চাদ ও উপলব্ধি
লিখেছেন লিখেছেন আমার বিশ্বাস ২৬ অক্টোবর, ২০১৬, ০৯:৩৬:২৮ রাত
আজ ভোরে হাটছিলাম। চাদটা দেখলাম বেশ বড়। ছবিটা তুলে রাখলাম। চাঁদ দেখতে দেখতে কদিন আগে শোনা সূরা ইয়াসীন এর কথা মনে পড়ে গেলো। এখানে চাঁদ ও সূর্য সম্পর্কে ইন্টারেস্টিং, mind blowing একটা জিনিস শিখলাম Nouman Ali Khan এর কাছে থেকে।
সূরা ইয়াসীনে ১৩ নং আয়াত থেকে একটি জনপদে ৩ জন নবী পাঠানোর ঘটনার উল্লেখ আছে। কেমন ব্যতিক্রম তাই না? ৩ জন নবী একসাথে! একটি মাত্র জনপদে! সেখানকার বাসিন্দারা ঐ ৩ জন নবীকে অস্বীকার করেছিলো। নবীগন ও বাসিন্দাদের কথোপকথন চলেছে ১৯ আয়াত পর্যন্ত। এর পরের আয়াতে অর্থাৎ ২০ আয়াতে নগরীর দূর প্রান্ত থেকে এক বিশ্বাসী এসে নবীদের কথা মেনে নেওয়ার জন্য ঐ বাসিন্দাদের দাওয়াত দেয়। যার ফলশ্রুতিতে তারা তাকে হত্যা করে ফেলে এবং তার কারনে তাদেরকে শব্দের আওয়াজে আল্লাহ ধবংস করে ফেলেন। এভাবে ২৯ আয়াত শেষ হয়। এখানে দ্রষ্টব্য যে, ঐ ৩ জন নবীর চাইতে ঐ বিশ্বাসী বান্দাহ এর কথা বেশি ফোকাস করেছেন আল্লাহ। নবীরা নবীদের কাজ করে গেছেন, উম্মত তার নিজস্ব কাজ করে গেছে। নবী থাকা সত্ত্বেও সেই বিশ্বাসী বান্দাহ মনে করেন নাই যে আমার কি দরকার দাওয়াত দিয়ে? নবীরা তো আছেনই। কিন্তু না, তিনি নিজের জীবন পর্যন্ত দিয়ে দিয়েছেন দাওয়াত দিয়ে এবং নবীরা থাকা অবস্থায়ই।
এই ঘটনা বর্ননার কিছুক্ষন পর আল্লাহ প্রকৃতির দিকে নজর ঘোরাতে বললেন এবং ৪০ নং আয়াতে সূর্য ও চাঁদের কথা বললেন। ২ টিরই আলাদা কক্ষপথ আছে এবং তাদের কাজও আলাদা। ঠিক যেমন নবী ও তাদের উম্মতগন। নবীদের কাজ তারা করবেন তাই বলে উম্মতরা কিছু না করে পার পেয়ে যাবে তা হবে না। তাদের কাজের কক্ষপথ আলাদা। তাই নবীদের সূর্যের সাথে তুলনা করা যায় এবং উম্মতদের চাঁদের সাথে তুলনা করা যায়।
সূর্য সবসময়ই একই রকম অবস্থায় থাকে কিন্তু চাঁদ কমে বাড়ে। এই বিষয়টাও খুব সুন্দরভাবে নবী ও উম্মতদের সাথে মিলে যায়। নবীরা আল্লাহর পথে পূর্ন ঈমান নিয়ে সবসময় অবিচল থাকেন। কিন্তু উম্মত সবসময় পূর্ন ঈমান নিয়ে অবিচল থাকতে পারে না। কখনো তারা পূর্নিমার চাঁদের মত হয় আবার কখনও খেজুরের শুকনা ডালের মত হয়ে যায় (আয়াত ৩৯)
সূর্যের আলোয় আলোকিত হয়ে যেমন চাঁদ অন্য কিছুকে আলোকিত করে তেমনি নবীরূপ সূর্যের আলোয় আলোকিত হয়ে চাঁদরূপ উম্মত অন্যকে আলোকিত করবে এটাই কাম্য। মুহাম্মাদ (স) কেও সূর্যের সাথে তুলনা করা হয়েছে। সুতরাং তার উম্মতকেও চাঁদের ভূমিকা পালন করতে হবে। এভাবে যতবার আমরা সূর্যের দিকে, চাঁদের দিকে তাকাবো ততবারই আল্লাহ আমাদেরকে নবীদের কথা ও তাদের কাজের কথা এবং আমাদের কাজের কথা স্মরন করিয়ে দিতে চান!!!
অবাক হওয়া এখনো বাকি। ঐ যে ৪০ নং আয়াতে সূর্য ও চাঁদের কথা বলা হয়েছে- ওখানে ‘ইয়ামবাগি’ শব্দটা ব্যবহৃত হয়েছে। ৪০.) না সূর্যের ক্ষমতা আছে চাঁদকে ধরে ফেলে এবং না রাত দিনের ওপর অগ্রবর্তী হতে পারে, সবাই এক একটি কক্ষপথে সন্তরণ করছে।
আবার কিছুদূর গিয়ে আল্লাহ ৬৯ আয়াতে বলছেন,
৬৯.) আমি এ (নবী)-কে কবিতা শিখাইনি এবং কাব্য চর্চা তার জন্য শোভনীয়ও নয়। এ তো একটি উপদেশ এবং পরিষ্কার পঠনযোগ্য কিতাব।
এখানেও ‘ইয়ামবাগি’ শব্দটা ব্যবহৃত হয়েছে। আল্লাহ কি সুন্দরভাবে সূর্য, চাঁদের ঐ ৪০ নং আয়াত এবং মুহাম্মাদ (স) এর ৬৯ নং আয়াত ‘ইয়ামবাগি’ শব্দটা দিয়ে লিঙ্ক করেছেন। আর আমাদের সুক্ষ ইঙ্গিত দিয়ে দিয়েছেন যে সূর্য সূর্যের কাজ করবে, চাঁদ চাঁদের কাজ করবে নিজের অবস্থান বজায় রেখে। চাঁদ সূর্য থেকে আলোর সাহায্য নেয় তেমনিভাবে মুহাম্মাদ (স) এর রেখে যাওয়া আল কুরআন ও হাদীস থেকে আমরা চাঁদের আলো নেওয়ার মত করে সাহায্য নিবো!
বিষয়: বিবিধ
৯৮৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন