ইসলাম প্রচলিত ধর্ম নয় ; একটি পূনাঙ্গ জীবন ব্যাবস্থাঃ পার্ট-২
লিখেছেন লিখেছেন লেখক চাচা ১৯ জুলাই, ২০১৭, ০১:০৮:৪৯ দুপুর
ইসলাম প্রচলিত ধর্ম নয়; একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থাঃ
-
পর্ব-০২ঃ প্রকৃতির ইসলাম- আগে বলেছি সৃষ্টিজগত সুশৃঙ্খলভাবে পরিচালনার জন্য যে ইসলামিক নীতিমালার আলোকে পরিচালিত হয়। তাকে ক্বুদরাতুল্লাহি বলা হয়। প্রকৃতির এ ইসলামিক নীতিমালার মধ্যে ইচ্ছার স্বাধীনতা দেয়া হয়নি। মহান আল্লাহ বলেন, اَسۡلَمَ مَنۡ فِی السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضِ طَوۡعًا وَّ کَرۡہًاَ
while to Him have submitted [all] those within the heavens and earth, willingly or by compulsion
আসমান ও যমীনে যা কিছু রয়েছে স্বেচ্ছায় হোক বা অনিচ্ছায় হোক, তাঁরই কাছে আত্মসমর্পিত হয়।
-Sura Aal-E-Imran, Ayah 83
-
মানবজাতির ইসলাম- কিন্তু মানবজাতির মধ্যে শৃঙ্খলা বিধানের জন্য আল্লাহ তায়ালা যে ইসলামিক নীতিমালার আলোকে মানবজাতিকে পরিচালনা করেন তাকে সুন্নাতুল্লাহি বলা হয়। এক্ষেত্রে মানবজাতিকে মহান আল্লাহ পূর্ণ ইচ্ছার স্বাধীনতা দিয়ে রেখেছেন। ইচ্ছা করলেই তারা আল্লাহর দেয়া ঐশি বিধাণ ইসলামকে অনুসরণ করে শান্তির সমাজ গড়তে পারে। আবার ইচ্ছা করলে আদ সামুদ জাতির মত অবাধ্য হয়ে চির জাহান্নামী হতে পারে।
প্রকৃতির ইসলামের মধ্যে-
-
১. কোন বিশৃঙ্খলা নেই কারণ তারা ইচ্ছায় অনিচ্ছায় আল্লাহর অনুগত।
-
২. মানব জাতি ছাড়া অন্যসব সৃষ্টির মধ্যে বার্তা বাহক, সতর্কারী আগমন করেনি। কারণ তারা জড়বস্তু, বিবেকবুদ্ধিহীন প্রাণী। তাদেরকে আল্লাহ সরাসরি অথবা ফিরিস্তা দ্বারা পরিচালনা করেন।
-
৩. সকল অপ্রাপ্তবয়স্ক শিশুই প্রকৃতির ইসলামের অধীন। চাই তার পিতামাতা যে কোন ধর্মেরই হোক না কেন। মানবজাতির ইসলামের মধ্যে-
-
১. অনেক জাতির মধ্যে বিশৃঙ্খলা দেখা যায়। কারণ তাদের ইচ্ছার স্বাধীনতা দেয়ার কারণে সৃষ্টিকর্তার বিধাণ ছাড়াও অনেক সময় নিজেরা বিধাণ তৈরি করে নেয়।
-
২. সতর্কবারী, বার্তা বাহক আগমন করেছে। কারণ তারা বুদ্ধিমান প্রাণী। বার্তাবাহকের মাধ্যমে তাদের আসমানী বার্তা দেয়া হয়েছে।
-
৩. সকল প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষই মুসলিম নয়।
-
একজন মানুষ হিন্দুর ঘরে জন্মগ্রহণ করেও যদি ইসলামিক নীতিমালা মেনে চলে। নিজের ইচ্ছাকে আল্লাহর কাছে সোপর্দ করে দিয়ে। তার ইবাদাত তথা দাসত্ব করে তাহলে সে আত্মসমর্পনকারী বা মুসলিম। চাই তার নাম রমাকান্ত, সুশান্ত, বিকেন্দ্রনাথ যাই হোকনা কেন।
-
আবার একজন মানুষ মুসলমানের ঘরে জন্মগ্রহণ করেও যদি মহান আল্লাহর বিধাণ অনুযায়ী ইবাদাত তথা দাসত্ব না করে তাহলে সীমালঙ্ঘনকারী অমুসলিম। এমনকি আমার বলতে দ্বিধা নেই তারা কাফের। চাই তার নাম আব্দুল্লাহ বা আব্দুর রহমান হোক না কেন।
মহান আল্লাহ বলেন,
وَ مَنۡ لَّمۡ یَحۡکُمۡ بِمَاۤ اَنۡزَلَ اللّٰہُ فَاُولٰٓئِکَ ہُمُ الۡکٰفِرُوۡنَ ﴿۴۴﴾
And whoever does not judge by what Allah has revealed - then it is those who are the disbelievers.
