সূরা সফ
লিখেছেন লিখেছেন আমার বিশ্বাস ২৪ অক্টোবর, ২০১৬, ০২:৪৯:১৭ দুপুর
সূরা সফ ‘মুসাব্বিহাত’ সিরিজের একটি সূরা। এই সূরার শুরুতে সাব্বাহা লিল্লাহ রয়েছে। এই মুসাব্বিহাত সূরাগুলো মাদানী সূরা এবং এই সূরাগুলোয় আল্লাহ মুসলিমদের বিশ্বাসের পরিপূর্নতা ও ইসলামের গাম্ভীর্য বোঝানোর চেষ্টা করেছেন। দলে দলে অনেক মুসলিম হলেও ঈমান, ইসলাম, আল্লাহর পথে থাকা, ইসলামের বিজয়ের জন্য প্রচেষ্টা ইত্যাদি সম্পর্কে সবার পূর্ন জ্ঞান ছিলো না। এজন্য আল্লাহ এই সব বিষয় ব্যাখ্যা করেছেন।
সূরার সারসংক্ষেপঃ
সূরার শুরুতে আল্লাহ বলছেন, আসমান ও যমীনের সবই পুরাপুরি আল্লাহর অনুগত কিন্তু সৃষ্টির সেরা হয়েও মানুষ এবং মানুষের সেরা হয়েও মুমিনরা পুরাপুরি আল্লাহর অনুগত নয়, কাজকর্ম যথাযথ নয় একথা ২য় আয়াতে তিনি বলেছেন।
৩য় আয়াতে আল্লাহ কি (কথা ও কাজের অমিল) অপছন্দ করেন ও ৪র্থ আয়াতে আল্লাহ কি (একত্রে আল্লাহর রাস্তায় লড়াই) পছন্দ করেন তা বলেছেন।
৫ম ও ৬ষ্ঠ আয়াতে আল্লাহ ২ জন শক্তিমান নবী; মূসা (আঃ) ও ঈসা (আঃ) এর আহবান ও তার বিপথগামী অনুসারীদের অবাধ্যতার কথা বর্ননা করেছেন। ৬ষ্ঠ আয়াতের একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, এই আয়াতে মুহাম্মাদ (স) এর আগমনের কথা ঈসা (আঃ) এক কাছ থেকে পাওয়া গেছে।
৭ম আয়াতে আল্লাহ বিরুদ্ধবাদীদের কাজ ও আল্লাহর প্রতিদানের কথা বলেছেন।
৮ম ও ৯ম আয়াত মূলত আল্লাহ ও তার রাসূলের। ৮ম আয়াতে মূলত আল্লাহর প্ল্যান (নূর তথা ইসলামকে পরিপূর্ন বিজয়ী করা) ও কাজ এর কথা এবং আল্লাহর রসূল কে পাঠানোর কারন ও রাসূলের কাজ (আল্লাহর প্ল্যানের বাস্তবায়ন) সম্পর্কে অল্প কথায় সুন্দরভাবে বর্ননা করেছেন।
এরপর আল্লাহ মুমিনদের কাজ (আল্লাহর প্ল্যান অনুযায়ী রাসূল এর দেখানো পথে, তার সাথে থেকে আল্লাহর দ্বীনকে বিজয়ী করার চেষ্টা করা ) এর সম্পর্কে বলেছেন। এটাকে তিনি ব্যবসার সাথে তুলনা করেছেন। এর পুজি (জান ও মাল), লাভ (আসল এবং আল্লাহর দৃষ্টিতে মূল লাভঃ জাহান্নাম থেকে বেঁচে জান্নাত লাভ করা এবং সেকেন্ডারী হিসাবে; যা মুমিনরা পছন্দ করেঃ আল্লাহর সাহায্য ও বিজয়)। এ বিষয়গুলো বর্নিত হয়েছে ১০-১৩ আয়াতে।
শেষ আয়াতে ঈসা (আঃ) এর অনুসারীদের সাথে আল্লাহ মুহাম্মাদ (স) এর অনুসারীদের তুলনা করেছেন এবং ঈসা (আঃ) এর অনুসারীদের কিছু তাকে সাহায্য করেছে, কিছু তাদের কথা অনুযায়ী কাজ করে নাই (যে দোষের কথা আল্লাহ শুরুতে বলছেন)। আলাহর প্ল্যান (নূর তথা ইসলামকে পরিপূর্ন বিজয়ী করা) যেহেতু হয়েই আছে এবং নবী তার বাস্তবায়ন করবেনই তাই যারা তার সাথে থাকবে তাদের তিনি ঈসা (আঃ) ও তার সঠিক অনুসারীদের মতই বিজয় (আল্লাহর দৃষ্টিতে আসল এবং মূল বিজয়ঃ জাহান্নাম থেকে বেঁচে জান্নাত লাভ করা ) দান করবেন।
জোড়াঃ
এই সূরায় অনেক বিষয়ই আল্লাহ জোড়ায় জোড়ায় উল্লেখ করেছেন। ১ম আয়াতে আসমান-যমীন, ২য় আয়াতে আসমান যমীনের সাথে মুমিনদের, ৩য়, ৪র্থ আয়াতে আল্লাহর অপছন্দ-পছন্দ এর কথা বর্ননা করেছেন। ৫ম, ৬ষ্ঠ আয়াতে হযরত মূসা (আঃ) ও ঈসা (আঃ), ৮ম আয়াতে কাফেরদের ইচ্ছা ও আল্লাহর ইচ্ছা, ৮ম, ৯ম আয়াতে আল্লাহর কাজ-রাসূলের কাজ, কাফের, মুশরিক এর বিষয়গুলো এসেছে। ১১ আয়াতে মুমিনদের কাজ হিসাবে ঈমান-জিহাদ, আবার ঐ জিহাদ করতে হবে জান-মাল দিয়ে সে কথা বলা হয়েছে। ১০ম ও ১২ তম আয়াতে জাহান্নাম- জান্নাত এর কথা এসেছে। ১২, ১৩ তম আয়াতে বড় সাফল্য (জান্নাত) ও সেকেন্ডারী সাফল্য/ মুমিনদের কাম্য হিসাবে সাহায্য ও বিজয় এর ব্যাপারটির উল্লেখ আছে। সবশেষে ১৪ তম আয়াতে ঈসা (আঃ) এর উম্মত-মুহাম্মাদ (সঃ) এর উম্মত এর জোড়া সৃষ্টি করা হয়েছে।
বিষয়: বিবিধ
১০৫৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন