমি ওর খালাতো ভাই,

আপনি?

- আমার বন্ধবীর ভাইয়ের বিয়ে, আমার

ভাই হবে।

- আপনার নাম টা

কী?

- শিমু, আপনার?

- রাজু আমার নাম, এই যে নিন হলুদের

ভাটি।

- ধন্যবাদ।

নাম টা জানা হল তার নাম শিমু, ওহ!

অনেক সুন্দর নাম, শিমু হলুদের ভাটি

নিয়ে চলে গেল।

দুই ঘন্টা পর আবার দেখা হল তার সাথে

এখন তার নাম্বার টা নিবো, অবশ্যই

দিবে কারণ তাকে আমি বার বার

তাকিয়ে দেখতেছি সে কিছু হলে ও

বুঝতে পারবে।

- এই মেডাম কখন যাবেন

আপনারা?

- এখন আমরা চলে যাবো আমাদের কাজ

শেষ কালকে আবার আসবো, হঠাৎ

মেডাম বললেন কেন?

(শিমু)

- ভালো লাগলো তাই, আপনার নাম্বার

টা দিবেন?

(রাজু)

- আমার আম্মু বলছে কাউকে নাম্বার

দিতে না, আমি পারবো না দুঃখিত।

(শিমু)

- আমাকে নাম্বার দিলে কী আপনার

আম্মু দেখবে প্লিজ নাম্বার টা দিন...?

(রাজু)

- পারবো না, ভালো

থাকবেন?

চলে গেল চলে গেল কিছু ও বলতে পারলাম

না।

নাম্বার ও নিতে পারলাম না, আবেগে

আমার কান্না চলে আসলো, তার সাথি

হতে পারবো না, সে দিন রাত আর ঘুম

আসেনি। সকাল ঘুম থেকে ওঠে দেখি

আম্মু আসলো, আমি নাস্তা করে একটু

হাঁটতে গেলাম ভালো লাগে না মনটা ও

বিষন খারাপ।

দুপুর হয়ে গেলো এখন বর পক্ষ আসবে তখন

আমি গোসল করে ঠিকঠাক হয়ে আসলাম।

বর পক্ষ আসলো শিমু ও আসলো, তাকে

আমি দেখে তার সামনে থেকে চলে

গেলাম, খাওয়া দাওয়া হওয়ার পরে শিমু

আমাকে ডাকলো আমি কিছু ও বলিনি,

আমি চলে গেলাম তার সামনে

থেকে।

বিয়ের কাজ সম্পূর্ণ হল, এখন মামি বলে

আমি মিস্টির সাথে যাইতাম, মিস্টি

বলে আমার সাথে না যাইলে রাজু আমি

ও যাবো না, পরে কী আর করবো যাইতে

হল তার সাথে।

বর এর গ্রামে যখন গেলাম, আমাদের কে

নাস্তা দিলো, নাস্তা খেয়ে একটু ঘুরতে

গেলাম।

হঠাৎ দেখি শিমু আমার সামনে দাড়িয়ে

বলে....

- আপনি আমার সাথে রাগ

করলেন?

- না কেন করবো?

- তাহলে আমি ডাকলে শুনেন না কেন

আমি কত বার ডাকলাম না শুনে চলে

গেলেন, এই নেও আমার নাম্বার এখন রাগ

কমলো?

- আমার নাম্বার লাগবে না, তোমাকে

লাগবে?

- কীহহহহহ?

- হ্যাঁ আমি তোমাকে

ভালোবাসি।

- ও আচ্ছা, তাই তুমি আমাকে অনুসরণ

কর?

- হ্যাঁ আমি তোমাকে ভালোবাসি, তুমি

আমাকে ভালোবাসো না?

- আমি দুঃখিত, আমি তোমাকে

ভালোবাসতে পারবো না, কারন আমার

বিয়ে ঠিক? [কান্না কান্না ভাবে বলে

শিমু চলে গেল আর আসেনি]

.

তখন মনে হয় আমার মাথায় আকাশ

ভেংগে পড়লো, আমি কী শুনলাম সাথে

সাথে আমার চোখ থেকে পানি পড়া শুরু

করলো, সেদিন আর থাকিনি চলে গেলাম

আমি, জীবনে এতো বড় দুঃখের পাহাড়

আমাকে চেপে ধরবে আমি কল্পনা

করিনি।

সুখের সাগর কে ভুলে দুঃখের সাগরে চলে

গেলাম, সারাদিন তাকে নিয়ে ভাবতে

ভাবতে দিন চলে গেলো আমার।

বিষয়: সাহিত্য

৮১২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File