যেসব লোক আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন, তদনুযায়ী ফায়সালা করে না, তারাই কাফের।
-Sura Al-Ma'idah, Ayah 44
-
সৃষ্টি জগত طوعا و كرها ইচ্ছায় অনিচ্ছায় আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণ করতেছে তাই তাদের মাঝে শান্তি। তাই চন্দ্র, সূর্য, তারকারাজি অনন্তকাল ধরে চলছে অথচ তাদের মাঝে কোন বিশৃঙ্খলা নেই।
-
মানবজাতিও যদি নিজের ইচ্ছাকে আল্লাহর কাছে জড়, বিবেকহীন বস্তুু প্রাণীর মত সোপর্দ করে দেয়। তাহলে তাদের মাঝেও শান্তি আসবে। নিজের ইচ্ছাকে আল্লাহর কাছে পূর্ণভাবে সোপর্দ করে না দেয়া পর্যন্ত কাউকে মুসলিম বলা যায় না। হযরত ইবরাহীম (আ)-কে যখন মুসলিম উপাধী দেয়া হল:
-
১. তিনি মূর্তি ভেঙ্গে দেশের বিদ্রোহী নাগরিকে পরিণত হলেন।
-
২. আগুণের মধ্যে নিক্ষিপ্ত হলেন।
-
৩. সেখান থেকে উদ্ধার পেয়ে ভাইপো লুত (আ)-কে সাথে নিয়ে হিজরত করলেন।
-
৪. মা হাজেরাকে মক্কায় নির্বাসন দিলেন।
-
৫. বৃদ্ধ বয়সে একটি সন্তান পেলেন তাকেও জবেহ করার নির্দেশ পেলেন।
-
তিনি বলতে পারতেন- হে আল্লাহ তোমার জন্যই আগুনে গিয়েছি, দেশ ছেড়েছি, স্ত্রী পুত্রকে নির্বাসন দিয়েছি। তোমার দ্বীনের জন্য হলেও আমার পুত্রকে বেঁচে থাকতে দাও। এটা যুক্তিসংগত অযুহাত ছিল। যেহেতু তিনি জানেন মুসলমান ডিগ্রি অর্জন করতে হলে। প্রকৃতির জড় বিবেকহীন বস্তু-প্রাণীর মতই নিজের ইচ্ছাকে আল্লাহর কাছে সোপর্দ করে দিতে হয়। তাই কোন অযুহাত তিনি দাঁড় করালেন না।
সন্তান কুরবানীর মিশন বাস্তবায়ন করা পরই মহান আল্লাহ বলেন,
فَلَمَّاۤ اَسۡلَمَا وَ تَلَّہٗ لِلۡجَبِیۡنِ ﴿۱۰۳﴾
যখন পিতা-পুত্র উভয়েই ইসলাম কবুল করল এবং ইব্রাহীম তাকে যবেহ করার জন্যে শায়িত করল।
-Sura As-Saaffat, Ayah 103
-
(এখানে اسلما এর হাকিকী অর্থ করেছি বোঝার জন্য।) গভীরভাবে লক্ষ করুন- হজরত ইবরাহীম (আ) কি সন্তান কুরবানী করার আগে মুসলমান ছিলেন না? সন্তান কুরবানী করার পরই কেন আল্লাহ তায়ালা বললেন, اسلما তারা ইসলাম কবুল করল?
-
পরম দুঃক্ষের সাথে বলছি। মুসলমার হওয়ার অর্থ শুধু মুসলমানের ঘরে জন্ম নিয়ে গরু খাওয়া নয়। হযরত ইবরাহীম (আ) ভাল করেই জানতেন নিজের ইচ্ছাকে আল্লাহর কাছ
বিষয়: বিবিধ
৯৪৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন